বেদে কি নারীদের বুদ্ধি কম বলা হয়েছে
ঋগ্বেদ ৮।৩৩।১৭ বিশ্লেষণ

ইন্দ্রশ্চিদ্ঘা তদব্রবীৎস্ত্রিয়া অশাস্যং মনঃ ।
উ
তো অহ ক্রতুং রঘুম্ ॥
তো অহ ক্রতুং রঘুম্ ॥
ঋগ্বেদ ৮।৩৩।১৭

“ইন্দ্রশ্চিদ্ধ ইন্দ্রঃ খলু “তদব্রবীৎ । “স্ত্রিয়াঃ “মনঃ চিত্তম্ “অশাস্যং পুরুষেণাশিষ্যং শাসিতুমশক্যং প্রবলত্বাদিতি । "উতো অপি চ স্ত্রিয়াঃ “ক্রতুং প্রজ্ঞাং "রঘুং লঘুমাহ ॥

ইন্দ্রই তাহা বলিয়াছেন যে, স্ত্রীর মন দুঃশাস্য, স্ত্রীর ক্রতু লঘু ।
আসুন এবার মন্ত্রের প্রকৃত তাৎপর্য পর্যবেক্ষণ করি -

(ইন্দ্রঃ) প্রভু (চিৎ ঘা) নিশ্চিতভাবেই (তদ্ অব্রবীৎ) এই প্রবচন করেন যে (স্ত্রিয়াঃ) স্ত্রীর (মনঃ) মন (অশাস্যম্) শাসনযোগ্য নয়(উত) এবং (উ) নিশ্চিতচাবে প্রভুই এই স্ত্রীর (ক্রতুম্)প্রজ্ঞাকে (রঘুম্ অহ) গতিশীল ক্রিয়াত্মকই [অব্রবীৎ=বলেছেন] ।
অর্থাৎ স্ত্রীর মনের উপর পতির শাসন করা উচিত নয় । পতির মানসিকতাকে মৃত করা উচিত না । এতে সন্তানও উত্তম হয় না । পত্নীর বুদ্ধি ক্রিয়াত্মক ও গতিশীল । প্রতি সমস্যারই কোন না কোন সমাধান উদ্ভাবন করে ।

উত্তম উপদেশ ও গুণের গৃহীতা শিক্ষিতা স্ত্রীর চিত্ত বিশেষ শাসনের অপেক্ষা করে না এবং তার কর্ম সামর্থ্যও অত্যন্ত কুশল হয় ।


রঘু অর্থ কুশল । যদ্যপি উণাদি কোষে বলা হয়েছে স্ত্যায়তের্ড্রট্। উ০ ৪।১৬৬। ইতি স্ত্যৈ শব্দসঙ্ঘাতয়োঃ-ড্রট্। লোপো ব্যোর্বলি। পা০ ৬।১।৬৬। ইতি যলোপঃ। টিত্বাৎ ঙীপ্। ইতি স্ত্রী সংহতিঃ। স্ত্রীপুংসাভ্যাং নঞ্স্নঞৌ ভবনাৎ। পা০ ৪।১।৮৭। তস্মৈ হিতম্। পা০ ৫।১।৫। ইতি হিতার্থে নঞ্।
কিন্তু অষ্টাধ্যায়ী ৮।২।১৮ অনুযায়ী ল'তে পরিণত হলেও ঋগ্বেদ ১।১৪০।৪ 'রঘুদ্রুবঃ' বা 'রঘুষ্যদঃ' পদে তা হয়নি ।
আলোচ্য মন্ত্রেও সায়ণ প্রসঙ্গ ও অর্থ বিবেচনা না করে এই হঠকারী ভাষ্য করায় মূল তাৎপর্য বিকৃত হয়েছে । তাই আমাদের উচিত সঠিক অর্থ গ্রহণ করা ও বিকৃত ভাষ্য বর্জন করা ।
ওম্ তৎ সৎ
0 মন্তব্য(গুলি)