https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

বৈদিক দন্ড ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের পাল্টা জবাব

Wednesday, May 3, 2017
         vedas and human rights এর ছবি ফলাফল
মরা পূর্বে বৈদিক দন্ড ব্যবস্থা নামে একটি পোষ্ট করেছিলাম। যাতে অপপ্রচারীর কিছু কুৎসিতভাবে উপস্থাপিত বৈদিক দন্ড ব্যবস্থার অত্যন্ত সরলভাবে সমাধান দিয়েছিলাম।  যেখানে আমরা  প্রমাণ করেছিলাম  যে,  বেদে কোন নিরপরাধ সজ্জন ধর্মপ্রাণ মানুষদের কোনরূপ দন্ড দেওয়া হয় নি।
পরন্ত ঈশ্বর দ্বেষী শত্রু ব্যক্তিদেরই কঠোর ভাবে দন্ড দেওয়া হয়েছে।  কিন্তু মন্দমতি অপপ্রচারকারী বৈদিকী দন্ড তার নিজের নির্বুদ্ধিতায় কুৎসিত ভাবে আবারো  উপস্থাপন করে আমাদের প্রদত্ত সমাধানের উত্তর দেবার চেষ্টা করেছে।  যেগুলোর মধ্যে ছিলো রেফারেন্স ভূল,  মন্ত্রের পদপাঠ ভূল  এবং  মন্ত্রের ব্যাখ্যায় অমার্জিত ভাষা শৈলী।
কিন্তু অপপ্রচারকারী  তার নিজস্ব ভূলগুলো  অত্যন্ত চতুরতার সহিত আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেকে দোষমুক্ত করার চেষ্টা করেছে। এবং আমাদের  উপর বরাবর যেসব দোষ চাপানো হয়েছে সেগুলো হলো  মন্ত্র এড়িয়ে যাওয়া এবং স্ক্রীনসট না দেখার বিষয়গুলো। এ প্রসঙ্গে একটা কথা না বললেই নয় আমরা যে সাইট থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছিলাম সেগুলোর প্রতিটার জবাব আমরা দিয়েছিলাম।  এবং স্ক্রীনসট গুলো অপপ্রচারকারী যেসব দিয়েছিলো তার অধিকাংশই damage ছিলো।  তাই আমাদের স্ক্রীন না দেখা নিজস্ব অভিপ্রেত নয়।  তাই আমরা এ নোটে অপপ্রচারকারীর নতুন বা পুরাতন সব আরোপকৃত মন্ত্রের যথাসাধ্য সমাধান দিয়েছি।  আমরা গত পর্বের পোষ্টে বলেছিলাম বেদ মূলত মানব জাতির পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান।  এতে মানবের প্রতিটি পরিস্থিতে করণীয় বিষয়গুলোর সুস্পষ্ট আলোচনা রয়েছে।  এর প্রেক্ষিতে অপপ্রচারকারী বর্তমানে আবিস্কৃত কিছু রোগের নাম যেমনঃ যক্ষা,  ডাইরিয়া, ইত্যাদি রোগের  নাম   উল্লেখ করে বলেছেন এগুলো হলে করণীয় কি এসব সমন্ধ্যে বেদ কি কিছু বলেছে ?  আমাদের কোন জটিল রোগ হলে অবশ্যই করণীয় বৈদ্যের শরণাপন্ন হওয়া হওয়া উচিৎ।   কারন একজন বৈদ্য তার চিকিৎসা বিদ্যা দ্বারা আমাদের সুস্থ করতে পারেন।
ঋগবেদ বলছে - সেই বিপ্রই বৈদ্য - যিনি ব্যাধিকে দুরীভূত করেন ও বিনাশ করেন,  যাহার মস্তিষ্কে ঔষধির তত্ত্বজ্ঞান সমিতিতে রাজা ও পরিষদের ন্যায় দেদীপ্যমান থাকে "ঋগবেদ ১০।৯৭।৬"

 যজুর্বেদ ১৯।১২ তে বলা হয়েছে - আত্মার কল্যাণের জন্য ইন্দ্রিয়ের দমনকর্তা সাধক বিদ্যা ও বাণী দ্বারা বৈদ্যের কার্য্য করেন।  বিদ্যানেরা শুভকর্মের প্রচার করেন।  বৈদ্য নিজ শক্তিতে চিকিৎসার বিস্তার করেন।


অপপ্রচারকারী আরো বলেছে ভূমিকম্প ইত্যাদি দূর্যোগ পরবর্তী অবস্থায় কি করণীয় বেদ কি তা বলেছে?   দূর্যোগ পরবর্তী অবস্থায় আমরা রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষয় ক্ষতি দেখতে পাই। এ ক্ষেত্রে রাজা অবশ্যই প্রজার সুখের হেতু  রাজ কোষ থেকে দান করবেন। রাজা এমন ব্যবস্খা করবেন যেন প্রজা সুখ প্রাপ্ত হয়।
ঋগবেদ ১।৪২।৯ এ বলা হয়েছে - হে পোষক বীর! কর্ম ও বুদ্ধিকে লাভ করো, দেশোন্নতি করিতে সমর্থ হও,  রাজকোষ পূর্ণ করো,  অভাবগ্রস্থদের দান করো, অস্ত্রকে তীক্ষ্ণ করো এবং প্রজাদের উদর পুরণের ব্যবস্থা করো।


শুধু রাজাই নয় বরং সবাই একে অন্যের সাহায্য করে রাজ্যের উন্নতি করা উচিৎ ।  এ জন্য বেদ বলছে - হে মিত্র দুরদর্শি পুরুষগন! আমরা সব বিদ্বানেরা মিলিয়া বিস্তৃত ও অনেকের সাহায্যে রক্ষার যোগ্য এই স্বরাজ্য ব্যবস্থার জন্য যত্ন করবো (ঋগবেদ ৫।৬৬।৬)


আমাদের পারস্পারিক সহযোগীতা শুধু দূর্যোগ পরবর্তি অবস্থায় নয় বরং প্রতিটি পরিস্থিতিতে করার জন্য বেদ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ পর্যায়ে আমরা অপপ্রচারকারীর বেদ মন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন আরোপকৃত দাবীর  যথাযোগ্য সমাধান করে সত্য বিষয় জানার চেষ্টা করবো।

=>> আরোপ  - ০১
“হে ঈশ্বর ও জ্ঞানী মানুষ, যারা দোষারোপ করে বেদ ও ঈশ্বরের তাদের উপর তোমার রাগবর্ষন কর।” (ঋগবেদ ২।২৩।৫)
 তাহলেবেদ অনুসারে  হাজারো অহিন্দুরাও পাপী, কারন তারা বেদ ও বৈদিক ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়।

যৌক্তিকতা বিচারঃ 
এ মন্ত্রে কোথাও বলা হয় নি যে, বেদ ও ঈশ্বরের অবিশ্বাসীদের উপর রাগ বর্ষন করার কথা। অতএব হাজারো অহিন্দুরা পাপী কি না সে প্রশ্ন উঠছেই না।  এ মন্ত্রে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তিনি যেন আমাদের সমস্ত হিংসাকে নিবৃত্ত করেন। কোন অপরাধ বা শত্রুজন আমাদের উপর হিংসিত না হয়। অর্থাৎ সর্বতোভাবে ঈশ্বরের কাছে রক্ষার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে -
হে জ্ঞানের স্বামী প্রভূ! উত্তম রক্ষক আপনি যাহাকে রক্ষা করেন এভাবে তাহার  সব হিংসাকে নিবৃত্ত করুন । তাহাকে কোন প্রকার অপরাধ না দুষ্টাচার না শত্রুজন না দুই পক্ষেরই আশ্রয়কারী জন  হিংসিত করে।
(ঋগবেদ ২।২৩।৫, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী)

অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছেঃ
এখানে রেফারেন্স দিতে আমি ছোট্ট একটা ভুল করেছি আর জনৈক দাদা, আমার ছোট্ট ভুলের কারনে মুল মন্ত্রটা এড়িয়ে গেছেন। রেফারেন্সটা ২/২৩/৫ হবে না, হবে ২/২৩/৪। অর্থাৎ আমার দেয়া মন্ত্রটির নাম্বার ছিল ৫ নয়, ৪। এরকম ছোটখাট ভুল হতেই পারে। যদিও নোটে মন্ত্র নাম্বার ৫ এর জায়গায় ৪ লিখেছি, কিন্তু স্ক্রীণশটে স্পষ্টভাবেই লাল দাগ দেয়া ৪ নাম্বার মন্ত্রটি দেখা যাচ্ছে। তাহলে দাদা কি সেটা দেখলেন না ? নাকি আমার ছোট্ট ভুলের সুবাধে উনি মন্ত্রটা এড়িয়ে গিয়ে বাচলেন ? যাকগে, মন্ত্রটার স্ক্রীনশট পুনরায় দেয়া হল, ঋগবেদ ২/২৩/৪,(যেটা প্রথমে ভুলে ২/২৩/৫ লিখেছিলাম)

আমাদের জবাবঃ
মন্দমতি অপপ্রচারকারীর অপপ্রচারের নমুনা দেখুন।  প্রথমত মন্ত্রের রেফারেন্স ভূল করে দিয়েছে।  তার পর সে দোষ চাপিয়ে চাপিয়ে দিচ্ছে আমাদের উপর। আমরা নাকি মন্ত্র এড়িয়ে গিয়েছি। যাকে  বলে চোরের মায়ের বড় গলা।  তারপর স্ক্রীন সট নিয়ে নানা নাটকীয়তার অবতারনা করলেন। আগেই বলেছি ,  আমরা যে সাইট থেকে অপপ্রচারগুলো সংগ্রহ করেছিলাম  সেখানকার অধিকাংশ স্ক্রীন সটগুলোই damage ছিলো। সেক্ষেত্রে আমরা text কে প্রাধান্য দিয়েছি। তো আসুন   এবার মূল কথাই আসা যাক -               
অপপ্রচারকারীর দাবী ছিলো যে, 
/////[“হে ঈশ্বর ও জ্ঞানী মানুষ, যারা দোষারোপ করে বেদ ও ঈশ্বরের তাদের উপর তোমার রাগবর্ষন কর।” (ঋগবেদ ২।২৩।৫)
 তাহলেবেদ অনুসারে  হাজারো অহিন্দুরাও পাপী, কারন তারা বেদ ও বৈদিক ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়।]//////

এই মন্ত্রের আলোচিত সংস্কৃত শব্দটি হলো ব্রহ্মদ্বিষো ৷ এই শব্দের অর্থটি হলো পবিত্র জ্ঞানের ,জ্ঞাননীগণের দ্বেষকারী।


মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী "ব্রহ্মদ্বিষো" শব্দের অর্থ করেছে ঈশ্বর ও বেদ বিরোধী।  তিনি এরূপ ভাষ্য করেছেন যে " বেদ ঔর ঈশ্বর কে বিরোধীয় পর তাপ করনেবালী ক্রোধ কা মান করনেবালী হ্যায় "


অর্থাৎ এ  মন্ত্রে ঈশ্বর,  বেদ অথবা জ্ঞানীগনের  দ্বেষকারীদের উপর ক্রোধ  করার আহবান জানানো হয়েছে ৷
কিন্তু অপপ্রচারকারী  এখানে "বিদ্বেষের" প্রসঙ্গ না তুলে শুধু মাত্র বিশ্বাসের প্রসঙ্গ এনে বললেন যে , হাজার অহিন্দু পাপী কারণ তারা  বেদ এবং বৈদিক ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়। মূলত মন্ত্রে বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের প্রসঙ্গে কোন কথা বলা হয় নি প্রসঙ্গটি এসেছে বিদ্বেষ নিয়ে।  কারণ  মনুষ্য মধ্যে কেউ  হয়তো বেদে অবিশ্বাসী হতে পারে কিন্তু বিদ্বেষকরলে, ক্ষতি করতে চাইলে, আক্রোষপূর্ণ হলে সে ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর হাত থেকে জ্ঞানীদের ও পবিত্রবাণীকে রক্ষা করাটা অবশ্যই জরুরী। কারন একটা দেশ, রাজ্যে এবং পৃথিবীতেও জ্ঞানীগনের মর্যাদা ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য ৷ তাদের রক্ষা করাটা দেশ ও পৃথিবীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা প্রত্যেক রাজ্যের রাজার দায়িত্ব ৷

