https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

গীতা_বিশ্লেষণঃ ৩২- ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদের "শ্রীমদ্ভাগবতগীতা যথাযথ" প্রকৃত পক্ষে কতটুকু যথাযথ?

Tuesday, July 18, 2017


প্রশ্ন- ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদের
"শ্রীমদ্ভাগবতগীতা যথাযথ" প্রকৃত পক্ষে কতটুকু
যথাযথ?

উত্তর- আপনারাই তা যাচাই করুন-
"...তোমার এই অদ্ভুত রূপ দর্শন করে ত্রিলোক
অত্যন্ত ভীত হচ্ছে।" গীতা ১১।২০.
এই শ্লোকের তাৎপর্যে প্রভুপাদ লিখেছে যে-

"...কেবল অর্জুনই ঐ রূপ দেখেনি, অন্যান্য
গ্রহের অধিবাসীরাও দেখেছে।... ভগবান যাদের
দিব্যদৃষ্টি দিয়েছে তারা সকলেই দেখেছে।" অর্থাৎ
অর্জুনকে যখন দেখালেন তখন সেই সুযোগে
দিব্যদৃষ্টি প্রাপ্ত সকলেই দেখেছে মানে
সঞ্জয়ও দেখেছে, ভালো কথা!

ঐ তাৎপর্যে প্রভুপাদ কি  মিথ্যাচার করেননি? তিনি
বলেছেন যাদের দিব্যদৃষ্টি দান করেছেন তারা
দেখেছে। অথচ ঐ শ্লোকের কোথাও বলা
হয়নি অন্যকাওকে দিব্যচক্ষু দেওয়া হয়েছিল। বলা
আছে ঐ রূপ দেখে
ত্রিলোক অত্যন্ত ভীত হচ্ছে। মহাভারতেও এমন
কথা নেই যে ত্রিলোকের সকলকে দিব্যচক্ষু
দেওয়া হয়েছিল।

আবার গীতা ১১।২৩নং শ্লোকের কোন তাৎপর্যই
প্রভুপাদ করে নাই, শুধু অনুবাদ করেছেন। কেননা
এই
শ্লোকের তাৎপর্য করলে ওনার পূর্বের তাৎপর্য
মিথ্যা হয়ে যাবে। সেখানে বলা আছে-
"...তোমার বিরাটরূপ দর্শন করে সমস্ত প্রাণী
অত্যন্ত ব্যথিত হচ্ছে ..।" গীতা ১১।২৩.

মহাভারতের হতে আমরা সকলেই জানি শুধুমাত্র
সঞ্জয়কে দিব্যচক্ষু দিয়েছিলেন ব্যাসদেব,
তাহলে শুধু তিনিই দেখার কথা। অথচ ঐ শ্লোকে
বলা আছে সমস্ত
প্রাণী দেখেছে! দিব্যচক্ষু ছাড়া ত্রিলোকের
সমস্ত প্রাণী ঐ রূপ কি করে দেখলো? যদি
শুধুমাত্র দেবতারা ও ভালো
মানুষরা দেখতো তাহলেও এটা মেনে নেওয়া
যেত, কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হল  অসুরগণও সেই
রূপ দেখেছেন! প্রভুপাদ এই শ্লোকেরও
তাৎপর্য করেনি, দেখুন-
"...মরুতগণ, পিতৃগণ, গন্ধর্বগণ, যক্ষগণ,  অসুরগণ ও
সিদ্ধগণ সকলেই বিস্মিত হয়ে তোমাকে দর্শন
করছে।"
গীতা১১ ।২২.

অথচ গীতা ১১।৪ নং শ্লোকে শুধুমাত্র অর্জুন ঐ
রূপ দেখতে চেয়েছে, আর গীতা ১১।৮নং
শ্লোকে অর্জুনকে
বলা হয়েছে- "তুমি আমার অচিন্ত্য যোগৈশ্বর্য
দর্শন কর।"

এখানে অন্য কাউকেই দেখার অনুমতি দেয়নি অথচ
ত্রিলোকের সমস্ত লোক দেখে ফেলল কি
করে? সকলেই দেখে থাকলে কৌরবরা সকলেই
তা দেখতো,
ধৃতরাষ্ট, ভীষ্ম, দ্রোণাচার্য ও শকুনি ইত্যাদি
সকলেই। আর যুদ্ধও বন্ধ করে দিত, অথচ তা হয়নি,
কারণ তারাও ঐ রূপ দেখেনি! তাহলে কি আমরা
বলতে পারি না ঐ শ্লোকগুলোতে সমস্যা বা
অনুবাদে সমস্যা আছে?

আবার দেখুন-
"হে অর্জুন! আমি প্রসন্ন হয়ে  তোমাকে আমার
... এই শ্রেষ্ঠ রূপ দেখালাম। তুমি ছাড়া পূর্বে
কেউই এই অনন্ত, আদি ও তেজোময় রূপ
দেখেনি।" গীতা ১১।৪৭.
শ্লোকের তাৎপর্যে প্রভুপাদ বলেছেন যে
অর্জুন ঐ রূপ দেখতে চেয়েছে বলেই কৃষ্ণ
তা অর্জুনকে দেখালেন। কিন্তু কেউই অর্জুনের
পূর্বে দেখেনি।

এছাড়া পরের শ্লোকে আবারও বলা হল-
"...!বেদ অধ্যায়ন,যজ্ঞ, দান, পূণ্যকর্ম ও কঠোর
তপস্যার দ্বারা এই জড় জগতে তুমি ছাড়া অন্য কেউ
আমার এই বিশ্বরূপ দর্শন করতে সমর্থ নয়।" গীতা
১১।৪৮.
তাহলে ত্রিলোকের অন্য সকল প্রাণী
দেখলো কি করে?

ধর্মরাজ যুথিষ্ঠির যিনি কিনা জীবনে কোন
অধর্মের কাজ করে নাই, তিনিই ঐরূপ দেখেনি। যিনি
কৃষ্ণকে
এতটাই মান্য করতেন যে তার কথায় দ্রোণাচার্যকে
বধ করার জন্য শেষ পর্যন্ত মিথ্যে কথাও
বলেছেন। অথচ
সেই যুথিষ্ঠিরই ঐ রূপ দেখেনি, অথচ দেখেছে
তথাকথিত পৌরাণিক কামুক দেবতা ও অসুররা! যুথিষ্ঠির এর
মত এই রকম পরম ভক্ত কি আর জগতে মিলে?

প্রশ্ন- তাহলে বিশ্বরূপ দেখেছে কে কে?
উত্তর- সেই প্রকৃত সত্যটা আপাতত আমার কাছেই
থাক। কারণ গীতায় বলা আছে- "...শুধু মাত্র
শ্রদ্ধাযুক্ত ব্যক্তিদেরই গীতা জ্ঞান বলতে এবং
যারা সংযমহীন, অভক্ত, পরিচর্যাহীন এবং আমার প্রতি
বিদ্বেষ ভাবাপন্ন তাদেরকে কখনো এই
গোপনীয় জ্ঞান বলা উচিত নয়।"
গীতা ১৮।৬৭,৬৮.

পরিশেষে এটাই বলতে চাই যে, প্রভুপাদের
গীতায় এইরূপ আরো অনেক কিছু দেখানো
যাবে যেখানে
পূর্বের বর্ণনার সাথে পরের বর্ণনার অসঙ্গতি
আছে।

  1. প্রভুপাদের সকল ভন্ডামি ফাঁস করুণ।

    ReplyDelete