https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

রাধা কৃষ্ণের প্রেম সত্য নাকি কষ্টকল্পনা

Saturday, July 23, 2016

রাধার শ্রেষ্টত্ব প্রমাণের জন্য বক্তৃতার ফুলঝুরি ছোটে বৈষ্ণব গুরুদের মুখে। মূলত তিনটি যুক্তি দেন। (১) রাধা কৃষ্ণের শক্তিস্বরূপা। (২) এই দুইয়ের কোন ভেদ নেই, রাধা-কৃষ্ণ অভেদ। (৩) জগতে প্রেমের বিস্তারের ক্ষেত্রে রাধা প্রেমের বড় ভূমিকা আছে।
বারবার এগুলি শুনি। আমাদের বোঝানো হয় যে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম নাকি অধ্যাত্মভাব ভক্তি আর প্রেমের সঞ্চার করে। এগুলো সব আবেগের কথাবার্তা। ভাবের ভক্তির বা ভন্ডামির কথা-বার্তাও হতে পারে। কারণ এর সারবত্তা যুক্তি দিয়ে ব্যাখা হয় না।

শিশুকাল থেকে পূর্ণযৌবন পর্যন্ত কৃষ্ণ অনেক যুদ্ধ করেছেন। শেষে ব্যাধের তীরের অাঘাতে মরেও গেছেন। যা করেছেন নিজের শক্তি প্রতিভা সাহস আর ক্ষমতা দিয়ে। কোথাও বলেনি রাধাই আমার শক্তি। কোথাও রাধার নামই করেন নি। কাউকে বধ করতে যাবার আগে রাধার আরাধনা করেন নি। একবারের জন্যও বলেননি, হে রাধা আমাকে শক্তি দাও। রাধা যদি শক্তিস্বরূপা হতো তাহলে কায়দা করে জরাসন্ধকে, সুদর্শন চক্র দিয়ে শিশুপালকে, ক্ষমতা দিয়ে কংসকে মারার দরকার হতো না। ভীম যখন জরাসন্ধকে কিছুতেই মারতে পারছেন না তখন তিনি নিশ্চয় বলতেন------ ভীম তুমি ১০৮ বার রাধা নাম জপ করো তাহলে জরাসন্ধকে হত্যা করতে পারবে। শ্রীকৃষ্ণ মহাভারতে বা গীতায় একবার ও স্বীকার করেন নি যে রাধাই তার শক্তি। কারণ এগুলো সত্য নয়। শ্রীকৃষ্ণ যা বিশ্বাস করেন নি আমরা তা বিশ্বাস করি। শ্রীকৃষ্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী, আমরা আবেগবাদী ও মিথ্যাবাদী।
.
অনেক বৈষ্ণব পন্ডিত বলেন------ রাধাকৃষ্ণ অভেদ। এটা আরেক প্রবঞ্চনা। কৃষ্ণের জন্ম হয়েছে মানুষের গর্ভে তেমনই রাধারও হয়েছে। দুজনেরই বাবা-মা অালাদা। লিঙ্গও আলাদা। গায়ের রং অালাদা। এমনকি চিন্তাভাবনাও আলাদা। তাহলে অভেদ কিসে???? জানি ভন্ডরা কি বলবেন। বলবেন সেটা বোঝাই তো লীলা। সেই একই চুলকানি। যা বুঝতে পারো না তাই লীলা। এসব কথা যুক্তি-তর্কের বাইরে। অথচ কৃষ্ণ বরাবর যুক্তিবাদী। তা সে রাজসভাতেই হোক বা যুদ্ধক্ষেত্রেই হোক। সবসময় সর্বত্র যুক্তি দিয়েছেন। আর আমরা যুক্তিহীন। আমরা একবারও প্রশ্ন তুলি না। ব্রহ্মবৈবর্ত নামে একটি পুরাণ আছে। সেখানে আবার রাধাকৃষ্ণের বিয়ে এবং বিয়ের পর সারারাত কাটানোর সরস গল্পও আছে। বৈষ্ণব পদাবলীর ছত্রেছত্রে যে রাধা প্রেমের ঘনঘটা তা কোন্ অভেদতত্ত্ব প্রমাণ করে????? সুতরাং অভেদ তত্ত্ব ধোপে টেকে না।
.
বৈষ্ণব কুলশিরমনিদের তৃতীয় যুক্তি ----- রাধাকৃষ্ণের প্রেম নাকি জগতে সমাজে প্রেমের সঞ্চার করে। বুদ্ধি যখন বাস্তবতা হারায় তখন এমন চিন্তাই আসে। গত ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে রাধাকৃষ্ণের প্রেমের গল্প শুনে আসছে মানুষ।