=>> আরোপ - ০২
“যে লোক ঈশ্বরের আরাধনা করে না এবং যার মনে ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগ নেই, তাকে পাদিয়ে পাড়িয়ে হত্যা করতে হবে।”(ঋগবেদ ১।৮৪।৮)অর্থাৎ বেদের স্পষ্ট আদেশ, যে ব্যাক্তি নাস্তিক বা বৈদিক ঈশ্বরের উপাসনা করে না সে পাপী। এবং সে পা দিয়ে পাড়িয়ে মারার যোগ্য

যৌক্তিকতা বিচারঃ
মন্ত্রে বৈদিক ঈশ্বরে উপাসনাহীন কোন ব্যক্তিকে শাস্তির কথা বলা হচ্ছে না।  মন্ত্রটিতে একজন প্রজার মনে শঙ্কা বা উদ্বেগ এর উল্লেখিত হয়েছে। এই হেতু  "অরাধসম" শব্দটি এসেছে,  "রাধ ইতি ধননাম ; নিরুক্ত ৪।৪।  অর্থাৎ ধন বা ঐশ্বর্যহীন বা দানহীন কৃপন ব্যক্তি। এরূপ প্রজার মনের উদ্বেগ এই যে,  না জানি কখন ঐশ্বরর্যবান রাজা ধনহীন, কৃপন, নির্বল ব্যক্তিকে অহিছত্রের ন্যায় নষ্ট করে। ক্ষুম্পম অহিচ্ছত্র ভবতি ইতি যাস্ক। অহিচ্ছত্র হচ্ছে বর্ষাকালে পরিত্যক্ত কাঠের উপর জন্মানো গোল ছাতা সদৃশ দেখতে।  যা সাপের ছাতা এবং পান্জাবী ভাষায় খুম্বী বলে।  এই ছত্র গুলো সামান্য পায়ের ধাক্কায় নষ্ট হয়ে যায়। একটি ঐশ্বর্যবান রাজার রাজ্যে সর্বদাই উচিৎ যেন উত্তম বলশালী বিদ্বান উৎপন্ন হয়। এ জন্য যজুর্বেদ২২।২২ মন্ত্রে পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে যে, আমাদের রাজ্যে যেন বিদ্বান ব্রাহ্মন, নির্ভয় ক্ষত্রিয়, সুন্দর ব্যবহার কারী স্ত্রী এবং শত্রু বিজয়কারী পুরুষ উৎপন্ন হয়। কিন্তু একজন নির্বল, ভয়েভীত,দানহীন, ধনহীন ব্যক্তব রাজ্যে প্রায়ই অস্মানিত হওয়ার ভয়ে ভীত থাকে।  তাই  প্রজার মনে এরূপ উদ্বেগ ব্যক্ত হয়েছে। নিরুক্ত ৫।১৭ তে ঠিক এই মন্ত্রটিই রয়েছে -


হে বিদ্বান পুরুষ! ঐশ্বর্যবান রাজা না জানি কখন বশ না মানা, দুঃসাধ্য বা ধনহীন বা বলহীন বা শত্রু পুরুষকে  পা দ্বারা অহিচ্ছত্রের ন্যায় উঠিয়ে ফেলে দেয়, নষ্ট করে দেয় এবং এই আমাদের প্রার্থনা কে না জানি কখন শুনবেন।
( ঋগবেদ ১।৮৪।৮,  জয়দেব শর্মা)

অপপ্রচার কারী  উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছে -
এই মন্ত্রটি লেখার সময় একটি শব্দে আমি ছোট্ট একটি ভুল করেছি, মূলত ভুলটা আমার না, তাদের বেদ এর প্রিন্ট এর দোষ। সেখানে Goldless কে আমি Godless পড়েছি, কারন Goldless শব্দটি এমনভাবে লেখা হয় না, এটি লেখা হয় Gold less । যাক গে, এবার আসুন দেখি তাদের দেয়া এই মন্ত্রটির যৌক্তিকতা, মন্ত্রটিতে প্রথমে বলা হয়েছে ধনহীন ব্যাক্তির কথা, দ্বিতীয়তে বলা হয়েছে কৃপনের কথা। প্রথম কথা হচ্ছে ধনহীন ব্যাক্তির কি দোষ ? সে কি ইচ্ছে করে গরীব হয়েছে ? গরীব হওয়া কি তার অপরাধ ? দ্বিতীয়ত, দাদার মতে মন্ত্রটিতে কৃপন ব্যাক্তির কথা বলা হয়েছে,কিন্তু এই কৃপন কোণ অর্থে ? গরীবকে দানের অর্থে ? না, কৃপন এই অর্থে যে সে ঈশ্বরের নামে বৈদিক দের অর্থ দিচ্ছে না। সে বেদ এর ঈশ্বরের পুজার জন্য ধনসম্পদ দিচ্ছে না, এজন্য তাকে পা দিয়ে পাড়িয়ে মারার শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আর হ্যা এটি প্রজার উৎকণ্ঠা নয়, বরং প্রার্থনা, পুর্বের আর্য সমাজ কর্তক অনুবাদিত বেদ মন্ত্রটির স্ক্রীনশটটি আবার দেখুন, devoid of wealth of devotion অর্থাৎ ভক্তি বা উপাসনার জন্য যার নিকট ধন নেই এমন ব্যাক্তি, সর্বশেষ লাইন When will you listen to our prayer and praises ? অর্থঃ তুমি কখন আমাদের প্রশংসা ও প্রার্থনা শূনবে ? অর্থাৎ স্পষ্ট যে এখানে প্রজার উৎকণ্ঠা নয় বরং প্রার্থনা প্রকাশ পেয়েছে যাতে করে বৈদিক দের অর্থ প্রদান না কারীকে পা দিয়ে পাড়িয়ে মারা হয়।
মূলত বেদ হচ্ছে কতিপয় প্রার্থনার সমষ্টি, যা ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। বেদ এ এমন কোণ মন্ত্র পাওয়া যায় না যেখানে ঈশ্বর নিজে মানুষকে উদ্দেশ্য করে কথা বলছে, বরং মানুষই ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে কথা বলছে এমনটাই পাওয়া যায়(যা থিওরিটিকালি প্রমান করে বেদ ঈশ্বরের বানী নয়, বরং ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে বলা সমসাময়িক মানুষের বানীসমষ্টি)। অর্থাত এটা শুধু প্রজার প্রার্থনা বা উৎকণ্ঠা, এমনটা বলে এড়িয়ে যাওয়ার কোণ উপায় নেই।একিসাথে দাদার মতে নিরুক্ত ৫.১৭ এও নাকি এমনটাই বলা হয়েছে। এটী চূড়ান্ত মিথ্যাচার। নিরুক্ত ৫.১৭ এ সরকাসরি নাস্তিক এবং উপাসনা না করা ব্যাক্তিকে পাড়িয়ে মারার প্রার্থনা করা হচ্ছে।
বিধর্মী বা নাস্তিকদের প্রতি, যারা বৈদিক ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না ও তার নামে অর্থ সম্পদ প্রদান করে না তাদের লুটপাট ও ধংস করে দেয়ার প্রার্থনা বেদ এ আরো অনেক আছে, যেমন,
ঋগবেদ ৮/৬৪/১-২,
বলা হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতি,
ধন প্রদান করতে ও নাস্তিক বা স্তুতিবিদ্বেষীগনকে বিনাশ করে দিতে, এবং তাদের পদ দাড়া বিনাশ করতে যারা ধন প্রদান করছে না যজ্ঞের জন্য।
নীচে সায়ন ভাষ্যের বাংলা অনুবাদ, শ্রী রমেশচন্দ্র দত্তের।
{উল্লেখ্য, Swami Dayanand swarswati ঋগবেদ ৬ মন্ডল পর্যন্ত অনুবাদ করেছেন, বাকিগুলো করেন নি। তাই এই অংশে তার অনুবাদ পাওয়া যায় না}
আর্য সমাজের আরেকজন প্রসিদ্ধ স্কলার স্বামী সত্যপ্রকাশ স্বরস্বতি এর অনুবাদ করেছেন,
”May our hymns please you; O lord of resolute will power, please display your bounty. May you drive off the infidels. May you crush with your foot the niggard churls who offer no homage. You are powerful; there is none so powerful as you are.”
[Rigved. Tr. SatyaPrakash Saraswati, Vol 10, page 3289]

