পৌরাণিক সমাচার - ১
বিষয়-স্বর্গ,নরক বিভ্রান্তি। পর্ব-১
বিষয়টি দুইজন ব্যক্তির কথোপকথন এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো যেখানে একজন বৈদিক ও একজন পৌরাণিক।
বৈদিক - দাদা,আপনাদের মতে একজন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পর কি গতি হবে যে কি না তার জীবনে পাপ ও পূণ্য দুটোই করেছে???
পৌরাণিক - সে তার মৃত্যুর পর পূণ্য কর্মের জন্য স্বর্গ ভোগ করবে এবং পাপ কর্মের জন্য নরকে শাস্তি ভোগ করবে।
বৈদিক - আগে কোথায় যাবে? স্বর্গে না নরকে?
পৌরাণিক -(একটু ভেবে) নরকে যাবে আগে।সেখানে তার পৃথিবীতে করা সকল খারাপ কর্মের ফল হিসেবে শাস্তি ভোগ করার পর, সে তার পৃথিবীতে করা সব পূণ্য কর্মের ফল ভোগ করার জন্যে স্বর্গে যাবে।
বৈদিক - স্বর্গে এবং নরকে তার ভালো ও খারাপ কর্মের ফল তথা পূণ্য ও পাপ কর্মের ফল ভোগের পর সে কোথায় যাবে?
পৌরাণিক - কর্মফল ভোগের পর সে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে।কারণ আমরা বিশ্বাস করি স্বর্গে কেউ চিরস্থায়ী নয়,স্বর্গেরও ধ্বংস আছে।আর তাছাড়া কোন মানুষ স্বর্গে থাকতে পারে তার পূণ্য কর্মফল ভোগ যতক্ষণ পর্যন্ত না শেষ হয়।
চিরস্থায়ী বা মোক্ষ হলো গোলক বা ভগবদ্ধাম যেখানে গেলে আর ফিরে আসতে হয় না।
বৈদিক - আচ্ছা, স্বর্গ ও নরকে কর্মফল ভোগের পর সে পৃথিবীতে আসবে তো বুঝলাম।কিন্তু কোন দেহকে আশ্রয় করে?
পৌরাণিক - (অনেক ভেবে) মানব দেহ।
বৈদিক - মানবদেহ!!!? তাহলে আপনারাই তো বলেন যে বেশি ঘুমায় সে পরের জন্মে ঘোড়া হবে,যে বেশি মাংস খায় সে পরের জন্মে বাঘ হবে,যে খারাপ পোশাক পরে,সে পরবর্তী জন্মে গাছ হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আবার আপনারাই তো বলেন কোন পিতা মাতা তার সন্তানকে ভগবদ্ভক্ত না বানাতে পারলে পরবর্তী তে শুকর যোনি প্রাপ্ত হবে। ভরত মহারাজ শেষ কালে হরিণের প্রতি আসক্ত হয়ে গিয়েছিলো বলে সে পরবর্তী জন্মে হরিণ হয়েছিলো। আরো বহু উদাহরণ আছে,যেখানে আপনারাই বলেন এক জন্ম থেকে পরবর্তী জন্মে মানুষ নিম্ন যোণী প্রাপ্ত হতে পারে। আপনারাই তো বলেন এ জন্মে খারাও কাজ করলে মোক্ষ না পেলে ৮৪ লক্ষ যোণী ঘুরতে হবে।
পৌরাণিক - (ভ্যাবাচেকা খেয়ে) হ্যাঁ হ্যাঁ,মানুষ তার কর্মফল অনুসারে পরবর্তীতে নিম্ন যোনিও হতে পারে।
বৈদিক - মানুষ যদি কর্মফল অনুসারে নিম্ন যোনি প্রাপ্ত হয় তবে সেটা কোন কর্মফল অনুসারে?
পৌরাণিক - কেন তার পৃথিবীতে করা কর্ম ফল অনুসারে।
বৈদিক - তার পৃথিবীতে করা কর্মের কর্মফল তো মৃত্যুর পর আপনারা তাকে স্বর্গ নরকেই দিয়ে দিয়েছেন।আবার কোন কর্মফল এর কথা বলছেন??? একই কর্মের ফল সে কয়বার ভোগ করবে?একই কর্মের জন্য নরকে শাস্তি পেয়ে আবার জন্মাবেও পশু যোনিতে!! তাহলে কি ধরে নেবো নরকে কি শাস্তি কিছু কম দিয়েছিলো? কিন্তু আপনি তো বলেছিলেন পৃথিবীতে করা সকল পাপের শাস্তি নরকে পেয়ে তারপর স্বর্গে যাবে!! নাকি পৃথিবীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পশু যোনি দেবার জন্য কিছু পাপের শাস্তি দেয়া হয় নি? নাকি সে জেলে পুরো শাস্তি ভোগ না করে পালিয়ে আসার মতো নরক থেকেও পালিয়ে এসেছে???
পৌরাণিক - ইয়ে, না মানে!
বৈদিক - দাদা বেদের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বর্গ নরক কে আলাদা স্থান বানালেন,কিন্তু এতে তো পুরো শাস্তি দেবার ক্ষমতাও নেই!! ত্রুটি রয়ে গেল বৈকি!
পৌরাণিক -... ... ... ... ... (নীরবতা...নীরবতা)
এভাবেই প্রশ্নের জবাব না দিতে পেরে নীরব হয়ে যায় আমাদের পৌরাণিক দাদারা।তারা বুঝতে পারে না যে,ঈশ্বর কাউকে তেলে ভাজার জন্য বা পোড়ানোর জন্য নরক সৃষ্টি করেন না।আমরা ঈশ্বর এর সন্তান। তিনি আমাদের কর্মফল ততটুকুই প্রদান করেন,যতটুকু কর্ম আমরা করেছি।কাউকে বেশিও দেন না, আবার কাউকে কমও না।সকল জীবের প্রতি তিনি সমদৃষ্টি প্রদান করেন।
আমরা কোন খারাপ কাজ করার আগে তিনি আমাদের সতর্ক করে দেন ভয় ও লজ্জা দিয়ে।এরপরো যদি কোন বেদ বিরুদ্ধ কর্ম বা খারাপ কাজ করি,তবে তিনি আমাদের সেই খারাপ কর্মের ফল হিসেবে পৃথিবীতেই তা প্রদান করে,আমাদের সুযোগ প্রদান করেন ভালো হবার।আমাদেরকে যদি তিনি আমাদের ইনপুট দেয়া কর্মের আউটপুট না প্রদান করতেন তাহলে একজন খারাপ লোক খারাপ কর্ম করেই যেতো,তিনি আর ভালো হতেন না।তাকে তার কর্মের আউটপুট প্রদান(পৃথিবীতেই) করে বুঝিয়ে দেয়া হয় যে,তুমি ভালো হও।আর এভাবে তার মধ্যে অনুশোচনা আসে এবং সে ভালো হবার সুযোগ পায়।
ঈশ্বর এতই দয়ালু এবং কৃপালু যে,তিনি আমাদের সুযোগ দিতেই থাকেন।
*** এই পৃথিবী হলো কর্ম করার এবং কর্মফল ভোগ করার স্থান। কর্ম এখানে করবো আর কর্মফল স্বর্গে নরকে ভোগ করবো - তা নয়।
কর্ম ও কর্মফল ভোগের জন্য এই পৃথিবী ভিন্ন আর কোন স্থান নেই।।।
আর ইহাই বৈদিক সিদ্ধান্ত।
বিষয়-স্বর্গ,নরক বিভ্রান্তি। পর্ব-১
বিষয়টি দুইজন ব্যক্তির কথোপকথন এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো যেখানে একজন বৈদিক ও একজন পৌরাণিক।
বৈদিক - দাদা,আপনাদের মতে একজন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পর কি গতি হবে যে কি না তার জীবনে পাপ ও পূণ্য দুটোই করেছে???
