https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

সংস্কার বিধি ও শ্লোক নিয়ে ভ্রান্তি দূরীকরণ

Monday, June 10, 2019


নমস্কার মিত্রগণ,
একটি বইয়ের লেখক যাতে জন্মগত জাতপাতের প্রমোট করা হয়েছে এবং তাতে তিনি জন্মগত জাতকে প্রমোটের জন্য বিভিন্ন প্রকার শাস্ত্রীয় অপব্যাখ্যা করেছেন।


সে বইয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে আমরা আলোচনা করবো পরে অন্য লেখায়।
এখন আসি সেই ভিডিও নিয়ে যাতে তিনি উপস্থাপন করেছেন, আর্য সমাজের সংস্কারবিধিতে নাকি দয়ানন্দ সরস্বতী জী ইচ্ছাকৃতভাবে মনুসংহিতার শ্লোকের শব্দের প্রতিস্থাপন করেছেন।অর্থাৎ দয়ানন্দ জী ইচ্ছাকৃত ভাবেই বিশেষ কোন উদ্দ্যেশ্যে মনুসংহিতার এই শ্লোকে শব্দকে সরিয়ে অন্য শব্দের আগমণ ঘটিয়েছেন।

খণ্ডন পর্ব -
প্রথমেই বলি, এ ভিডিওতে দয়ানন্দ জীর কোন ইচ্ছা ছিল কিনা তার কিন্তু কোন ব্যাখ্যা তিনি দেন নি অর্থাৎ কেন দয়ানন্দ জী এমনটা করলেন বা নতুন কোন মান্যতার কারনে দয়ানন্দ জী এই শ্লোক পরিবর্তনের মাধ্যমে করলেন? কি উদ্দ্যেশ্য ছিল দয়ানন্দ জীর তার ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেন নি,কারন এটাতে অন্য কোন উদ্দ্যেশ্য তিনি পাবেন ও না,তাই এড়িয়ে গেলেন কৌশলে এবং ভিউয়ারদের ১ শ্লোকে ভুল ধরে ২০ মিনিটে সময় নষ্ট করলেন।

এবার মূল কথায় আসি,
শ্লোকটির এ অংশটির পরিবর্তন সংক্রান্ত দুটো বিষয় নিয়ে আমি আলোচনা করবো।
১/- দয়ানন্দ জী কি আসলেই ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করলেন? তার প্রমাণে আমি উপস্থাপন করছি সত্যার্থ প্রকাশ এর চতুর্থ সমুল্লাসের প্রথম পৃষ্ঠায় মনুসংহিতার ৩/৩ এর শ্লোকটি পাওয়া যাবে।


যা অপপ্রচারকারী চক্কোত্তি মহাশয়ের চোখে পরে নি হয়তো অথবা মানুষকে ভুল বুঝানোর জন্য চেপে যেতে চেয়েছেন।
এতে স্পষ্টতরুপেই আপনারা দেখতে পাবেন (নিচের ছবিতে) সেখানে ব্রহ্মদায়হরম্ শব্দটিই নেওয়া ও তদানুসারে অর্থ করা হয়েছে।

তাহলে সংস্কারবিধির ওই শ্লোকে আসা শব্দটি যদি কোন উদ্দ্যেশ্য বা মান্যতা বানানোর জন্য দয়ানন্দ জী উদ্দ্যেশ্যপ্রণিত হয়ে করে থাকে তাহলে সত্যার্থ প্রকাশ যা আরো বেশি করেই দয়ানন্দজীকে প্রমোট করে তাতে কেন তিনি ওটা মনুসংহিতার মতই রাখলেন?

আমি এ অংশে বলবো না সংস্কারবিধির বিষয়টা প্রিন্টিং মিসটেক বা অন্য কিছু,বরং পাঠকদের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে দিলাম বিবেচনা করার, যিনি চাইবেন সংস্কার বিধিতে মনুর শ্লোক পরিবর্তন করে অন্য কোন মান্যতা বা কিছু নিয়ে আসতে তিনি কেনইবা তার সত্যার্থ প্রকাশ গ্রন্থে মনুর ওই শ্লোকটি সঠিক দিবেন?

আশা করি পাঠকরা এতেই বোধগম হয়েছেন।
এছাড়াও, দয়ানন্দ জী ও আর্য সমাজের যদি এ শ্লোক নিয়ে লোকানোর বা অন্য কোন উদ্দ্যেশ্য থাকতো তাহলে আর্য সমাজের অন্যান্য লেখকগণ তাদের মনুসংহিতা ব্যাখ্যান এ অবশ্যই সঠিক রুপটি দিতেন না বরং উদ্দ্যেশ্যমূলক অংশটিই উল্লেখ করতেন(যার প্রমাণ বিভিন্ন লেখকের মনুর শ্লোক-ছবিতে)।

বরং আর্য সমাজ সনাতনী সমাজের জন্য এতটাই হিতকরী যে, মনুসংহিতা যখন তার পক্ষপাতমূলক শ্লোক ও নারী,জাতপাত,অযৌক্তিক ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত ছিল, তখন আর্য সমাজের সুরেন্দ্রকুমার জী সেই মনুসংহিতার বিশুদ্ধরুপ বের করেন বৈদিক শাস্ত্রের ভিত্তিতে।আর তারই সুফল নিচ্ছে আজ সকল সনাতনীরা, বিশেষ করে যখন তারা কোন নাস্তিক ও অহিন্দুর সাথে বিতর্কে পরেন।

তবুও আর্য সমাজ খারাপ ও ভুল ব্যাখ্যা করে!-তাদের কথায়।
তাই এই দিক থেকে পাঠকদের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে দিলাম, এটা কি আদৌ উদ্দ্যেশ্যপ্রণিত না অন্য কোন কিছু আছে?

২/- এখানে শ্লোকে বর্ণিত ব্রহ্মদায়হরম্ ও ধর্মদায়হরম্ এ মধ্যে কিছু বিচার করবো।
উক্ত মনুর শ্লোকটি একজন ব্রহ্মচারীর করণীয় নিয়ে বর্ণিত।
তাতে ব্রহ্মদায়হরং শব্দটির দ্বারা ব্রহ্মদায় আসে যার
অর্থ ব্রহ্মবিদ্যালাভকারি ব্রহ্মচারীর তাহার গুরুকে যথাবিহীত শ্রদ্ধাপূর্বক দায়মুক্তির কার্য সম্পাদনকেই বুঝাচ্ছে।
ঠিক তেমনি ধর্মদায়হরম্ শব্দটিও ধর্মবিদ্যালাভকারি ব্যক্তির দায়মুক্তির কার্য সম্পাদনকে বুঝায়।এখানে ধর্ম যেহেতু জ্ঞান অর্থাৎ ব্রহ্ম ও ব্রহ্মআশয়কার্যাদির জ্ঞান ও ক্রিয়াকে বুঝায় আর তার লাভকারীর দায়মুক্তির জন্য তার গুরুর প্রতি কার্য সম্পাদনকে প্রকাশে ধর্মদায়হরম্ শব্দটিও ব্রহ্মদায়হরম্ এর সমার্থক হিসেবে ধরা যেতে পারে, কারন এতে অর্থের বিশেষ বা বিশাল কোন অর্থের পরিবর্তন হয় না।

এই হিসেবেও শব্দটির পরিবর্তন কোন ক্রমেই দয়ানন্দ জীর বিশেষ কোন উদ্দ্যেশ্যকে প্রমাণ করে না বলেই প্রমাণিত হয়।
বিশেষজ্ঞাতার্থে বলবো যে, সমার্থকতা থাকার পরো পরবর্তিতে আর্য সমাজের সংস্কারবিধি সংস্করণে এটাকে সংশোধন করা হয়েছে।(তাই ইহার উল্লেখ সংস্কারবিধিতে করেন নাই শুধু নিচে * চিহ্নের দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে)।তাই বলা বাহুল্য যে, উক্ত পরিবর্তন দয়ানন্দ জী তথা আর্য সমাজের উদ্দ্যেশ্যপ্রণিত নয় এ দিক বিবেচনায় ও।নয়তো ভুলটায় আর্য সমাজ রেখে দিতো।


মনু ৩.৩ ১৮তম সংস্করণে অতিরিক্ত পাঠ মাত্র , মূলে নেই । রামলাল কাপুর ট্রাস্ট মূল কপি ছাপানো হয়েছে  । তাতে টীকা দিয়ে বলাই  ১৮ তম সংস্করণ থেকে এই মনু৩.৩ টা যুক্ত হয়েছে । এই যুক্তকারী জয়দেব বিদ্যালংকার ।


আশা করবো, সাধারন জ্ঞানহীন ও সামান্য বিষয়কে বিশাল করা লোকটি বুঝবেন।
এখন সেই চতুর্বর্ণতত্ত্বলহরী বইয়ের লেখক যিনি দয়ানদজীর ভুল ধরতে আসেন, যিনি সাধারন ও উদ্দ্যেশ্যহীন কোন ভুলকে না বুঝেই অনরগল বকে যান, তার বিবেকানন্দজীকে নিয়ে মিথ্যাচার ও উনাকে জন্মগত জাতপ্রথার সমর্থক বানাতে যে অপপ্রচার করেছেন তার লিংক উল্লেখপূর্বক আমার লেখাটি শেষ করলাম।
ধন্যবাদান্তে
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক।