রামায়ন বিষয়ে এক কথা প্রচলিত যে, ত্রেতা যুগে শ্রীরাম যখন পাথর রূপী অহল্যা কে নিজ চরণ স্পর্শ করে তখন সে পাথর থেকে মানুষে পরিণত হয় এবং তার উদ্ধার হয়ে যায়।
প্রথমে এই তর্ক কোন প্রকারেই সম্ভব নয় যে মানব শরীর প্রথমে পাথর হয়ে যায় এবং পূণরায় চরণের স্পর্শে মনুষ্য শরীর রূপে ফিরে আসে।
দ্বিতীয় বাল্মিকী রামায়নে অহল্যাকে বনের মধ্যে গৌতম ঋষির সাথে তপ করার বর্ণনা রয়েছে। কোথাও বাল্মিকী দ্বারা পাথর বানানোর বর্ণনা নেই। বাল্মিকী রামায়নের অনেক পরে রচিত তুলসীরাম রচিত "রামচরিতমানস্" মধ্যে এই ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।
বিশ্বামিত্র ঋষি দ্বারা তপোনিষ্ঠ অহল্যার বর্ণনা শুনে যখন রাম এবং লক্ষল গৌতম মুনির আশ্রমে প্রবেশ করলেন তখন তারা অহল্যাকে যে প্রকার দেখলেন তার বর্ণনা বাল্মিকী এ প্রকার দিয়েছেন -
দর্শন চ মহাভাগাং তপসা দ্যোতিতপ্রভাম্ -
সাভ্রাং পূর্ণচন্দ্রাভাবিব দীপ্তামগ্নিং দীপ্তাং সূর্য প্রভামিব।।
(বাল কান্ড ৪৯।১৩ - ১৫)
অর্থাৎ তপ দ্বারা দেদীপ্যমান রূপবতী , পূর্ন চন্দ্রমার প্রভার সমান তথা প্রদীপ্ত অগ্নিশিখা এবং সূর্যের তেজের সমান।
এগুলো কি শিলারূপী অহল্যার বর্ণনা হতে পারে?
শুধু ইহাই নয় "শাপস্যান্তমুপাগম্য তেষাং দর্শনমাগতা (বাল কান্ড ৪৯।১৭)। শাপের অন্ত হয়েছে যেনে তিনি রামের দর্শনার্থে এলেন। শিলাভূত অহল্যার জন্য গমনার্থক ধাতু ক্রিয়ার প্রয়োগ কিভাবে হতে পারে? বস্তুত অহল্যা নিজ পতি গৌতম মুনির তপোনিষ্ঠ দেবী ছিলেন। তার তপের মহিমা শুনে রাম ও লক্ষল তার দর্শনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।
রামায়নের প্রসিদ্ধ টীকাকার গোবিন্দরাজ অহল্যার পাথর হওয়ার কথা স্বীকার করে নি। তিনি লিখেছেন - " অনেন পাষাণীভূত স্থিতিতে ন পক্ষী বাল্মিকে" অর্থাৎ বাল্মীকির অহল্যার পাষাণ হওয়ার পক্ষে অভিমত নেই।
কালান্তর কিছু অজ্ঞানী লোক ব্রাহ্মণ গ্রন্থের মধ্যে ইন্দ্রের জন্য প্রযুক্ত শব্দ "অহল্যাযৈজার " এর রহস্য না বোঝার কারনে ইন্দ্রের দ্বারা অহল্যার ব্যাভিচারের কথা প্রস্তুত করেছে। মধ্যকালের পতনের পূর্বে নারী জাতিকে সর্বেশ্বরী এবং পূজার যোগ্য মানা হতো। কিন্তু মধ্যকালে এসে নারীকে তাড়ন যোগ্য এবং অধম হিসেবে মানা হয়েছে। এই বিকৃত মানিষকতার পরিণাম অহল্যা ইন্দ্রের কথা বিকৃতরূপ ধারন করেছে।
স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী এই বিষয়ে অত্যন্ত নির্মল ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন -
" ইন্দ্রাগচ্ছেতি। গৌরবস্কন্দিন্নহল্যায়ৈ জারেতি (শতপথ ৩।৩।৪।১৮)" এখানে ইন্দ্র শব্দে সূর্য বুঝায় এবং রাত্রীকে অহল্যা বলা যায় তথা গৌতম চন্দ্র সদৃশ। এস্থলে রুপকালঙ্কার মতে রাত্রীকে চন্দ্রমার স্ত্রী রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। চন্দ্রমা নিজ স্ত্রীর সহিত রাত্রীকালে সকল প্রাণীর আনন্দদায়ক হয়ে থাকে। ইন্দ্র তথা সূর্যের আগমনেই চন্দ্রমার সহিত রাত্রীর শৃঙ্গার ভঙ্গ বা নষ্ট করে দেয়। চন্দ্রমাকে গৌতম এজন্য বলা যায় যে উক্ত চন্দ্রমা অত্যন্ত বেগশালী। এবং রাত্রীকে অহল্যা এই কারনে বলা হয় যে রাত্রীতে দিবসের লয় হয়। পুনরায় সূর্যই রাত্রীর নিবৃত্তকারী এইজন্য সূর্যকে রাত্রীর জার বলে " আদিত্যোত্রজার উচ্যতে, রাত্রের্জরয়িতা (নিরুক্ত ৩।১৬)।
এই প্রকার এই বিবরণ পরস্ত্রী দ্বারা ব্যাভিচার কারী কোন পুরুষ বিশেষের প্রসঙ্গ নেই। এবং অহল্যার পাথর হওয়া এবং তার উদ্ধার হওয়ার ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
প্রথমে এই তর্ক কোন প্রকারেই সম্ভব নয় যে মানব শরীর প্রথমে পাথর হয়ে যায় এবং পূণরায় চরণের স্পর্শে মনুষ্য শরীর রূপে ফিরে আসে।
দ্বিতীয় বাল্মিকী রামায়নে অহল্যাকে বনের মধ্যে গৌতম ঋষির সাথে তপ করার বর্ণনা রয়েছে। কোথাও বাল্মিকী দ্বারা পাথর বানানোর বর্ণনা নেই। বাল্মিকী রামায়নের অনেক পরে রচিত তুলসীরাম রচিত "রামচরিতমানস্" মধ্যে এই ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।
বিশ্বামিত্র ঋষি দ্বারা তপোনিষ্ঠ অহল্যার বর্ণনা শুনে যখন রাম এবং লক্ষল গৌতম মুনির আশ্রমে প্রবেশ করলেন তখন তারা অহল্যাকে যে প্রকার দেখলেন তার বর্ণনা বাল্মিকী এ প্রকার দিয়েছেন -
দর্শন চ মহাভাগাং তপসা দ্যোতিতপ্রভাম্ -
সাভ্রাং পূর্ণচন্দ্রাভাবিব দীপ্তামগ্নিং দীপ্তাং সূর্য প্রভামিব।।
(বাল কান্ড ৪৯।১৩ - ১৫)
অর্থাৎ তপ দ্বারা দেদীপ্যমান রূপবতী , পূর্ন চন্দ্রমার প্রভার সমান তথা প্রদীপ্ত অগ্নিশিখা এবং সূর্যের তেজের সমান।
এগুলো কি শিলারূপী অহল্যার বর্ণনা হতে পারে?
শুধু ইহাই নয় "শাপস্যান্তমুপাগম্য তেষাং দর্শনমাগতা (বাল কান্ড ৪৯।১৭)। শাপের অন্ত হয়েছে যেনে তিনি রামের দর্শনার্থে এলেন। শিলাভূত অহল্যার জন্য গমনার্থক ধাতু ক্রিয়ার প্রয়োগ কিভাবে হতে পারে? বস্তুত অহল্যা নিজ পতি গৌতম মুনির তপোনিষ্ঠ দেবী ছিলেন। তার তপের মহিমা শুনে রাম ও লক্ষল তার দর্শনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।
রামায়নের প্রসিদ্ধ টীকাকার গোবিন্দরাজ অহল্যার পাথর হওয়ার কথা স্বীকার করে নি। তিনি লিখেছেন - " অনেন পাষাণীভূত স্থিতিতে ন পক্ষী বাল্মিকে" অর্থাৎ বাল্মীকির অহল্যার পাষাণ হওয়ার পক্ষে অভিমত নেই।
কালান্তর কিছু অজ্ঞানী লোক ব্রাহ্মণ গ্রন্থের মধ্যে ইন্দ্রের জন্য প্রযুক্ত শব্দ "অহল্যাযৈজার " এর রহস্য না বোঝার কারনে ইন্দ্রের দ্বারা অহল্যার ব্যাভিচারের কথা প্রস্তুত করেছে। মধ্যকালের পতনের পূর্বে নারী জাতিকে সর্বেশ্বরী এবং পূজার যোগ্য মানা হতো। কিন্তু মধ্যকালে এসে নারীকে তাড়ন যোগ্য এবং অধম হিসেবে মানা হয়েছে। এই বিকৃত মানিষকতার পরিণাম অহল্যা ইন্দ্রের কথা বিকৃতরূপ ধারন করেছে।
স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী এই বিষয়ে অত্যন্ত নির্মল ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন -
" ইন্দ্রাগচ্ছেতি। গৌরবস্কন্দিন্নহল্যায়ৈ জারেতি (শতপথ ৩।৩।৪।১৮)" এখানে ইন্দ্র শব্দে সূর্য বুঝায় এবং রাত্রীকে অহল্যা বলা যায় তথা গৌতম চন্দ্র সদৃশ। এস্থলে রুপকালঙ্কার মতে রাত্রীকে চন্দ্রমার স্ত্রী রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। চন্দ্রমা নিজ স্ত্রীর সহিত রাত্রীকালে সকল প্রাণীর আনন্দদায়ক হয়ে থাকে। ইন্দ্র তথা সূর্যের আগমনেই চন্দ্রমার সহিত রাত্রীর শৃঙ্গার ভঙ্গ বা নষ্ট করে দেয়। চন্দ্রমাকে গৌতম এজন্য বলা যায় যে উক্ত চন্দ্রমা অত্যন্ত বেগশালী। এবং রাত্রীকে অহল্যা এই কারনে বলা হয় যে রাত্রীতে দিবসের লয় হয়। পুনরায় সূর্যই রাত্রীর নিবৃত্তকারী এইজন্য সূর্যকে রাত্রীর জার বলে " আদিত্যোত্রজার উচ্যতে, রাত্রের্জরয়িতা (নিরুক্ত ৩।১৬)।
এই প্রকার এই বিবরণ পরস্ত্রী দ্বারা ব্যাভিচার কারী কোন পুরুষ বিশেষের প্রসঙ্গ নেই। এবং অহল্যার পাথর হওয়া এবং তার উদ্ধার হওয়ার ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
0 মন্তব্য(গুলি)