https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

মন্দিরে ব্যভিচার হয় ? সত্যার্থ প্রকাশে কেন বলা হলো জানুন

Saturday, October 30, 2021



 

শ্রীমদ্দয়ানন্দ সরস্বতী মন্দিরে নারী পুরুষের মেলামেশা হয় ও ব্যভিচারের উল্লেখ করেছেন বলে অনেক পৌরাণিক ভ্রাতাগণ ক্ষিপ্ত । তারা বলেন মন্দিরের ন্যায় পবিত্র স্থান সম্পর্কে এহেন মন্তব্য অবজ্ঞা ও তদীয় পিতা-মাতাকেও অপমান স্বরূপ । প্রকৃতপক্ষে তারা মহর্ষির উক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষাপট ও অন্যাদি তাৎপর্য বুঝতে অক্ষম কিংবা দুরভিসন্ধিমূলক কারণে তারা সত্যটি গোপন করেন ।

মহর্ষি বিরচিত সত্যার্থ প্রকাশের ব্যাখ্যা রচনা করেছেন স্বামী বিদ্যানন্দ সরস্বতী । এছাড়াও ড. শিবপূজন সিংহ কুশবাহশাস্ত্রী , পণ্ডিত শিবশঙ্কর শর্মা , পণ্ডিত তুলসীরাম স্বামীসহ প্রভৃতি আর্য বিদ্বান সত্যার্থ প্রকাশের সকল বক্তব্য মহর্ষির চিঠিপত্র, ভাষণ ইত্যাদির সাহায্যে রাশি রাশি প্রমাণসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন ।

মহর্ষি যে সময়ের ও যেসব মন্দিরের উল্লেখ করেছেন তা সবই পৌরাণিক দেবদাসী ও তান্ত্রিক মন্দির সম্পর্কে । এ বিষয়ে সকল আর্য বিদ্বানই সমর্থন করেছেন । এখানে অন্য কারো ব্যাখ্যা বা কে কি বলেছেন তা বিচার করার কোন আবশ্যকতা আমরা বোধ করছি না । আসুন কেন মহর্ষি তৎকালীন পৌরাণিক ও তন্ত্র প্রভাবিত মন্দির সম্পর্কে এমন উক্তি করেছেন তা সেসকল তথাকথিত শাস্ত্রের আলোকে আমরা দেখি -


ক্রীতা দেবা যদাতব্যা ধীরেণাকষ্টকর্মণা
কল্পকালং ভবেৎস্বর্গং নৃপো বা কৌ মহাধনী
পদ্মপুরাণ সৃষ্টিখণ্ড ৫২।৯৯-১০০
অনুবাদঃ ধীর ব্যক্তি ক্রীত কন্যা দেবোদ্দেশে দান করিবেন । 



[ লক্ষ্যণীয় কন্যা তথা মানুষ কিনে হলেও দেবতার উদ্দেশ্যে দান করতে হবে । দেবতা কন্যা নিয়ে কি করবেন ? আর কিনেই বা কেন ? উপাসনা তো স্বেচ্ছায় ভক্তিমতী হয়েই করবে । উদ্দেশ্য আসলে কার স্বার্থসিদ্ধি ? ]

দাসীং দত্ত্বা দ্বিজেন্দ্রায় অপ্সরোলোকমাপ্নুয়াৎ ।
অগ্নিপুরাণ ২১১।৩৯ [ সংস্করণ ভেদে ১৪৬.৩৯ ]
অনুবাদঃ ব্রাহ্মণকে দাসী দানে অপ্সরা লোক পাওয়া যায় ।




[ বেদাদি কোন শাস্ত্রে এমন কোরাণিক বেহেশতের ন্যায় অপ্সরা লোক আছে? ]


ভবিষ্য পুরাণ ইংরেজ বা এর আশেপাশের আমলে লিখিত হলেও এরমধ্যে সেইসব উপাদানই লিপিবদ্ধ আছে যা কিনা তৎকালীন সময়ে প্রচলিত ছিলো । মহর্ষি সেই সময়কারই ব্যক্তি ও পর্যবেক্ষক - 


