https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী কি নিজের কাছে কোনো কামোত্তেজক ঔষধ রাখতেন ?

Wednesday, September 27, 2023

 

একটি হিন্দীভাষী যবন চ্যানেলে এই প্রসঙ্গে একটি শর্ট ভিডিও দেখতে পেলাম যেটিকে বঙ্গীয় কিছু পৌরাণিক বাংলায় টাইটেল দিয়েছে, “ দয়ানন্দের সে** টনিক প্রসঙ্গ” । আর্যসমাজের বিরোধিতা করতে কিংবা ঋষি দয়ানন্দজীকে নীচ প্রতিপন্ন করতে তারা মরু-দ'স্যুদের পদলেহন করতে সদা প্রস্তুত।
আর আমরা যে এদের এমন আচরণে আশ্চর্য হই তা নয়। যারা নিজেদের উপাস্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহান চরিত্রকেও কলুষিত বলে বিশ্বাস ও প্রচার করে । তাদের চরিত্র সম্পর্কে কিমধিকলেখেন?
 
এবার আসুন পাখণ্ডি ও মরুদস্যুদের যৌথ অপপ্রচারটিকে যুক্তি-তর্ক-প্রমাণের তোপে ধূলিসাৎ করে দিই।
 
🦴 পাখণ্ডির আক্ষেপ-“ দয়ানন্দ সরস্বতী নিজের কাছে সে* টনিক রাখতো। সন্ন্যাসী হয়ে নিজের কাছে সে** টনিক রাখত । তাহলে ভাবুন কেমন সন্ন্যাসী হবে”
 
এই আক্ষেপটি পণ্ডিত লেখরাম জী কৃত , মহর্ষির জীবনচরিত্র গ্রন্থের ৭০ তম পৃষ্ঠার একটি লেখা দেখিয়ে করা হয়েছে। উক্ত বাক্যসমূহের মূল হিন্দি লিখা এবং বঙ্গানুবাদ নিম্নে দেওয়া হল-
 
“ हमने कहा कि कृष्णाभ्रक हमने एक ब्रह्मचारी से लिया था। जिसके एक चावल से वृद्ध को यौवनशक्ति प्राप्त होती है। सात दिन की सेवनविधि है। स्वामी जी कहने लगे कि कृष्णाभ्रक मेरे पास है, ले लेना । और उन्होंने पुड़िया बांध कर दी। ”
অর্থ- কথক বলছেন, কৃষ্ণাভ্রক আমি একজন ব্রহ্মচারীর কাছ থেকে নিয়েছিলাম। যার একটি চাল দ্বারা বৃদ্ধের যৌবনশক্তি লাভ হয়। এর সাত দিন সেবনের বিধি আছে। স্বামীজি (দয়ানন্দ) বললেন, কৃষ্ণাভ্রক আমার কাছে আছে, নিয়ে নিও। এবং তিনি (পুরিয়ায়) কাগজে বেধে দিলেন।
 

 
উক্ত কৃষ্ণাভ্রক নামক ঔষধিকেই পাখণ্ডিগণ সেক্স টনিক নাম দিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে। সুতরাং প্রথমে এই কৃষ্ণাভ্রক এর পরিচয় জেনে নেয়া যাক। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে-
 
❝ रसविद्या एवं आयुर्वेद में अभ्रक-
रसशास्त्र में अभ्रक को 'महारस' कहा गया है। काले रंग का अभ्रक आयुर्वेदिक औषधि के काम में लेने का आदेश है। साधारणत: अग्नि का इसपर प्रभाव नहीं होता, फिर भी आयुर्वेद में इसका भस्म बनाने की रीतियाँ हैं। यह भस्म शीतल, धातुवर्धक और त्रिदोष, विषविकार तथा कृमिदोष को नष्ट करनेवाला, देह को दृढ़ करनेवाला तथा अपूर्व शक्तिदायक कहा गया है। क्षय, प्रमेह, बवासीर, पथरी, मूत्राघात इत्यादि रोगों में यह लाभदायक कहा गया है। ❞
অর্থ- “ রসবিদ্যা এবং আয়ুর্বেদে অভ্রক- রসশাস্ত্রে অভ্রককে 'মহারস' বলা হয়েছে। কালো রঙের অভ্রক [কৃষ্ণ + অভ্রক = কৃষ্ণাভ্রক] আয়ুর্বেদিক ঔষধির কাজে লাগানোর আদেশ আছে। সাধারণত এর উপরে আগুনের প্রভাব হয় না, তবুও আয়ুর্বেদে একে ভষ্ম করার রীতি রয়েছে। এই ভষ্মকে শীতল, ধাতুবর্ধক এবং ত্রিদোষ, বিষবিকার তথা কৃমিদোষ কে নষ্টকারী, দেহকে দৃঢ়কারী তথা অপূর্ব শক্তিদায়ক বলা হয়েছে। ক্ষয়, প্রমেহ, পাইলস, পাথর, মূত্রনালীর সংক্রমণ ইত্যাদি রোগে উপকারী বলা হয়েছে। ”
 
