প্রশ্ন - আপনি বলেছেন গীতায় বলা আছে মন্ত্রের মধ্যে পরমাত্মাই গায়ত্রী। এখন গায়ত্রী মন্ত্রের অর্থসহ একটু ব্যাখ্যা দিন।
উত্তর- হ্যাঁ, গীতা ১০।৩৫নং এ বলা আছে-
"ছন্দ(মন্ত্র) সমূহের মধ্যে আমিই (পরমাত্মাই) গায়ত্রী।"
(গীতা ১০।৩৫)
"ছন্দ(মন্ত্র) সমূহের মধ্যে আমিই (পরমাত্মাই) গায়ত্রী।"
(গীতা ১০।৩৫)
এখন গায়ত্রী মন্ত্র, এর ভাবার্থ ও ব্যাখ্যা নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হল-
"ও৩ম্ ভূর্ভুবঃ স্বঃ।
তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি।
ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।।"
(ঋগবেদ ৩।৬২।১০, যজুর্বেদ ৩।৩৫, ২২।৯,
৩০।২, ৩৬।৩, সামবেদ উত্তরার্চিক, প্রপাঠক ৩, অর্দ্ধপ্রপাঠক ৩, মন্ত্র ১০)
তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি।
ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।।"
(ঋগবেদ ৩।৬২।১০, যজুর্বেদ ৩।৩৫, ২২।৯,
৩০।২, ৩৬।৩, সামবেদ উত্তরার্চিক, প্রপাঠক ৩, অর্দ্ধপ্রপাঠক ৩, মন্ত্র ১০)
ভাবার্থ- পরমাত্মা প্রাণস্বরূপ, দুঃখনাশক ও
সুখস্বরূপ। জগৎ উৎপাদক দিব্য গুণযুক্ত
পরমাত্মার সেই বরণীয় পাপনাশক শুদ্ধ স্বরূপকে
ধ্যান করি। যিনি আমাদের নির্মল বুদ্ধির প্রেরণা
দান করেন।
সুখস্বরূপ। জগৎ উৎপাদক দিব্য গুণযুক্ত
পরমাত্মার সেই বরণীয় পাপনাশক শুদ্ধ স্বরূপকে
ধ্যান করি। যিনি আমাদের নির্মল বুদ্ধির প্রেরণা
দান করেন।
=>> বিস্তারিত_ব্যাখ্যা -
গায়ত্রী বেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্ত্র। পরমাত্মার ধ্যানের জন্য গায়ত্রী সিদ্ধ বৈদিক মন্ত্র। এই মন্ত্রের ঋষি বিশ্বমিত্র এবং দেবতা সবিতা। বিশ্বমিত্র নামক ঋষি সর্বপ্রথম এই মন্ত্রের মর্ম উপলব্ধি করিয়া প্রচার করেন। মন্ত্রের দেবতা বা বিষয় সবিতা অর্থাৎ জগৎস্রষ্টা ব্রহ্ম। এই মন্ত্রের ছন্দের নাম গায়ত্রী।
গায়ত্রী বেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্ত্র। পরমাত্মার ধ্যানের জন্য গায়ত্রী সিদ্ধ বৈদিক মন্ত্র। এই মন্ত্রের ঋষি বিশ্বমিত্র এবং দেবতা সবিতা। বিশ্বমিত্র নামক ঋষি সর্বপ্রথম এই মন্ত্রের মর্ম উপলব্ধি করিয়া প্রচার করেন। মন্ত্রের দেবতা বা বিষয় সবিতা অর্থাৎ জগৎস্রষ্টা ব্রহ্ম। এই মন্ত্রের ছন্দের নাম গায়ত্রী।
গায়ৎ-ত্রৈ (পালনে+ ড কর্ত্তরি, স্ত্রীত্বে ঈপ্)=গায়ত্রী। "গায়ন্তং ত্রায়তে যস্মাৎ গায়ত্রী সা ততঃ স্মৃতা।" গানকারীকে ত্রাণ করে বলিয়াই ইহার নাম গায়ত্রী। সমগ্র বেদের জ্ঞান সূক্ষ্ম ভাবে
গায়ত্রী মন্ত্রে আছে বলেই ইহাকে বেদমাতা বলে।
এই মন্ত্রে দশটি শব্দ আছে। যথা-
তৎ, সবিতুঃ, বরেণ্যম্, ভর্গ, দেবষ্য, ধীমহি, ধিয়ঃ,
যঃ, নঃ, প্রচোদয়াৎ।
গায়ত্রী মন্ত্রের পূর্বে
প্রণব "ও৩ম্" এবং মহাব্যাহৃতি মন্ত্র "ভূর্ভুবঃ
স্বঃ" (ভূঃ, ভুবঃ, স্বঃ) যোগ করিয়া উচ্চারণ
করিতে হয়।
গায়ত্রী মন্ত্রে আছে বলেই ইহাকে বেদমাতা বলে।
এই মন্ত্রে দশটি শব্দ আছে। যথা-
তৎ, সবিতুঃ, বরেণ্যম্, ভর্গ, দেবষ্য, ধীমহি, ধিয়ঃ,
যঃ, নঃ, প্রচোদয়াৎ।
গায়ত্রী মন্ত্রের পূর্বে
প্রণব "ও৩ম্" এবং মহাব্যাহৃতি মন্ত্র "ভূর্ভুবঃ
স্বঃ" (ভূঃ, ভুবঃ, স্বঃ) যোগ করিয়া উচ্চারণ
করিতে হয়।
গায়ত্রী ছন্দের তিন পাদ। তিন পাদে বিভক্ত
করিলে মন্ত্রটি এইরূপ হবে-
১. তৎ সবিতুর্ব্বরেণ্যম।
২. ভর্গো দেবস্য ধীমহি।
৩. ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ। প্রত্যেক পাদে ৮টি করে অক্ষর থাকিবে কিন্তু ১ম
পাদে ৭টি অক্ষর আছে। মন্ত্রে মোট ২৪টি
অক্ষরের স্থানে ২৩টি অক্ষর আছে। ইহাকে
"নিচুৎ" গায়ত্রী বলে। এক অক্ষর বেশী হলে
"ভুরিক" গায়ত্রী বলা হতো।
.
পিঙ্গলাচার্য তার ছন্দঃ সূত্রে বলেছেন-
"উনাধিকেনৈকেন নিচৃৎ ভুরিজৌ।"
(৩।৫৯)
অর্থাৎ ২৪ অক্ষরাত্মক গায়ত্রী ছন্দে ২৩
অক্ষর হলে নিচুৎ ও ২৫ অক্ষর হলে ভুরিক
সংঙ্গা হয়।
"ইয়াদি পূরণঃ"!(৩।২) অর্থাৎ গায়ত্রী প্রভৃতি
ছন্দের পাদে যে স্থলে অক্ষর সংখ্যা কম হবে, সেই
স্থলে "ইয়াদি" দ্বারা পূরণ করিতে হবে। সুতরাং
১ম পাদ এই ভাবে পাঠ করতে হবে- তৎ সবিতুর্ব্বরেণিয়ম্।
.
"ও৩ম্" অব (রক্ষণে)+ ম কর্ত্তরি, রক্ষা করেন
বলিয়া পরমাত্মার নাম ও৩ম্। অ+উ+ম কার মিলিয়া
ওম্ হয়। এই এক নামে পরমাত্মার বহু নাম সূচিত
হয়। অ অর্থে বিরাট, অগ্নি ও বিশ্ব প্রভৃতি, উ
অর্থে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু ও তৈজস প্রভৃতি এবং ম
অর্থে ঈশ্বর, আদিত্য ও প্রাজ্ঞ প্রভৃতি।
.
"ভূরিতি বৈ প্রাণঃ। ভূবরিত্যপানঃ। স্বরিতি
ব্যানঃ।।"
(তৈত্তিরী ৭।৬).