বেশ্যাকদম্বকং যস্তু দদ্যাৎসূর্যায় ভক্তিতঃ ।
স গচ্ছেৎপরমং স্থানং যত্র তিষ্ঠতি ভানুমান্ ।।
ভবিষ্য পুরাণ ব্রাহ্মপর্ব ৯৩।৬৭
অনুবাদঃ সূর্যের জন্য নৃত্যকারী বেশ্যাগণ সূর্যলোক প্রাপ্ত হয় । 





মৎস্য পুরাণে বেশ্যাদের ব্রত - ব্রাহ্মণকে রতিদান 

তস্মৈ বিপ্রায় সা দদ্ব্যান্মাধবঃ প্রীযতামিতি।।৪৩
য়থেষ্টাহারযুক্তং বৈ তমেব দ্বিজসত্তমম।
রত্যর্থং কামোদেবোহয়মতি চিত্তহবধার্য্য তম্।।৪৪
যদযদিচ্ছতি বিপ্রেন্দ্রস্তৎ তৎ কুর্য্যাদ্বিলাসিনী।
সর্বভাবেণ চাত্মানমর্পযেৎ স্মিতভাষিণী।। ৪৫
মৎস্য পুরাণ ৭০।৪৩-৪৫

অনুবাদঃ পরে সেই বিপ্রকে যথেষ্ট আহার দিয়া
রতির নিমিত্ত 'এই দ্বিজোত্তমই সাক্ষাত কামদেব' মনে মনে এইরুপ অবধারণ করিবেন।
অনন্তর সেই ব্রাহ্মণ যাহা যাহা ইচ্ছা করিবেন, সেই ব্রতচারিণী বিলাসিনী
তাহাই করিবেন।
স্মিত-পূর্ব্ব- ভাষিণী কামিনী তাহার নিকট সর্ব্ব প্রকারে আত্মসমর্পণ করিবে।


এই একই কাহিনী রয়েছে বৈষ্ণবদের অন্যতম প্রিয় পদ্ম পুরাণের সৃষ্টি খণ্ডের ২৩ নং অধ্যায়ে ১১৯ থেকে ১২১ সংখ্যক শ্লোকে । 

ততঃ প্রভৃতি যোঽন্যোপি রত্যর্থং গেহমাগতঃ। 
সম্মান্য সূর্যবারেণ স সংপূজ্যো ভবেৎসদা।। 
এবং ত্রয়োদশং যাবন্মাসমেকং দ্বিজোত্তমম্।
তর্পয়িত্বা যথাকামং প্রেষয়েচ্চৈব মংদিরম্
তদনুজ্ঞয়া রূপবংতং যাবদস্যাগমো ভবেৎ।। 
আত্মনোপি যদা বিঘ্নং গর্ভসূতকরাজকম্
দৈবং বা মানুষং বা স্যাদুপরাগেণ বা ততঃ।। 
সাবারা নষ্টপংচাশদ্যথাশক্তি সমর্পয়েৎ । 
এতদ্ধি কথিতং সম্যগ্ভবতীনাং বিশেষতঃ। 
স্বধর্মোয়ং যতো ভাব্যো বেশ্যানামিহ সর্বদা।।
পদ্মপুরাণ সৃষ্টি খণ্ড ২৩।১৩১-১৩৫

অনুবাদঃ সেই অবধি অপর কোন দ্বিজ‌ও রতি নিমিত্ত সূর্য্যবারে গৃহে আগমন করে , তাহা হ‌ইলে তাঁহাকেও সদা সম্মান ও পূজা করিতে হ‌ইবে।এই নিয়মে ত্রয়োদশ মাস পর্য্যন্ত এক একটি বিপ্রকে যথাকালে পরিতোষিত করিয়া গৃহে প্রেরণ করিবে। তদীয় অনুজ্ঞাক্রমে যাবতীর রূপবান্ ব্যক্তি তাহার গৃহে আসিতে থাকিবে।যৎকালে গর্ভ, সন্তানোপত্তি,রাজকৃত উপদ্রব, কিংবা উপরাগ বশত দৈব বা মানুষ বিঘ্ন উপস্থিত হ‌ইবে,তখন অষ্ট পঞ্চাশৎবার যাবৎ যথাশক্তি উল্লিখিত শয্যাদি দান করিবে। তোমাদের নিকট সম্যকরূপে এই বিশেষ ব্রত কথিত হ‌ইল। ইহাই বেশ্যাগণের সর্ব্বদা স্বধর্ম।

অবশ্য পৌরাণিকদেরই স্বর্গরাজ ইন্দ্র কর্তৃক মৃত দৈত্য ও রাক্ষসগণের স্ত্রীদের স্বর্গে বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বনের পরামর্শ দেখা যায় পুরাণে । 

দানবাসুরদৈত্যেষু রাক্ষসেষু ততস্ততঃ।
তেষাং ব্রাতসহস্রানী শতান্যপি চ যোষীতাম্।। ২৬
পরিণীতানি যানি স্যুবলাদ্তুক্তানি যানি বে।
তানি সর্ব্বাণি দেবেশঃ প্রোবাচ বদতাংবরঃ।। ২৭
                  ইন্দ্র উবাচ।
বেশ্যাধর্ম্মেণ বর্ত্তধ্বমধুনা নৃপমন্দিরে।
ভক্তিমত্যো বরারোহাস্তথা দেবকুলষূ চ।। ২৮
মৎস্য পুরাণ ৭০।২৬-২৮

সরলার্থঃ পুরাকালে দেবাসুরযুদ্ধে সুরগণের হস্তে বহুশত দানব, অসুর, দৈত্য ও রাক্ষস ইতস্ততঃ নিহত হইলে তাহাদিগের শত শত সহস্র সহস্র পরিণীত পত্নীগণকে এবং বলপূর্ব্বক উপভুক্ত অন্যান্য নারীগণকে বাগ্মী-বর সুরপতি বলিয়াছিলেন তোমরা ভক্তিমতি হয়ে অধুনা রাজধানী ও দেবপুরী প্রভৃতিতে বেশ্যাধর্ম্ম অবলম্বনপূর্ব্বক অবস্থান কর।


কাদের নিয়ে তান্ত্রিকরা এই অনাচার করতো ? যোনী তন্ত্রের দ্বিতীয় পটলে দেখুন -

শ্রীমহাদেব উবাচ-
নটী কাপালিনী বেশ্যা রজকী নাপিতাঙ্গনা।
ব্রাহ্মণী শূদ্রকন্যা চ তথা গোপালকন্যকা।।৩
মালাকারস্য কন্যা চ নব কন্যাঃ প্রকীর্ত্তিতাঃ।
অথবা সর্ব্বজাতীয়া বিদগ্ধা লোললোচনা।।৪

মহাদেব কহিলেন- নটী, কাপালিকা, বেশ্যা, রজকী, নাপিতাঙ্গনা, ব্রাহ্মণী, শূদ্রকন্যা, গোপযুবতী, মালাকার কন্যা, -এই নব (নয়) জাতীয়া যুবতী শুভযোনি এবং যোনিপীঠে পূজার জন্য প্রশস্তা। অথবা সর্ব্বজাতীয়া বিদগ্ধা এবং লোললোচনা(পুনঃ পুনঃ পরিভ্রামিত বা ঘুর্ণিত-চঞ্চলনয়না) কুলযুবতী এতদুদ্দেশ্যে প্রশস্তা।৩-৪


আর এরা একমাত্র মা বাদে সবাইকেই এর অন্তর্ভুক্ত করেছিলো - 

মাতৃযােনিং পরিত্যজ্য সৰ্বযোনিঞ্চ তাড়য়েৎ ।
দ্বাদশব্দাধিকা - যােনিং যাবৎ ষষ্ঠাং সমাপয়েৎ ॥ ৫ 
প্রত্যহং পূজয়েদ যোনিং পঞ্চতত্ত্বৈ বিশেষতঃ

 যােনিদর্শনমাত্রেণ তীর্থকোটিফলং লভেৎ।। ৬ 

তিলকং যােনিতত্ত্বেন বস্ত্ৰঞ্চ কুলরূপকম ।
 আসনং কুলরূপঞ্চ পূজনঞ্চ কুলােচিতম্ ।। ৭
 প্রথমং মর্দনং তস্যাঃ কুন্তলা কর্ষণাদিক । 
তদ্ধস্তে চ স্বলিঙ্গঞ্চ দদ্যাৎ সাধক - সত্তমঃ।। ৮
 যােনিপূজাং বিধায়াথ লিঙ্গ - পূজনমুত্তমম , । চন্দনং কুঙ্কুমং দদ্যাৎ লিঙ্গোপরি বরাননে ।। ৯ 
যোনৌ লিঙ্গং সমাক্ষিপ্য তাড়ায়েদ্বহুযত্নতঃ । 
তাড্যমানে পুনস্তস্যা জায়াতে তত্ত্বমুত্তমম্ ৷৷ ১০
যোনী তন্ত্র ২য় পটল

অনুবাদঃ প্রথমে কেবলমাত্র মাতৃযােনি পরিত্যাগ করিয়া অন্য সমস্ত কুলযুবতীর যােনিতেই তাড়না প্রশস্ত । দ্বাদশবর্ষের অধিক কুলযুবতীর যােনিপীঠে সাধক স্বকীয় যষ্টি বৎসর বয়স পর্যন্ত প্রত্যহ পঞ্চতত্ব দ্বারা যথাবিধানে পূজা করিবে । যােনিপীঠ দর্শনমাত্রই কোটিতীর্থ দর্শনের ফল লাভ হয় । ৫-৭ 

[ পাঠক , দেখুন এই ইতরদের অধঃপতন মাতা ব্যতীত সবাইকেই ভোগ্য ! কি মহান আদর্শ !! ] 

যােনিতত্ত্বের দ্বারা তিলক প্রদান করিবে ; কুলাচার প্রথানুয়াযী বস্ত্র এবং আসন গ্রহণ করিয়া কুলােচিত বিধানে ইষ্টদেবীর পূজা করিবে । কুলযুবতীর কুচমর্দনপূৰ্ব্বক তাহার কুন্তলাদি আকর্ষণ করিবে । তৎপরে সাধকশ্রেষ্ট তাহার হস্তে স্বীয় লিঙ্গ অৰ্পণ করিবে । প্রথমে যােনিপীঠে পূজা করিয়া তৎপরে লিঙ্গপীঠে পূজাই সর্বোত্তম পূজা । হে বরাননে ! লিঙ্গোপরি চলন ও কুঙ্কুম প্রদান করিবে । যােনিতে লিঙ্গ নিক্ষেপ করিয়া সৰ্বপ্ৰযত্নে তাড়না করিবে । ৮-১০।

 



বৃহস্পতিসমো যন্তু ভবিতুং কাময়েন্নরঃ।
সর্ব্বো বৃহস্পতিসমো ভবেচ্চৈব ন সংশয়ঃ।। 
সুন্দরীং যৌবনোন্মত্তাং নারীমানীয় নিত্যশঃ।
অষ্টোত্তরশতং জপ্তা কুলমামন্ত্র্য মন্ত্রবিৎ।। 
মৈথুনং যঃ করোত্যেব স তু সর্ব্বং ফলং লভেৎ।
তন্মুখে চ মুখং চ দত্ত্বা সহস্রং মানসং জপেৎ।। 
স ভবেৎ সর্ব্বসিদ্ধিদো নাত্র কার্য্যবিচারণা।
সর্ব্বেষাং সাধনাং মধ্যে শ্রেষ্ঠঃ স্যাৎ কুলসাধনম্ ।। 
তস্মাৎ সর্ব্বপ্রযত্নেন সাধয়েৎ সুসমাহিতঃ।।
কুমারী তন্ত্র ৫।১৯-২৩ 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি বৃহস্পতি তুল্য জ্ঞানবান হইতে ইচ্ছা করে সে ব্যক্তি এই সাধনাপ্রভাবে বৃহস্পতিতুল্য জ্ঞানবান হইয়া থাকে, এতদ্বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। ১৯।। প্রত্যহ সুন্দরী যৌবনোন্মতা কুলযুবতী আনয়নপূর্ব্বক প্রথমে কুলাগার অভিমন্ত্রিত করিবে। তৎপর মন্ত্রজ্ঞ সাধক অষ্টোত্তর শতবার কালিকামন্ত্র জপ করিয়া ঐ কুলস্ত্রীর সহিত মৈথুনে প্রবৃত্ত হইবে। এইরূপে কুলস্ত্রীর সহিত রতিক্রিয়া সম্পন্ন করিলে সাধক পূর্ণফল লাভ করিয়া থাকে। রতিকালে কুলযুবতীর মুখে মুখ প্রদান করিয়া এক-সহস্র সংখ্যক মানস জপ করিবে। ২০-২১।। যে ব্যক্তি এইরূপে কার্য্য করে সে সর্ব্বসিদ্ধিদাতা হইয়া থাকে। এতদ্বিষয়ে বিচার বিতর্ক অনাবশ্যক। সর্ব্বপ্রকার সাধন পদ্ধতির মধ্যে কুলাচারমতে সাধনই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ। সুতরাং সর্ব্বপ্রযত্নে অত্যন্ত একাগ্রতার সহিত কুলাচার পদ্ধতিতে সাধন করিবে। ২২-২৩।




আর এই অশ্লীল কদাচারের আরেকটু স্পষ্ট বর্ণনা -

ধর্ম্মার্থকামমোক্ষার্থী চতুৰ্বৰ্গং লভেন্নরঃ ।
 মদ্যং মাংসং বলিং দদ্যাৎ নিশায়াং সাধকোত্তমঃ ২০।। 
 যত্নতস্তাড়য়েদ্ যোনিং কুচমর্দ্দন-পূর্ব্বকম্ ! 
শক্তিরূপা চ সা দেবী বিপরীতরতা যদি ।। ২১ 
তদা কোটিকুলৈঃ সার্দ্ধনং জীবিতঞ্চ সুজীবিতম্ ।
 যোনিক্ষালন-তোয়েন লিঙ্গ-প্রক্ষালনেন চ।। ২২
 পূজয়িত্ব মহাদেবীং অর্ঘং দদ্যাৎ বিধানতঃ ।
 তত্তোয়ং ত্রিবিধং কৃত্বা ভাগং শক্ত্যৈ নিবেদয়েৎ।।  ২৩
 যোনী তন্ত্র ২য় পটল

অনুবাদঃ সাধক নিশাভাগে মদ্য ও মাংস দ্বারা বলি প্রদান করিবে । বলি প্রদানান্তে সযত্নে কুচমর্দ্দনপূর্ব্বক যোনিকে তাড়না করিবে। শক্তিরূপা সেই দেবী যদি বিপরীতরতিতে প্রবৃত্ত হয়, তাহা হইলে কোটিকুলসহ সাধকের জীবন ধন্য হয়। যোনি এবং লিঙ্গ প্রক্ষালিত সলিল দ্বারা মহাশক্তিকে পূজা করিয়া যথাবিধানে অর্থ প্রদান করিবে।


 
তন্ত্রে গুটি কয়েক স্থানে নেহাত ভদ্রতা বশতঃ [ কিংবা বলা যায় যাদেরকে এহেন কর্মে লিপ্ত করবে সেই কূলবধূদের ] নারী নিয়ে অনেকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেন । কিন্তু সেই তান্ত্রিক শাক্তরের প্রিয় কালিকা পুরাণের ৮৪ তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে-

অস্বতন্ত্রাঃ স্ত্রীয়ঃ কার্য্যাঃ সততং পার্থিবেন তু।
তাঃ স্বতন্ত্রাঃ স্ত্রিয়ো নিত্যং হানয়ে সম্ভবস্তি হি।। ১২৯
তস্মাৎ কুমারং মহিষীমুপধাভির্মনোহরৈঃ।
শোধয়িত্বা নিমুঞ্জিত যৌবরাজ্যোবরোধয়োঃ।। ১৩০
অন্তঃপুরপ্রবেশে তু স্বতন্ত্রত্বং নিষেধয়েৎ।
ভূপুত্রস্য ভার্য্যায়া বহিঃসারে তথৈব চ।। ১৩১

অনুবাদঃ স্ত্রীরা যদি স্বতন্ত্র হয়ে কাজ করে, তাহলে ভীষণ অনিষ্টের সম্ভাবনা হয়। অতএব রাজা, সুন্দর ধর্ম এবং অর্থ-কাম প্রভৃতি দ্বারা পুত্র এবং পত্নীকে সংশোধিত করে যৌবরাজ্যে এবং অন্তঃপুরে নিয়োগ করবেন। ১২৯-১৩০
ভূপতি, পুত্র এবং পত্নীকে বহিঃপ্রদেশে এবং অন্তঃপুরে স্বতন্ত্র হয়ে কোনো কাজ করতে দেবেন না। ১৩১


এই তান্ত্রিকরা যে উপাসনালয় তো বটেই উপাসনাকেই অপবিত্র করেছিলো তার আরো প্রমাণ রয়েছে এই পুরাণে । 

ভয়ং চ লজ্জা নৈব চাস্তে বধূনাং তথা নৃণাং বনিতানাং যতীনাম্ ।
স্বসারং তে হ্যবিদিত্বা দিনেপি সুবাম যজ্ঞেন স্বভাবশ্চ বীন্দ্র ॥ 
গরুড় পুরাণ ব্রহ্মকাণ্ড ২৮।৭৯
অনুবাদঃ কোন পুরুষ বা নারী অথবা সন্ন্যাসীর এই বিষয়ে কোন লজ্জা বা ভয় থাকা উচিত নয়। ছেলে এমনকি তাদের বোনের সাথে দিনের বেলাতেও সঙ্গম করতে পারে ঠিক যেমন পুরোহিতরা সোমযজ্ঞ শেষে নারীদের সাথে করে।


মহর্ষি যে সময়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঠিক সেসময় এই অন্ধকারাচ্ছান্ন সময় ছিলো যখন এইসব কদাচারীদের জন্য বিদেশী শাসকরা আমাদের সমাতন ধর্মকে উপহাস করতো যার ফলে আমাদের যুবকগণ বীতশ্রদ্ধ হচ্ছিলো । মহর্ষির উক্তি সেইসব অনাচারের ক্ষেত্রকে উদ্দেশ্য করেই - 

 কালিকা পুরাণ, ৬১তম অধ্যায়-
পুজয়িত্বা মহাষ্টম্যাং নবম্যাং বলিভিস্তথা।
বিসর্জ্জয়োশম্যানন্তু শ্রবণে শবরোৎসবৈঃ।।১৭
অন্তপাদো দিবাভাগে শ্রবণাস্য সদা ভবেৎ।
তদা সম্প্রেষণং দেব্যা দশম্যাং কারয়েদ্ ভবেৎ।।১৮
শঙ্খতুর্য্যনিচু নাদৈশ্চ মৃদঙ্গৈঃ পটহৈমন্তমা।।১৯
ধ্বজৈর্বস্তৈর্বহুবিধৈর্লাজ পুষ্প প্রকীর্ণকৈঃ।
ধুলিকর্দ্দমবিথেপৈঃ ক্রীড়াকৌতুক মঙ্গলৈঃ।২০
ভগলিঙ্গপভিধানৈশ্চ ভগলিঙ্গষ্প্রগীতকৈঃ।
ভগলিঙ্গপদি শব্দৈশ্চ ক্রীড়য়েসুরলং জনাঃ।।২১
পরৈর্নাক্ষিপ্যাতে সম্ভ স’পরান্নক্ষিপেদ যদি।
ক্রুদ্ধা ভগবতী অন্য শাপং যদ্যাৎ সুদারুণম্।।২২
 
অনুবাদঃ মহাষ্টমীর দিন পূজা করিয়া নবমির দিন বহুবিধ বলিপ্রদানপূর্বক পূজা করিয়া দশমীর দিন শ্রবণা নক্ষত্রে শবরোৎসব সহিত দেবীর বিসর্জন করিবে। যে দশমী তিথির দিবাভাগে শ্রবণার শেষ পাদ হইবে, সেই দশমী তিথিতেই দেবীর বিসর্জন করিবে। রাগনিপুণ কুমারী ও বেশ্যা এবং নর্তকগণ সঙ্গে লইয়া শঙ্খ, তুরী, মৃদঙ্গ এবং পটহের শব্দ করিতে করিতে নানাবিধ বস্ত্রের ধ্বজা উড়াইয়া খই ও ধুলি-কর্দম নিক্ষেপ করত, ক্রীড়া কৌতুক ও মঙ্গলাচরণ পূর্বক ভগলিঙ্গপাদি বাচক গ্রাম্যশব্দ উচ্চারণ ও তাদৃশ শব্দবহুল গান এবং তাদৃশ অশ্লীল বাক্যালাপ করিয়া বিসর্জন সময়ে ক্রীড়া করিবে। সেই দিবস যদি কোন মানুষ, নিজের উপর অপর কর্তৃক অশ্লীল ব্যবহার করা না ভালবাসে এবং অপরের উপর অশ্লীল ব্যবহার করিতে না চাহে, তবে ভগবতী ক্রুদ্ধ হইয়া তাহাকে শাপ প্রদান করিয়া গমন করে।


 কি বুঝলেন? অশ্লীলতা পছন্দ না করলে ভগবতী শাপ দেবেন । এই পাপ যে উপাসনালয় অব্দি গড়িয়েছিলো তা আর বিচিত্র কি ?

মন্দিরে এই ধরনের অপকর্মের কথা দয়ানন্দ সরস্বতী কোন প্রেক্ষিতে বলেছেন? তিনি কি মন্দির মাত্রেই এসব হয় বলেছেন? না। দয়ানন্দ সরস্বতী দেবদাসী প্রথার প্রসঙ্গে এই কথা লিখেছিলেন যা শুধু তিনিই নন বরং সব বড় বড় ইতিহাসবিদরাই বলে গেছেন। RC Majumder, William Dalrymple, Anil Chwala সবাই তাদের লেখায় এই ব্যাপারটি তুলে ধরেছেন  ।RC Majumder এর মত বিখ্যাত এবং প্রবল হিন্দুত্ববাদী ইতিহাসবিদের চেয়ে নিশ্চয় দুইদিনের তথাকথিত শিক্ষকরা অধিক হিন্দুত্ববাদী নয়। তিনি তার বিখ্যাত বই The Struggle For Empire pg 495-496 এ লিখেছেন গুজরাটের প্রায় ৪০০০ মন্দিরে ২০ হাজারের বেশি দেবদাসী ছিল ।
 
 


কলহনের রাজতরঙ্গিনীতেও আমরা এদের উল্লেখ পাই -

সাপি হি দ্যুসদো বেশ্মনর্তকী নাট্যমণ্ডপে। দৃষ্ট্বা তেনাবরুদ্ধাত্বং নিন্যে রাজবধূঃ পুরা। 
(রাজতরঙ্গিনী ৭।৮৫৮)
কয্যার মতো সহযাও এক দাসী ছিল এবং সে দেবমন্দিরে নৃত্য করত। একদিন রাজা উৎকর্প তাকে নাট্যমণ্ডপে দেখেন এবং তার সৌন্দর্যে আসক্ত হয়ে নিজের অন্তঃপুরে নিয়ে গিয়ে রাজরাণী করে রাখেন৷


২০১৬ সালে কর্ণাটক হাইকোর্ট এই দেবদাসী প্রথাকে নিষিদ্ধ করার জন্য আদেশ প্রদান করে।রায়ে বলা হয় মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক,অন্ধ্র প্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর অনেক মন্দিরে এই জঘন্য প্রথার মাধ্যমে অল্প বয়সী কিশোরীদের সারাজীবনের জন্যে দাসী বানিয়ে তাদেরকে অবৈধ যৌনতাতে বাধ্য করা হচ্ছে। রায়ে আরও বলা হয় যে
Karnataka Devadasis Prohibition of Dedication Act, 1982, and Maharashtra Devadasis Abolition Act, 2006 এ দেবদাসী প্রথা সম্পূর্ণ বিলোপের আদেশ দিলেও প্রশাসন এই ব্যাপারে এখনো দৃঢ় পদক্ষেপ না নেয়ায় এই অমানবিক সমস্যাটির সমাধান এখনো নিশ্চিত হয়নি।


 
According to a report by one-man commission headed by Justice Raghunath Rao in 2015, there are 80,000 Devdasi in Telangana and Andhra Pradesh states.
http://timesofindia.indiatimes.com/india/Devadasi-system-still-exists-in-Telangana-AP-says-report/articleshow/46337859.cms
 
As per Theguardian.com’s 2011 report “The National Commission for Women estimate that there are 48,358 Devadasis currently in India.”
http://www.theguardian.com/lifeandstyle/2011/jan/21/devadasi-india-sex-work-religion
 

