https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

নেম ও ইন্দ্র - প্রকৃত রহস্য উন্মোচন

Saturday, April 25, 2020



ঋগ্বেদের ৮ম মণ্ডলের ১০০তম সূক্তের ঋষি হচ্ছেন ভার্গব নেম। এই সূক্তের ৩য় ও ৪র্থ মন্ত্রকে মাঝ থেকে তুলে দিয়ে অনেকে অপপ্রচার চালায় যে, নেম ঋষি নাকি ঈশ্বরের অস্তিত্বের উপর প্রশ্ন তোলায় ইন্দ্র অর্থাৎ পরমেশ্বর সাকার রূপ ধরে ঋষির সামনে এসে হাজির হয়ে নিজের অস্তিত্বের  প্রমাণ দিয়েছেন।

এই বিষয়ে অপপ্রচারকারীদের প্রদত্ত মন্ত্রের উদ্ধৃতি দেখে নেওয়া যাক–

"নেম ঋষি বলেন, ইন্দ্র নামে কেউ নেই। কে তাঁকে দেখেছে? আমরা কাকে স্তুতি করব?
(ঋগ্বেদ ৮/১০০/৩)
পরম ঐশ্বর্যবান ভগবান ইন্দ্র তার সম্মুখে আবির্ভূত হয়ে বলেছেন, হে স্তোতা আমি তােমার নিকটে এসেছি, আমায় দর্শন কর সমস্ত ভুবন কে আমরা মহিমা দ্বারা অভিভুত করি যজ্ঞের প্রদেগন আমাকে বর্ধিত করে, আমি বিদারনশীল ভূমি বিদীর্ণ করি।
(ঋগ্বেদ ৮/১০০/৪)"

শঙ্কার সমাধান– 

উপর্যুক্ত মন্ত্র দুইটির বিষয়ে শঙ্কা সমাধান করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। 

১. অপপ্রচারকারীরা এই মন্ত্রদ্বয়ের অনুবাদ গ্রহণ করেছে রমেশচন্দ্রের অনুবাদিত ঋগ্বেদ থেকে, যার প্রকাশক হলো হরফ প্রকাশনী। যারা এই মন্ত্রে ঈশ্বরের সাকারত্ব প্রমাণ করার জন্য এই হরফের বেদ থেকে প্রমাণ দেয়, তারাই আবার মুসলিমদের সাথে বিতর্ক করার সময় হরফ প্রকাশনীর বেদ অনুবাদ মানে না, অস্বীকার করে। সেই অস্বীকারকৃত বেদ অনুবাদ থেকেই নিজেদের প্রমাণ প্রদর্শনের মতো হিপোক্রেসি আর কি বা হতে পারে! 


২. তাদের দেওয়া অনুবাদ অনুসারে যদি ঈশ্বরকে কেউ দেখেন নাই জন্য নেম ঋষি ঈশ্বরের অস্তিত্বে প্রশ্ন তোলে, তাহলে বলতে হয় নেম ঋষি বর্তমান দিনের নাস্তিকদের মতো! কিন্তু তা কখনই সম্ভব নয়। কারণ ব্রহ্মজ্ঞানী ঋষিরাই যেখানে উপনিষদে বলে গেছেন ঈশ্বরকে চোখে দেখা যায় না, তখন সেই ঋষিই কিভাবে ঈশ্বরকে চোখে না দেখার জন্য ঈশ্বরের উপরে প্রশ্ন তুলতে পারেন? এটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় কি? 

৩. অপপ্রচারকারীদের সাথে মুসলিমদের হুবহু মিল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কারণ তারা সম্পূর্ণ সূক্ত বা সূক্তের শুরু থেকে মন্ত্র তুলে না দিয়ে মাঝ থেকে দুই একটা মন্ত্র তুলে দিয়ে নিজেদের মান্যতা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এখানেও তেমন ঘটেছে। অপপ্রচারকারীরা এই মন্ত্রগুলোকে ঋষিবাক্য মানে। যদি এই সূক্তটা নেম ঋষিরই বাক্য হয়, তবে এই সূক্তের ১-২ মন্ত্র দেখলে স্পষ্ট দেখতে পারবেন সেখানে ইন্দ্রকে স্পষ্টভাবে স্তুতি করা হচ্ছে এবং ইন্দ্রকে নিজের সখা বলা হয়েছে! অর্থাৎ ৩য় মন্ত্রে যদি নেম ঋষি ঈশ্বরকে না দেখতে পাওয়ার জন্য অস্বীকার করতো, তবে ১ম ও ২য় মন্ত্রে তাঁকে এভাবে স্তুতি করা হতো না। অর্থাৎ অপপ্রচারকারীরা এখানে মুসলিমদের মতো আংশিক তথ্য প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে৷ 



৪. অপপ্রচারকারীদের মতে, এই ৪র্থ মন্ত্রে ইন্দ্রের সাথে নেম ঋষির প্রত্যক্ষ কথোপকথন রয়েছে৷ অর্থাৎ তাদের মান্যতা মেনে নিলে বেদে ঋষির ইতিহাস আছে, এরূপ মানতে হয়। আর বেদে ইতিহাস থাকলে বেদ অনিত্য হয়ে যায়৷ অর্থাৎ তাদের এই দাবী সত্য হিসেবে মেনে নিলে এটি মানতে হবে যে, নেম ঋষির ইন্দ্রের সাথে পূর্বে ঋগ্বেদের ৮।১০০ সূক্তটির অস্তিত্ব ছিলো না। ফলে বেদের উপর অনিত্যতার দোষ আরোপিত হয়। কিন্তু আমাদের সনাতন শাস্ত্র বেদকে বলছে নিত্য এবং বেদে কোনো ব্যক্তি বিশেষের ইতিহাস নাই। যেমন–

i. অতএব চ নিত্যত্বম্।। [বেদান্ত দর্শন– ১।৩।২৯]

অর্থাৎ এই কারণেই পরমাত্মা থেকে উৎপন্ন বেদ নিত্য। 



ii. উক্তন্তু শব্দপূর্বত্বম্।। [মীমাংসা দর্শন– ১।১।২৯]
অর্থাৎ বেদরূপ শব্দ যে নিত্য তা আমরা পূর্বে বলে এসেছি। 


৫. বেদ যেহেতু নিত্য, তাই বেদে কোনো মানুষের নাম বা ইতিহাস থাকতে পারে না৷ কিন্তু "নেম" পদটি থাকায় এই পদটিকে নেম ঋষির সাথে গুলিয়ে ফেলে অপপ্রচারকারী দাবী করে যে এই মন্ত্রে নেম ঋষির ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু বেদে যে নাম গুলো আছে সেগুলো কোনো ব্যক্তি বিশেষের নাম বা ইতিহাস নয়। এই বিষয়টি মীমাংসা দর্শনে [১।১।৩০–৩১] মহর্ষি জৈমিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন। 

আখ্যা প্রবচনাৎ।।৩০।।

পদার্থ– (আখ্যা) বেদে মধুচ্ছন্দাদি ঋষির নাম (প্রবচনাৎ) অধ্যয়ন অধ্যাপনার কারণে এসেছে। 




অর্থাৎ বেদমন্ত্রের শুরুতে যেসব ঋষির নাম দেখা যায়, তাঁরা মূলত মন্ত্রের স্রষ্টা নন, বরং তাঁরা অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা করে এসব মন্ত্র দর্শন করেছেন এবং প্রচার করেছেন। ফলে তাঁদের নাম মন্ত্রের পূর্বে দেখা যায়। 

পরন্তু শ্রুতিসামান্যমাত্রম্।।৩১।।

পদার্থ– (তু) বেদমন্ত্রে যেসব তুগ্র, ভুজ্যু, বশিষ্ঠ, কশ্যপ ইত্যাদি নাম পাওয়া যায়, সেগুলো (পরং) কেবল (শ্রুতিসামান্যমাত্রম্) শব্দ সামান্যমাত্র, কারও নাম নয়। 



অর্থাৎ বেদ মন্ত্রের অভ্যন্তরে যেসব নাম দেখতে পাওয়া যায়, প্রকৃত পক্ষে সেগুলো কোনো ব্যক্তিবিশেষের নাম নয়, সেগুলো শব্দমাত্র। যেমন– তুগ্র শব্দটি হিংসা অর্থে বর্তমান 'তুজি' ধাতুর সাথে 'রক্' প্রত্যয় যুক্ত হয়ে গঠিত। যার অর্থ হিংসক, বলবান বা গ্রহণকারী।

৬. তাহলে এখন প্রশ্ন হতে পারে ৩য় মন্ত্রে "নেম" অর্থ কী? এর সমাধানের জন্য আমাদের নিরুক্ত অনুসরণ করতে হবে৷ নিরুক্তের ৩।২০ এ বলা হয়েছে "নেম ইত্যর্ধস্য"। অর্থাৎ নেম হচ্ছে অর্ধেকের নাম।




 তাই নিরুক্তগত অর্থ অনুসারে এই ৩য় মন্ত্রে "নেম" কোনো ঋষি বিশেষের নাম নয়, বরং "নেম" অর্থ "অর্ধেক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি"। 


৭. এখন প্রশ্ন হতে পারে, যদি ইন্দ্র নেম ঋষির সামনে না এসে থাকেন, তবে ৪র্থ মন্ত্রে কেন পরমেশ্বর বললেন, "আমি তোমার সামনে রয়েছি, তুমি দেখো"। এর উত্তর হচ্ছে, ৬ নং পয়েন্ট থেকে আমরা জানলাম নেম অর্থ অর্ধ জ্ঞানী ব্যক্তি। আর যজুর্বেদ বলছে তিনি সর্বব্যাপক [যজু ৪০।১]। তিনি জ্ঞানীর অতিনিকটে কিন্তু অজ্ঞানীর থেকে তিনি অতিদূরে [যজু ৪০।৫]। জ্ঞানীগণ সর্বত্র ঈশ্বরকে দর্শন (অনুভব) করেন। [যজু ৪০।৬]
অর্থাৎ সর্বব্যাপক ও নিরাকার হওয়ায় ঈশ্বরকে কেউ দর্শন করতে পারে না। অর্ধজ্ঞানী ব্যক্তি ঈশ্বরকে দেখতে না পেয়ে ভাবে ঈশ্বর নেই। কিন্তু যখন সেই অজ্ঞানীর সামনে জ্ঞানের প্রকাশ ঘটে তখন তিনি ঈশ্বরকে সর্বভূতে দর্শন করেন, উপলব্ধি করেন। 


৮. এবার ধারাবাহিক ভাবে ঋগ্বেদের ৮।১০০।১–৪ মন্ত্রের শুদ্ধ অনুবাদ পণ্ডিত হরিশরণ সিদ্ধান্তলঙ্কারের ঋগ্বেদ ভাষ্য থেকে অনুবাদ করে দেওয়া হলো। 

অয়ং ত এমি তন্বা পুরস্তাদ্বিশ্বে দেবা অভি মা যন্তি পশ্চাৎ। 
যদা মহ্যং দীধ্রো ভাগমিন্দ্রাদিন্ময়া কৃণ্বো বীর্যাণি॥১॥

পদার্থ– জীব প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছে যে, (অয়ম) এই আমি (তন্বা) এই শরীরের সাথে (তে পুরস্তাৎ) আপনার সামনে (এমি) উপস্থিত হয়েছি। (বিশ্বে দেবাঃ) সকল দেব (মা) আমার (পশ্চাদ্ অভিয়ন্তি) পিছে আসে। অর্থাৎ সব দিব্যগুণ আমায় প্রাপ্ত হয়। প্রভুর সামনে উপস্থিত হওয়ার কারণে সব দিব্যগুণ আমাদের মধ্যে প্রবেশ করে৷ হে (ইন্দ্র) পরম ঐশ্বর্যবান প্রভু ! (যদা) যখন (মহ্যম্) আমার জন্য (ভাগং দীধরঃ) ভাগকে ধারণ করেন। আমায় যখন আপনার ভজনীয় গুণ প্রাপ্তি হয় (আৎ ইৎ) তখন শীঘ্রই (ময়া) আমার দ্বারা আপনি (বীর্যাণি কৃণবঃ) শক্তিশালী কার্য করেন৷ অর্থাৎ আমি আপনার মাধ্যম হয়ে যাই এবং আপনার শক্তি দ্বারা আমার কার্য হওয়া শুরু হয়।।১।।

দধামি তে মধুনো ভক্ষমগ্রে হিতস্তে ভাগঃ সুতো অস্তু সোমঃ। 
অসশ্চ্ ত্বং দক্ষিণতঃ সখা মেঽধা বৃত্রাণি জঙ্ঘনাব্ ভূরি॥২॥

পদার্থ– হে প্রভু ! (তে) আপনার (মধুনঃ) এই জীবনকে মধুর বানানো সোম (ভক্ষম্) ভোজনকে, শরীরের অভ্যন্তরে ধারণ করে (অগ্রে দধামি) সবার প্রথমে স্থাপিত করছি। আমি সোম রক্ষণকে নিজের মূল কর্তব্য বানাচ্ছি। (সুতঃ সোমঃ) শরীরে উৎপন্ন সোম (তে) আপনাকে প্রাপ্তির জন্য (হিতঃ ভাগঃ অস্তু) শরীরে ভজনীয় বস্তু সৃষ্টি হোক। সোম রক্ষণ দ্বারা আপনাকে প্রাপ্তকারী হবো। (চ) এবং হে প্রভু ! এই সোম রক্ষণ হওয়ার পর (ত্বম্) আপনি (মে) আমার (দক্ষিণতঃ সখা) ডান হাতের ন্যায় পূর্ণ বিশ্বসনীয় মিত্র (অসঃ) হয়ে থাকেন। আপনাকে মিত্ররূপে পেয়ে (অধা) এখন (বৃত্রাণি) বৃত্ররূপ বাসনাকে (ভূরি জঙ্ঘনাব) উত্তমভাবে বিনষ্ট করবো।।২।।

প্র সু স্তোমং ভরৎ বাজয়ন্ত্ ইন্দ্রায়্ সত্যং যদি সত্যমস্তি। 
নেন্দ্রো অস্তীতি নেম্ উ ত্ব আহ্ ক ঈং দদর্শ্ কম্ভি ষ্টবাম্॥৩॥

পদার্থ– (বাজয়ন্তঃ) শক্তিকে কামনা করতে থেকে তুমি (ইন্দ্রায়) সেই পরমৈশ্বর্যবান প্রভুর জন্য (স্তোয়ম্) স্তুতিকে (প্র সু ভরত) প্রকর্ষেণ সম্পাদিত করো। (সত্যং অস্তি) যদি প্রভু সত্য হয়, তবে তাঁর জন্য (সত্যম্) সত্যই স্তোমকে সম্পাদিত করো। (নেমঃ উ ত্বঃ) অর্ধজ্ঞান সম্পন্ন কোনো ব্যক্তি (ইতি আহ) এটি বলে যে (ইন্দ্রঃ ন অস্তি) পরমৈর্যবান প্রভু নেই। (কঃ ঈং দদর্শ) কে প্রভুকে দেখেছে ? (কং অভিষ্টবাম্) কার স্তবন করবো আমরা ? অর্থাৎ অপরিপক্ব জ্ঞানে এরকম প্রশ্ন ওঠে। ধীরে ধীরে তপস্যা রূপ অগ্নিতে জ্ঞান পরিপক্ব হয়ে জ্ঞান বৃদ্ধি হলে এই সংসারের প্রত্যেক্ষ বস্তুতে প্রভুর সত্তার অনুভব হয়।।৩।।

অয়মস্মি জরিতঃ পশ্য্ মেহ্ বিশ্বা জাতান্যভ্যস্মি মহ্না । ঋতস্য্ মা প্রদিশো বর্ধয়ন্ত্যাদর্দিরো ভুব্না দর্দরীমি ॥৪॥

পদার্থ–  প্রভুর সত্তা বিষয়ে সন্দিগ্ধ স্তোতাকে প্রভু বলেন, হে (জরিতঃ) স্তোতা ! (অয়ং অস্মি) আমি তোমার সামনেই রয়েছি। (মা) আমায় (পশ্য) দেখো। এই জগতের প্রত্যেক পদার্থে আমার সত্তা দেখতে পারবে। (বিশ্বা জাতানি) সব উৎপন্ন পদার্থকে (মহ্না) নিজের মহিমা দ্বারা (অভ্যস্মি) অভিভূতকারী। (ঋতস্য প্রদিশঃ) সত্যের উপদেষ্টা ব্যক্তিগণ (মা বর্ধয়ন্তি) আমার বর্ধন করে। অর্থাৎ সত্যজ্ঞান প্রাপ্তকারী জ্ঞানীগণ প্রভুর মহিমা দেখতে থেকে তা সবার জন্য প্রতিপাদন করেন, বৃদ্ধি করেন। প্রভুর বলছেন যে (আদর্দিরঃ) সমন্তাৎ সকল ব্যক্তিকে বিদরণকারী হই। প্রলয়ের সময় আমিই (ভুবনা) সব ভুবনকে (দর্দরীমি) বিদির্ণ করি।।৪।। 

অপপ্রচারকারী আরও দাবী করে, মহর্ষি শৌনক এই সুক্ত প্রসঙ্গে বৃহদ্দেবতায় বলেছেন যে, "নেম বলেছিলেন ইন্দ্র বলতে কেউ নাই। এই কথা শুনে ইন্দ্র তার সম্মুখে আবির্ভূত হয়ে দুইটি মন্ত্র দ্বারা নিজের স্তুতি করলেন। নেম ইন্দ্রকে দর্শন করে প্রসন্ন হন!(বৃহদ্দেবতা – ৬/১১৮–১১৯)


শঙ্কার সমাধান– 

আমাদের প্রদত্ত উপর্যুক্ত ব্যাখ্যা ও মন্ত্রের অনুবাদ পড়লে বোঝা যাবে, বৃহদ্দেবতার মূলভাব বুঝতেও সেইসব অপপ্রচারকারীদের ভুল হয়েছে। আর এখানে উল্লেখ যোগ্য বিষয় হচ্ছে, বৃহদ্দেবতায় কি বলা হচ্ছে তা মন্ত্রের অর্থ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ এটি নিরুক্তের মতো বেদাঙ্গ অথবা শতপথাদি ব্রাহ্মণের মতো বেদের ব্যাখ্যান নয়। বরং এটি অনেক পরে রচিত একটি পরিশিষ্ট গ্রন্থ মাত্র। পরিশিষ্ট অনুসারে কখনই বেদের অর্থ করা যেতে পারে না। 

আর এই বৃহদ্দেবতায় উল্লেখিত "ইন্দ্র দুইটি মন্ত্র দ্বারা নিজের স্তুতি করলেন" এই বাক্য দ্বারা মূলত নিরুক্ত ৭/১–৩ এ উল্লেখিত পরোক্ষকৃত, প্রত্যক্ষকৃত ও আধ্যাত্মিক মন্ত্রের মধ্যে আধ্যাত্মিক মন্ত্রের উদাহরণ।