https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

গীতা বিশ্লেষনঃ গীতক্তো বৈদিক কর্ম্ম

Wednesday, July 26, 2017
   
       

আপনি কি নিন্মোলিখিত কর্ম্ম সমূহ সম্পর্কে অবগত আছেন ? গীতা কি কি কর্ম্মের উপদেশ দিয়েছেন আর আপনি কি কি কর্ম্ম করিতেছেন ……..?

প্রথম ও দ্বিতীয় অধ্যায়ের আলোচনান্তে, অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বলিলেন
»অর্জুন উবাচঃ« ব্যামিশ্রেণৈব বাক্যেন বুদ্ধিং মোহয়সীব মে। তদেকং বদ নিশ্চিত্য যেন শ্রেয়োঃহমাপুয়াম্।। ৩/২ বঙ্গানুবাদঃ — বিমিশ্র বাক্য দ্বারা আমার বুদ্ধিকে যেন মোহিত করিয়া দিতেছ ; আমি যাহাতে শ্রেয়লাভ করিতে পারি এরূপ একটি নিশ্চয় করিয়া বল।। »ভগবান উবাচঃ« লোকহস্মিন্ দ্বিবিধা নিষ্ঠা পুরা প্রোক্ত ময়ানঘ। জ্ঞান যসগেন সাংখ্যানাং কর্মযোগেন যোগিনাম্।। ৩/৩ বঙ্গানুবাদঃ — হে অনাঘ! আমি পূর্বে বলিয়াছি, এই লোকে নিষ্ঠা দুই প্রকার —জ্ঞানযোগদ্বারা সাংখ্যদিগের নিষ্ঠা এবং কর্মযোগদ্বারা যোগিদের নিষ্ঠা ।। নিয়তং কুরু কর্ম্ম ত্বং কর্ম্ম জ্যায়োহ্যকর্ম্মণঃ। শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিধ্যেদকর্ম্মণঃ।। ৩/৮ বঙ্গানুবাদঃ — তুমি নিয়তভাবে কর্ম্ম কর, যেহেতু কর্ম্ম অকর্ম্ম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ; অধিক কি, কর্ম্ম না করিলে তোমার শরীর-যাত্রাই নির্ব্বাহ হইবে না ।। যজ্ঞার্থাৎ কর্ম্মণ্যোহন্যত্র লোকহয়ং কর্ম্মবন্ধনঃ। তদর্থং কর্ম্ম কৌন্তেয় মুক্তসঙ্গ সমাচর।। ৩/৯ বঙ্গানুবাদঃ — যজ্ঞার্থ ব্যাতীত অন্য কর্ম্ম করিলে এই লোকে কর্ম্ম বন্ধনে আবদ্ধ হইতে হয়। অতএব কৌন্তেয় ! তুমি অনাসক্ত হইয়া যজ্ঞার্থে কর্ম্ম কর ।। [যজ্ঞ অর্থে হোম অর্থাৎ দেবোদ্দেশে মন্ত্রোচারক পূর্বক অগ্নিতে ঘৃতাদি ক্ষেপন। কেন দেবোদ্দেশে ঘৃতাহুতি? পরের শ্লোকে দ্রঃ ] সহযজ্ঞাঃ প্রজাঃ সৃষ্ট্বা পুরোবাচ প্রজাপতিঃ। অনেন প্রসবিষ্যধ্বমেষ বোহস্ত্বিষ্টকামধুক্।। ৩/১০ বঙ্গানুবাদঃ — সৃষ্টির প্রথমে প্রজাপতি সহযজ্ঞ প্রজা সৃষ্টি করিয়া বলিয়াছিলেন — এই যজ্ঞদ্বারা তোমরা উত্তরোত্তর আত্মোন্নতি লাভ কর, ইহা তোমাদের ইষ্টফলপ্রদ হউক।। দেবান্ ভাবয়তানেন্ তে দেবা ভাবয়ন্তু বঃ। পরস্পরং ভাবয়ন্তঃ শ্রেয়ঃ পরমব্যপ্স্যথ।। ৩/১১ বঙ্গানুবাদঃ — এই যজ্ঞদ্বারা তোমরা দেবতাগণের ভাবনা কর ; সেই দেবতাগণ তোমাদিগকে ভাবনা করুক। এইরূপ পরস্পর ভাবনা দ্বারা তোমরা পরম ইষ্টলাভ করিবে ।। ইষ্টান্ ভোগান্ হি বো দেবা দাস্যন্তে যজ্ঞভাবিতাঃ। 