আমাদের জবাবঃ
দেখুন অপপ্রচারকারী ভূলের পর ভূল করে গলা বাজিয়েই যাচ্ছে। যখন একটা ভূল হয়ে যায় তখন সেটা হয় প্রিন্ট এর দোষ। তো বলি কি যখন একটা আরোপ লিখতে বসবেন একটু চোখ কান খোলা রেখে বসবেন। আর দেখুন নিজের একটা বড় ভূল কে ছোট বলে চালিয়ে দিয়ে অপপ্রচারকারী তো  মন্ত্রের অর্থেরই চেন্জ করে দিয়েছিলো।  যাক ভুল যেহেতু বুঝতে পেরেছে খুব ভালো কথা ।
মন্দমতি অপপ্রচারকারী বলেছে গরীব হওয়া কি অপরাধ??  না গরীব হওয়াটা কোন অপরাধ নয় । বরং একজন রাজার উচিত দারিদ্রতা দূরীকরণে  কাজ করে যাওয়া।  আমরা যদি মন্ত্রের purport বা ভাবার্থ দেখি তাহলে দেখব মন্ত্রের মূলভাব হলো রাজাকে বলা হচ্ছে দারিদ্রতা দূর করতে কাজ করে যেতে ৷


আর এ মন্ত্রে  দানহীন কৃপন বলতে শুধুমাত্র দানহীন কৃপন ব্যাক্তির কথা বলা হয়েছে অর্থাৎ যে বা যারা অনাথ, দুঃখীজনদের দান করে না তাদের বোঝানো হচ্ছে।  শুধু মাত্র বৈদিকদের দান না করা একতরফা অর্থে  ব্যবহৃত হয় নি।  দান বলতে সামগ্রীকভাবে সৎ পাত্রে দান বোঝায়  । কারণ ঠিক আগের মন্ত্রে ইন্দ্র বা রাজাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে সেই ব্যাক্তিকে ধন দান করতে যার দানশীল মানসিকতা আছে ৷ "bestows wealth to a person cheritably dispose"



এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করা জরুরী এই ইংরেজীতে অতিদূর্বল  মন্দমতি গাধাটা "devoid of wealth of devotion" এর অর্থ করেছে "ভক্তির জন্য যে সম্পদ দেয় না" ৷ অথচ এটার সঠিক বাংলা অর্থ হলো "ভক্তিসম্পদহীন বা শুধু ভক্তিহীন" ৷ ঠিক এ কারনেই সে ভেবে বসে আছে "কৃপণ অর্থ ঈশ্বরের নামে বৈদিকদের অর্থ দিচ্ছে না।"  মূলত মন্ত্রে এরূপ কোন আশয়ই নেই ,  শুধুমাত্র মন্ত্রে দোষ খোজার জন্য  অপপ্রচারকারীর একটা পায়তারা মাত্র।
সূতরাং  এ মন্ত্রে  যদি প্রজাজন দানহীন কৃপন ব্যক্তিকে কঠোরতম শাস্তির  জন্য  রাজার নিকট প্রার্থনা করে এতে  অপপ্রচারকারীর  মস্তিষ্কের কোন জায়গায় ব্যাথা অনুভব হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
আর দ্বিতীয় ধাপে মন্দমতি বলেছে,  বেদে এমন  মন্ত্র পাওয়া যায় না সেখানে ঈশ্বর নিজে মানুষকে উদ্যেশ্য করে বলছে ।  সবগুলোই প্রার্থনাসূচক মন্ত্র যা কি না প্রমাণ করে বেদ মানুষের বাণী সমষ্টি।   তো এই ব্যাপারে ছোট্ট একটা প্রমাণ দিতে চাইবো কোরাণ থেকে।  যেখানে কোরাণের   প্রথম সূরা আল ফাতিহা তে আমরা বিভিন্ন প্রার্থনা দেখতে পাই যেমন " শুরু করছি পরম করুণাময় আল্লাহর নামে"।  "আমরা শুধুমাত্র তোমার ইবাদত করি এবং  তোমার সাহায্য প্রার্থনা করি"  " আমাদের সরল পথ দেখাও " ইত্যাদি।  যা কি না  একজন উপাসক  আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছে  ।   যদিও ইসলাম মতাবলম্বীরা কোরান কে  আল্লাহর বাণী বলে মান্য করে।  তাহলে বলতে হবে কি কোরাণ মানুষের প্রার্থনা সমষ্টি?   এরপর মন্দমতি  বললো  বেদে মানুষ কে উদ্যেশ্য করে  ঈশ্বর কোন উপদেশ দিয়েছে এমন কোন মন্ত্রই নেই । এমন মন্ত্র আছে কি  না আসুন দেখে নেই -
অহমিন্দ্রো ন পরা জিগ্য ইন্ধনং ন মৃত্যবেবতস্থে কদাচন।
সোমমিন্মা সুন্বন্তো য়াচতা বসু ন মে পুরবঃ সখ্যে রিষাথন।
( ঋগ্বেদ ১০।৪৮।৫)
অর্থাৎ ঈশ্বর বলছে,  আমি ইন্দ্র (পরম ঐশ্বর্যশালী) নিশ্চয়রুপে আমার ঐশ্বর্যকে কেউ পরাভূত করতে পারে না কখনো আমি মৃত্যু কবলিত হই না।  হে সোমের প্রস্তুতকারী  যজমান! আমার কাছেই ধন যাচনা করো, হে পুরুষ! আমার মিত্রতা কখনো নাশ হয় না।
দেখলেন তো অল্প বিদ্যা কতটা ভয়ঙ্কর।   এরপর নিরুক্তের প্রমাণে নাকি আমরা চুড়ান্ত মিথ্যাচার করেছি।  প্রথম জবাবে আমরা বলেছিলাম নিরুক্তে একই কথা রয়েছে।  এজন্য একই মন্ত্রের দুইবার ব্যাখ্যা করি নি আমরা  এবং করার প্রয়োজনও নেই।  কারণ ঋগবেদে যে মন্ত্র ১।৮৪।৮ সেই একই মন্ত্র নিরুক্তে ৫।১৭।  আমরা বেদ পাঠকদের বলবো আপনারা বেদের উক্ত মন্ত্রটির  সাথে নিরুক্তের মন্ত্রটি মিলিয়ে দেখুন তো এক না কি আলাদা?


