https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

বৈদিক‌ যোগার্থ‌ বাঙ্‌ময়ে মহর্ষিদেব দয়ানন্দ জীর সূক্ষ্ম‌ দৃষ্টি‌

Thursday, June 27, 2024


▪️বেদার্থে যোগার্থ-প্রক্রিয়ার অনিবার্যতা

বস্তুতঃ যোগার্থ-প্রক্রিয়ার আশ্রয় বিনা বেদার্থে কিঞ্চিৎ পদক্ষেপ অগ্রসর‌ হ‌ওয়া কদাপি‌ অসম্ভব। ঋগ্বেদ এর প্রথম সূক্তের প্রথম মন্ত্র‌ই বোধগম্য হ‌ওয়া‌ সম্ভব নয় এ প্রক্রিয়া‌ সম্বন্ধে‌ অজ্ঞতা‌ থাকলে। মন্ত্রে উল্লেখিত‌ "অগ্নি" পদকে 'পুরোহিত',‌ 'ঋত্বিজ্' এবং 'হোতা' সম্বোধন করা হয়েছে । যদি যোগার্থ-প্রক্রিয়ার আশ্রয় না নেওয়া হয় তাহলে‌ "অগ্নি" পদকে নির্দেশিত‌ এসব বিশেষণ চরিতার্থ হ‌ওয়া অসম্ভব । 

বেদ-এ এমন‌ অনেক শব্দের প্রাচুর্যতা‌ বিদ্যমান‌, লৌকিক সংস্কৃত বাঙ্‌ময়ে এসব শব্দের‌ যে‌ অর্থসমূহ‌ প্রচলিত‌ রয়েছে এতদতিরিক্ত অন্য অনেক‌ অর্থের‌ নিদর্শন রয়েছে। বৈদিক কোষ 'নিঘণ্টু' শাস্ত্র‌ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে‌, অদ্রি, গিরি, পর্বত এবং গোত্র শব্দ, যা‌ লৌকিকে সামান্যতঃ পর্বতবাচক, বেদ-এ 'মেঘ' অর্থেও প্রয়োগ‌ হয়েছে । লৌকিকে জল এবং নদীবাচক 'অপ্' শব্দ, বেদ-এ অন্তরিক্ষবাচক‌ হিসেবে‌ও প্রয়োগ হয়েছে । লৌকিকে কিরণ এবং ঘোড়ার লাগামবাচক অভীশু, গভস্তি, দীধিতি শব্দ বেদ-এ 'অঙ্গুলি'বাচক অর্থেও প্রয়োগ হয়েছে। লৌকিকে পীযূষবাচক অমৃত শব্দ বেদ-এ হিরণ্যবাচক অর্থে‌ প্রযোজ্য হয়েছে । লৌকিকে ভূমিবাচক 'অবনি' শব্দ এবং ভগিনীবাচক 'স্বসৃ' শব্দ বেদ-এ 'অঙ্গুলি'বাচক অর্থে প্রযোজ্য হয়েছে । লৌকিকে সর্পবাচী অহি শব্দ বেদ-এ 'মেঘ' এবং 'জল'বাচক অর্থে প্রযোজ্য হয়েছে । [1] এমন অনেক শব্দরাজি বৈদিক নিঘণ্টু কোষে লৌকিকে‌ প্রচলিত অর্থ থেকে ভিন্ন অর্থে পরিগণিত হয়েছে । বৈদিক শব্দরাজির অনেকার্থতা শুধুমাত্র যোগার্থ প্রক্রিয়া দ্বারা‌ই সিদ্ধ হ‌ওয়া সম্ভব‌। উদাহরণার্থ ঘৃত শব্দ বেদ-এ ঘি, জল এবং দীপ্তি অর্থে প্রয়োগ‌ হয়েছে তা‌র উদ্‌ঘাটন যোগার্থ প্রক্রিয়া মাধ্যমেই‌ সম্ভব‌, কেননা ঘৃত শব্দের 'ঘৃ' ধাতু ধাতুপাঠে 'ক্ষরণ' এবং 'দীপ্তি' অর্থে পঠিত হয়েছে । সব বেদভাষ্যকারগণ‌ই বেদার্থে যোগার্থ-প্রক্রিয়ার প্রয়োগ‌ বিনা‌ ভাষ্য‌ সম্পন্ন করতে পারেন নি । বৈদিক‌ পরম্পরা বিরুদ্ধ অবৈদিক সায়ণ‌‌ও তার ভাষ্যে‌ যত্রতত্র যোগার্থ‌ প্রক্রিয়া‌র প্রয়োগ করেছে ।  