  • অভ্রক শোধন - 

 
  • অভ্রকের আর গুণাগুণ - 


 
🔆 এখানে প্রমাণিত হলো যে, কৃষ্ণাভ্রক কোনো কামোত্তেজক বা যৌনশক্তি বর্ধন সম্পর্কিত ঔষধ নয়।
আবার প্রথমেই কথক বলছেন, “ हमने कहा कि कृष्णाभ्रक हमने एक ब्रह्मचारी से लिया था।” অর্থাৎ,“ আমি বললাম আমি এই কৃষ্ণাভ্রক একজন ব্রহ্মচারীর কাছ থেকে নিয়েছি ।” তাহলে যে ব্রহ্মচারীর কাছ থেকে কথক ঔষধটি পেয়েছিলেন । তিনিও কি কামোত্তেজক ঔষধ রাখতেন? 
 
উত্তর- না। কোনো ব্রহ্মচারী নিজের কাছে কামোত্তেজক ঔষধ রাখবেন না কেননা কাম ব্রহ্মচর্যের বিপরীত। আর মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী নিজে তো একজন অত্যন্ত উচ্চকোটির ব্রহ্মচারী ছিলেন। যিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাপূর্বক আমরণ ব্রহ্মচর্য পালন করে গেছেন। 
 
🔆 মহর্ষির ব্রহ্মচর্যের মহিমা- 
 
“ হরিদ্বারে অবধূত মথুরাপ্রসাদ নামে একজন উচ্চকোটি যোগী ছিলেন । ১২৫ বছরের অধিক আয়ু পেয়ে ১৯১৮ সালে তিনি শরীর ত্যাগ করেন । একবার তাঁকে ঋষিদের ব্রহ্মচর্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “ দয়ানন্দ অনেক বড় বীর ছিলেন। এই প্রকার অখন্ড ব্রহ্মচারীর বর্ণনা গ্রন্থে পাওয়া যায়, দর্শন পাওয়া বিরল‌ । দয়ানন্দ গ্রন্থে‌র বর্ণিত আদর্শ ব্রহ্মচারী ছিলেন। ” [ দিব্য দয়ানন্দ]
 
 তো এমন মহান ব্রহ্মচারী, জিতেন্দ্রিয় পুরুষ কামোত্তেজক ঔষধ নিজের কাছে রাখবেন কেন?
 
(শুধু এই উদাহরণ নয়। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর কঠোর ব্রহ্মচর্য তপস্যার ভূরি ভূরি কাহিনী তাঁর জীবনীগ্রন্থসমূহ থেকে উদ্ধৃত করে দেখাতে পারি।)
 
যদিও ‘ অজ্ঞানাবৃতচেতসামতিরুষাং কোহর্থস্তিরশ্চাং গুণৈঃ ’ অজ্ঞানী অবিবেকী পাখণ্ডি পশুদের কারো গুণের কথা শুনিয়েও লাভ নেই। ঋষি মহর্ষিগণের নিন্দা করা এই মহাপাখণ্ডি পুরাণ এবং পৌরাণিদের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য। এখন প্রসঙ্গে আসি,
 
  • 🔆 ‘যৌবনশক্তি বৃদ্ধি’ দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে?
 
বৃদ্ধের যৌবনশক্তি বৃদ্ধি পায় উক্ত বাক্যে যৌবনশক্তির অর্থ যৌন ক্ষমতা করা পাখণ্ডিদের নিকৃষ্ট ধূর্ততার পরিচয়। যৌবনশক্তি বর্ধক হলো যৌবনকালের মতো শারিরীক এবং মানসিক শক্তি তৈরি করে দেওয়া ঔষধিবিশেষ। যেমন একজন যুবকের মতো দৌড়াতে পারা, কাজ করতে পারা, ক্লান্ত এবং অবসাদগ্রস্ত হয়ে না পড়া, তথা সর্বোপরি দৈহিক শক্তি সামর্থ্য বেড়ে যাওয়া, পূর্বের মতো উদ্যম, কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পাওয়া ইত্যাদি । পূর্বোল্লিখিত উইকিপিডিয়ার বর্ণনামতেও উক্ত ঔষধি দৈহিক বল তথা ধাতুবর্ধক, দেহকে দৃঢ়কারী এবং অপূর্ব শক্তিদায়ক। 
 
যৌনশক্তি যৌবনশক্তির একটি অংশবিশেষ হতে পারে কিন্তু যৌবনশক্তি = কেবল যৌনশক্তি কোনোভাবে হতে পারে কি ? 
 
অবশ্য জড়বুদ্ধি পৌত্তলিক পৌরাণিকগণ তো অর্থকে অনর্থ করতে ওস্তাদ। যৌবনশক্তিকে যৌনশক্তি বলে ধরে নিয়েছে হয়তো এজন্যই যে তাদের জীবন - যৌবনে যৌনতাই এবং যৌনকল্পনাই মুখ্য। অবশ্য আমরা তাদের লীলারসসিক্ত অধর্মগ্রন্থরাজির পৃষ্টা উলটে দেখলেও এমনটাই দেখতে পাই।
 
🚩 এরপর একই কথকের দ্বারা বর্ণিত ঠিক এর পরবর্তী কথোপকথন দেখা যাক। কথক মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীকে প্রশ্ন করেছিলেন,
 
❝ तब मैंने कहा कि कामदेव तो सबकी खराब करे हैं, तुम क्योंकर बचे हो ?
कामज्वर से बचे रहने के उपाय - कहने लगे कि इसकी विधि है, उस विधि से रहे तो कामदेव मन्द हो जाता है। जब चढ़ जाता है तो फिर नहीं उतरता। उन्होंने कहा कि
१ - एक स्थान पर ठहरे रहो, कहीं नाच या तमाशे में मत जाओ । न स्त्रियों की ओर देखो । निरन्तर अभ्यास करने से यह स्व-भाव हो जाता है।
२ - प्रणव का जप रात-दिन करो, जब बहुत आलस्य हो, सो जानो; यह सुपुप्ति की निद्रा होती है। फिर सुषुप्ति से जो अत्यन्त परिश्रम से थोड़े समय के लिए होती है, दो घंटे पश्चात मानवी कल्पना से एक भ्रांति वृक्ष भ्रम का होता है, वह अधिक सोने से होता है। इतना सोकर फिर उठकर
भजन प्रारम्भ कर दो और पांच दाने (एक माशे के लगभग ) मालकंगनी के प्रातः काल शौचादि से निवृत्त होकर नित्य खा लिया करो।
३-न तो बुरा देखे और न बुरा सुने और न श्रुति दौड़ाये, प्रत्युत केवल ब्रह्म के ध्यान में रहे । ❞
 
বঙ্গানুবাদ:- কথক বলছেন- “ তখন আমি তাঁকে বললাম যে, কামদেব তো সবার অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে। তুমি কিভাবে বেঁচে আছ? 
 
কামজ্বর থেকে বাঁচার উপায়:- তিনি বলতে লাগলেন, এর বিধি আছে। এই বিধি মেনে চললে কাম মন্দ হয়ে যাবে। তিনি বললেন যে,

  • ১। এক জায়গায় থাকো। কোথাও নাচ বা তামাশা দেখতে যেয়ো না। স্ত্রীলোকদের দিকে দৃষ্টিপাত করো না। নিরন্তর অভ্যাস করতে থাকলে এটি স্বভাব হয়ে যাবে।
  • ২। দিন- রাত প্রণব (ॐ) জপ করো। যখন অনেক আলস্য হবে তখন শুয়ে যাও। এটি সুষুপ্তির নিদ্রা। এরপর সুষুপ্তির দ্বারা, যা অত্যন্ত পরিশ্রমের কারণে অল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে, দুই ঘন্টা পর মানবী কল্পনার কারণে এক ভ্রান্তিবৃক্ষের ন্যায় ভ্রম উৎপন্ন হয়। এটি বেশি ঘুমানোর কারণে হয়। এতটুকু শুয়ে তারপর উঠে পুনরায় ভজন শুরু করে দাও। এবং প্রাতঃকালীন শৌচকর্ম সেরে পাঁচ দানা মালকঙ্গনী নিত্য (প্রায় একমাস ধরে) সেবন করো।
  • ৩। খারাপ কিছু দেখবে না , খারাপ কথা শুনবে না, কান দৌড়াবে না । প্রত্যুত কেবল ব্রহ্মের ধ্যানে থেকো। ”
 

 
🚩 এখানে মহর্ষি কামজ্বর থেকে রক্ষার জন্য কথককে উপদেশ দিচ্ছেন। অথচ ধূর্ত পাখণ্ডিরা চোখের সামনে থেকে সেটা সযত্নে এড়িয়ে গেছে। এবং যে অংশে মনগড়া গোজামিল দিয়ে মহর্ষির নিন্দা করা যায় সে অংশ দেখিয়ে গিয়েছে। 
 
যাই হোক , উপরোক্ত যুক্তিতর্ক ও প্রমাণসমূহের দ্বারা পাখণ্ডিদের করা নিকৃষ্ট অপপ্রচারটিকে ধূলিসাৎ করে দেয়া হলো।
 
🚩🚩 পরম ব্রহ্মচারী শ্রীমৎ মহর্ষি স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী কি - জয়! 🚩🚩