https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

মুণ্ডকোপনিষদ্‌ ২.২.১ কি চাঁদ থেকে মেঘ তৈরি হওয়ার কথা বলে ?

Thursday, May 9, 2024

 


অপপ্রচারকারীরা মুণ্ডকোপনিষদ (২.১.৪-৫) এর শঙ্করভাষ্য তুলে ধরে বলেছে - চাঁদ থেকে কিভাবে মেঘ উৎপন্ন হয়❓এটা তো বৈজ্ঞানিক ভুল❗ 
 
1️⃣প্রথমত, আমরা যদি মুণ্ডক উপনিষদের
মুণ্ডক-২, খণ্ড-১, শ্লোক-৪ দেখি তাহলে দেখবো সেখানে পরমাত্মার বিরাট স্বরূপের বর্ণনা রয়েছে।
 
অগ্নির্মূর্ধা চক্ষুষী চন্দ্রসূর্য়ৌ দিশঃ শ্রোত্রে বাগ্ বিবৃতাশ্চ বেদাঃ।
বায়ুঃ প্রাণো হৃদয়ং বিশ্বমস্য পদ্ভ্যাং পৃথিবী হ্যেষ সর্বভূতান্তরাত্মা ||৪||
পদার্থ: (অস্য) এই পরমাত্মার (অগ্নিঃ) দ্যুলোকরূপ অগ্নি (মূর্ধা) মস্তক (চন্দ্রসূর্য়ৌ) চন্দ্র ও সূর্য (চক্ষুষী) চক্ষু (দিশঃ) সমস্ত দিক (শ্রোত্রে) শ্রোত্র (বেদাঃ,বিবৃতাঃ) প্রসিদ্ধ ঋগাদি চতুর্বেদ (বাক্) বাণী (চ) এবং (বায়ুঃ) সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডগত বায়ু (প্রাণঃ) প্রাণ (বিশ্বম্) নিখিল জগৎ (হৃদয়ম্) হৃদয়-স্থানীয় (পৃথিবী) পৃথিবী (পদ্ভ্যাম) পাদ-স্থানীয় (এষঃ হি) ইনিই (সর্বভূতান্তরাত্মা) সর্বভূতের অন্তর্যামী পরমাত্মা ।।৪।। 
 
🔰ব্যাখ্যা: এখানে পরমেশ্বরের বিরাট স্বরূপের বর্ণনা করা হয়েছে। এই শ্রুতিতে অগ্ন্যাদি অলঙ্কাররূপ শব্দ দ্বারা পরমাত্মার মস্তকাদি অবয়বের যে বর্ণনা করা হয়েছে তা ঔপচারিক অর্থে। নিরাকার ব্রহ্মের মহত্ত্ব বর্ণনার জন্যই উপনিষৎকার ঋষি এই ঔপচারিক রীতি অবলম্বন করেছেন। 
 
🔵এই অভিপ্রায়ে মহর্ষি বেদব্যাস "রূপোপান্ন্যাসাচ্চ;" [ব্র০সূ০ ১।২।২৩] সূত্র রচনা করেছেন যার তাৎপর্য হচ্ছে এই অগ্ন্যাদি অবয়ব আরোপিত আলঙ্কারিক বর্ণনামাত্র, বাস্তবিক নয়। 
 

 

 
🔵 এই আলঙ্কারিক বর্ণনা যে আক্ষরিক অর্থে নয় অর্থাৎ চন্দ্র,সূর্য প্রভৃতি যে সাক্ষাৎ পরমব্রহ্ম-সত্তা বা ঈশ্বরত্ব প্রকাশকারী নয় তার সাক্ষ্য আমরা স্বয়ং উপনিষদেরই অন্যত্র পাই,
 
ন তত্র সূর্যো ভাতি ন চন্দ্র তারকংনেমা বিদ্যুতো ভান্তি কুতোহয়মগ্নিঃ। ....
[শ্বেতাশ্বতর - ৬|১৪ ]
অর্থাৎ, সেই পরমব্রহ্মকে চন্দ্র,সূর্যাদি তারকা, বিদ্যুৎ , অগ্নি কোনোকিছুই প্রকাশ করতে পারে না।
 
✅সুতরাং, এতে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় এইসকল আলঙ্কারিক বর্ণনা ঔপচারিক অর্থে গৃহীত, মুখ্য বা আক্ষরিক অর্থে নয়। 
 
