উত্তর- হ্যাঁ, কীর্তন করা অবশ্যই উচিত। সকলেরই উচিত প্রত্যহ কীর্তন করা, গীতা ৯।১৪নং শ্লোকে কীর্তন করার কথা আছে। দেখুন গীতায় কি আছে-
सततं कीर्तयन्तो मां यतन्तश्च दृढव्रताः।
नमस्यन्तश्च मां भक्त्या नित्ययुक्ता उपासते।।9.14।।
সততং কীর্তযন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢব্রতাঃ৷
নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে৷৷9.14৷৷
"ব্রতে নিষ্ঠ ও যত্নশীল ভক্তগণ সর্বদা আমার কীর্তন . করে এবং নমষ্কার করে, আমাকে ভক্তিপূর্বক সদা সমাহিত হয়ে আমার উপাসনা করে।"
(গীতা ৯।১৪)
सततं कीर्तयन्तो मां यतन्तश्च दृढव्रताः।
नमस्यन्तश्च मां भक्त्या नित्ययुक्ता उपासते।।9.14।।
সততং কীর্তযন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢব্রতাঃ৷
নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে৷৷9.14৷৷
"ব্রতে নিষ্ঠ ও যত্নশীল ভক্তগণ সর্বদা আমার কীর্তন . করে এবং নমষ্কার করে, আমাকে ভক্তিপূর্বক সদা সমাহিত হয়ে আমার উপাসনা করে।"
(গীতা ৯।১৪)
কীর্তন বলতে প্রকৃত পক্ষে ঈশ্বরের গুণগান গাওয়াকে বুঝায়। কিন্তু অনেকে বলে কীর্তন মানে হল নাকি
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ..." এই ১৬ নাম ৩২ অক্ষর মহামন্ত্র গন্টা কাঁসা বাঁজিয়ে গাওয়া। প্রকৃত পক্ষে কীর্তন বলতে এটা বুঝায় না। কারণ গীতা, উপনিষদ ও বেদের কোথায় এই তথাকথিত মহামন্ত্রের নাম গন্ধও নেই। তাছাড়া এটার প্রকৃত অর্থ কি তাও কোন ধর্মীয় শাস্ত্রে লিখা নেই। তাহলে এটা দিয়ে কি করে ঈশ্বরের গুণগান বা কীর্তন করা হল? তাই বৈদিক সনাতন পদ্ধতিতে কীর্তন করাই শাস্ত্র সম্মত। তাছাড়া বৈদিক সনাতন পদ্ধতিতে কীর্তন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ব্যক্তি, দেশ ও জাতির অনেক উপকার হয়।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ..." এই ১৬ নাম ৩২ অক্ষর মহামন্ত্র গন্টা কাঁসা বাঁজিয়ে গাওয়া। প্রকৃত পক্ষে কীর্তন বলতে এটা বুঝায় না। কারণ গীতা, উপনিষদ ও বেদের কোথায় এই তথাকথিত মহামন্ত্রের নাম গন্ধও নেই। তাছাড়া এটার প্রকৃত অর্থ কি তাও কোন ধর্মীয় শাস্ত্রে লিখা নেই। তাহলে এটা দিয়ে কি করে ঈশ্বরের গুণগান বা কীর্তন করা হল? তাই বৈদিক সনাতন পদ্ধতিতে কীর্তন করাই শাস্ত্র সম্মত। তাছাড়া বৈদিক সনাতন পদ্ধতিতে কীর্তন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ব্যক্তি, দেশ ও জাতির অনেক উপকার হয়।
আমরা সকলেই জানি সাম শব্দের অর্থ হল গান। আর ঈশ্বরের গুণগান সামবেদের মন্ত্রের মাধ্যমে গাওয়াই হল প্রকৃত কীর্তন। তাছাড়া অন্য বেদ মন্ত্র দ্বারাও ঈশ্বরের কীর্তন বা গুণগান গাওয়া যেতে পারে। যেমন গায়ত্রী মন্ত্রের মাধ্যমে প্রত্যহ কীর্তন করা যেতে পারে, আসুন মহামন্ত্র গায়ত্রী দিয়ে একটু কীর্তন করি সকলে-
ॐ भूर्भुवः॒ स्वः॒
तत्स॑वितुर्वरे॑ण्यम्
भ॒र्गो॑ दे॒वस्य॑ धीमहि।
धियो॒ यो नः॑ प्रचो॒दया॑त्॥
ॐ भूर्भुवः॒ स्वः॒
तत्स॑वितुर्वरे॑ण्यम्
भ॒र्गो॑ दे॒वस्य॑ धीमहि।
धियो॒ यो नः॑ प्रचो॒दया॑त्॥
ওম্ ভূর্ভুবঃ স্বঃ। তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি। ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।।
(ঋগবেদ ৩।৬২।১০, যজুর্বেদ ৩।৩৫, ২২।৯,
৩০।২, ৩৬।৩, সামবেদ উত্তরার্চিক,প্রপাঠক
৩, অর্দ্ধপ্রপাঠক ৩, মন্ত্র ১০।)
সরলার্থঃ পরমাত্মা প্রাণস্বরূপ, দুঃখনাশক ও সুখস্বরূপ। জগৎ উৎপাদক দিব্য গুণযুক্ত
পরমাত্মার সেই বরণীয় পাপনাশক শুদ্ধ স্বরূপকে
ধ্যান করি। যিনি আমাদের নির্মল বুদ্ধির প্রেরণা
দান করেন।
পরমাত্মার সেই বরণীয় পাপনাশক শুদ্ধ স্বরূপকে
ধ্যান করি। যিনি আমাদের নির্মল বুদ্ধির প্রেরণা
দান করেন।
গায়ত্রী বেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্ত্র। পরমাত্মার ধ্যানের জন্য গায়ত্রী সিদ্ধ বৈদিক মন্ত্র। এই
মন্ত্রের ঋষি বিশ্বমিত্র এবং দেবতা সবিতা।
বিশ্বমিত্র নামক ঋষি সর্বপ্রথম এই মন্ত্রের
মর্ম উপলব্ধি করিয়া প্রচার করেন। মন্ত্রের
দেবতা বা বিষয় সবিতা অর্থাৎ জগৎস্রষ্টা
ব্রহ্ম।
মন্ত্রের ঋষি বিশ্বমিত্র এবং দেবতা সবিতা।
বিশ্বমিত্র নামক ঋষি সর্বপ্রথম এই মন্ত্রের
মর্ম উপলব্ধি করিয়া প্রচার করেন। মন্ত্রের
দেবতা বা বিষয় সবিতা অর্থাৎ জগৎস্রষ্টা
ব্রহ্ম।
এই মন্ত্রের ছন্দের নাম গায়ত্রী। গায়ৎ- ত্রৈ (পালনে+ ড কর্ত্তরি, স্ত্রীত্বে ঈপ্)= গায়ত্রী। "গায়ন্তং ত্রায়তে যস্মাৎ গায়ত্রী সা
ততঃ স্মৃতা।" গানকারীকে ত্রাণ করে বলিয়াই ইহার নাম গায়ত্রী। সমগ্র বেদের জ্ঞান সূক্ষ্ম ভাবে
গায়ত্রী মন্ত্রে আছে বলেই ইহাকে বেদমাতা বলে।
ততঃ স্মৃতা।" গানকারীকে ত্রাণ করে বলিয়াই ইহার নাম গায়ত্রী। সমগ্র বেদের জ্ঞান সূক্ষ্ম ভাবে
গায়ত্রী মন্ত্রে আছে বলেই ইহাকে বেদমাতা বলে।
এই ভাবে বৈদিক মন্ত্রের মাধ্যমে কীর্তন করা যায়। আবার মানুষের নিজেদের তৈরি অর্থবহ ও বেদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ গানের মাধ্যমেও করা যেতে পারে, তবে তা বেদ বিরোধী না হলেই চলে। যাকে আমরা ভজন কীর্তন বলি। যথা-
আমরা সকল শিশু, জোড় করি হাত,
প্রণমি তোমারে প্রভু, জগতের নাথ।
তুমিই মাতার বুকে দুগ্ধ করি দান,
শিশুকালে আমাদের বাঁচায়েছ প্রাণ।
তুমিই গড়েছ এই, রবি শশি তারা,
বর্ষার জল তব করুণার ধারা।
পাখির সুমিষ্টগান তুমি শিখায়েছ,
গোলাপ মল্লিকা ফুলে সুগন্ধ দিয়াছো।
নিবারিতে তৃষ্ণা তুমি, সৃজিয়াছ জল।
তোমার আদেশে বায়ু বহে সুশীতল।
মাতা পিতা ভাই বোন সখা সখিগণ,
পাইয়াছি সব তব দয়ার কারণ।
অন্নজল যাহা খাই, তাহাও তোমার,
কে পারে বর্ণিত তব করুণা অপার।
আনিয়া শ্রমের অন্ন নিজ মুখে দিব,
যথা শক্তি দশজনে জাকিয়া খাওয়াইব।
এই আশীর্বাদ শুধু করুণ ওহে দয়াময়,
ধর্ম পথে থাকি যেন শ্রমে না হই কাতর।
প্রণমি তোমারে প্রভু, জগতের নাথ।
তুমিই মাতার বুকে দুগ্ধ করি দান,
শিশুকালে আমাদের বাঁচায়েছ প্রাণ।
তুমিই গড়েছ এই, রবি শশি তারা,
বর্ষার জল তব করুণার ধারা।
পাখির সুমিষ্টগান তুমি শিখায়েছ,
গোলাপ মল্লিকা ফুলে সুগন্ধ দিয়াছো।
নিবারিতে তৃষ্ণা তুমি, সৃজিয়াছ জল।
তোমার আদেশে বায়ু বহে সুশীতল।
মাতা পিতা ভাই বোন সখা সখিগণ,
পাইয়াছি সব তব দয়ার কারণ।
অন্নজল যাহা খাই, তাহাও তোমার,
কে পারে বর্ণিত তব করুণা অপার।
আনিয়া শ্রমের অন্ন নিজ মুখে দিব,
যথা শক্তি দশজনে জাকিয়া খাওয়াইব।
এই আশীর্বাদ শুধু করুণ ওহে দয়াময়,
ধর্ম পথে থাকি যেন শ্রমে না হই কাতর।
প্রকৃত পক্ষে কীর্তনের মাধ্যমে ঈশ্বরের গুণগান করতে করতে নিজের আত্মশুদ্ধি করা যায়, নিজের চরিত্রের উন্নতি সাধন করা যায় এবং ধর্ম পথে চলা যায়। আবার এই কীর্তনের মাধ্যমেই দেশ, জাতি ও সমাজ রক্ষায় ভূমিকা পালন করা যায়। কারণ কিছু কিছু বেদ মন্ত্র আছে যা কীর্তন করলে মনের শক্তি ও দেহের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং অপশক্তির বিরূদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া যায় অনায়াসে। বৈদিক সনাতন ধর্মের এই রূপ অসংখ্য বীর যোদ্ধা যার প্রমাণ হিসেবে ইতিহাসের পাতা জুড়ে রয়েছে।
তবে মনে রাখা উচিত নিজেদের তৈরি করা এমন কোন ঈশ্বরীয় গুণগান বা কীর্তন করা উচিত নয় যা তাদেরকেই নপুংশক বানিয়ে ফেলে। বর্তমানে এমন নপুংশকদের বেশী দেখা যায়।
0 মন্তব্য(গুলি)