এরপর অপপ্রচারকারীর দাবী - ///// বিধর্মী বা নাস্তিকদের প্রতি, যারা বৈদিক ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না ও তার নামে অর্থ সম্পদ প্রদান করে না তাদের লুটপাট ও ধংস করে দেয়ার প্রার্থনা বেদ এ আরো অনেক আছে, যেমন,
ঋগবেদ ৮/৬৪/১-২,
বলা হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতি,
ধন প্রদান করতে ও নাস্তিক বা স্তুতিবিদ্বেষীগনকে বিনাশ করে দিতে, এবং তাদের পদ দাড়া বিনাশ করতে যারা ধন প্রদান করছে না যজ্ঞের জন্য।//////

ঋগবেদ ৮।৬৪।১ মন্ত্রে "ব্রহ্মদ্বিষো জহি" শব্দ এসেছে।  ব্রহ্মদ্বিষ শব্দের অর্থ হচ্ছে যে,  ঈশ্বর,  বেদ এর বিরোধীতা করে  যা পূর্বেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এবং "জহি" শব্দের অর্থ দূর করা। অর্থাৎ মন্ত্রে ঈশ্বর এবং বেদের বিরোধীতা কারীকে দূরে রাখার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।   কিন্তু এখানে অপপ্রচারকারী লুটপাট খুজে পেয়েছে।  কারণ বেদের অপপ্রচার করাই তাদের মূল লক্ষ্য।   তাই অপপ্রচারকারী  তার বিকৃত উপস্থাপন দ্বারা বেদ মন্ত্রের দোষ খোজার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তিনি একটা মন্ত্রও দেখাতে পারবে না বেদ থেকে যেখানে বেদ  কোন ধার্মিক  ব্যক্তিককে বিনা অপরাধ ছাড়া দন্ডের বিধান দিয়েছে।  একটি রাজ্যে রাজার কর্তব্য  যেমন অপরাধীদের উচিৎ দন্ড প্রদান করা এবং তেমনি শত্রুমুক্ত রাষ্ট্র গড়া।  মন্ত্রটিতে  আর্য মুনি স্পষ্ট করে বলেছেন - জো ঈশ্বর বেদ ঔর শুভকর্মো কে বিরোধী হ্যায় উনকো য়হা সে দূর লে জায়ে।


এরপর ৮।৬৪।২ নং মন্ত্রে  "পণি " এবং "অরাধস" শব্দ এসেছে।   পণি শব্দটি বাণিজ্য কারীর জন্য এসেছে। দেখা যায় যে প্রায়ঃ বাণিজ্যকর্তা ধনি হয়।  কিন্তু যে ধন পেয়েও ব্যায় না করে ওইরূপ লোভী পুরুষকে বেদ পণি বলেছে।


অর্থাৎ মন্ত্রটিতে বলা হচ্ছে যে - হে ইন্দ্র (অরাধস) ধনসম্পদ হওয়ার পরও যে শুভকর্মের জন্য ধন খরচ করে না সেই  (পণিম) লোভী পুরুষ কে (পদানি) পদাঘাত দ্বারা (নি বাধস্ব) দূর করে দাও।



=>> আরোপ - ০৩
গবাদিপশুগুলো কি করছে নাস্তিকদের এলাকায়, যাদের বৈদিক রীতিতে বিশ্বাস
নেই। যারা সোমার সাথে দুধ মিলিয়ে উতসর্গ করে না এবং গরুর ঘি প্রদান করে যজ্ঞও করে
না। ছিনিয়ে আনো তাদের ধনসম্পদ আমাদের কাছে। " (ঋগবেদ ৩।৫৩।১৪)
 শুধু বৈদিক রীতিতে বিশ্বাস না করায়, যজ্ঞ না করায় লুটের আদেশ।এটি কি আসলে কোন ঈশ্বরের বানী হতে পারে? 
 
যৌক্তিকতা বিচারঃ
মন্ত্রটিতে "কীকটেষু" শব্দ এসেছে যার অর্থ কীকট বাসী। নিরুক্ত ৬।৩২ এ বলা হয়েছে " কীকটা নাম দেশোনার্য নিবাস" অর্থাৎ এ দেশে অনার্যরা বাস করতো। কীকট কাদের বলা হয়? যে লোক কুৎসিত কর্ম করে জিতে অথবা উত্তম কর্ম কে তুচ্ছে মনে করে ঐ লোক বা দেশ কে "কীকট" বলে। অর্থাৎ তারা প্রকৃত পক্ষে কোন রূপ ধর্ম পালন করে না। তারা গাভীর থেকে না কোন উপযোগ নেয়। না ঘৃতকে যজ্ঞে আহুতি দেয়। সর্বদা " প্রমগন্দস্য " তদপত্যং প্রমগন্দোত্যন্তুকুসীদিকুলীন ; নিরুক্ত ৬।৩২ " অর্থাৎ ধন কে আমোদ প্রমোদের  মধ্যে দিয়ে ব্যায় করে অথবা সুদে অর্থ সংগ্রহ করে। অর্থাৎ তারা সর্বদাই অধর্মে সম্পদের অপব্যবহার করে।  যা কিনা একটি রাষ্ট্রের জন্য সর্বদাই হানিকর। তাই একজন রাজার কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে উক্ত ধন আমাদের প্রাপ্ত করাও।  কারন একটি আর্যাবর্ত্ত রাষ্ট্রেই সম্পদের যথার্থ ব্যবহার হয়ে থাকে। এবং সেই সাথে প্রার্থনা করা হচ্ছে আমাদের মধ্যে নীচ কুপ্রবৃত্তিবান দের সর্বদা দমন করো। মন্ত্রে লুটপাটের কোন আদেশ দেওয়া নেই।  কারন এটা কুপবৃত্তিদের লক্ষন। একজন আর্যাবর্তের রাজা অধার্মিক রাষ্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেই তবেই সে রাষ্ট্রকে জয় করতো। কোন লুটপাট বা ছিনতাইয়ের মাধ্যমে নয়।
"কীকটবাসী [অনার্য দেশ বাসী] লোক তাহারা গাভীর কি উপযোগ নেয় না তো  পানযোগ্য দুধ আদি দোহন করে এবং না ঘৃতকে  উত্তপ্ত করে,  হে ঐশ্বর্যবান!  নিজ ধন আমোদ প্রমোদে ব্যয় কারী পুরুষের ধন কে আমাদের প্রাপ্ত করাও  আমাদের মধ্যে কুপ্রবৃত্তিবান লোক কে দমন করো "
(ঋগবেদ ৩/৫৩/১৪,  জয়দেব শর্মা)

অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ  লিখেছেঃ
দাদার মতে, যে লোক কুৎসিত কর্ম করে জিতে অথবা উত্তম কর্ম কে তুচ্ছে মনে করে ঐ লোক ব দেশকে “কীকট” বলে। আমার প্রশ্ন দাদা কি তার এই বক্তব্যের পক্ষে কোণ প্রমান পেশ করতে পারবে? ঐতিহাসিকমতে কিকট এক রাজ্যের নাম ছিল যেটা বর্তমান ইন্ডিয়ার বিহারে অবস্থিত। wikipedia.org/Kikata_Kingdom
এটি ছিল মাগদাস রাজার পুর্বপুরুষদের আবাস। এবং কোণ প্রমান নেই যে তার কুতসিত কর্ম করত। বরং তারা ছিল বৈদিক ধর্ম হতে বিচ্ছিন্ন, অর্থাৎ তারা বৈদিক রিতিতে বিশ্বাসী ছিল না। আর এটাই ছিল তাদের অপরাধ, মহাঋষি যস্কের নিরুক্ত হতে যা স্পষ্ট প্রমান দেয়া হয়েছে। মূলত বেদ যখন আর্যদের হাত ধরে প্রচার শুরু হয় ভারতে, তখন বৈদিক ধর্ম হয়ত সব অঞ্চলে প্রচলন তখনো পায়নি, আবার অনেক জাতি এই ধর্ম স্বীকার করেনি। এরফলে তাদের উপর চলত এভাবেই বৈদিক ধর্মালম্বীদের অত্যাচার। দাদার মতে এখানে অনার্যরা থাকত। এখন অনার্য কাদের বলে, আসুন দেখি। স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি তার সত্যার্থ প্রকাশের ২৬৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,
"দ্বিজ, তথা ব্রাক্ষন, ক্ষত্রীয় ও বৈশ্যরাই কেবল আর্য, বাকি সব অর্থাৎ শুদ্ররাও অনার্য। এবং আর্যবার্তার বাইরের অঞ্চলে যারাই থাকে, তারাই দস্যু, ম্লেচ্ছ ইত্যাদি।"
এই অর্থে বৈদিক মতে প্রতিটি মুসলিম ও খ্রিষ্টান বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী এবং খোদ হিন্দু ধর্মাবলম্বী শুদ্ররাও অনার্য এবং ভারত ব্যাতীত অন্যত্র সবাই বর্বর ম্লেচ্ছ। তাই এটা অস্বাভাবিক নয় যে বেদ প্রচারকালীন কীকটবাসী যারা বৈদিক ধর্ম গ্রহন করেনি তাদেরকে বেদ এ শত্রু ঘোষনা করে লুটের প্রার্থনা করা হবে।
দাদার দাবী, তারা ধন কে শুধু আমোদ প্রমোদে ব্যায় করত, সুদে অর্থ সংগ্রহ করত, তারা অধর্মে সম্পদ ব্যায় করত। দাদা কি এই দাবীগুলোর পক্ষে কোণ প্রমান দেখাতে পারবে ? নিরুক্ত হতে স্পষ্ট প্রমান দেখানো হয়েছে, তাদের অপরাধ ছিল, তারা তাদের সম্পদ বৈদিক যজ্ঞে ব্যাবহার করত না এবং বৈদিক যজ্ঞ পালন করত না। শুধু এটাই ছিল তাদের অপরাধ।অন্য কোণ অপরাধের কথা নিরুক্তে লেখা নেই। আর এজন্য তাদের সম্পদ কুক্ষিগত করার প্রার্থনা বেদ এ। এছাড়াও কেউ যদি নিজের আমোদ প্রমোদে ধন সম্পদ ব্যায় করে তো তার সম্পদ ছিনিয়ে আনা কতটা যুক্তিযুক্ত ? সেক্ষেত্রে তো চোরও এটা দাবী করতে পারে যে মালিক সম্পদের সঠিক ব্যাবহার করত না তাই সে সম্পদ নিয়ে এসেছে। দাদার আরো মিথ্যা দাবী, “মন্ত্রে লুটপাটের কোন আদেশ দেওয়া নেই। কারন এটা কুপবৃত্তিদের লক্ষন" । আমার প্রশ্ন ঠিক কোণ কাজটা করলে তবে তাকে লুটপাট বলা হয় ? একদল মানুষ যারা বৈদিক রিতিতে বিশ্বাসী নয়, তাদের সম্পদ তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুক্ষিগত করার প্রার্থনা, এটা কি লুটপাট নয় ? নীচে নিরুক্ত হতে স্পষ্ট প্রমান দেখানো হল যে তাদের কি অপরাধ ছিল এবং তাদের সম্পদ ছিনিয়ে আনার প্রার্থনা করা হল।

আমাদের জবাবঃ
প্রথম জবাবে আমরা কীকট শব্দের অর্থে বলেছিলাম " যে লোক কুৎসিৎ কর্ম করে জীতে অর্থাৎ জীবন ধারণ করে এবং উত্তম কর্ম কে তুচ্ছ মনে করে তাদের কীকট বলে।  এর প্রেক্ষিতে   অপপ্রচারকারী বললেন আমরা এর কোন প্রমাণ দিতে পারবো কি না।  ঋগবেদ ৩।৫৩।১৪ মন্ত্রে  জয়দেব শর্মা স্পষ্ট কীকট শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন।  তার ভাষ্যে স্পষ্ট লেখা রয়েছে -  কীকটেষু = জো লোগ কুৎসিত কর্ম কো করকে জীতে বা উত্তম কর্মো কো তুচ্ছ সমঝনে হ্যায়।


নিরুক্তে কীকট অর্থ বলা হয়েছে।  কীকটাঃ কয়ো বনাএ গএ ( কয়োকি বহ দেব পিতৃ মনুষ্যো কা কোই উপকার নেহী করতে হ্যায়।


অর্থাৎ নিরুক্তে তাদের কীকট বলা হচ্ছে - যারা পিতৃ দেব মনুষ্যের কোন উপকার  করে না।
এর পর অভিযোগকারী বলেছে কীকট রাজ্য ভারতের বিহারে অবস্থিত এবং সাথে উইকিপেডিয়ার লিংক দিয়েছে। আপনারা অভিযোগকারীর লিঙ্কেই দেখুন সেখানে বলা আছে এটা ভারতের বিহারে অবস্থিত এটা নিশ্চিত নয় তবে অনেকে অনুমান করেন ৷
আর এ দেশে অনার্যদের বাস এটা কোন আমাদের মত নয়।  নিরুক্তে স্পষ্ট বলা রয়েছে - কীকটা নাম দেশোহনার্যনিবাসঃ।


এর অপপ্রচারাকারী মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর আর্য এবং অনার্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরলেন কিন্তু পুরোপুরিভাবে নয়।  সত্যার্থ প্রকাশ ৮ম সমুন্নাসে আর্য অনার্যের ব্যাখ্যায় বলেছেন - ধার্মিক,  বিদ্বান, এবং আপ্ত পুরুষদিগের নাম আর্য।  এবং তাহার বিপরীত ব্যক্তিদের নাম দস্যু অর্থাৎ ডাকাইত,  দুর্বৃত্ত,  অধার্মিক এবং মূর্খ।  আর্যদের মধ্যে পূর্বক্তরূপে ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়,  বৈশ্য,  শুদ্র এই চার ভাগে ভাগ করা হলো। এর মধ্যে দ্বিজ বিদ্বানদিগের নাম আর্য্য এবং মূর্খদের নাম শূদ্র ও অনার্য হলো।


অর্থাৎ আর্য  কোন বিশেষ জাতির নাম নয়।  শ্রেষ্ঠ বিদ্বানের আর্য্য বলা হয়ে থাকে।  আর মহর্ষি মূর্খদের অনার্য্য এবং শুদ্রের সংজ্ঞা দিয়েছে।  যে কোন ব্যক্তিই আর্য হতে পারে যদি সে শ্রেষ্ঠ আচরণ করে।  আর যদি কেউ ইহার বিপরীত আচরণ করে তবে সে দস্যু,  দূর্বৃত্ত এবং অধার্মিক। আর যে দেশে  দেব অর্থাৎ বিদ্বানগণ বাস করে সে দেশকে আর্যাবর্ত্ত বলে।

এরপর অপপ্রচারকারী লিখলেন - ////// তারা ধন কে শুধু আমোদ প্রমোদে ব্যায় করত, সুদে অর্থ সংগ্রহ করত, তারা অধর্মে সম্পদ ব্যায় করত। দাদা কি এই দাবীগুলোর পক্ষে কোণ প্রমান দেখাতে পারবে ? ///////

মনে হচ্ছে অপপ্রচারকারী কোন ভাং সেবন করেছেন এজন্য স্পষ্ট জিনিষগুলোও চোখে দৃশ্যমান হচ্ছে না।  তার কি Usurer  শব্দটি চোখে পড়ে নি। তার প্রদত্ত নিরুক্তের স্ক্রীন সটে স্পষ্ট লেখা রয়েছে -   Bring to the wealth of the usurer.


আর তারা যে প্রমাদশীল এবং আমোদ প্রমাদে ধন ব্যায় করতো তা জয়দেব শর্মা তার ভাষ্যে স্পষ্টরূপে উল্লেখে করেছেন - আপনে ধন কো আমোদ প্রমোদ মে হী  ব্যায় করনে বালে পুরুষ।


এবং নিরুক্তে আরো স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে,  প্রমাদশীল অথবা এরকম লোক যার  কোন পরলোক নেই এরূপ অভিপ্রায় সম্পন্ন।


অর্থাৎ আমরা কীকটবাসীদের যেসব দোষগুলো পেলাম তা হলো - তারা দেব পিতৃ মনুষ্যদের কোন উপকার করে না। তারা  ধন কে আমোদ প্রমোদের  মধ্যে দিয়ে ব্যায় করে। এবং সুদে অর্থ সংগ্রহ করে।
এরূপ ব্যক্তিদের ধন কে প্রাপ্ত করার জন্য রাজার নিকট প্রার্থনা করা হচ্ছে।  তা নাকি অপপ্রচারার কারীর নিকট লুটপাট।  অপপ্রচারকারী  উদাহরণ দিলেন যে কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে  সম্পদ কুক্ষিগত করাই লুটপাট।  তো আমি একটি ছোট্ট উদাহরণ দেবো - ধরুন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আইন রক্ষাবাহিনীদের  নির্দেশ দেওয়া হলো এই যে, যারা অসদুপায়ে টাকা বৃদ্ধি করছে তাদের চিহ্নিত করে তাদের ঘর তল্লাশি করে কালো টাকা উদ্ধার করো।  তো তারপর আইনরক্ষাবাহিনী  সেসব ব্যক্তিদের ঘর তল্লাশি করে টাকা উদ্ধার করলো।  তাহলে কি বলতে হবে সেসব আইন রক্ষাবাহিনীরা লুটপাট করেছিলো?