অর্থ- ভূঃ অর্থে প্রাণ। যিনি সর্ব প্রাণীকে প্রাণ
দান করেন, যিনি প্রাণ স্বরূপ, তিনিই "ভূঃ"।
ভুবঃ অর্থে অপান। যিনি দুঃখ বিনাশ করেন তিনিই
"ভূবঃ"।
স্বঃ অর্থে ব্যান। যিনি সর্বত্র ব্যাপক বা যিনি
আনন্দস্বরূপ তিনিই "স্বঃ"।
ভূ (সত্তায়াম)+সুক্ কর্ত্তরি=ভূঃ।
ভূ (সত্তায়াম)+অসুক্ কর্ত্তরি=ভুবঃ।
স্ব (শব্দে)+বিচ্ অধিকরণে= স্বঃ।
"সবিতুঃ" জগৎস্রষ্টা পরমাত্মীয়, সূ (যুঙ্
প্রাণিগর্ভে বিমোচনে)+তৃচ্ কর্ত্তরি সবিতু, ষষ্ঠী
এক বচনে সবিতুঃ প্রসব কর্ত্তার বা স্রষ্টার।
"দেবস্য" দেবতার, দিব (দিবু ক্রীড়া- বিজিগীষা-
ব্যবহারদ্যুতি- স্মৃতি- মোদ- স্বপ্ন- কান্তি
গতিষু) +অন্ কর্ত্তরি= দেব। দিব ধাতুর ক্রীড়া,
জয়েচ্ছা, ব্যবহার, দ্যুতি, স্তুতি, আনন্দ, মত্ততা,
নিদ্রা, জ্ঞান ও গতি এই দশ অর্থের যে কোন
একটি কার্য যাহাতে প্রকাশ পায় তাহাকে দেব বলা
যায়।
নিরূক্তকার যাস্ক বলেন-
"দেবো দানাদ্বা দীপনাদ্বা দ্যোতনাদ্বা দ্যঃস্থানে
ভবোতীতি বাঃ"
(নিরুক্ত ৭।৪।১৫.)
অর্থ- যাহা দাতা প্রদীপক দ্যোতক বা দুঃস্থানীয়
পদার্থ তাহাই দেব।
পরমাত্মা দাতা, জ্ঞানের উদ্দীপক ও দ্যোতক এই
অর্থে তিনি দেব, তিনি জ্যোতির্স্ময় বা জ্ঞানময়,
তাহার "তৎ" সেই প্রত্যক্ষ। "বরেণ্যম" বরণীয়,
প্রার্থনীয় ও উপাসনীয়। বৃ (সম্ভক্তৌ)+ এন্য
কর্ম্মণি= বরেণ্য। "ভর্গ" শুদ্ধ জ্ঞানস্বরূপ।
ভ্রসজ (পাকে)+ঘঙ্ কর্ত্তরি=ভর্গঃ। "ধীমহি"
ধ্যান করি। বৈদিক প্রয়োগে ধ্যৈ ধাতু
আত্মনেপদী ও সম্প্রসারণ যুক্ত হয়েছে।
লৌকিক সংস্কৃত ব্যাকরণ মতে ধ্যৈ ধাতু পরস্মৈপদী "ধ্যায়েম" হবে। "যঃ" যে পরমেশ্বর। "নঃ" আমাদের। "ধিয়ঃ" ধারণাবতী বুদ্ধির।
"প্রচোদয়াৎ" প্ররণা দান করেন।
করিলে মন্ত্রটি এইরূপ হবে-
১. তৎ সবিতুর্ব্বরেণ্যম।
২. ভর্গো দেবস্য ধীমহি।
৩. ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ। প্রত্যেক পাদে ৮টি করে অক্ষর থাকিবে কিন্তু ১ম
পাদে ৭টি অক্ষর আছে। মন্ত্রে মোট ২৪টি
অক্ষরের স্থানে ২৩টি অক্ষর আছে। ইহাকে
"নিচুৎ" গায়ত্রী বলে। এক অক্ষর বেশী হলে
"ভুরিক" গায়ত্রী বলা হতো।
.
পিঙ্গলাচার্য তার ছন্দঃ সূত্রে বলেছেন-
"উনাধিকেনৈকেন নিচৃৎ ভুরিজৌ।"
(৩।৫৯)
অর্থাৎ ২৪ অক্ষরাত্মক গায়ত্রী ছন্দে ২৩
অক্ষর হলে নিচুৎ ও ২৫ অক্ষর হলে ভুরিক
সংঙ্গা হয়।
"ইয়াদি পূরণঃ"!(৩।২) অর্থাৎ গায়ত্রী প্রভৃতি
ছন্দের পাদে যে স্থলে অক্ষর সংখ্যা কম হবে, সেই
স্থলে "ইয়াদি" দ্বারা পূরণ করিতে হবে। সুতরাং
১ম পাদ এই ভাবে পাঠ করতে হবে- তৎ সবিতুর্ব্বরেণিয়ম্।
.
"ও৩ম্" অব (রক্ষণে)+ ম কর্ত্তরি, রক্ষা করেন
বলিয়া পরমাত্মার নাম ও৩ম্। অ+উ+ম কার মিলিয়া
ওম্ হয়। এই এক নামে পরমাত্মার বহু নাম সূচিত
হয়। অ অর্থে বিরাট, অগ্নি ও বিশ্ব প্রভৃতি, উ
অর্থে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু ও তৈজস প্রভৃতি এবং ম
অর্থে ঈশ্বর, আদিত্য ও প্রাজ্ঞ প্রভৃতি।
.
"ভূরিতি বৈ প্রাণঃ। ভূবরিত্যপানঃ। স্বরিতি
ব্যানঃ।।"
(তৈত্তিরী ৭।৬).
অর্থ- ভূঃ অর্থে প্রাণ। যিনি সর্ব প্রাণীকে প্রাণ
দান করেন, যিনি প্রাণ স্বরূপ, তিনিই "ভূঃ"।
ভুবঃ অর্থে অপান। যিনি দুঃখ বিনাশ করেন তিনিই
"ভূবঃ"।
স্বঃ অর্থে ব্যান। যিনি সর্বত্র ব্যাপক বা যিনি
আনন্দস্বরূপ তিনিই "স্বঃ"।
ভূ (সত্তায়াম)+সুক্ কর্ত্তরি=ভূঃ।
ভূ (সত্তায়াম)+অসুক্ কর্ত্তরি=ভুবঃ।
স্ব (শব্দে)+বিচ্ অধিকরণে= স্বঃ।
"সবিতুঃ" জগৎস্রষ্টা পরমাত্মীয়, সূ (যুঙ্
প্রাণিগর্ভে বিমোচনে)+তৃচ্ কর্ত্তরি সবিতু, ষষ্ঠী
এক বচনে সবিতুঃ প্রসব কর্ত্তার বা স্রষ্টার।
"দেবস্য" দেবতার, দিব (দিবু ক্রীড়া- বিজিগীষা-
ব্যবহারদ্যুতি- স্মৃতি- মোদ- স্বপ্ন- কান্তি
গতিষু) +অন্ কর্ত্তরি= দেব। দিব ধাতুর ক্রীড়া,
জয়েচ্ছা, ব্যবহার, দ্যুতি, স্তুতি, আনন্দ, মত্ততা,
নিদ্রা, জ্ঞান ও গতি এই দশ অর্থের যে কোন
একটি কার্য যাহাতে প্রকাশ পায় তাহাকে দেব বলা
যায়।
নিরূক্তকার যাস্ক বলেন-
"দেবো দানাদ্বা দীপনাদ্বা দ্যোতনাদ্বা দ্যঃস্থানে
ভবোতীতি বাঃ"
(নিরুক্ত ৭।৪।১৫.)
অর্থ- যাহা দাতা প্রদীপক দ্যোতক বা দুঃস্থানীয়
পদার্থ তাহাই দেব।
পরমাত্মা দাতা, জ্ঞানের উদ্দীপক ও দ্যোতক এই
অর্থে তিনি দেব, তিনি জ্যোতির্স্ময় বা জ্ঞানময়,
তাহার "তৎ" সেই প্রত্যক্ষ। "বরেণ্যম" বরণীয়,
প্রার্থনীয় ও উপাসনীয়। বৃ (সম্ভক্তৌ)+ এন্য
কর্ম্মণি= বরেণ্য। "ভর্গ" শুদ্ধ জ্ঞানস্বরূপ।
ভ্রসজ (পাকে)+ঘঙ্ কর্ত্তরি=ভর্গঃ। "ধীমহি"
ধ্যান করি। বৈদিক প্রয়োগে ধ্যৈ ধাতু
আত্মনেপদী ও সম্প্রসারণ যুক্ত হয়েছে।
লৌকিক সংস্কৃত ব্যাকরণ মতে ধ্যৈ ধাতু পরস্মৈপদী "ধ্যায়েম" হবে। "যঃ" যে পরমেশ্বর। "নঃ" আমাদের। "ধিয়ঃ" ধারণাবতী বুদ্ধির।
"প্রচোদয়াৎ" প্ররণা দান করেন।
0 মন্তব্য(গুলি)