তৈর্দত্তানপ্রদায়েভ্যো যো ভূঙক্তেস্তেন এব সঃ ।। ৩/১২ বঙ্গানুবাদঃ — দেবগন যজ্ঞ দ্বারা ভাবিত হইলে তোমাদিগকে ইষ্টভোগ প্রদান করিবেন ; তাঁহাদের প্রদত্ত ভোগ্য তাঁহাদিগকে না দিয়া যে নিজে ভোগ করে, সে নিশ্চই চোর ।। যজ্ঞাশিষ্টাশিনঃ সন্তো মুচ্যন্তে সর্ব্বকিল্বিষৈঃ। ভুঞ্জতে তে ত্বঘং পাপা যে পচন্ত্যাত্মকারণাৎ।। ৩/১৩ বঙ্গানুবাদঃ — যজ্ঞশেষ ভোজী সাধুগণ সর্ব্বপাপ হইতে মুক্ত হয়েন কিন্তু যাহারা নিজের জন্য পাক করে, সেই পাপাচারীরা পাপই ভোজন করে ।। অন্নাদ্ভবন্তি ভূতানি পর্জ্জন্যাদন্নসম্ভবঃ। যজ্ঞাদ্ভবতি পর্জ্জন্যো যজ্ঞঃ কর্ম্মসমদ্ভবঃ।। কর্ম্ম ব্রহ্মোদ্ভবং বিদ্ধি ব্রহ্মাক্ষরসমুদ্ভবম্ । তস্মাৎ সর্ব্বগতং ব্রহ্ম নিত্যং যজ্ঞে প্রতিষজঠিতম্ ।। ৩/১৪-১৫ বঙ্গানুবাদঃ — অন্ন হইতে ভূত সকল উৎপন্ন হয়, পর্জ্জন্ন (বৃষ্টি) হইতে অন্নসম্ভব (অন্নের উৎপত্তি) হয়, যজ্ঞ হইতে পর্জ্জন্য উৎপন্ন হয়, যজ্ঞ কর্ম্ম হইতে উৎপন্ন, কর্ম্ম ব্রহ্ম হইতে উৎপন্ন আর ব্রহ্ম অক্ষর হইতে উৎপন্ন জানিও । এই জন্য সর্ব্বগত ব্রহ্ম নিত্য যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিত ।। এবং প্রবর্ত্তিতং চক্রং নানুবর্ত্তয়তীহ যঃ । অঘায়ুরিন্দ্রিয়ারামো মোঘং পার্থ স জীবতী ।। ৩/১৬ বঙ্গানুবাদঃ — হে পার্থ ! যে এখানে এইরূপ প্রবর্ত্তিত চক্রের অনুবর্তন না করে সে অঘায়ু, ইন্দ্রিয়ারাম এবং বৃথা জীবনধারী ।। কর্ম্মণৈব হি সংসিদ্ধামাস্থিতা জনকাদয়ঃ। লোকসলগ্রহমেবাপি সংপশ্যন্ কত্তুর্মহর্সি ।। ৩/২০ বঙ্গানুবাদঃ — জনকাদি কর্ম্ম দ্বারাই সংসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন ; একমাত্র লোক সংগ্রহের দিকে দৃষ্টি রাখিয়াই তোমার কর্ম্ম করা উচিৎ।। যদ্ যদাচরিত শ্রেষ্ঠস্তত্তদেবেতরো জনঃ । স যৎ প্রমাণং কুরুতে লোকস্তদনুবর্ত্ততে ।। ৩/২১ বঙ্গানুবাদঃ — শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি যেরূপ আচরণ করেন, ইতরেরাও তাঁহারই অনুসরণ করিয়া থাকে। তিনি যাহা প্রমাণ করেন, লোকে তাহাই আদর্শ বলিয়া গ্রহণ করেন ।। সর্ব্বেহপ্যোতে যজ্ঞবিদো যজ্ঞক্ষয়িতকল্মষাঃ। যজ্ঞশিষ্ঠামৃতভূজ যান্তি ব্রহ্ম সনাতনম্ ।। নায়ং লোকেহস্ত্যযজ্ঞস্য কুত্যোহন্যঃ কুরুসত্তম ।। এবং বহুবিধা যজ্ঞা বিততা ব্রহ্মণোমুখে। কর্ম্মজান্ বিদ্ধি তান্ সর্ব্বানেবং জ্ঞাত্মা বিমোক্ষ্যসে ।। বঙ্গানুবাদঃ — এই যজ্ঞবিদ্ গণ সকলেই যজ্ঞানুষ্ঠানে নিষ্পাপ এবং যজ্ঞ শেষরূপ অমৃত ভোজী হইয়া অনন্ত ব্রহ্মত্ব প্রাপ্ত হয়েন। হে কুরুষত্তম ! যজ্ঞহীন লোকের ইহলোকই নাই, অন্য লোক কেমন করিয়া থাকিবে ? এইরূপ বহুবিদ যজ্ঞ ব্রহ্ম মুখে (বেদে) কথিত আছে ; সে সবগুলিই কর্ম্মজ জানিবে ; এই রূপ জানিয়াই মুক্তিলাভ করিতে পারিবে ।। যঃ শাস্ত্রবিধিমুৎসৃজ বর্ত্ততে কামচারতাঃ। ন স সিদ্ধিমবাপ্নোতি ন সুখং ন পরাং গতিম্।। ১৬/২৩ বঙ্গানুবাদঃ — যে শাস্ত্রবিধি পরিত্যাগ করিয়া সেচ্ছাচারী হয়, সে সিদ্ধি প্রাপ্ত হয় না, এবং পরাগতিও প্রাপ্ত হয় না ।। যজ্ঞানানতপঃকর্ম্ম ন ত্যাজ্যং কার্য্যমেব তৎ। যজ্ঞো দানং তপশ্চৈব পাবনানি মনিষিনাম্ ।। ১৮/৫ বঙ্গানুবাদঃ — যজ্ঞ, দান, তপ, কর্ম্ম পরিত্যাজ্য নহে, তাহা অবশ্য কর্ত্তব্য যজ্ঞ, দান তপই মনীষীদিগের চিত্তশুদ্ধিকারক ।। ওম্ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ |||