https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

বৈদিক ঈশ্বর বনাম সেমেটিক সৃষ্টিকর্তা :পর্ব ৬-জাতিবাদ এবং ভেদভাব

Monday, December 17, 2018


বাইবেলে জাতিবাদ এবং ভেদভাব

আর হেবল প্রভুর জন্য তার মেষপাল থেকে বাছাই করা সেরা মেষগুলোর সেরা অংশ নিয়ে এল। প্রভু হেবল তার উপহার গ্রহণ করলেন,কিন্তু প্রভু কয়িন তার উপহার প্রত্যাখ্যান করলেন।
এতে কয়িনের ভীষণ দুঃখ আর রাগ হল। উৎপত্তি :,

প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত আকাশের দিকে তুলে ধরো, তাহলে মিশরের ওপর শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে| মিশরের সমস্ত ক্ষেতের মানুষ, পশু গাছপালার ওপর এই শিলাবৃষ্টি হবে।নির্গমন :২২

কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের কোনরকম ক্ষতি হবে না। এমন কি কোনো কুকুর পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের অথবা তাদের পশুদের দিকে ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করবে না। এর ফলে, তোমরা বুঝতে পারবে আমি মিশরীয়দের থেকে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে কতখানি অন্যরকম আচরণ করি। নির্গমন ১১:

তোমরা এমনকি তোমাদের মৃত্যুর আগে এই সমস্ত বিদেশী দাসদের তোমাদের ছেলেমেয়েদের হেফাজতে দিয়ে যেতে পারো, ইস্রায়েলেতে তারা তোমাদের ছেলেমেয়েদের অধিকারে থাকে। তারা চিরকালের জন্য তোমাদের দাস হবে। তোমরা এইসব বিদেশীদের দাস বানাতে পারো; কিন্তু তোমরা অবশ্যই তোমাদের নিজেদের ভাইদের, ইস্রায়েলের লোকদের নির্দয় মনিব হবে না। লেবীয়পুস্তক ২৫:৪৬

কারণ তোমরা প্রভুর নিজের লোক। পৃথিবীর ওপরের সমস্ত জাতির মধ্য থেকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের তাঁর বিশেষ লোক হবার জন্য বেছে নিয়েছিলেন, সে লোকরা কেবলমাত্র তাঁরই হবে। দ্বিতীয় বিবরণ :

তোমরা অন্যান্য লোকদের থেকে আলাদা। তোমরা হলে প্রভুর বিশেষ লোকজন। পৃথিবীর সমস্ত লোকর মধ্য থেকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর বিশেষ লোক হিসেবে তোমাদেরই নির্বাচিত করেছিলেন। দ্বিতীয় বিবরণ ১৪:

প্রতি সাত বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই ঋণ ক্ষমা করবে। তোমরা এই প্রকারে তা করবে: কোন লোক যে অপর ইস্রায়েলীয়কে টাকা ধার দিয়েছে, সে অবশ্যই সেই ঋণ ক্ষমা করবে। সে তার প্রতিবেশীকে ঋণ শোধ করতে বাধ্য করবে না, কারণ ঈশ্বরের সম্মানার্থে সেই বছরে দেনা বাতিল করার বছর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। তোমরা কোনো বিদেশীর কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে পার। কিন্তু আরেকজন ইস্রায়েলীর তোমার কাছে যে দেনা আছে সেটা তোমরা অবশ্যই বাতিল করবে। দ্বিতীয় বিবরণ ১৫:,,

যে লোকরা অণ্ডকোষ চূর্ণ অথবা জননাঙ্গ ছিন্ন হয়ে গেছে, সে ইস্রায়েলের লোকদের সাথে প্রভুর উপাসনায় যোগ দিতে পারবে না।দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:

তোমরা কোনো বিদেশীর কাছে সুদ নিতে পার, কিন্তু তোমরা কোন ইস্রায়েলীয়র কাছ থেকে সুদ নিও না। তোমরা এই বিধিগুলো মেনে চললে তোমাদের প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমরা যে দেশে বাস করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা যা কিছু করবে তাতেই আশীর্বাদ করবেন। দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:২০

মন্তব্য বাইবেলের ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন। এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বাইবেলের ঈশ্বর ন্যায়বিচারক নয়। যে ভেদভাব করে সে কিসের ঈশ্বর? কর্মফল স্বরুপ কোনো ব্যক্তির দৈহিক সমস্যা থাকলে তাঁকে কেন উপাসনায় যোগ দিতে দেওয়া যাবে না?

ইস্লামে ভেদভাব

বুখারী-৪-৫২-২৮৮: মুহাম্মদ ইন্তিকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। (১) মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ (মক্কামদীনা, ইয়ামামা ও ইয়ামান) থেকে বিতাড়িত করো। (২) প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও আনুরূপ দিও। (৩) (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি।

মুসলিম-১৯-৪৩২২: সাব ইবন জাছছামা থেকে বর্ণিত: আমি মুহাম্মদ-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা রাতের আধারে অতর্কিত আক্রমণে মুশরিকদের শিশুদের উপরও আঘাত করে ফেলি। মুহাম্মদ বললেনঃ, তারাও তাদের (মুশরিক যোদ্ধাদের) অন্তর্গত।


মুহাম্মদের হাদিস অনুসারে একজন মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। দারুণ প্রসংশনীয় নীতি ইসলামের; কিন্তু মুসলমান না হলে সে আর আপনার ভাই হবার যোগত্য রাখে না! একজন অমুসলিম ইসলামের চোখে নোংরা, জঘন্য, পাপী, ঘৃণার পাত্র! তা সে পৃথিবীর সবচেয়ে দানশীল-সহনশীল-চিন্তা চেতনায় যতই মহৎ মানুষই হন!  ইহুদী, খ্রিষ্টান (নাছারা) আর বাদবাকী জাতপাতের মানুষ নিয়ে মুহাম্মদের মানসিকতা বোঝা যাবে নিচের হাদিসগুলো পাঠে:
বুখারী-১-১২-৭৪৯: মুহাম্মদ বলেছেন: ইমাম "ওয়ালাদ দওয়াল্বিন.. তাদের পথে নয় যারা গযবপ্রাপ্ত (ঈহুদী) ও পথভ্রষ্ট (খ্রিস্টান) নয়" পড়লে তোমরা 'আমীন' বলো। কেননা, যার এ (আমীন) বলা ফিরিশতাদের (আমীন) বলার সাথে একই সময় হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
বুখারী-২-২৩-৪৫৭: মুহাম্মদ একবার সূর্য ডুবে যাওয়ার পর বের হলেন, তখন তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়ে বললেন: ঈহুদীদের কবরে আযাব দেওয়া হচ্ছে। (এটা আযাব দেওয়ার আওয়াজ)
বুখারী-৩-৩১-২২২: মুহাম্মদ মদীনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইহুদীগণ 'আশুরার দিনে রোজা/সাওম পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন: কী ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে সাওম পালন কর কেন?) তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল হতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মূসা সাওম পালন করেন। মুহাম্মদ বললেন: আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এ দিনে সাওম পালন করেন এবং সাওম পালনের নির্দেশ দেন।
ইহুদী সম্প্রদায় মিথ্যাবাদী, তারা ইদুরতূল্য! মুসলিমদের তাই তাদের বিপরীত করতে হবে সবসময়।
বুখারী-৩-৪১-৫৯৯: মুহাম্মদ বলেছেন: কোন ব্যক্তি যদি কোনো মুসলিমের অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা শপথ করে, তা হলে সে আল্লাহর সমীপে এমন অবস্থায় হাজির হবে যে, আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত থাকবেন। আশআস বলেন, আল্লাহর কসম; এটা আমার সম্পর্কেই ছিল। আমার ও এক ঈহুদী ব্যক্তির সাথে যৌথ মালিকানায় এ খন্ড জমি ছিল, সে আমার মালিকানার অংশ অস্বীকার করে বসলো। আমি তাকে রাসুলুল্লাহ্ এর কাছে নিয়ে গেলাম। রাসুলুল্লাহ্ আমাকে বললেন: তোমার কোন স্বাক্ষী আছে কি? আমি বললাম: না। তখন তিনি ঈহুদীকে বললেন: তুমি কসম করো। আমি তখন বললাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ্! সে তো কসম করবে এবং আমার সম্পত্তি নিয়ে নেবে। তখন আল্লাহ তাআলা (এ আয়াত) নাযিল করেন: নিশ্চয় যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, এরা আখেরাতের কোন অংশই পাবে না এবং আল্লাহ কিয়ামাতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, বস্তুতঃ তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি (৩:৭৭)।
বুখারী-৪-৫৫-৬৬২: মুহাম্মদ বলেছেন: তোমরা তো তোমাদের পূর্ববর্তীদের পাপের তরীকাহ (নিয়ম) পুরোপুরি অনুসরণ করবে! প্রতি বিঘতে বিঘতে এবং প্রতি গজে গজে! এমনকি তারা যদি গো সাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে তবে তোমরাও তাতে প্রবেশ করবে! আমরা বললাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি কি ঈহুদী ও খ্রিস্টানদের কথা বলছেন? মুহাম্মদ বললেন: তবে আর কার কথা?
বুখারী-৪-৫৫-৬৬৪: মুহাম্মদ কোমড়ে হাত রাখাকে পছন্দ করতেন না; আর বলতেন: ঈহুদীরা এরূপ করে।
বুখারী-৪-৫৫-৬৬৮: মুহাম্মদ বলেছেন: ঈহুদী ও খ্রিস্টানরা (দাঁড়ি ও চুলে) রং লাগায় না বা খেযাব দেয় না। অতএব তোমরা (রং লাগিয়ে বা খেযাব লাগিয়ে) তাদের বিপরীত কাজ কর।
বুখারী-৬-৬০-১৫৭: মুহাম্মদ বলেছেন: আল্লাহ তাআলা ঈহুদীদেরকে লানত করেছেন, যখন তিনি তাদের উপর চর্বি হারাম করেছেন তখন তারা ওটাকে তরল করে জমা করেছে, তারপর বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করেছে।
বুখারী-৪-৫৫-৫৪৭: মুহাম্মদ বলেছেন: বনী ইসরাঈল যদি না হতো, তবে গোশত দুর্গন্ধযুক্ত হতো না। আর যদি হাওয়া (ঈভ) না হতেন তবে কোনো নারীই তাঁর স্বামীর খেয়ানত করত না।
বুখারী-২-২৩-৩৭৬: মুহাম্মদ এক ঈহুদী মেয়ে লোকের (কবরের) পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যার পরিবারের লোকেরা তার জন্য কান্নাকাটি করছিল। তখন তিনি বললেন: তারা তো তার জন্য কান্নাকাটি করছে। অথচ তাকে কবরে আযাব দেওয়া হচ্ছে।
মুসলিম-৩৭-৬৬৬৬: মুহাম্মদ বলেছেন: যখনই কোন মুসলমান মারা যায় তখন আল্লাহ তার স্থলে একজন ঈহুদী বা খ্রিষ্টান ব্যক্তিকে জাহান্নামে দাখিল করেন।
মুসলিম-৪২-৭১৩৫: মুহাম্মদ বলেছেন: বনী ইসরাঈলের একটি উম্মত (সম্প্রদায়) নিখোঁজ হয়ে গেছে। জানা নেই তারা কোথা হারিয়েছে। এদের সম্পর্কে আমার ধারণা, এ সম্প্রদায় (বিকৃত রূপ ধারণ করে) ইঁদুরের রূপ নিয়েছে। তোমরা কি দেখছো না। ঈঁদুরের সামনে উটের দুধ রাখা হলে তা পান করে।

ইহুদী নারীরা যুদ্ধে গনিমত বা দাসী হিসাবে বিনিময় বা মুক্তির নামে ভোগযোগ্য!
বুখারী-৫-৫৯-৫১২: মুহাম্মদ খায়বারের নিকটবর্তী এক স্থানে প্রত্যুষে সামান্য অন্ধকার থাকতেই ফজরের নামায আদায় করলেন। তারপর আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করে বললেন, খায়বার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা যখনই কোনো গোত্রের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছি তখনই সতর্ককৃত সেই গোত্রের সকাল হয় অশুভ রূপ নিয়ে। এ সময়ে খায়বার অধিবাসীরা (ভয়ে) বিভিন্ন অলি-গলিতে গিয়ে আশ্রয় নিতে আরম্ভ করল। নবী তাদের মধ্যেকার যুদ্ধে সক্ষম লোকদের হত্যা করলেন। আর শিশু (ও মহিলাদের)-দের কে বন্দী করলেন। বন্দীদের মধ্যে ছিলেন সাফিয়্যা বিনতে হুইয়াই প্রথমে তিনি দাহইয়াতুল কালবীর অংশে এবং পরে নবী-এর অংশে বন্টিত হন। নবী তাঁকে আযাদ করত এই আযাদীকে (মুক্তিকে) মোহর ধার্য করেন (এবং বিবাহ করে নেন)।
ইসলাম এবং মুসলিমদের থেকে নিরাপত্তা চাইলে ইহুদীদের আত্মসমর্পণ করা বাধ্যতামূলক!
বুখারী-৯-৯২-৪৪৭: একদা আমরা মসজিদে নববীতে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ মসজিদ থেকে বের হয়ে আমাদেরকে বললেন: তোমরা চলো ঈহুদীদের সেখানে যাই। আমরা তাঁর সঙ্গে বেরিলে এলাম। অবশেষে আমরা বায়তুল মিদরোসে (তাদের শিক্ষাগারে) পৌঁছলাম। তার পর নবী সেখানে দাঁড়িয়ে তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন: হে ঈহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল কর, এতে তোমরা নিরাপদে থাকবে। ঈহুদীরা বলল, হে আবুল কাসিম (‘কাসিমের পিতা’, মুহাম্মদের প্রথম সন্তানের নাম ছিলো কাসিম)! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। এরপর তিনি বললেন: আমার ইচ্ছা তোমরা ইসলাম কবুল কর এবং শান্তিতে থাকো। তারাও আবার বলল, হে আবুল কাশিম! আপনার পৌঁছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। রাসুলুল্লাহ তাদেরকে বললেন: আমি এরূপই ইচ্ছা রাখি। তৃতীয়বারেও তিনি তাই বললেন। পরিশেষে রাসুলুল্লাহ বললেন: জেনে রেখো, জমিন একমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের। আমি তোমাদেরকে এই এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে দিতে চাই। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাদের অস্থাবর সম্পত্তি আছে, তা যেন সে বিক্রি করে দেয়; অন্যথায় জেনে রেখো জমিন আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের।
বুখারী-৪-৫২-৬৮: খন্দকের যুদ্ধ থেকে যখন রাসুলুল্লাহ ফিরে এসে অস্ত্র রাখলেন এবং গোসল করলেন, তখন জিব্রাইল তাঁর কাছে এলেন, আর তাঁর মাথায় পট্টি ন্যায় ধুলি জমেছিল। তিনি বললেন আপনি অস্ত্র রেখে দিলেন অথচ আল্লাহর কসম, আমি এখনো অস্ত্র রাখিনি। রাসুলুল্লাহ বললেন: কোথায় যেতে হবে? তিনি বানু কুরাইযার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন: এদিকে। তারপর রাসুলুল্লাহ তাদের দিকে বেরিয়ে গেলেন।
বুখারী-৪-৫২-১৫৩: বনু নযীরের সম্পদ আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুল-কে ‘ফায়’ (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত) হিসেবে দান করেছিলেন। এতে মুসলমানগণ অশ্ব বা সাওয়ারী চালনা করেনি। এ কারণে তা রাসুলুল্লাহ-এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এই সম্পদ থেকে নবী তাঁর পরিবারকে এক বছরের খরচ দিয়ে দিতেন এবং অবশিষ্ট আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদের প্রস্তুতি স্বরূপ হাতিয়ার ও ঘোড়া ইত্যাদিতে ব্যয় করতেন।
বুখারী-৪-৫২-১৭৬: মুহাম্মদ বলেছেন: তোমরা ঈহুদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমনকি তাদের কেউ যদি পাথরের আড়ালে আত্মগোপন করে তাহলে পাথরও বলবে: হে আল্লাহর বান্দা, আমার পেছনে ঈহুদী রয়েছে, তাকে হত্যা করো।
মুহাম্মদকে না মানলে ইহুদি হোক আর খ্রিষ্টান হোক, তাকে জাহান্নামে যেতে হবেই, নিজ ভূমিতেও থাকার অধিকার থাকবে না তার!
মুসলিম-১-২৮৪: মুহাম্মদ বলেছেন: সে সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, ঈহুদি হোক আর খ্রিষ্টান হোক, যে ব্যক্তিই আমার এ আহ্বান শুনেছে, অথচ আমার রিসালতের উপর ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই সে জাহান্নামী হবে।
বুখারী-৩-৩৯-৫৩১: উমর ইবনে খাত্তাব, ঈহুদী ও নাসারাদের হিজায থেকে নির্বাসিত করেন। রাসুলুল্লাহ যখন খায়বার জয় করেন, তখন ঈহুদীদের সেখান থেকে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। যখন তিনি কোনো স্থান জয় করেন, তখন তা আল্লাহ্, তাঁর রাসূল ও মুসলিমদের জন্য হয়ে যায়। কাজেই ঈহুদীদের সেখান থেকে বহিষ্কার করে দিতে চাইলেন। তখন ঈহুদীরা রাসুলুল্লাহ-এর কাছে অনুরোধ করলো, যেন তাদের সে স্থানে বহাল রাখা হয় এ শর্তে যে, তারা সেখানে চাষাবাদে দায়িত্ব পালন করবে আর ফসলের অর্ধেক তাদের থাকবে। রাসুলুল্লাহ তাদের বললেন, আমরা এ শর্তে তোমাদের এখানে বহাল থাকতে দিব যতদিন আমাদের ইচ্ছা। কাজেই তারা সেখানে বহাল রইল। অবশেষে উমর তাদেরকে তাইমা আরীহায় নির্বাসিত করে দেন।
বুখারী-৪-৫৬-৮১৪: এক খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলমান হল এবং সূরা বাকারা ও সূরা আলে ইমরান শিখে নিলো। নবী করিম-এর জন্য সে অহী লিপিবদ্ধ করত। তারপর সে পুনরায় খ্রিস্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মদ-কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে অধিক কিছু তিনি জানেন না। কিছুদিন পর আল্লাহ্ তাঁকে মৃত্যু দিলেন। খ্রিস্টানরা তাকে যথারীতি দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। তা দেখে খ্রিস্টানরা বলতে লাগল – এটা মুহাম্মদ ও তাঁর সাহাবীদের কাজ। যেহেতু আমাদের এ সাথী তাদের থেকে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর থেকে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। তাই যতদুর সম্ভব গভীর করে কবর খুঁড়ে তাতে তাকে দাফন করা হল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাঁকে (গ্রহণ না করে) আবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবারও তারা বলল, এটা মুহাম্মদ ও তাঁর সাহাবীদের কাণ্ড। তাদের নিকট থেকে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর থেকে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবার আরো গভীর করে কবর খনন করে সমাহিত করল। পরদিন ভোরে দেখা গেল কবরের মাটি এবারও তাঁকে বাইরে নিক্ষেপ করেছে। তখন তারাও বুঝতে পারল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা শবদেহটি বাইরেই ফেলে রাখল।
ইহুদী, খ্রিষ্টান সহ সকল মানবসন্তান নাকি মুসলমান হয়েই জন্মায়! আর তাদের সকল গ্রন্থ বিকৃত।
মুসলিম-৩৩-৬৪২৩: মুহাম্মদ বলেছেন: প্রতিটি নবজাতক ফিতরাতে জম্ম গ্রহণ করে। এরপর তার পিতামাতা তাকে ঈহুদী বানায়, খ্রিষ্টান বানায় এবং অগ্নিপূজক বানায়, যেমন চতুস্পদ জানোয়ার পূর্ণাঙ্গ চতুস্পদ বাচ্চা প্রসব করে। তোমরা কি তাতে কোনো কর্তিত অঙ্গ বাচ্চা দেখো? এরপর আবু হুরায়রা বললেন: এই আয়াতটি তিলাওয়াত করতে পারো; আল্লাহর ফিতরাত হচ্ছে তাই যার উপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই।
বুখারী-৩-৪৮-৮৫০: আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস বলেন: হে মুসলিম সমাজ! কি করে তোমরা আহলে কিতাবদের নিকট জিজ্ঞাসা কর? অথচ আল্লাহ্ তার নবীর উপর যে কিতাব অবর্তীণ করেছেন, তা আল্লাহ সম্পর্কিত নবতর তথ্য সম্বলিত, যা তোমরা তিলাওয়াত করছো এবং যার মধ্যে মিথ্যার কোন সংমিশ্রন নেই। তদুপরি আল্লাহ তোমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, আহলে কিতাবরা আল্লাহ যা লিখে দিয়েছিলেন, তা পরিবর্তন করে ফেলেছেন এবং নিজ হাতে সেই কিতাবের বিকৃতি সাধন করে তা দিয়ে তুচ্ছ মূল্যের উদ্দেশ্যে প্রচার করেছে যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ। তোমাদেরকে প্রদত্ত মহাজ্ঞান কি তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করার ব্যাপারে তোমাদের বাধা দিয়ে রাখতে পারে না? আল্লাহর শপথ! তাদের একজনকেও আমি কখনো তোমাদের উপর যা নাযিল হয়েছে সে বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেখিনি।
বুখারী-৭-৭২-৭৭৪: মুহাম্মদ, পুরুষ হিজড়াদের উপর এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদের উপর লানত করেছেন। তিনি বলেছেন: ওদেরকে ঘর থেকে বের করে দাও। ইবনে আব্বাস বলেছেন: নবী অমুককে ঘর থেকে বের করেছেন এবং উমর অমুককে বের করে দিয়েছেন।

ধর্মত্যাগী-নাস্তিক-ধর্মদ্রোহী

বুখারী-২-২৩-৪৮৩:   মুহাম্মদ-এর ওফাতের পর আবু বকর-এর খিলাফতকালে আরবের কিছু সংখ্যক লোক মুরতাদ হয়ে যায়। তখন ‘উমর (আবু বকর-কে লক্ষ্য করে) বললেন: আপনি (সে সব) লোকদের বিরূদ্ধে কীভাবে যুদ্ধ করবেন (যারা সম্পূর্ণ ধর্ম ত্যাগ করেনি বরং যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে মাত্র)? অথচ রাসুলাল্লাহ ইরশাদ করেছেন: লা ইলাহা ইলল্লাহু বলার পূর্ব পর্যন্ত মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ আমাকে দেয়া হয়েছে, যে কেউ তা বলল, সে তার সম্পদ ও জীবন আমার পক্ষ থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের বিধান লংঘন করলে (শাস্তি দেওয়া যাবে), আর অন্তরের গভীরে (হৃদয়াভ্যন্তরে কুফরী বা পাপ লুকানো থাকলে এর) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর যিম্মায়। আবু বকর বললেন: আল্লাহর কসম, তাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয় আমি যুদ্ধ করবো যারা সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে, কেননা যাকাত হল সম্পদের উপর আরোপিত হক। আল্লাহর কসম, যদি তারা একটি মেষ শাবক যাকাত দিতেও অস্বীকার করে যা রাসূলাল্লাহ-এর কাছে তারা দিত, তাহলে যাকাত না দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই যুদ্ধ করবো। ‘উমর বলেন: আল্লাহর কসম, আল্লাহ আবু বকর-এর হৃদয় বিশেষ জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত করেছেন বিধায় তাঁর এই দৃঢ়তা, এতে আমি বুঝতে পারলাম তাঁর সিদ্ধান্তই যথার্থ।

বুখারী-৯-৮৩-১৭:             মুহাম্মদ বলেছেন: কোনো মুসলিম ব্যক্তি যিনি সাক্ষ্য দেন যে আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। তিন-তিনটি কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। (যথা) প্রাণের বদলে প্রাণ। বিবাহিত ব্যভিচারী। আর আপন দ্বীন পরিত্যাগকারী মুসলিম জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি।

বুখারী-৯-৮৪-৫৭:            আলী-এর নিকট একদল যিন্দীককে (নাস্তিক ও ধর্মদ্রোহী) আনা হল। তিনি তাদেরকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ইবনে আব্বাস- এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেন, আমি হলে কিন্তু তাদেরকে পুড়িয়ে ফেলতাম না। কেননা, রাসুলুল্লাহ–এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর শাস্তি দ্বারা শাস্তি দিও না। বরং আমি তাদেকে হত্যা করতাম। কেননা, রাসুলুল্লাহ–এর নির্দেশ রয়েছে, যে কেউ তার দ্বীন বদলে ফেলে তাকে তোমরা হত্যা কর।


বুখারী-৯-৮৪-৬৪:            আলী বলেছেন: আমি যখন তোমাদেরকে রাসুলুল্লাহ–এর কোন হাদীস বর্ণনা করি ‘আল্লাহর কসম’! তখন তাঁর উপর মিথ্যা কথা আরোপ করার চেয়ে আকাশ থেকে নিচে পড়ে যাওয়াটা আমার কাছে শ্রেয়। কিন্তু আমি যদি আমার ও তোমাদের মধ্যকার বিষয় সম্পর্কে কিছু বলি, তাহলে মনে রাখাতে হবে যে, যুদ্ধ একটি কৌশল। আমি রাসুলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যারা হবে অল্পবয়স্ক যুবক, নির্বোধ। তারা সৃষ্টির সবচাইতে শ্রেষ্ঠতম কথা থেকে আবৃত্তি করবে। অথচ ঈমান তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তাদেরকে যেখানেই তোমরা পাবে হত্যা করবে। কেননা তাদেরকে হত্যা করলে হত্যাকারীর জন্য কিয়ামত দিবসে প্রতিদান রয়েছে।

বুখারী-৮-৮২-৭৯৭:   উকল গোত্রের একদল (অথবা উরাইনা গোত্রের;  আমার জানামতে তিনি উকলা গোত্রেরই বলেছেন) মদীনায় এলো, তখন নবী তাদেরকে দুগ্ধবতী উটের কাছে যাওয়ার নির্দেশ করলেন। তাদেরকে আরো নির্দেশ করলেন যেন তারা সেসব উটের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করে। তারা তা পান করল। অবশেষে যখন তারা সুস্থ হয়ে গেল, তখন রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। ভোরে নবী-এর কাছে এ সংবাদ পৌছাল। তিনি তাদের খোঁজে লোক পাঠালেন। রৌদ্র চড়ার আগেই তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের সম্পর্কে তিনি নির্দেশ করলেন, তাদের হাত-পা কাটা হল। তারা পানি পান করতে চাইল। কিন্তু পান করানো হলোনা। আবু কিলাবা বলেন: ঐ লোকগুলো এমন একটি দল যারা চুরি করেছিল, হত্যাও করেছিল, ঈমান আনার পর কুফরী করেছিল আর আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো।


বুখারী-৯-৮৯-২৭১:   এক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহন করার পর পূনরায় ঈহুদী ধর্ম অবলম্বন করে। তার কাছে হযরত মুআয ইবন যাবাল এলেন। তখন সে লোকটি আবু মুসা-এর কাছে ছিল। তিনি (মুআয) জিজ্ঞাসা করলেন, এর কি হয়েছে? তিনি বললেন: ইসলাম গ্রহন করেছিল। অতঃপর ঈহুদী হয়ে গেছে। হযরত মুআয বললেন: একে হত্যা না করে আমি বসবো না। মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের বিধান (এটাই)।

বেদে সমানতা
অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস এতে সং ভ্রাতরো বাবৃধুঃ সৌভগায়। 
য়ুবা পিতা স্বপা রুদ্র এষাং সুদুঘা পৃশ্নিঃ সুদিনা মরুদভ্যঃ।। 
(ঋকবেদ /৬০/)
ভাবার্থ কেউ বড়ো নয়, কেউই ছোটো নয়, সবাই মিলেমিশে ভাই ভাই হয়ে থাকো। সকলে মিলে ঐশ্বর্যের উন্নতির জন্য চেষ্টা করো। সকলের তরুণ পিতা উত্তম কর্ম কারী ঈশ্বর, এবং উত্তম প্রকার মনোরথকে পূর্ণকারী সুন্দর দিন যার থেকে অন্তরীক্ষের সদৃশ বুদ্ধি মানুষের জন্য বিদ্যাশিক্ষা দান করেন
তে অজৈষ্ঠা অকনিষ্ঠাস উদ্ভিদো মধ্যমাসো মহসা বি বাবৃধুঃ। (
ঋকবেদ /৫৯/)
ভাবার্থ তারা কেউ বড়ো নয় কেউই ছোটো নয় কেউ মধ্য নয়। কিন্তু তাঁরা সকলেই উদয়কে প্রাপ্ত করবে। এই জন্য উৎসাহের সঙ্গে বিশেষ রীতির দ্বারা অগ্ৰগামী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে