https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ডানাযুক্ত উড়ন্ত পর্বতের শেষ পরিণতি কি হয়েছিলো ? - জানুন পুরাণে

Thursday, September 23, 2021


বৈদিক সাহিত্যে পর্বত শব্দটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ । বেদে ইন্দ্র শব্দের অর্থ সূর্য ও পর্বত শব্দের অর্থ নিঘণ্টু ১।১০ অনুযায়ী মেঘ । ইন্দ্র দ্বারা পর্বত নাশ বলতে সূর্য দ্বারা মেঘের বিদীর্ণকরণ ও বৃষ্টির সৃষ্টি বোঝায় । আধ্যাত্মিকভাষ্যে পণ্ডিত হরিশরণ সিদ্ধান্তালংকার ইন্দ্র অর্থ পরমাত্মা ও পর্বত, অহি ইত্যাদির অর্থ বিঘ্ন, পাপপ্রবৃত্তি করেছেন । 

অহি,  বরাহ শব্দের লৌকিক অর্থ যথাক্রমে সাপ ও শূকর । কিন্তু নিঘণ্টু অনুযায়ী তাদেরও অর্থ মেঘ । যেমনটা আমরা ঋগ্বেদ ১।৩২।১ এ দেখতে পাই - 


ইন্দ্রস্য নু বীর্যাণি প্র বোচং যানি চকার প্রথমানি বজ্রী । 
অহন্নহিমন্বপস্ততর্দ প্র বক্ষণা অভিনৎপর্বতানাম্
ঋগ্বেদ ১।৩২।১ 
অনুবাদঃ হে বিদ্বান্ মানবগণ ! তোমরা যেভাবে (ইন্দ্রস্য) সূর্যের (যানি) যে (প্রথমানি) প্রসিদ্ধ (বীর্য্যাণি) পরাক্রমসমূহের যে তোমরা কথন করা তাকে আমিও (নু) (প্রবোচম্) শীঘ্র বলছি সেই (বজ্রী) সব পদার্থকে ছেদনকারী কিরণযুক্ত সূর্য্য (অহিম্) মেঘকে (অহন্) হনন করে বর্ষণ করায় সেই মেঘের অবয়ব রূপ (অপঃ) জলকে উপর-নিচ করায় [ জলচক্র ]  (চকার) করায় ও তাকে (ততর্দ) পৃথিবী উপর নিপতিত করে এবং (পর্বতানাম্)  সেই মেঘের মাধ্যমে (প্রবক্ষণাঃ) বিচ্ছিন্ন নদীসমূহ প্রবাহিত করে । 

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী তার ঋগ্বেদভাষ্যে নিঘণ্টু অনুযায়ী অহি ও পর্বতের ভাষ্য করার সময় লিখেছেন - 

(অহিম্) মেঘম্। অহিরিতি মেঘনামসু পঠিতম। নিঘ০ ১।১০।
(পর্বতানাম্) মেঘানাং গিরীণাং বা পর্বত ইতি মেঘনামসু পঠিতম্। নিঘ০ ১।১০

কিন্তু পরবর্তীতে তথাকথিত পুরাণে এই বিজ্ঞানময় তত্ত্বকে কল্পনার মাধ্যমে ইন্দ্রকে স্বতন্ত্র দেবতা ও পর্বতকে Mountain করে তাদের পাখা বা ডান থেকে মেঘের উৎপত্তি ও সেই মেঘের জলের নানা প্রকার নিয়ে বিস্তর অবৈজ্ঞানিক ও কাল্পনিক গল্প লিখিত হয়েছে । অনেকেই বেদের বা নিঘণ্টুর অহি বা পর্বত দিয়ে বৈধতা কিংবা ব্যাখ্যা দেওয়া বৃথা চেষ্টা করেন । কিন্তু যেখানে ভাগবত টীকাকার শ্রীধর থেকে শুরু করে শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুরের স্বীকৃতি অথবা সকল পুরাণে পর্বত নয় বরং তার ডানা থেকেই মেঘের কথা বলা হয়েছে তখন তা যে অপচেষ্টা ও পরম্পরার নামে কদাচারীদের মিথ্যাচার তা বলার অপেক্ষা রাখে না । 

এখনকার সময়ে আমরা যে বাল্মিকী রামায়ণ পাই তাতে পরবর্তীতে বহু প্রক্ষেপ ও যোজনা হয়েছে । সমগ্র উত্তরকাণ্ড নামে বহির্ভূত একটি অংশ সংযুক্ত করা হয়েছে । 


বাল্মিকী রামায়ণের বালকাণ্ডে যেখানে মহর্ষি বাল্মিকীকে আমরা তপস্বী ও বেদাদি শাস্ত্রের স্বাধ্যায়কারী হিসেবে পাই তার পক্ষে নিম্নোক্ত গল্পটি বেদের বিরুদ্ধে গিয়ে লেখা সম্ভব কিনা পাঠকই বিচার করুন - 


বাল্মিকী রামায়ণ - সুন্দরকাণ্ড ১।১২২-১২৪




এবার আমরা পুরাণ থেকেও এমন কিছু কাহিনী দেখবো - 

  • শ্রীমদ্ভাগবত ৮।১১।৩৪ -


গৌড়ীয় ভাষ্য - শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর টীকাতে স্পষ্ট


শ্রীল প্রভুপাদ অনূদিত 

  • মৎস্য পুরাণ ১২৫।১২





  • লিঙ্গপুরাণ পূর্বভাগ ৫৪।৪৬-৪৮




  • বায়ু পুরাণ ৫১।৩৮ 




  • হরিবংশ ভবিষ্যপর্ব ২২৯ অধ্যায় [ ৩।৪০।১৯ ]




আশা করি পাঠক বুঝতে পারছেন যে কিভাবে বৈদিক তত্ত্বগুলো পরবর্তীকালে বেদবিরোধী ও বেদে অনভিজ্ঞ প্রক্ষিপ্তকারী ও পুরাণ রচয়িতাদের কারণে বিকৃত হয়েছে  । বর্তমান সময়ে পরম্পরার নামে যারা এসব বিষয় টিকিয়ে রাখতে সচেষ্ট ও যেসব বিষয়ে বিধর্মীগণ প্রতিনিয়ত আমাদের কটাক্ষ করে সেসব আবর্জনা টিকিয়ে রাখার পেছনে তাদের কি উদ্দেশ্য সেসব আশা করি আমাদের পাঠকগণ চিন্তা করবেন । 

নমস্কার । 

  1. শব্দকল্পদ্রুম-এ এটি আছে।
    পর্ব্বতারিঃ (পুং) ইন্দ্রঃ। ইতি শব্দরত্নাবলী
    পর্ব্বতাশয়ঃ (পুং) মেঘ। ইতি শব্দচন্দ্রিকা

    ReplyDelete