পৌরাণিক - সে তার মৃত্যুর পর পূণ্য কর্মের জন্য স্বর্গ ভোগ করবে এবং পাপ কর্মের জন্য নরকে শাস্তি ভোগ করবে।
বৈদিক - আগে কোথায় যাবে? স্বর্গে না নরকে?
পৌরাণিক -(একটু ভেবে) নরকে যাবে আগে।সেখানে তার পৃথিবীতে করা সকল খারাপ কর্মের ফল হিসেবে শাস্তি ভোগ করার পর, সে তার পৃথিবীতে করা সব পূণ্য কর্মের ফল ভোগ করার জন্যে স্বর্গে যাবে।
বৈদিক - স্বর্গে এবং নরকে তার ভালো ও খারাপ কর্মের ফল তথা পূণ্য ও পাপ কর্মের ফল ভোগের পর সে কোথায় যাবে?
পৌরাণিক - কর্মফল ভোগের পর সে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে।কারণ আমরা বিশ্বাস করি স্বর্গে কেউ চিরস্থায়ী নয়,স্বর্গেরও ধ্বংস আছে।আর তাছাড়া কোন মানুষ স্বর্গে থাকতে পারে তার পূণ্য কর্মফল ভোগ যতক্ষণ পর্যন্ত না শেষ হয়।
চিরস্থায়ী বা মোক্ষ হলো গোলক বা ভগবদ্ধাম যেখানে গেলে আর ফিরে আসতে হয় না।
বৈদিক - আচ্ছা, স্বর্গ ও নরকে কর্মফল ভোগের পর সে পৃথিবীতে আসবে তো বুঝলাম।কিন্তু কোন দেহকে আশ্রয় করে?
পৌরাণিক - (অনেক ভেবে) মানব দেহ।
বৈদিক - মানবদেহ!!!? তাহলে আপনারাই তো বলেন যে বেশি ঘুমায় সে পরের জন্মে ঘোড়া হবে,যে বেশি মাংস খায় সে পরের জন্মে বাঘ হবে,যে খারাপ পোশাক পরে,সে পরবর্তী জন্মে গাছ হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আবার আপনারাই তো বলেন কোন পিতা মাতা তার সন্তানকে ভগবদ্ভক্ত না বানাতে পারলে পরবর্তী তে শুকর যোনি প্রাপ্ত হবে। ভরত মহারাজ শেষ কালে হরিণের প্রতি আসক্ত হয়ে গিয়েছিলো বলে সে পরবর্তী জন্মে হরিণ হয়েছিলো। আরো বহু উদাহরণ আছে,যেখানে আপনারাই বলেন এক জন্ম থেকে পরবর্তী জন্মে মানুষ নিম্ন যোণী প্রাপ্ত হতে পারে। আপনারাই তো বলেন এ জন্মে খারাও কাজ করলে মোক্ষ না পেলে ৮৪ লক্ষ যোণী ঘুরতে হবে।
পৌরাণিক - (ভ্যাবাচেকা খেয়ে) হ্যাঁ হ্যাঁ,মানুষ তার কর্মফল অনুসারে পরবর্তীতে নিম্ন যোনিও হতে পারে।
বৈদিক - মানুষ যদি কর্মফল অনুসারে নিম্ন যোনি প্রাপ্ত হয় তবে সেটা কোন কর্মফল অনুসারে?
পৌরাণিক - কেন তার পৃথিবীতে করা কর্ম ফল অনুসারে।
বৈদিক - তার পৃথিবীতে করা কর্মের কর্মফল তো মৃত্যুর পর আপনারা তাকে স্বর্গ নরকেই দিয়ে দিয়েছেন।আবার কোন কর্মফল এর কথা বলছেন??? একই কর্মের ফল সে কয়বার ভোগ করবে?একই কর্মের জন্য নরকে শাস্তি পেয়ে আবার জন্মাবেও পশু যোনিতে!! তাহলে কি ধরে নেবো নরকে কি শাস্তি কিছু কম দিয়েছিলো? কিন্তু আপনি তো বলেছিলেন পৃথিবীতে করা সকল পাপের শাস্তি নরকে পেয়ে তারপর স্বর্গে যাবে!! নাকি পৃথিবীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পশু যোনি দেবার জন্য কিছু পাপের শাস্তি দেয়া হয় নি? নাকি সে জেলে পুরো শাস্তি ভোগ না করে পালিয়ে আসার মতো নরক থেকেও পালিয়ে এসেছে???
পৌরাণিক - ইয়ে, না মানে!
বৈদিক - দাদা বেদের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বর্গ নরক কে আলাদা স্থান বানালেন,কিন্তু এতে তো পুরো শাস্তি দেবার ক্ষমতাও নেই!! ত্রুটি রয়ে গেল বৈকি!
পৌরাণিক -... ... ... ... ... (নীরবতা...নীরবতা)
এভাবেই প্রশ্নের জবাব না দিতে পেরে নীরব হয়ে যায় আমাদের পৌরাণিক দাদারা।তারা বুঝতে পারে না যে,ঈশ্বর কাউকে তেলে ভাজার জন্য বা পোড়ানোর জন্য নরক সৃষ্টি করেন না।আমরা ঈশ্বর এর সন্তান। তিনি আমাদের কর্মফল ততটুকুই প্রদান করেন,যতটুকু কর্ম আমরা করেছি।কাউকে বেশিও দেন না, আবার কাউকে কমও না।সকল জীবের প্রতি তিনি সমদৃষ্টি প্রদান করেন।
আমরা কোন খারাপ কাজ করার আগে তিনি আমাদের সতর্ক করে দেন ভয় ও লজ্জা দিয়ে।এরপরো যদি কোন বেদ বিরুদ্ধ কর্ম বা খারাপ কাজ করি,তবে তিনি আমাদের সেই খারাপ কর্মের ফল হিসেবে পৃথিবীতেই তা প্রদান করে,আমাদের সুযোগ প্রদান করেন ভালো হবার।আমাদেরকে যদি তিনি আমাদের ইনপুট দেয়া কর্মের আউটপুট না প্রদান করতেন তাহলে একজন খারাপ লোক খারাপ কর্ম করেই যেতো,তিনি আর ভালো হতেন না।তাকে তার কর্মের আউটপুট প্রদান(পৃথিবীতেই) করে বুঝিয়ে দেয়া হয় যে,তুমি ভালো হও।আর এভাবে তার মধ্যে অনুশোচনা আসে এবং সে ভালো হবার সুযোগ পায়।
ঈশ্বর এতই দয়ালু এবং কৃপালু যে,তিনি আমাদের সুযোগ দিতেই থাকেন।
*** এই পৃথিবী হলো কর্ম করার এবং কর্মফল ভোগ করার স্থান। কর্ম এখানে করবো আর কর্মফল স্বর্গে নরকে ভোগ করবো - তা নয়।
কর্ম ও কর্মফল ভোগের জন্য এই পৃথিবী ভিন্ন আর কোন স্থান নেই।।।
আর ইহাই বৈদিক সিদ্ধান্ত।
তার মানে স্বর্গ নরক বলে কিছু নেই? তাহলে মৃত্যুর পর আমরা কোথায় যাব? মৃত্যুর পর আমাদের কী গতি হবে?
ReplyDeleteভালো কাজে উঁচু জন্ম ,খারাপ কাজে নিচু জন্ম । আর নিষ্কাম কর্মে মুক্তিলাভ
Deletehttps://www.bhagwatpremsudha.com/post/ক-থ-য-স-বর-গ-ক-থ-য-নরক
ReplyDeleteএকমত হতে পারলাম না দাদা।কারন,আমি এমনো দেখেছি যে পরের জায়গা জমি দখল করে ভোগ করে।মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সে তার ভুল বুঝতে পারে নাই।আর তার কর্মফলের শাস্তি যে সে পেয়েছে এমনটাও মনে হয় নি
Deleteজয়তু সনাতন বৈদিক ধর্ম
ReplyDelete