Quoting the National Commission for Women, the authority says there are 2.5 lakh “Devadasi” girls who have been dedicated to Yellamma and Khandoba temples on Maharastra-Karnataka border. This includes 16,624 from Andhra Pradesh, 22,941 from Karnataka and 2,479 from Maharastra. The Devadasi system is prevalent in 10 districts of north Karnataka and 14 districts in Andhra Pradesh.

http://www.thehindu.com/todays-paper/tp-national/tp-karnataka/article3246913.ece

http://www.telegraph.co.uk/expat/expatlife/8008562/Indias-prostitutes-of-God.html

 

পদ্মপুরাণের পাতাল খণ্ডে ১১৩.৪০-৪৬ আমরা শিব মন্দিরের দেবদাসীদের বৈশিষ্ট্য হিসবে দেখি  তারা হবে -
১. সুন্দরী ও নৃত্য-গীত পারদর্শী
২. স্থির স্তনযুক্ত
৩. রতিক্রিয়াতে সিদ্ধ


 

পূর্বে আমরা বেশ্যাদের দ্বারা ব্রাহ্মণদের রতি প্রদান দেখেছি  ।বেদ বিরুদ্ধ এই কাজটি ব্রাহ্মণ্যবাদের ধ্বজাধারী স্মার্ত পুরোহিতদের সমর্থনেই হয়েছে তা স্মৃতির দিকে তাকালেই বোঝা যায়  । যেমন বিষ্ণু স্মৃতি ১৬.১২ " স্ত্রীরক্সা তজ্জীবনং চ বৈদেহকানাং"  তে বৈদেহদের বেশ্যাদের রক্ষার কথা আছে । আমরা বাংলা অনুবাদ ও টীকা অনুযায়ী ইংরেজি অনুবাদ দুটোই দিচ্ছি ।


 Vaidehakas must earn their livelihood by keeping [dancing girls and other public] women and profiting by what they acquire.-  Tr. Manmatha Nath Dutt


গৃহীতবেতনা বেশ্যা নেচ্ছন্তী দ্বিগুণং বহেৎ ।
অগৃহীতে সমং দাপ্যঃ পুমানপ্যেবমেব চ ।।

যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি ২.২৯৫ 

অর্থ - বেশ্যা শুল্ক নিয়ে সহবাস না করলে কি দণ্ড হবে বা পুরুষ শুল্ক দিয়ে সহবাস না করলে সে শুল্ক আর ফিরে পাবে না ইত্যাদি । 


 

মহর্ষি যদি মন্দির মাত্রেই বিরোধীতা করতেন তবে তিনি ও তার পরে আর্যসমাজ কোন আর্যমন্দির প্রতিষ্ঠা করতো না । এই সামান্য যুক্তিটি যারা বুঝতে অক্ষম তারা কোন যোগ্যতাবলে মহর্ষি কথিত এই গ্রন্থের অপব্যাখ্যা প্রসঙ্গ বহির্ভূতভাবে করার দুঃসাহস করে তা চিন্তনীয় বটে । যদিও মূর্খের পক্ষে অগ্নিতেও লম্ফঝম্প করা স্বাভাবিক, পরিশেষে তা তারই বিনাশের কারণ হয় । আর্যসমাজের কিছু বিখ্যাত মন্দির ও যজ্ঞের ছবি নিম্নরূপ- 

 








অতঃ সুধী পাঠকগণ , মহর্ষি কোন প্রসঙ্গে উক্ত মন্তব্যটি করেছিলেন ও আর্যসমাজ সেই বিষয়গুলোর কেন বিরোধীতা করে তা আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন । প্রকৃতপক্ষে পৌরাণিক ও তান্ত্রিক কতিপয় ব্যভিচারী অনার্যই তাদের পূর্ব পরম্পরাধারী এসব কুকর্মকারীদের লজ্জা ঢাকার জন্য সাধারণের চোখে ধুলো দিতে আবেগপ্রবণভাবে ছলপূর্বক এসব উপস্থাপন করে । কিন্তু সত্য সূর্যের ন্যায় । তা প্রকাশিত হবেই । এই প্রবন্ধের লেখাতেও তারা সন্তুষ্ট না হলে আরো আছে প্রমাণ  আমাদের নিকট, এই প্রবন্ধ যার ২০ শতাংশ মাত্র । ধীরে ধীরে তাদের বাকি আপত্তিও সব খণ্ডন করা হবে ।
অলমিতি।