https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ভাগবত পুরাণ সমীক্ষা পর্ব-১

Wednesday, August 24, 2016

ভাগবত যে কোন মানুষের মনো কল্পিত একটি গ্রন্থ সেটি বুঝতে বেশি মাথা খাটানোর দরকার হয় না।
ভাগবতের মধ্যে থাকা অসামঞ্জস্য ও বৈজ্ঞানিক ভুলগুলো থেকেই তা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
কারণ ঈশ্বরের দ্বারা আশীর্বাদপুষ্ট কোন গ্রন্থে কোন বৈজ্ঞানিক ভুল বা অসামঞ্জস্য থাকা তো দূরে থাক,একটি বর্ণও ভুল হতে পারে না।

ঈশ্বরের প্রদত্ত বেদ ই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যেখানে আজ পর্যন্ত কোন মানব এক বর্ণও ভুল দেখাতে পারে নি।

আজ আমরা দেখবো ভাগবতের দ্বাদশ স্কন্ধের একটি কাল্পনিক ও হাস্যকর কাহিনী।
প্রেক্ষাপট টা এমন যে -মার্কন্ডেয় ঋষির আমলে, একবার নাকি পৃথিবীতে এমনই মহা প্লাবন হয়েছিলো যে মহাপ্লাবনের জল  পৃথিবী,অন্তরীক্ষ,স্বর্গ এবং ঊর্ধ্বলোককে প্লাবিত করেছিলো!!!

সমস্ত অনুবাদ ইস্কনের স্বামী প্রভুপাদ এর করা শ্রীমদ্ভাবত(বাংলা) থেকে নেওয়া হয়েছে।ইংরেজীতেও মিলিয়ে নিতে পারেন এই সাইট থেকে।
ভাগবত ১২/৯/১৪---
"এমন কি মার্কন্ডেয় যখন এইসব দর্শন করছিলেন,সেই সময় মেঘের বর্ষণ সেই মহাসমুদ্রকে অধিক থেকে অধিকতর পূর্ণ করেছিল,
এর জল ঘূর্ণিঝড়ের দ্বারা ভয়ঙ্কর তরঙ্গে তীব্র কশাঘাত করছিল এবং পৃথিবীর সমস্ত দ্বীপপুঞ্জ,পর্বত এবং মহাদেশ সমূহকে আচ্ছাদিত করেছিল।"

ভাগবত ১২/৯/১৫---
"এই জল পৃথিবী,অন্তরীক্ষ,স্বর্গ এবং উর্ধ্বলোককে পরিপ্লাবিত করেছিল। বস্তুতপক্ষে সমগ্র ব্রহ্মান্ড সর্বদিক থেকে প্লাবিত হয়েছিল এবং সমস্ত বাসিন্দাদের মধ্যে
 কেবলমাত্র শ্রীমার্কন্ডেয় ঋষিই অবশিষ্ট ছিলেন। তাঁর জটাজুট বিক্ষিপ্ত হয়েছিল এবং সেই মহামুনি সেই জলের মধ্যে জড় এবং অন্ধবৎ একাকী পরিভ্রমণ করছিলেন।"

---> যেখানে স্বর্গ বলে কোন স্থান এর কথা সনাতন শাস্ত্রসমূহের মধ্যেই নেই,সেখানে স্বর্গও নাকি পরিপ্লাবিত হয়েছিল!!! যাই হোক,পাঠক এই শ্লোকে লক্ষ রাখবেন, উপরের মহা প্লাবনে কিন্তু
সমগ্র ব্রহ্মান্ডের মধ্যে একজনই বেঁচেছিলো। তিনি হলেন মার্কন্ডেয় ঋষি। পরের শ্লোকে যাই এবং আরো বিনোদিত হই...

ভাগবত ১২/৯/১৬---
"ক্ষুধায় এবং তৃষ্ণায় পীড়িত হয়ে, কদাকার মকর এবং তিমিঙ্গিল মাছের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এবং তরঙ্গ ও বায়ুপ্রবাহের দ্বারা পুনঃ পুনঃ আহত হয়ে অসীম অন্ধকারে পতিত সেই ঋষি লক্ষ্যহীনভাবে পরিভ্রমণ করেছিলেন।
যতই তিনি পরিশ্রমে নিঃশেষিত হচ্ছিলেন, ততই তিনি দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ছিলেন এবং পৃথিবী থেকে আকশকে পৃথক করতে পারছিলেন না।"

--->দেখুন কতো বড় মিথ্যাচার এবং হাস্যকর কাহিনী। আগের শ্লোকে বলেছিলো কেবল মার্কন্ডেয় ঋষিই বেঁচেছিলেন(অবশিষ্ট ছিলেন) , এখানে এই শ্লোকে এসে আবার বলছে মকর ও তিমিঙ্গিল মাছ এর দ্বারা
তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মানে কি? মার্কন্ডেয় ঋষি ছাড়াও তাকে আঘাত করার জন্য মাছও বেঁচেছিলো। তাহলে পুরানকার তথা ভাগবতকারের কোন কথাটা সত্য? আগের শ্লোকের শুধু মার্কন্ডেয় ঋষি বেঁচে থাকার কথা
 নাকি এই শ্লোকে মাছের দ্বারা আক্রান্ত হবার কথা!??? একটি শ্লোক সত্য হলে অন্যটি মিথ্যা হয়ে যায়।
আবার দেখুন বলছে আকাশ থেকে পৃথিবী পৃথক করতে পারছিলেন না! এই বিজ্ঞানের যুগে এই কথাটা কতটা ভিত্তিহীন আপনারাই বিবেচনা করুন। প্রকৃতপক্ষে আকাশ শব্দটি ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে যেকোনো বিন্দু নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়।
আমরা যে নীল আকাশ বলি তা দিনের আলোয় আলোর বিক্ষেপণের জন্য হয় আবার রাতের বেলা কিন্তু নীল দেখি না। পৌরাণিক মহাশয় কিভাবে আকাশ আর পৃথিবী কে এক করে ফেলেছিলেন সেটা তিনিই ভালো জানেন।
তিনি ভূপৃষ্ঠ হতে কতো উপরে আকাশ ধরেছিলেন যেখানে তিনি পৃথিবী ও আকাশ কে পৃথক করতে পারছিলেন না! তাহলে সেই সময় মার্কন্ডেয় মুনির উপরে কি ছিলো ?

ভাগবত ১২/৯/১৭---
"কখনো কখনো তিনি প্রচন্ড ঘূর্ণির কবলীভূত হয়েছিলেন,কখনো বা শক্তিশালী তরঙ্গে আহত হয়েছিলেন, আবার কখনো কদাকার জলজ প্রাণীরা পরস্পরকে আক্রমণ করার সময় তাঁকে ভক্ষণ করবার ভয় দেখিয়েছিল।
কখনো কখনো তিনি অনুতাপ,বিভ্রম,দুঃখ,সুখ বা ভয় অনুভব করেছিলেন।আবার কখনোবা এমন ভয়ঙ্কর ব্যাধি যন্ত্রণা অনুভব করেছিলেন যে তাঁর মনে হয়েছিল যে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।"

--->এখানেও একই অসামঞ্জস্যতা। জলজ প্রাণিরা মার্কন্ডেয় ঋষিকে ভয় দেখালেও ভক্ষণ করে নি।
কিন্তু এখানে বলা আছে তিনি সুখও নাকি অনুভব করেছিলেন!!! দুঃখ,যন্ত্রণা-ভয় অনুভব করেছে বুজলাম,মহা প্লাবনের জলের মধ্যে দিকভ্রান্ত হয়ে একাকী ঘুরলে এমন হবারই কথা।কিন্তু  এতো দুঃখ ও মৃত্যু যন্ত্রণার মাঝে সুখ কোন মুহূর্তে অনুভব করেছেন সেটাই আমার বোধগম্য নয়!
পৌরাণিক মহাশয় যা মনে এসেছে তাই লিখে দিয়েছে,তা পরের শ্লোকগুলো যদি আপনারা পড়ে নেন আরো বুঝবেন।সংক্ষেপে আমি বলি- হঠাৎ ঋষি একটি দ্বীপ আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন! যেখানে কৃষ্ণকে তিনি বালক রূপ
দর্শন করেছিলেন-আর এটা হয়েছিলো নাকি কৃষ্ণের মায়াশক্তির প্রভাবে!!!তাই সেই সম্বন্ধে আর বিস্তারিত লিখছি না।

পরবর্তী পর্বে এরকম আরো বহু অসামঞ্জস্যতা তুলে ধরা হবে যার দ্বারা প্রমাণিত হবে ভাগবত কোন ঐশী গ্রন্থ নয়।
তাই আমি সনাতনী ভাই-বোনদের প্রতি অনুরোধ জানাবো আপনারা এসব অবাস্তব গ্রন্থ গুলোকে ধর্মগ্রন্থ না মেনে বেদের পথে ফিরে এসে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করুন এবং সুখী হোন।

 ওঁ শান্তি। ওঁ শান্তি। ওঁ শান্তি

  1. বেদ ও তো কোন মানুষ লিখেছে। ঋষিদের ধ্যানে পাওয়া এই জ্ঞান বই আকারে এসেছে কোন মানুষের হাতের কলমের দ্বারা। সে ব্যক্তিটা কে ? জানতে চাই। ব্যসদেব নাকি অন্য কেউ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. বেদ ব্যাসদেব রচনা করলেও তা অভ্রান্ত । কিন্তু পুরাণ গুলিকে তো পুরাণ দ্বারা খণ্ডন করা যায়

      Delete