
তন্ত্র-শাস্ত্রকার এইজন্যই বলিয়াছেন—
‘বহবো গুরবঃ সন্তি শিষ্যা বিত্তাপহারকাঃ দূর্লভঃ সদ্গুরু দেবী শিষ্য সন্তাপহারকঃ’
→ “হে দেবী ! শিষ্যের ধন অপহরণের জন্য অনেক গুরুই আছে, কিন্তু শিষ্যের সন্তাপ অপহরণের জন্য গুরু পাওয়া দুষ্কর, গুরুর কবল হইতে নিস্কৃতি পাওয়া আজকাল একরূপ অসম্ভব হইয়াছে ।
বহু ব্রাহ্মণ বেদবিদ্যা ভুলিয়া ডাক্তার, কবিরাজ, উকিল, মোক্তার বা কেরাণী সাজিয়াছেন এবং যাহাদের ভাগ্যে তাহা ঘটে নাই, তাঁহারা তিনটির যে কোনও একটি ফুৎকার বৃত্তি গ্রহণ করিয়াছেন —
(১) উনোনে ফুঁ বা পাচকগিরি, (২) শঙ্খে ফুঁ বা পূজারীগিরি এবং (৩) কানে ফুঁ বা গুরুগিরি । এই কান ফুঁকা গুরুদের হস্ত হইতে নিস্কৃতি পাইবার জন্যই শাস্ত্রকারগণ গুরুর লক্ষণ বর্ণনা করিয়াছেন । বেদ প্রথমেই বলিলেন— ‘আচার্যো ব্রহ্মচর্যেণ ব্রহ্মচারিণমিচ্ছতে’ (অথর্ব্ব বেদ ১১। ৫।১৭)
অর্থ — গুরুকে ব্রহ্মচর্য্য অবলম্বন করিতে হইবে, তাহার পর ব্রহ্মচারী বা শিষ্যলাভের ইচ্ছা করিবে । শুধু তাহাই নহে । গুরুর এই সব গুণ আছে কি না পরীক্ষা করিতে হইবে ।
তাঁহাকে শুদ্ধতাপূর্বক বিদ্যাভ্যাসী এবং শিল্প কলা, কৌশল, চিত্র লেখনাদি ও হস্তক্রিয়াদিতে কুশল হইতে হইবে ; তাঁহাকে কর্মদক্ষ চতুর অথচ সরল স্বভাব ও শুদ্ধ হইতে হইবে ; তাঁহার হস্তাদি বৃথা কর্ম হইতে বিরত থাকিবে ; পাঠ্য পুস্তক ও মন্ত্রাদি বিষয়ে তাঁহাকে নিপুণ হইতে হইবে ; ইন্দ্রিয়াদি তাঁহার সবল থাকিবে । কোনরূপে যেন তিনি অঙ্গহীন বা রোগগ্রস্থ না হন ; তাঁহাকে পদার্থ বিদ্যায় পারদর্শী হইতে হইবে । কাহাকেও তিনি নিন্দা করিবেন না । তিনি ক্রোধ হীন, কষ্টসহিষ্ণু, শিষ্যবৎসল ও শাস্ত্রজ্ঞ হইবেন । শিষ্যকে জ্ঞাতব্য বিষয় সহজেই বুঝাইয়া দিবার ক্ষমতা থাকা চাই । যেমন উপযুক্ত সময় মেঘবর্ষণ করিলে শষ্য উৎপন্ন হয় এবং সকলে আনন্দিত হয় । তদ্রুপ শিষ্যের হৃদয়ক্ষেত্রে বিদ্যারুপ মেঘ বর্ষণ করাইয়া তাহাকে সর্ব্বগুণ সম্পন্ন করিতে পারিলে তবে সকলে আনন্দিত হইবে ।
গুরুর এইসব গুণ থাকা চাই । “গুরুকে সমগুণাবলম্বী ইন্দ্রিয়জয়ী, আচার -বিনয় বিদ্যাদি গুণযুক্ত, বিনীত শুদ্ধ বেশধারী, শদ্ধাচার সুপ্রতিষ্ঠা, পবিত্র, দক্ষ, সুবুদ্ধিমান, কুশলবুদ্ধিযুক্ত, সর্ব্বশাস্ত্রে পারদর্শী, নিত্য -নৈমিত্তিক কার্য্যাদিতে সুপটু, শুদ্ধ, দয়ালু, সচ্চরিত্র, সদ্বংশজাত, বিদ্বান পরস্ত্রীতে অনাশক্ত ও দৃঢ়সংকল্প হইতে হইবে ।”
গুরুর এইসব গুণ থাকা চাই । “গুরুকে সমগুণাবলম্বী ইন্দ্রিয়জয়ী, আচার -বিনয় বিদ্যাদি গুণযুক্ত, বিনীত শুদ্ধ বেশধারী, শদ্ধাচার সুপ্রতিষ্ঠা, পবিত্র, দক্ষ, সুবুদ্ধিমান, কুশলবুদ্ধিযুক্ত, সর্ব্বশাস্ত্রে পারদর্শী, নিত্য -নৈমিত্তিক কার্য্যাদিতে সুপটু, শুদ্ধ, দয়ালু, সচ্চরিত্র, সদ্বংশজাত, বিদ্বান পরস্ত্রীতে অনাশক্ত ও দৃঢ়সংকল্প হইতে হইবে ।”
0 মন্তব্য(গুলি)