https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ঋগ্বেদ ১০/১০-যম যমী সুক্ত

Monday, July 18, 2016
১) যমী: ভালোবাসা ও চাওয়া নিয়ে আমি নিজের ইচ্ছায় আমার বন্ধুর নিকট এসেছি৷ আমার বন্ধু, যে বিশাল জীবন সমুদ্রের অনেকটা লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছে৷ আমি তোমার পৃথিবীর উপর অন্বয়যুক্ত কর্তব্যের সাধন সম্পর্কে জেনে এবং চিন্তা করে আমি আন্তরিকভাবে চাই এবং প্রার্থনা করি তুমি (বিয়ের মাধ্যমে) আমাকে সন্তান দিয়ে সুখী কর এবং উৎপন্ন কর একজন উত্তরাধিকারী ও তোমার পিতৃপুরুষের বংশ রক্ষাকারী৷

.
২) যম: তোমার বন্ধু তোমার প্রেম, বন্ধুত্ব এবং সংযোগের আহবান গ্রহন করেনা যেহেতু তুমি তার সহিত বৈশিষ্ট্যগত ও গুনগত এবং পরিপূর্নতার দিক থেকে সমপ্রকৃতির নয়, প্রকৃতপক্ষে তুমি হচ্ছ বিপরীত গুনসম্পন্ন৷ হে প্রকৃতির জীবনীশক্তির মহান কর্তা (সূর্য) এর সাহসী সন্তানগন (দিন ও রাত), জ্ঞানালোকে দীপ্তিমান যিনি অন্তরীক্ষ ও পৃথিবীকে আলোকিত করেন, প্রকৃতপক্ষে তিনি এই ধরনের সংযোগের প্রস্তাব বর্জন করেন ৷ বস্তুতঃ তারা নজরে রাখেন, বিস্মিত হন এবং এ ধরনের সংযোগের প্রস্তাব বাতিল করেন৷
.
৩) যমী: পৃথিবী এবং অন্তরীক্ষের শ্বাশত ধারনকারী আশা করেন যে প্রতিটা মরনশীল জীবের অন্ততঃ একজন উত্তরাধিকারী সন্তান রেখে যাওয়া উচিত৷ আমি আমাতে গ্রহন করেছি তোমার মন এবং আত্মাকে৷ তাই প্রার্থনা করি এস আমার সাথে শারিরীকভাবে মিলিত হও তোমার শিশুর জন্মদানকারী স্বামী হিসেবে৷
.
৪) যম: পবিত্র সৃষ্টির নিয়ম মেনে এবং বর্তমানেও তা পালন করে পূর্বে এমন কাজ আমরা কখনই করতে পারি নি, কিভাবে সত্য এবং নিয়ম ভঙ্গ করে এখন তা করব ? পৃথিবীকে ধারনকারী সূর্য এখন মধ্য গগনে তাই আমি হই উজ্জ্বল দিন, চাঁদও আছে সেখানে তাই তুমি হও মোহনীয় রাত্রি৷ কিন্তু পৃথিবীর সাধারন অক্ষ তোমার এবং আমার মাঝে অবস্থিত এবং তোমার ও আমার অবস্থান একদম বিপরীতমুখী৷ (অর্থাৎ আমরা মিলিত হতে পারব না যতক্ষন পৃথিবীটা ঘুরছে)
.
৫) যমীঃ আমাদের (দিনও রাতের) উৎপন্নকারী মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা সবিতা, বিভিন্ন আকৃতির পদার্থের সৃষ্টিকর্তা, এবং সৃষ্ট পদার্থসমূহের ধারনকর্তা তিনিই আমাদেরকে যুগল হিসেবে তৈরী করেছেন প্রকৃতির গর্ভ থেকে এবং সেখান হতেই আমাদেরকে এই পার্থিব গৃহের প্রহরীস্বরূপ করেছেন ৷ ঈশ্বরের এ সুশৃঙ্খলিত নিয়ম এখন আর কেউ ভাঙতে পারবেনা ৷ তারা এটি করেনা ৷ মাতৃ পৃথিবী এবং পিতৃস্বরূপ নৈসর্গিক সূর্য আমাদের পরিপুরকতা সম্পর্কে জানেন ৷
.
৬) যম: এই ভারসাম্যপূর্ন অবস্থা সম্পর্কে কে জানে যাহা সৃষ্টির প্রথম প্রহরে সৃষ্ট হয়েছিল? একমাত্র তিনি জানেন৷ এই সময়ে কে এর সাক্ষি? কে এখন এটা স্বেচ্ছায় করতে পারে? পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যকার দূরত্ব অনেক বেশি, পূর্বদিকে মিত্র (সূর্যোদয়) এবং দিনের অবস্থান পশ্চিমদিকে বরুন (সূর্যাস্ত) ও রাত্রির অবস্থান৷ হে কামপ্রিয়ে এখন লোকজনকে দেখে কে এ ব্যাপারে কোন কিছু বলতে পারে?
.