2️⃣যাইহোক, এরপর আমরা যদি পঞ্চম শ্লোকে যাই, তাহলে দেখবো এবার উপনিষৎকার উক্ত অক্ষর ব্রহ্ম থেকে পঞ্চাগ্নি দ্বারা প্রজার উৎপত্তি বর্ণনা করছেন- 
 
তস্মাদাগ্নিঃ সমিধো য়স্য সূর্য়ঃ সোমাৎ পর্জন্য ওষধয়ঃ পৃথিব্যাম্ । 
পুমান্ রেতঃ সিঞ্চতি য়োষিতায়াং বহ্বীঃ প্রজাঃ পুরুষাৎ সম্প্রসূতাঃ ||৫||
পদার্থ: (তস্মাৎ) সেই পরমাত্মা থেকে (অগ্নিঃ) দ্যুলোকরূপ অগ্নি উৎপন্ন হয় (য়স্য,সূর্য়) সূর্য যার (সমিধঃ) ইন্ধন-স্থানীয় (সোমাৎ) যজ্ঞে আহুত হবি থেকে (পর্জন্য) [জলরূপ] মেঘ উৎপন্ন হয়, মেঘের বর্ষণ দ্বারা (পৃথিব্যাম্) পৃথিবীতে (ওষধয়ঃ) অন্নাদি ওষধি [শস্যাদি] উৎপন্ন হয়, ওষধি ভক্ষণ দ্বারা (রেতঃ) বীর্য উৎপন্ন হয় এবং এই বীর্যকে (পুমান্) পুরুষ
(য়োষিতায়াম) স্ত্রীতে (সিঞ্চতি) সিঞ্চন করে।
[এভাবে] (বহ্বীঃ, প্রজাঃ) বহুবিধ প্রজা [মনুষ্যাদি প্রাণিগণ] (পুরুষাৎ) পূর্ণ পরমাত্মা থেকে উৎপন্ন হয়। 
 
🔰ব্যাখ্যা: এই শ্রুতিতে অক্ষররূপ পরমাত্মা থেকে প্রজাসৃষ্টির কথা বর্ণিত হয়েছে । সর্বপ্রথম সেই পরমাত্মা থেকে দ্যুলোকরূপ প্রথম অগ্নি উৎপন্ন হয় এবং অগ্নিহোত্রাদি যজ্ঞে আহুত হবি (হবনীয় দ্রব্য) থেকে মেঘরূপ দ্বিতীয় অগ্নি উৎপন্ন হয়। আর মেঘের বর্ষণ দ্বারা পৃথিবীরূপ তৃতীয় অগ্নিতে ওষধি সমূহ (অন্নাদি খাদ্যশস‌্য জন্মে)
[ যজ্ঞের দ্বারা পরিবেশে মেঘ উৎপন্ন হয়ে বৃষ্টি হওয়ার এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার সকল বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদির রেফারেন্স 
 
❐ This data for a period of 39 years (from 1981 to 2019) clearly indicates that Yajna gives more rainfall and the quality ---
[ REFERENCE : Venkata R Chaganti, "Yajna a Solution to Air Pollution", JIRSE (2020) Volume 8, Issue 1. pages (1-11).
 
♦ যজ্ঞ ও বৃষ্টি প্রভাব -
IJISET - International Journal of Innovative Science, Engineering & Technology, Vol. 7 Issue 2, February 2020। [ Venkata Chaganti ] - https://drive.google.com/file/d/1ZGtAn1g33kgdZ_tFFd9Y-TVnJNsTtW2X/view?usp=sharing

❐ The Yajna fire generally is between 200 to 1000 degrees Celsius and above. At this temperature generally all materials (eatables, and herbs etc.) are vaporized and the molecules or atoms or ions or nanoparticles rise high into the atmosphere. These molecules have high kinetic energy and travel long distances and climb great heights as the density of these vapors are lesser than the surrounding air. These minute particles have the capacity to interact with the atmospheric gases/particles and cause reduction in the pollution. For example, Sulphur dioxide can be removed using Carbon (Sappok and Walker)".
[ REFERENCE : R.J. Sappok, P.L. Walker Jr, Journal of Air Pollution Control Association, 16th March 2012. ]
 
 
]
সেই অন্নাদি ওষধি ভক্ষণের ফলে পুরুষরূপ চতুর্থ অগ্নিতে বীর্য উৎপন্ন হয়। পুরুষরূপ চতুর্থাগ্নি দ্বারা স্ত্রীরূপ পঞ্চমাগ্নিতে বীর্য সিঞ্চন করায় অনেক প্রকার প্রজা (মনুষ্যাদি প্রাণিগণ) উৎপন্ন হয়। 
 
👉 ছান্দোগ্যোপনিষদের পঞ্চম প্রপাঠকের চতুর্থ খণ্ড থেকে অষ্টম খণ্ড পর্যন্ত "দ্যুলোক অগ্নি, পার্জন্য অগ্নি, পৃথিবী অগ্নি, পুরুষ অগ্নি, স্ত্রী অগ্নি - এই পঞ্চাগ্নির বিশেষ বিবরণ পাওয়া যায়, যার ক্রমানুসারে এই শ্রুতিবাক্যে সৃষ্টির ব্যাখ‌্যা করে বলা হয়েছে যে, পরমাত্মা থেকে বহুবিধ প্রজা উৎপন্ন হয় যার প্রমাণ শতপথ ব্রাহ্মণেও [১৪।৪।২।২৫] রয়েছে যে -"ততো মনুষ্যা অজায়ন্ত" অর্থাৎ সেই পরমাত্মার বিশেষ সামর্থ দ্বারা প্রারম্ভে বহু মনুষ্য উৎপন্ন হয়েছে।
 
🟧 আর এখানে মুখ্য আলোচ্য হলো এই শ্লোকে সোমাৎ পদ চন্দ্র অর্থ প্রকাশ করে না বরং শ্লোকের বিষয়বস্তু অনুসারে যজ্ঞের হবিকে নির্দেশ করে। এর প্রমাণ : 
 
🔵শতপথ ব্রাহ্মণ
[৩।৫।৩।২] এ বলা হয়েছে - "হবির্বৈ দেবানাং সোমঃ" অর্থাৎ দেবগণের উদ্দেশ্যে আহুত হবিকে এখানে সোম বলা হয়েছে। অর্থাৎ যজ্ঞে প্রদত্ত হবি তথা অগ্নিহোত্র থেকেই মেঘ উৎপন্ন হয় চাঁদ থেকে নয়। 
 
 

 
🔵 গীতাতেও [৩।১৪] বলা হয়েছে—
"য়জ্ঞাদ্ ভবতি পর্জন্যো" অর্থাৎ যজ্ঞ থেকে মেঘ উৎপন্ন হয় যা থেকে বৃষ্টি হয়।
 

 
🔵 মনুস্মৃতিতে [৩।৭৬] ভগবান মনু এই বিষয়ে বলেছেন—
"অগ্নৌ প্রাস্তাহুতিঃ সম্যদগাদিত্যমুপতিষ্ঠতে। আদিত্যাজ্জায়তে বৃষ্টির্বৃষ্টেরন্নং ততঃ প্রজাঃ।।"
অর্থাৎ, অগ্নিতে প্রদত্ত ঘৃতাদি পদার্থের আহুতি রসরূপে সূর্যরশ্মির আকর্ষণে মেঘে পরিণত হয় এবং তা বৃষ্টিরূপে পৃথিবীতে পতিত হয় ।
 

 
🔵 যজুর্বেদ-১।১৬ তে যজ্ঞকে "বর্ষবৃদ্ধম" অর্থাৎ বর্ষা বৃদ্ধিকারী বলা হয়েছে।
 

 
🔵 শতপথ ব্রাহ্মণে [৫।৩।৫।১৭] পুরো বিষয়টি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে -
"অগ্নর্বৈ ধূমো জায়তে ধূমাদভ্রমভ্রাদ্ বৃষ্টিঃ"
অর্থাৎ, যজ্ঞের অগ্নি থেকে ধূম তথা ধোঁয়া, ধূম থেকে মেঘ, অতঃপর মেঘ থেকে বৃষ্টি উৎপন্ন হয়।
 


 
✅সুতরাং, শঙ্করভাষ্য অবলম্বনে চাঁদ থেকে মেঘ উৎপন্ন হওয়ার শ্লোক-সম্পর্ক বহির্ভূত অপদাবি খণ্ডন করা হলো। 
 
🛑🚧সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - আলতু-ফালতু ভাষ্য না পড়ে উপনিষদের আর্য ভাষ্য পড়ুন নতুবা ছন্নছাড়া মরু"তস্করদের মতোই বিভ্রান্ত হবেন।
 
স্বাধ্যায় প্রকাশনী হতে প্রকাশিত "উপনিষদ সংগ্রহ-১ম খণ্ড" (৯টি উপনিষদ একত্রে) যতো দ্রুত সম্ভব সংগ্রহ করুন। এই লেখার সকল তথ্য ও ব্যাখ্যা উক্ত গ্রন্থ থেকেই নেওয়া হয়েছে। 🛑🚧