 যথা - "বিষাণ" [2] পদের অর্থ বিশেষরূপে মদ দাতা, "অষ্ট" [3] অর্থ বিস্তৃত, "যতি"[4] অর্থ মেঘ, "বিষ"[5] অর্থ ব্যাপ্ত, পতঙ্গ [6] এবং সমুদ্র [7] অর্থ পরমাত্মা, "গোধা" [8] অর্থ গায়ত্রী, "মাতরিশ্বা"[9]অর্থ যজমান, "বন্ধু" [10] অর্থ তেজ এবং বল করেছে । বামমার্গী‌ অবৈদিক‌ তান্ত্রিক মহীধর‌ও যজু‌ ভাষ্যে‌ যোগার্থ‌ প্রক্রিয়ার‌ প্রয়োগ‌ যত্রতত্র করেছে। উদাহরণার্থ "বায়বঃ" [11] এর অর্থ গন্তা, "হংস"[12] অর্থ আদিত্য এবং "গন্ধর্ব" [13] অর্থ বেদান্তবেত্তা বিদ্বান্ এবং "ঋষি" [14] অর্থ গৌ করেছে । 


এখানে ধর্তব্য যে‌, ভাষ্যকারগণ‌ যোগার্থ পদ্ধতির নামে‌ যা‌ কিছু অর্থ‌ দর্শাবে‌ তা যুক্তিযুক্ত এবং বেদার্থ‌ শৈলীর‌ অন্তর্গত হবে এমনটা নয়, কেননা যোগার্থ-প্রক্রিয়ার‌ সিদ্ধান্ত যথেচ্ছ নয়। এ সিদ্ধান্তকে‌ বেদার্থ‌ শৈলীর‌ আধারে‌ এবং প্রবল‌ সাধনা, স্বাধ্যায়‌ দ্বারাই‌ হৃদয়ঙ্গম করতে হবে ।

 


▪️নিঘণ্টু এবং নিরুক্ত আদি শাস্ত্রের অবদান


নিঘণ্টুকার শব্দকোষে বৈদিক শব্দরাজির অনেক বিবিধ অর্থ পরিগণিত করেছেন‌ । এসব অর্থ‌ নির্ণয় পরম্পরাগত‌ প্রাচীন আচার্যগণের স্বীয় বিস্তৃত অনুসন্ধান । নিরুক্ত শাস্ত্রে নির্বচনের মাধ্যমে এসব অর্থসমূহের পোষণ করা হয়েছে । নিরুক্তের‌ নৈগম কাণ্ডে নিরুক্তকার কতিপয় শব্দের অনেক অর্থ নির্বচনপূর্বক দর্শিয়েছেন, কেননা‌ উক্ত‌ শব্দরাজির অর্থ নিঘণ্টু-তে পরিগণিত করা হয়নি। এরূপ‌ স্থিতি নিরুক্তের দৈবত কাণ্ডে ব্যাখ্যাত অনেক শব্দে‌ও‌ পরিলক্ষিত‌। শাখা-বাঙ্‌ময়ে এবং ব্রাহ্মণ-বাঙ্‌ময়ে অনেক শব্দের অর্থ নিঘণ্টু-নিরুক্ত-প্রোক্ত অর্থসমূহ‌ থেকে ভিন্ন বর্ণিত। যথা, "অগ্নি" শব্দের অর্থ ব্রাহ্মণ, পুরুষ, যজমান আদি, "আদিত্য" শব্দের অর্থ পুরোহিত বা ব্রাহ্মণ, "গ্রাবা" শব্দের অর্থ বিদ্বান্ [15] । নিঘণ্টু, নিরুক্ত, শাখা-বাঙ্‌ময় এবং ব্রাহ্মণ-বাঙ্‌ময় আদি শাস্ত্রে ব্যাখ্যাত‌ সমস্ত শব্দার্থ যোগরূঢ় প্রক্রিয়ার অন্তর্গত । এগুলো মন্ত্রার্থদ্রষ্টা আচার্যগণের‌ উচ্চকোটির বেদাধ্যয়ন এবং বেদানুসন্ধানের ফল‌ । 


 "বৃত্র" শব্দের যোগার্থ "আচ্ছাদক", যোগরূঢ় অর্থ মেঘ, রাত্রি, পাপ, বিঘ্ন বাধক শত্রু, ধন আদি । "বৃক" শব্দের যোগার্থ বিকর্তনকর্তা, কিন্তু যোগরূঢ় অর্থ বজ্র, চোর, চন্দ্রমা, সূর্য, কুকুর, নেকড়ে, হল আদি । "বরাহ" শব্দের যোগার্থ শ্রেষ্ঠ আহারকারী অথবা‌ শ্রেষ্ঠ কন্দ-মূল উত্তোলনকারী, যোগরূঢ় অর্থ মেঘ, পর্বত এবং শূকর । "ইডা" শব্দের‌ যোগার্থ স্তোতব্য, এর যোগরূঢ় অর্থ পৃথিবী, বাণী, অন্ন, গৌ, নারী আদি । "ইন্দু" শব্দের যোগার্থ যে‌ ভেজায়, এর যোগরূঢ় অর্থ জল, যজ্ঞ, চন্দ্রমা । "পাথস্" শব্দের যোগার্থ গতিস্থল অথবা খাওয়ার যোগ্য, এর যোগরূঢ় অর্থ অন্তরিক্ষ, জল এবং অন্ন [16] । এরূপভাবে শতশঃ শব্দ বেদের কোনো প্রকরণে যখন যোগার্থ অভিপ্রেত হয় তখন সেই প্রকরণে‌র উক্ত শব্দ যৌগিক হয়। এইভাবে বিশেষণভূত পদসমূহ ব্যতীত বেদ এর সমস্ত নামপদ যৌগিক এবং যোগরূঢ় শ্রেণির । একারণেই পূজ্য‌ মহর্ষি দয়ানন্দ জী সিদ্ধান্ত‌ দিয়েছেন বৈদিক শব্দরাজি যৌগিকতা এবং যোগরূঢ়ি শৈলীর‌ অন্তর্গত, পরন্তু বৈদিক নামপদ আখ্যাতজ বা ধাতুজ হ‌ওয়ার‌ দরুন কখন‌ই রূঢ় বৈশিষ্ট্যের নয় ।


বেদ এর সমস্ত বিশেষণভূত পদ যৌগিক , যোগরূঢ় নয়, যেমন ঈড্য, রত্নধাতমম, সূপায়নঃ আদি "অগ্নি" শব্দের বিশেষণ । যে‌ পদ কোথাও বিশেষণরূপে প্রযুক্ত হয়ে থাকে, কোথাও স্বতন্ত্রভাবে, সেইসব যথাস্থান কখন‌ও যৌগিক এবং কখন‌ও যোগরূঢ় শ্রেণির‌ অন্তর্গত হয় । উদাহরণার্থ- 'অগ্নে য়ং য়জ্ঞমধ্বরম্' । ঋগ্বেদ. ১।১।৪ নং মন্ত্রে‌ "অধ্বর" পদ যজ্ঞ এর বিশেষণ হ‌ওয়ায় যৌগিক শৈলীর অন্তর্গত তথা এর অর্থ হবে 'হিংসারহিত' কিন্তু 'প্রাঞ্চং কৃণোত্যধ্বরম্' ঋগ্বেদ. ১।১৮।৮ নং মন্ত্রের "অধ্বর" পদ‌ যজ্ঞবাচক প্রযুক্ত হ‌ওয়ায়‌ এটি হবে যোগরূঢ় শৈলীর‌ অন্তর্গত ।

যদি অগ্নি, ইন্দ্র, বরুণ, মিত্র, গৌ আদি বৈদিক শব্দকে যৌগিক শৈলীতে‌ ব্যাখ্যা‌ করা হয় তাহলে এসব শব্দের অর্থ হবে কেবল অগ্রণী, পরমৈশ্বর্যবান্, বরণীয়, স্নেহকর্তা, গন্তা, গন্ত্রী আদি, এই বিশেষণসমূহ বিশিষ্ট পদার্থবিশেষ বা ব্যক্তিবিশেষ নয়। একারণে বৈদিক নাম-পদসমূহের‌ যৌগিক এবং যোগরূঢ় শৈলীর‌ ব্যাখ্যা‌ প্রদান মহর্ষিদেব দয়ানন্দ জীর‌ দৃষ্টি অত্যন্ত দূরদর্শিতাপূর্ণ ।


কোনো শব্দের যোগরূঢ় অর্থ প্রক্রিয়ার প্রয়োগ‌ কীরূপ‌ হবে তা স্বয়ং বেদে‌ই নির্দেশিত হয়েছে । উদাহরণার্থ, অগ্নি-কে বেদে রাজা, নৃপতি, বিশ্বপতি, শত্রুসেনামোহক, পুরোহিত, গৃহপতি, পিতা, শোচিষ্কেশ আদি অর্থে বর্ণনা হয়েছে । ইন্দ্র-কে বৃত্রহন্তা, শচীপতি, সম্রাট্, সেনাগণের পরাজেতা, স্বরাজ্যের আরাধক আদি অর্থে বর্ণনা হয়েছে । রুদ্র-কে ভিষগ্‌রাজ, স্থিরধন্বা, ক্ষিপ্রেষু অর্থে‌ বর্ণনা করা হয়েছে।

যোগার্থ-প্রক্রিয়া অর্থাৎ যৌগিকত্ব এবং যোগরূঢ়ত্ব শৈলীর সিদ্ধান্তকে বিবেকপূর্বক অনুসরণ করে মহর্ষি যাস্ক অনেক বৈদিক শব্দের একাধিক অর্থ দর্শিয়েছেন নিরুক্ত‌ শাস্ত্রে, "সমুদ্র" শব্দের অর্থ পার্থিব সমুদ্র অতিরিক্ত অন্তরিক্ষ‌ও অর্থে‌ও ব্যাখ্যা‌ করেছেন । "কাষ্ঠা" শব্দের অর্থ দিশা, উপদিশা, আদিত্য, যুদ্ধপ্রান্ত এবং স্থাবর তথা অস্থাবর জল করেছেন । "স্বসর" শব্দের অর্থ দিবস এবং সূর্য করেছেন । "অর্ক" শব্দের অর্থ অর্চনীয় দেব, মন্ত্র, অন্ন এবং আক দর্শিয়েছেন । "অকূপার" শব্দের অর্থ দর্শিয়েছেন সূর্য, সমুদ্র এবং কচ্ছপ । "নিচুম্পুণ" শব্দের‌ অর্থ‌ দর্শিয়েছেন সোমরস, সমুদ্র এবং যজ্ঞ । "কৃত্তি" শব্দের‌ অর্থ‌ করেছেন যশ, অন্ন এবং গুদড়ী । "অংসত্র" শব্দের অর্থ করেছেন ধনুষ এবং কবচ । "আশিষ্" শব্দের অর্থ দুধ এবং আশীষ বা ইচ্ছা করেছেন । [17] নিরুক্ত শাস্ত্রের দৈবত কাণ্ডে মহর্ষি যাস্ক বৈদিক প্রমাণের আধারেই কতিপয় বৈদিক দেবগণের যোগরূঢ় অর্থ দর্শিয়েছেন ।

কিন্তু যৌগিকতার আধারে যোগরূঢ় অর্থসমূহের মহর্ষি যাস্ককৃত নির্ণয় অন্তিম নির্ণয় নয়। নিরুক্ত শাস্ত্রে‌ দর্শিত‌ অর্থ‌ ব্যতীত‌ আর‌ও অর্থ‌ নির্ণয়‌ সম্ভব‌ ‌। কিন্তু ধর্তব্য যে, যোগরূঢ় শৈলীতে অর্থ নির্ণয়‌ কোন‌ও‌ প্রকার স্বেচ্ছাচারিতা কোন‌ও স্থান নেই । কোনো শব্দের যৌগিক অর্থকে‌ গ্রহণ‌ করে যোগরূঢ় শৈলীতে‌ যথেচ্ছ অর্থ‌ দর্শানো‌ অগ্রহণযোগ্য। যৌগিক‌ তথা‌ যোগরূঢ় শৈলীর‌ অর্থ‌ হবে প্রমাণ-পরিপুষ্ট তথা বেদানুমোদিত । গো শব্দের গন্তা অথবা গন্ত্রী যৌগিক অর্থ গ্রহণ‌ করে গৌ শব্দের যোগরূঢ় অর্থ হাতি, ঘোড়া, উট, ষাঁড়, পক্ষী, পিঁপড়া আদি অর্থ‌ অসম্ভব‌ এবং অগ্রহণযোগ্য।


   🔸 মহর্ষি‌ দেব‌ দয়ানন্দ জীর অবদান‌


মহষি‌ স্বামী‌ দয়ানন্দ জী মহাবৈয়াকরণ আচার্য শাকটায়ন তথা নৈরুক্ত দ্বারা প্রতিপাদিত ধাতুজত্ব অর্থাৎ শব্দরাজির যৌগিকত্ব এবং যোগরূঢ়ত্ব শৈলীকে‌ হৃদয়ঙ্গম করে বেদার্থ বাঙ্‌ময়ে‌ ক্রান্তিকারী পরিবর্ধন দর্শিয়েছেন। যৌগিকত্ব এবং যোগরূঢ়ত্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপক‌ এবং বৃহৎ‌ প্রয়োগের‌ মাধ্যমে বেদভাষ্য-বাঙ্‌ময়কে ব্যাপক এবং বহুক্ষেত্রগামী প্রতিষ্ঠিত‌ করেছেন । মহর্ষি দয়ানন্দ‌ জীর অন্যতম‌ অদ্বিতীয় অবদান‌ হচ্ছে তিনি অবার্চীন‌, অবৈদিক‌, অনার্য‌ কর্তৃক দর্শানো বেদের কতিপয়‌ পদের‌ তথাকথিত ইতিহাসপরক‌ অর্থের খণ্ডন‌ করে বেদের‌ সমস্ত নাম পদের যৌগিক এবং যোগরূঢ় শৈলীর‌ বৃহৎ‌ ব্যাখ্যা দর্শিয়ে‌ছেন‌, যা‌ বেদার্থ‌ বাঙ্‌ময়ের‌ অনন্য‌ নব‌জাগরণ‌।  


▪️বেদার্থের ব্যাপকতায় মহর্ষির‌ দয়ানন্দ‌ জীর‌ যোগদান


বৈদিক‌ পরম্পরা বিরুদ্ধ অবৈদিক অর্বাচীন কতিপয়‌ ভাষ্যকারের‌ দরুন‌ লোক-সমাজে কয়েক‌ শতাব্দী এ ধারণা‌ প্রচলিত যে‌, বেদ মন্ত্রে‌ বর্ণিত অগ্নি, ইন্দ্র, রুদ্র, মিত্র, বরুণ, অর্যমা, সবিতা, বিষ্ণু, মরুতঃ ত্বষ্টা, অশ্বিনৌ আদি নাম কোনো দেবতা-বিশেষকে সূচিত করে তদতিরিক্ত এসব নাম-পদের কোনো যোগরূঢ় অর্থ‌ হয় না ।

পরন্তু মহর্ষি‌ দেব‌ দয়ানন্দ জী যোগার্থ শৈলীর‌ আধারে দেবতাবাচী ইন্দ্র আদি নাম-পদসমূহ বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ, প্রমাণপরিপুষ্ট যোগরূঢ় অর্থ দর্শিয়ে বেদমন্ত্রের পারমার্থিক এবং ব্যবহারিক দৃষ্টিতে অনেক অর্থের যোজনা স্বীয় ভাষ্যে দর্শিয়েছেন । নিরুক্ত-প্রতিপাদিত এবং বৈদিক‌ বাঙ্‌ময়ের‌ সুবিশাল‌ নির্বচন শৈলী গ্রহণ‌ করে মহর্ষি‌ দয়ানন্দ জী "ইন্দ্র" শব্দের পরমেশ্বর, জীবাত্মা, প্রাণ, সূর্য, বায়ু, বিদ্যুৎ, সম্রাট্, শূরবীর, সেনাপতি, বিদ্বান্, গৃহপতি, ধনিক, বিবাহিত পতি, অধ্যাপক, উপদেশক, কৃষক আদি বিবিধ‌ অর্থ করেছেন প্রকরণ‌ অনুসারে । "ত্বষ্টা" শব্দের পরমেশ্বর, অগ্নি, সূর্য, বিদ্যুৎ, বায়ু, সেনাপতি, সভাপতি, শিল্পী আদি অর্থ দর্শিয়েছেন। "রুদ্র" শব্দের ঈশ্বর, জীবাত্মা, প্রাণ, অগ্নি, বায়ু, রাজা, সেনাধ্যক্ষ, বৈদ্য আদি অর্থ দর্শিয়েছেন । "উষা" শব্দের‌ অর্থ প্রাকৃতিক উষা অতিরিক্ত বিদুষী নারী অর্থ‌ও করেছেন । "অদিতি" শব্দের‌ অর্থ জগজ্জননী অতিরিক্ত আত্মা, বাণী, পৃথিবী, প্রকৃতি, সূর্যদীপ্তি, বিদুষী, মাতা, রাজমহিষী, রাজসভা আদি অর্থ করেছেন । "অশ্বিনৌ" শব্দের‌ অর্থ‌ প্রাণ-অপান, জল- অগ্নি, বায়ু-জল, অগ্নি-বায়ু, দ্যাবাপৃথিবী, রাজা-অমাত্য, রাজা- প্রজা, সভা-সেনাধীশ, অধ্যাপক-উপদেশক, স্ত্রী-পুরুষ আদি‌ দর্শিয়েছেন । এরূপ‌ভাবে‌ 'যৌগিকবাদ' এবং 'যোগরূঢ়বাদ' শৈলীর আধারে বৈদিক দেবতার‌ অনেকবিধ অর্থ ব্যাখ্যা‌ করার দরুন‌ একমাত্র দয়ানন্দ-বেদভাষ্যেই বেদমন্ত্রসমূহে অধ্যাত্মবিদ্যা, যোগবিদ্যা, ধনুর্বিদ্যা, গান্ধর্ববিদ্যা, বাণিজ্যবিদ্যা, অধ্যয়ন-অধ্যাপনবিদ্যা, পশুপালনবিদ্যা, কৃষিবিদ্যা, নৌবিমানাদিবিদ্যা, ধর্ম, জ্যোতিষ, রাজনীতি, চিকিৎসাশাস্ত্র আদি অগণিত জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রকরণ‌ দৃষ্ট‌ হয় ।  



🔸 ঐতিহাসিক নামপদের যৌগিক ব্যাখ্যায় মহর্ষির‌ দয়ানন্দ‌ জীর যোগদান


বহু শতাব্দী ধরে‌ অবৈদিক অর্বাচীন সায়ণ‌, মহীধর‌ আদি অনেক ভাষ্যকার‌গণ‌ বেদ মন্ত্রে‌ বর্ণিত‌ বিবিধ‌ নামপদের‌ লৌকিক ইতিহাসপরক‌ অর্থ‌ করে বেদে‌ লৌকিক‌ ইতিহাস দর্শানোর‌ বৃথা‌ প্রয়াস‌ করেছে । বৈদিক‌ পরম্পরার‌ স্তম্ভ‌ স্বরূপ‌ স্বয়ং‌ মহর্ষি‌ যাস্ক‌‌, মহর্ষি‌ পতঞ্জলি‌, মহর্ষি‌ জৈমিনি‌ আদি‌ আচার্যগণ‌ তাঁদের স্বীয় গ্রন্থসমূহে‌ বেদ মন্ত্রের‌ বিভিন্ন প্রকরণ‌, নাম-পদের‌ তথাকথিত ইতিহাসক‌পরক‌ শৈলীর খণ্ডন করেছেন, মীমাংসা করেছেন । নিরুক্ত শাস্ত্রের‌ বিবিধ প্রকরণে এ বিষয়ে‌ মীমাংসা করা হয়েছে । [18] স্বয়ং বেদের অন্তঃসাক্ষ্য‌ই প্রমাণ করে‌ যে‌ বেদের‌ সমস্ত নাম-পদ কোন‌ও লৌকি‌ক ইতিহাসবাচক‌ অর্থ নির্দেশ করে না, পরন্তু ধাতুজ হ‌ওয়ার‌ দরুন সমস্ত‌ নাম-পদ 'যৌগিক' অথবা 'যোগরূঢ়' অর্থ নির্দেশ করে । অধুনাকালে বৈদিক‌ পরম্পরা‌র পুনরুজ্জীবিতকারী‌, মহর্ষি‌ যাস্ক‌-পতঞ্জলি‌-জৈমিনির‌ উত্তরাধিকারী মহর্ষি‌ দয়ানন্দ জীই কেবল‌ একমাত্র বেদভাষ্যকার যিনি এইসব অবৈদিক‌ লৌকিক‌ ইতিহাসপরক‌ অর্থের বৃহৎ‌ খণ্ডন করে বেদের‌ অপৌরুষেয়ত্ব‌ প্রতি ছত্রে‌-ছত্রে‌ প্রতিষ্ঠা করেছেন ।


মহর্ষি‌ দয়ানন্দ‌ জীর‌ রচিত‌ কালজয়ী‌ গ্রন্থ‌ "ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা" এর 'বেদসংজ্ঞাবিচার-প্রকরণ'-এ‌ বেদে উল্লেখিত 'জমদগ্নি', 'কশ্যপ' আদি নামপদ শতপথ ব্রাহ্মণ শাস্ত্রের প্রমাণে 'ত্র্যায়ুষং জমদগ্নেঃ কশ্যপস্য ত্র্যায়ুষম্' যজু. ৩।৬২ আদি মন্ত্রে‌ বর্ণিত জমদগ্নি‌ চক্ষু তথা কশ্যপ নাম প্রাণবাচক‌‌ অর্থে ব্যাখ্যা‌ করেছেন । এসব নামপদ‌ কখন‌ও দেহধারী‌ মনুষ্যবাচ‌ক নয় ।  

ঋগ্বেদ‌. ১।৩১।১১ নং মন্ত্রের "নহুষ" শব্দের অর্থ অবৈদিক‌ সায়ণ‌ ঐতিহাসিক রাজা করেছেন, কিন্তু মহর্ষি‌ দয়ানন্দ জী‌ ভাষ্যে বৈদিক কোষ নিঘণ্টু (২।৩) শাস্ত্রের প্রমাণে "নহুষ" শব্দের অর্থ "মনুষ্য" করেছেন । 'কক্ষোবন্তং য় ঔশিজঃ' ঋগ্বেদ.১।১৮।১ নং মন্ত্রের ব্যাখ্যায়‌ অর্বাচীন সায়ণ "উশিক্" নাম-পদ মাতার পুত্র কক্ষীবান্ ঋষি অর্থ‌ করেছ । মহর্ষি‌ দয়ানন্দ জী যৌগিক অর্থ দর্শিয়েছেন তথা অর্বাচীন সায়ণকে‌ খণ্ডন করেছেন । ঋগ্বেদ. ১।৩১।১৭ নং মন্ত্রের‌ "যযাতি" শব্দের‌ অর্থ‌ অর্বাচীন সায়ণ যযাতি নামক ঐতিহাসিক রাজা করেছেন, কিন্তু মহর্ষি দয়ানন্দ জী‌ যযাতি শব্দের অর্থ "প্রযত্নবান্ পুরুষ" দর্শিয়েছেন এবং এই মন্ত্রের‌ অর্বাচীন সায়ণ ভাষ্য‌ খণ্ডন‌ করেছেন । ঋগ্বেদ. ১।৩৬।১৮ মন্ত্রের ভাষ্যে অর্বাচীন‌ সায়ণ তুর্বশ, যদু, উগ্রদেব, নববাস্তু, বৃহদ্রথ এবং তুর্বীতি শব্দকে ঐতিহাসিক রাজর্ষি-বিশেষ অর্থ‌ করেছেন, পরন্তু মহর্ষি দয়ানন্দ জী‌ যোগার্থ‌ শৈলীতে ভাষ্য‌ করেছেন ।


মহর্ষি দয়ানন্দ জী ঋগ্বেদের মণ্ডল ৭, সূক্ত ৬১, মন্ত্র ২ পর্যন্ত তথা যজুর্বেদ (বাজসনেয়ী মাধ্যন্দিন শুক্ল) ভাষ্য করেছেন । এ ছাড়া তাঁর অন্যান্য‌ গ্রন্থে‌ অথর্ববেদ, সামবেদের‌‌ও অনেক মন্ত্রের‌ ভাষ্য করেছেন । তিনি‌ তাঁর‌ ভাষ্যে‌ সমস্ত নাম-পদের‌ই বৈদিক‌ প্রমাণের আধারে‌ যৌগিক অর্থ বা যৌগিক শৈলীর আধারে যোগরূঢ় অর্থ করেছেন এবং অবৈদিক‌ অর্বাচীন ভাষ্যকারগণের‌ ব্যাখ্যা‌ ধূলিসাৎ করেছেন। এ‌ ছাড়া মন্ত্রের‌ পারমার্থিক, ব্যাবহারিক ব্যাখ্যা দর্শিয়েছেন । উদাহরণার্থ‌ কুৎস [19], শুনঃশেপ [20], অত্রি [21], অম্বরীষ [22], দিবোদাস [23], বসিষ্ঠ [24], দীর্ঘতমস্ [25], অগস্ত্য [26], বিশ্বামিত্র [27], বামদেব [28], ত্রসদস্যু[29] আদি নাম-পদ‌ অবৈদিক সায়ণ ঐতিহাসিক ঋষি-বিশেষ অথবা রাজা-বিশেষ অর্থ করেছে, কিন্তু মহর্ষি‌ দয়ানন্দ জী তাঁর গভীর তপোবলে‌ ধাতুজত্ব সিদ্ধান্তের‌ আধারে যৌগি‌ক, যোগরূঢ় শৈলীতে‌ ব্যাখ্যা‌ প্রদান করেছেন । 


এইভাবে তথাকথিত লৌকিক‌ ইতিহাসবাচক‌ শততঃ ঋষি, রাজা, নদী, নগর আদি নাম-পদসমূহ মহর্ষি দয়ানন্দ জীর বেদভাষ্য বাঙ্‌ময়ে ধাতুজত্ব অর্থাৎ যৌগিকত্ব এবং যোগরূঢ়ত্ব শৈলীর আধারে ব্যাখ্যাত হয়েছে, যার‌ মধ্যে মহর্ষি দয়ানন্দ জীর অব্যাখ্যাত বেদভাষ্যের অন্যান্য‌ নাম-পদের ব্যাখ্যা‌ও প্রদর্শিত হয়েছে। অবৈদিক অর্বাচীন সায়ণ-মহীধর প্রভৃতি ভাষ্যকারগণ তথা তদীয় পদলেহনকারী অনার্য‌-ম্লেচ্ছ‌ ম্যাক্সমুলার, উইলসন, গ্রাসমন, গ্রিফিথ, ম্যাকডানল, কীথ, হিটনী আদি বিদেশী তথাকথিত গবেষকদের‌ ভ্রান্ত‌ ধারণা‌ এবং সিদ্ধান্ত‌ পূর্ণতঃ‌ ধূলিসাৎ‌ হয়ে যায় মহর্ষি শাকটায়ন, যাস্ক আদি মহর্ষিগণের সিদ্ধান্ত এবং মহর্ষি‌ দয়ানন্দ প্রবর্ধিত, প্রসারিত, আন্দোলিত এবং তরঙ্গিত যোগার্থবাদের প্রবল আঘাতে ।



                    ✅ সন্দর্ভ  


1.‌ ‌অদ্রি, গিরি, পর্বত মেঘ (নিঘং০ ১.১০), অপ্-অন্তরিক্ষ (নিঘং০ ২.১), অভীশু, গভস্তি, দীধিতি অঙ্গুলি (নিঘং০ ২.৫), অমৃত-হিরণ্য (নির্ঘ০ ১.২), অবনি, স্বসৃ অঙ্গুলি (নিঘং০ ২.৫) অহি-মেঘ, জল (নিঘং০ ১.১০, ১২)

2. বিষাণং বিশেষেণ মদস্য দাতারম্। সায়ণ, ঋ০ ৫.৪৪.১১

3. অষ্টকর্ণ্যঃ বিস্তৃতকর্ণ্যঃ । সা০, ঋ০ ১০.৬২.৭ 

4. বৃষ্ট্যা নিয়ময়ন্তীতি বা বর্ষেণেন যাতয়ন্তীতি বা যতয়ো মেঘাঃ । সা০, ঋ০ ১০.৭২.৭

5. বিষেণ ব্যাপ্তেন । সা০, ঋ০ ১০.৮৭.২৩

6. পততি ব্যাপ্নোতীতি পতঙ্গঃ পরমাত্মা। সা০, ঋ০ ১০.১৭৭.১

7. সমুদ্রবন্ত্যস্মাদ্ ভূতানীতি সমুদ্রঃ পরমাত্মা 

8. গময়তি বর্ণানিতি গৌর্বাক্ তত্র নিধীয়মানত্বাদ্ গায়ত্রী গোধা। যদ্বা যুধির্নিষ্কর্ষণার্থঃ, নিষ্কৃষ্য সোমাহরণাদ্ গোধা গায়ত্রী। সা০, ঋ০ ১০.২৮.১০

9. মাতরি ফলস্য মাতরি যাগে শ্বসতে চেষ্টতে ইতি মাতরিশ্বা যজমানঃ । সা০, ঋ০ ১.১৪১.৩

10. বধ্নন্তি শত্রূনিতি বন্ধূনি তেজাংসি বলানি বা। সা০, ঋ০ ৯.৯৭.৭

11. হে বৎসাঃ, যূয়ং বায়বঃস্থ মাতৃভ্যঃ সকাশাদ্ অন্যত্র গন্তারো ভবত। মহীধর, যজু০ ১.১

12. হন্তি অহঙ্কারমিতি হংসো ভগবানাদিত্যঃ, যদ্বা হংসশব্দেন রথ উচ্যতে, হন্তি পৃথিবীমিতি হংসঃ রথঃ ম, যজু০ ১০.২৪

13. গাং বেদবাচং ধারয়তি বিচারয়তীতি গন্ধর্বঃ বেদান্তবেত্তা বিদ্বান্ পণ্ডিতঃ

14. অষন্তি দোহনস্থানং গচ্ছতীতি ঋষিঃ গৌঃ। ম০, যজু০ ৩.১৬

15. অগ্নির্বৈ ব্রাহ্মণঃ । কাঠ০ ৬.৬, পুরুষো বাগ্নিঃ । শ০ ৬.৩.২.১, ইন্দ্রো বৈ যজমানঃ । শ০ ২.১.২.১১, আদিত্যো বাব পুরোহিতঃ ঐ০, ব্রা০ ৮.২৭, এতে খলু বাদিত্যা যদ্ ব্রাহ্মণাঃ । তৈ০ ব্রা০ ১.৯.৮, বিদ্বাংসো হি গ্রাবাণঃ । শ০ ৩.৯.৩.৪

16. দ্রষ্টব্যঃ বৃত্র-নিঘং০ ১.১০, ২.১০, বৃক-নিঘং০ ২.২০, ৩.২৪, নিরু০ ৫.২০-২১, বরাহ-নিঘং, ১.১০, নিরু০ ৫.৪, ইডা-নিঘং০ ১.১, ১.১১, ২.৭, ২.১১, ইন্দু-নিঘং০ ১.১২, ৩.১৭, নিরু০ ১০.৪০, পাথস্ নিরু০ ৬.৭

17. দ্রষ্টব্যঃ নিরু০-সমুদ্র ২.১১, কাষ্ঠা ২.১৫, সরস্বতী ২.২৩, খল ৩.১০, রজস্ ৪.৩৯, হরস্ ৪.৪০, স্বসর ৫.২২, শর্যাঃ, ৫.২৩, অর্ক ৫.৩৪, অকূপার ৪.৩৩, নিচুম্পুণ ৫.৬২, কৃত্তি ৫.৬৭, অংসত্র ৫.৭৫, আশিষ্ ৬.৩৫

18. যথা, নিরু০ ২.১৭, ১২.১, ১২.৫

19. কুৎসং বজ্রম্ । কুৎস ইতি বজ্রনামসু পঠিতম্ (নিধং০ ২.২০), সায়ণাচার্যেণাত্র ভ্রান্ত্যা কুৎসগোত্রোৎপন্নঃ ঋষির্গৃহীতঃ, অসম্ভবাদিদং ব্যাখ্যানমশুদ্ধম্ (ঋ০ ১.৩৩.১৪) 

20. শুনঃশেপঃ-শুনো বিজ্ঞানবতঃ ইব শেপো বিদ্যাস্পর্শো যস্য সঃ (ঋ০ ১.২৪.১২)

21. অত্রয়ঃ ত্রিভিঃ কামক্রোধলোভদোষৈ রহিতাঃ উপদেশকাঃ (ঋ০ ৫.২২.৪), অবিদ্যমানত্রিবিধদুঃখা বাণ্যঃ (ঋ০ ৫.৩৯.৫), অত্রয়ে ন সন্তি ত্রীণি ভূতভবিষ্যদ্বর্তমানকালজানি দুঃখানি যস্য তস্মৈ (ঋ০ ১.৮০.৪), অবিদ্যমানা আত্মিক-বাচিক-শারীরিক-দোষা যস্মিন্ তস্মৈ (ঋ০ ১.১১২.১৬), অত্রিম্ অবিদ্যমানানি আত্মমনঃ শরীরদুঃখানি যেন তম্ (ঋ০ ১.১১৭.৩)

22. অম্বরীষঃ শব্দবিদ্যাবিৎ। অত্র শব্দার্থাদ্ অবি ধাতোঃ ঔণাদিকঃ ঈষন্ প্রত্যযো রুগাগমশ্চ (ঋ০ ১.১০০.১৭) 

23. দিবোদাসং দিবো বিদ্যাধর্মপ্রকাশস্য দাতারম্ (ঋ০ ১.১১২.১৪)

24. বসিষ্ঠম্ য়ো বসতি ধর্মাদিকর্মসু সোঽতিশয়িতঃ তম্ (ঋ০ ১.১১২.৯)

25. দীর্ঘতমাঃ দীর্ঘ তমো যস্মাৎ সঃ (ঋ০ ১.১৫৮.৬)

26. অগস্তয়ঃ যে ধর্মাদন্যত্র ন গচ্ছন্তি তেঽগস্তয়ঃ, তেষু সাধুঃ (ঋঋ ১.১৭৯.৬), অগম্ অপরাধম্ অস্যন্তি প্রক্ষিপন্তি, তেষু সাধুঃ (ঋ০ ১.১৮০.৮)

27. বিশ্বমিত্রায় বিশ্বং সর্ব জগৎ মিত্রং যস্য তস্মৈ (ঋ০ ৩.৫৩.৭)

28. বামদেবস্য সুরূপয়ুক্তস্য বিদুষঃ (ঋ০ ৪.১৬.১৮)

29. ত্রসদস্যুং ত্রস্যন্তি দস্যবো যস্মাৎ তম্ (ঋ০ ৪.৪২.৯)




© বাংলাদেশ অগ্নিবীর