তাহলে পৃথিবীতে এত বিদ্বেষ কেন, এত হিংসা কেন????? এত যদি প্রেমের ঘনঘটা তাহলে ভারতবর্ষে আজ এত প্রেমের অভাব কেন??? রাধাকৃষ্ণের নামে দেশ জুড়ে প্রেম বিলিয়ে বেড়ান তাদের বেশিরভাগ এত রুক্ষ মেজাজী কেন??? ভক্তে ভক্তে এত হানাহানি কাটাকাটি কেন??? গরিব বড়লোকে এত পার্থক্য কেন??? আমি জানি এইসব কথার উত্তর বৈষ্ণব বাবাজীরা এক কথায় দেবেন ----- সবই লীলা। সেই একই উত্তর চুলকানি। আমাদের একবারও মনে হয় না শ্রীকৃষ্ণ নিজে যাকে যেমন শাস্তি দেয়ার, তাকে তেমন শাস্তি দিয়েছেন। নিজে বলেছেন, আমি দুষ্ট লোকেদের মারতে এসেছি ---- সেই কৃষ্ণ অন্ততঃ অহেতুক প্রেম ছাড়ানোর কথা বলবেন না। কৃষ্ণ না বলছেন তো কি হয়েছে আমরা বলছি, কারণ প্রেমের এই ধাপ্পাবাজিটা আমাদের ভালো স্যুট করে। তাতে সমাজের যা হচ্ছে হোক। আমার তো মানসিক তৃপ্তি। কৃষ্ণ হতদরিদ্র সুদামাকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন। এদেশের বেশিরভাগ বৈষ্ণবগুরু গরিব দরিদ্রের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলেন। স্টেজে উঠলেই আবার সেই বস্তাপচা প্রেমের গল্প। এমনই চলছে শতশত বছর ধরে। ভন্ডামো আর মিথ্যাচারিতার ধারাবাহিকতা। এ সিরিয়াল চলছে দিনের পর দিন।
.
রাধা মহাশক্তিস্বরূপা, রাধাই কৃষ্ণের শক্তি। এর যুক্তি কোথায়??? রাধার যে লীলা, তার যে জীবন সেখানে শক্তির প্রকাশ কোথায় তা অন্ততঃ বাহ্যদৃষ্টিতে চোখে পড়ে না। রাধা কোন অসুর বধ করেছিলেন অথবা সামাজিক ভাবে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, সমাজ গঠনে সাহায্য করেছিলেন এমন কোন শক্তির প্রকাশ আমরা দেখি না। তাহলে মহা শক্তি কোথায়?????
কৃষ্ণ যখন গোকুল ছেড়ে মথুরায় যাচ্ছেন কংসকে বধ করতে। ব্রজবাসী কেঁদে আকুল। কৃষ্ণ যদি মনে করতেন রাধাই তার শক্তি তাহলে তো রাধাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। রাধাকে বলতেন ----- চল রাধা, তুমিই তো আমার শক্তি, চলো। আমার রথো ওঠো। তারপর আবার ফিরে চলে আসবে। সে কথা কিন্তু কৃষ্ণের মুখে শুনা যায় নি। বরং অন্যান্যদের সঙ্গে রাধাও কেঁদেছেন। কৃষ্ণ মথুরা চলে যাবার পরবর্তী কালে রাধার নাম পর্যন্ত করেন নি। তাহলে কি করে বিশ্বাস করবো রাধা কৃষ্ণের শক্তিস্বরূপা। এ ন্যাকামো অন্ধভক্তিতে চলতে পারে, যুক্তিতে টেকে না। জ্ঞানেও না।
.
রাধা যদি এতই শ্রেষ্ট চরিত্র হতো তবে বৈষ্ণব বাবাজীদের নিকট আমার প্রশ্নঃ
শ্রীকৃষ্ণ গীতাতে ---- তার শ্রেষ্ট শ্রেষ্ট বিভূতি গুলো বর্ণনা করেছেন, তখন একবারের জন্যও রাধার নাম নিলেন না কেন???
.
নারী জাতীর মধ্যে তাঁর শ্রেষ্ট বিভূতি বিলাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, আমি নারীগণের মধ্যে কীর্তি, শ্রী,বাক,স্মৃতি,মেধা,ধৃতি এবং ক্ষমা ( গীতাঃ১০/৩৪).
.
কৈ এখানে তো কৃষ্ণ "নারীকুলের মধ্যে আমি রাধিকা অথবা অন্য কোন গোপীনীর নাম বললেন না!!
.
পাঠকবৃন্দ--- রাধাকৃষ্ণের প্রেম শুধুমাত্র কাল্পনিক, বাস্তবতার কোন প্রমাণ নাই। রাধা তত্ত্বের অসারতা প্রমাণ করতে গিয়ে আলাদা একটা বই লিখে ফেলা যাবে। হাজারও প্রমাণ দেয়া যাবে কৃষ্ণের সমগ্র জীবনে রাধার কোন প্রভাবই নেই।

  1. সঠিক বলেছেন, অনেক ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  2. মায়া,ঐশ্বর্য,মাধুর্য এই তিনটি নাম শুনেছেন কি ?
    আপনার বাস্তব জীবনের তিনটি স্তরের কথা ভাবুন তাহলে বুঝতে পারবেন স্থান-কাল-পাত্র ভেদে আলাদা আলাদা গুণের প্রকাশ পায় । প্রাকৃত ও অপাকৃতের গুরুত্ব বুঝুন। পাণ্ডিত্যে অহংকার আসে যেমন শুকনা কাষ্ঠ, কিন্তু ভক্তিযুক্ত জ্ঞানীগণ রসালো ও প্রেমময় হন তারাই বোঝেন শ্রী রাধা কে।। জয় রাধে

    ReplyDelete
  3. তাহলে প্রথম কবে এই রাধা নাম আসলো কৃষ্ণের সাথে?

    ReplyDelete
  4. 100% right.
    আর কতকাল অন্ধকারে থাকবে তথাকথিত ভক্তিবাদী তথা কল্পিত রাধার ক্রন্দনরত প্রেমীরা !!

    ReplyDelete