৭) যমী: আমি রাত্রি তোমার সাথে জীবন কাটানোর আকাঙ্খায় পীড়িত বোধ করছি, হে যম এক বাড়িতে একই শয্যায় আমার দেহ সমর্পন করতে ইচ্ছা করি যেভাবে একজন স্ত্রী তার স্বামীতে নিজেকে সমর্পন করে৷ এটি করতে চাই যাতে আমরা জীবন চালাতে পারি একটি রথের দুটি চাকার ন্যায় সুসামঞ্জস্যভাবে৷
.
৮) যম: এই দৃশ্যমান নৈস্বর্গিক আলো যেটি এখানে (পৃথিবীতে) একবার আসে একবার যায়, কিন্তু মহাশূন্যের চারিদিকে তারা বন্ধ হয় না এমনকি তারা পথচ্যুতও হয় না৷ তারা তাদের চোখ খোলা ও বদ্ধ করার ন্যায় আলোকিত ও অন্ধকার হয় না৷ হে প্রেম-বিধুর কুমারী শীঘ্র যাও আমা ভিন্ন অন্য কারও কাছে এবং তার সাথে রথের চাকার ন্যায় একত্রে সামঞ্জস্যপূর্ন জীবন কাটাও৷
.
৯) যদি এক মুহুর্তের জন্য পরমেশ্বর পৃথিবীর সাধারণ অক্ষে ও এর কেন্দ্রবিন্দুতে গতি হ্রাস করে দেন এবং সূর্যের আলো যদি দিন এবং রাত্রিতে থেমে যায়, তখন পৃথিবী এবং অন্তরীক্ষ একত্র হবে এদের মত তখন আমরাও (দিন ও রাত) একত্র হব, রাত্রি কোনো বাধা ছাড়া দিনের সাথে দাম্প্যত্য মিলন উপভোগ করবে৷
.
১০) যম: হে রাত্রি! কিন্তু ওই সময়গুলো অনেক অনেক বছর পরে আসবে, অতঃপর যখন গতিপথ বিপরীতমুখী হবে তখন একত্রে এবং সহঅবস্থানে থাকা হবে কোন অসঙ্গতি ব্যাতিত৷ তাই এ সময়ের জন্য হে প্রিয়ে ও ভদ্রে তোমার প্রেমের হাত আমি ছাড়া আর অন্য কারও প্রতি বাড়িয়ে দাও যে হবে প্রকৃত পুরুষোচিত স্বামী৷
.
১১) যমী: কি বললে ? তাহলে কি তুমি আমার নিকট ভাতৃস্বরূপ হবে? আর আমি তোমার বোন হয়ে তোমার ভালবাসা এবং তত্ত্বাবধান হতে বঞ্চিত হব? প্রিয়জন বঞ্চিত হয়ে অন্যত্র যাব আরেকজনের খোঁজে? আমি প্রেমে বিধুর হয়ে অস্ফুটবাক হচ্ছি, প্রার্থনা করি আমার সাথে শারিরীকভাবে যুক্ত হও৷ (তুমি কি শুধু একটি পরিপুরক অবলম্বন, আমি কি শুধু তোমার বিপরীতমুখী যাত্রী, এর চেয়ে বেশী কিছু নয় ?)
.
১২) যম: না আমি তোমার শরীরের সাথে আমার শরীর কখনও স্পর্শ করব না৷ বিজ্ঞজনেরা বলেন যে বোন সম্পর্কিত কারো নিকট যাওয়া এবং মিলিত হওয়া পাপ, কক্ষপথে অনুরূপ সহযাত্রীর সাথে মিলিত হওয়া প্রকৃতির নিয়মবিরুদ্ধ৷ হে প্রিয়ে এবং ভাগ্যবতী! যাও সুখি হও আমি ছাড়া অন্য কারও সাথে এবং যদি তুমি পার তবে তা সম্ভব কর৷ তোমার সহযাত্রী ভাই এ প্রস্তাব পছন্দ করেনা, না সে পছন্দ করতে পারে না৷
.
১৩) যমী: দুঃখিত যম, হে দিবালোক! এটা হল তোমার মহানুভবতা৷ আমি তোমার মনোভাব এবং হৃদয় প্রকৃতির এই পথ সম্পর্কে জানতাম না৷ হতে পারে আমি ভিন্ন অন্য কেউ তোমার সাথে যুক্ত হবে, যেভাবে কোমরবন্ধ তোমার কোমর জড়িয়ে আছে এবং তোমাকে আলিঙ্গন করবে যেভাবে একটি গাছের সহিত লতা সংলগ্ন থাকে৷
.
১৪) যম: তোমাকেও হয়ত কেউ আলিঙ্গন করবে এবং তুমিও তাকে আলিঙ্গন করবে যেভাবে একটি গাছের সাথে লতা সংলগ্ন থাকে৷ ভালবেসো তুমি অন্যলোককে এবং তার হৃদয়কে, সেও তোমাকে এবং তোমার হৃদয়কে ভালোবাসবে৷ এভাবে তুমি ভালোবাসা এবং সৌভাগ্যের দ্বারা সৃজন করবে এবং অর্জন করবে একটি সুখী মিলন৷
.
(তুলসীরাম শর্মার ইংরেজী বেদভাষ্য হতে অনুবাদকৃত)

  1. এই সূক্তটি দ্বারা বাস্তবে কি বুঝাতে চাইছে?

    ReplyDelete