বৎসহারা উষ্ট্রীর হাহাকার —
◑ ভণ্ডামিঃ অধ্বরম = গ্রহন করিবার যোগ্য সুখের হেতু যজ্ঞকে।
. ঋগ্বেদঃ ১.১৪.১১
◑ বিশুদ্ধ অর্থঃ
১. অধ্বরম = যজ্ঞ নিঘুঃ ৩. ১৩
২. অধ্বরো বৈ যজ্ঞঃ শঃ ব্রাঃ ১.২.৪.৫
মন্তব্যঃ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী ''অধ্বরম'' শব্দের অর্থ (যজ্ঞ) করার পাশাপাশি নিজের পক্ষ থেকে পুরো এক লাইন কথা বানিয়ে চালিয়ে দিয়েছে বেদের মধ্যে তাহলোঃ (গ্রহন করিবার যোগ্য সুখের হেতু)। কিন্তু কোনো শাস্ত্রতেই ''অধ্বরম'' শব্দের অর্থ দয়ানন্দের করা এতো বড় অর্থ কোথাও নেই বরং সকল শাস্ত্রতেই ''অধ্বরম'' শব্দের অর্থ এক কথাই (যজ্ঞ) করা হয়েছে।



নিঘণ্টু - ৩।১৩
इदमिव । इदं यथा । अग्निर्न ये । चतुरश्चिद्ददमानात् । ब्राह्मणा व्रतचारिणः । वृक्षस्य नु ते पुरुहूत वयाः । जार आ भगम् । मेषो भूतो३भि यन्नयः । तद्रूपः । तद्वर्णः । तद्वत् । तथा । इत्युपमाः ॥१३॥




संयोगो बिप्रयोगश्च साहचर्य विरोधिता।
अर्थः प्रकरणं लिङ्गं शव्दस्यानस्य सन्निधिः ॥
[ का० प्र० — द्वितीय उल्लास; वा०प०— २।३१४-३१६]
যাইহোক, এখানে টোল খুলে ব্যাকরণ পড়াতে আসেনি। উক্ত প্রসঙ্গানুসারে মূল কথায় ফেরত আসা যাক।

যথা—
য়তো অভ্যুদয় নিঃশ্রেয়সসিদ্ধিঃ স ধর্ম’
[ বৈ০ দ০ —১।১।২ ]
অর্থাৎ যা দ্বারা যথার্থ উন্নতি এবং পরম কল্যাণ লাভ হয় তাই ধর্ম। অর্থাৎ ধর্ম কল্যাণদায়ক বা সুখদায়ক ।

राजसूयं वाजपेयमग्निष्टोमस्तदध्वरः। अर्काश्वमेधावुच्छिष्टे जीवबर्हिर्मदिन्तमः॥
[अथ०वे० -११।८।८]
অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত পরিভাষায় — রাজসূয়, বাজপেয়, অগ্নিষ্টোম এইসব যজ্ঞ অধ্বর এবং জীবর্বহিভমদিন্তম তথা জীবের বৃদ্ধিকারী।

जीव+बृहि वृद्धौ-इसि। जीवानां वृद्धिव्यवहारः (मदिन्तमः) अत इनिठनौ। पा० ५।२।११५।

সুতরাং ব্যাকারণগত দৃষ্টিকোণ অনুসারে এবং মন্ত্রের অর্থ অনুযায়ী, অশ্বমেধ,গোমেধ প্রভৃতি "যজ্ঞ বা "অধ্বর"" বর্তমান কালেই যজ্ঞের পশুসমূহের বর্ধনকারী বা কল্যাণকারী। পরকালীন নয়। এর দ্বারা যেমন যজ্ঞের নামে প্রচলিত হিংসাদির ধারণা সরাসরি মন্ত্র ও ব্যাকরণ দ্বারা নস্যাৎ হয় তেমনি যজ্ঞের অধ্বর (অহিংসা) নাম সার্থক হয় এই হেতু যে এর দ্বারা জীবের বৃদ্ধিকারক বা কল্যাণসূচক অর্থও যুগপৎ প্রকাশিত হয় ।

উপসংহার: মহর্ষির ভাষ্যপ্রক্রিয়ার গম্ভীরতা ও শাস্ত্রনিপূণতার পরিচয় পাওয়া যায় মূর্খগুলোর এমন প্রত্যেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আস্ফোলনে। ভাষ্যপ্রক্রিয়া ও বেদবাঙ্ময়ের গহনতা উপলব্ধি করতে অক্ষম এসব মরু-তস্কর মৃত্যুকাল অবধি গর্দভের ন্যায় লৌকিক,অর্ব্বাচীন ভাষাদির অর্থানুসন্ধান প্রক্রিয়ার অনুকরণ করে ভ্রান্ত নির্বচন দ্বারা বেদার্থ করতে গিয়ে সর্বজনের নিকট অপাঙ্ক্তেয় হয়েই থাকবে। কিন্তু মহর্ষি ও আর্য বিদ্বানদের ভাষ্য স্বমহিমায় বিরাজিত থাকবে কল্পান্ত পর্যন্ত।
0 মন্তব্য(গুলি)