=>>আরোপ - ০৪
“যে ব্যাক্তি ব্রাক্ষণের ক্ষতি করে ব্রাক্ষণের গরু নিজের কাজে লাগায়, তাকে ধংস করে
দাও।”  (অথর্ববেদ ১২।৫।৫২)
বেদের এই মন্ত্র যে স্বার্থবাদি ব্রাক্ষণ কর্তক লিখিত, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। যারা শুধু নিজেদের ক্ষতিকারীর প্রতি এরকম খরগহস্ত হবার আদেশ দিচ্ছে। 

যৌক্তিকতা বিচারঃ
মন্ত্রটিতে "ব্রহ্মজ্যম" শব্দ এসেছে। এর অর্থ হচ্ছে ব্রহ্মজ্ঞানী ব্রহ্মচারী বা বেদজ্ঞ এর হানিকারক বা ধ্বংসক। এবং "আদদানম" অর্থাৎ যারা ছিনিয়ে নেয় এক কথাই ছিনাতাইকারী। মন্ত্রে "গাভী" ছিনিয়ে নেওয়ার উল্লেখ নেই। অনেক ভাষ্যকার  এরূপ করেছে, যারা "বেদ বাণীকে" ছিনিয়ে নেয়।  অর্থাৎ জ্ঞানের অপহরন করতে চায় অথবা ধার্মিককে বেদ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে।  এরূপ ব্যক্তির উপর "উপ সাদয়" চড়াও হও বা নাশ করো।  একজন ব্রহ্মজ্ঞানী বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ এর মর্যাদা সমাজে সর্বাধিক। বৈদিক বর্ণ ব্যবস্থা জন্মগত জাতিপ্রথাকে স্বীকার করে না। মূলত ব্রহ্মজ্ঞানীকেই ব্রাহ্মণের সংজ্ঞা দেওয়া হয় (ব্রহ্ম জানাতি স ব্রাহ্মণ)। আর বেদে এরূপ ব্রহ্মজ্ঞানী ব্রহ্মণকে সমাজের মুখ বলা হয়েছে (ব্রহ্মণ মুখমআসিদ) । কারন এক জন বেদ জ্ঞানী তথা ব্রহ্মজ্ঞানী বিদ্বানই সমাজ কে পরিচালনা করে থাকে। আর সমাজের সবার কর্তব্য হচ্ছে তাদের সর্বদা রক্ষন করা।  মনুস্মৃতিতে এজন্য বলা হয়েছে,  "শশ্রূষা ব্রাহ্মণাঞ্চ রাজ্ঞাং শ্রেয়স্করং পরম, (মনুঃ ৭।৮)  অর্থাৎ ব্রাহ্মণের সেবা করা রাজাদিগের পরম মঙ্গলদায়ক।    অতএব যেসব ব্যক্তি সর্বদা ব্রহ্মজ্ঞানী (ব্রাহ্মণ) কে নষ্ট করতে চায়  বেদ সেজন্য আজ্ঞা দিচ্ছে তাদের উপর চড়াও হও তাদের নাশ করো।
হে অঙ্গিরা [পরমজ্ঞানী পরমেশ্বর] দ্বারা উপদেশকৃত [বেদবাণী] যারা ছিনিয়ে নেয় ব্রহ্মচারীর হানিকারকের উপর চড়াও হও।
(অথর্ববেদ ১২।৫।৫২, ক্ষেমকরন দাস ত্রিবেদী)

অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছেঃ
মূল নোটে মন্ত্রটির রেফারেন্স প্রদানে কিঞ্চিত ভুল করেছি, কিন্তু অবাক বিষয় স্ক্রিণশটে রেফারেন্সটি কিন্তু স্পষ্ট প্রদান করা আছে, জনৈক দাদা কি সেটা দেখেও দেখলেন না, নাকি ছুতোয় এড়িয়ে গেলেন ?
মন্ত্রটির রেফারেন্স ১২/৫/৬২, যেটা ভুলে প্রথমে ৫২ লিখেছিলাম। নীচে মন্ত্রটির আর্য সমাজ কর্তক অনুবাদের স্ক্রীনশট, অনুবাদক আচার্য বিদ্যানাথ শাস্ত্রী, যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ব্রাক্ষনের গরুকে নিজ কাজে ব্যবহারকারী ও ব্রাক্ষনের ক্ষতিকারীর প্রতি ধংসের আদেশ দেয়া হল।

আমাদের জবাবঃ
আবারো রেফারেন্স ভূল। তারপর আবার স্ক্রীন সট নিয়ে নাটকিয়তা।  প্রথমত রেফারেন্স এবং স্ক্রীন সটের  অমিল করে পাঠকদের মাঝে  ভ্রম সৃষ্টি করছে এরপর সেই দোষ দিচ্ছে  আমাদের।  অর্থাৎ  নিজের ভূলগুলো অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়াই এদের স্বভাব। যাই হোক  অপপ্রচারকারী বললেন    মন্ত্রটির রেফারেন্স হবে  ১২।৫।৬২।  আচ্ছা তবে দেখে নেওয়া যাক মন্ত্রটিতে কি বলা হয়েছে -  মন্ত্রটি হচ্ছে - বৃশ্চ প্র বৃশ্চ প্র দহ সং দহ।।৬২।।  এবং পরের মন্ত্র টি হচ্ছে ব্রহ্মাজ্যম দেব্যঘন্য আ মূলানুসন্দ।। ৬৩।।


মন্ত্রদ্বয়ের অর্থ হচ্ছে -
"হে শত্রুকে পরাজিত কারী অহন্তব্য বেদবাণী! তুমি এই ব্রাহ্মণের [ব্রহ্মজ্ঞানীর] হিংসক কে অর্থাৎ জ্ঞান বিনাশক কে কেটে ফেলো, উত্তমরূপে কেটে ফেলো, সম্যক কেটে ফেলো, এদের জ্বালিয়ে দাও, প্রকর্ষেন দগ্ধ করে দাও এবং সম্যক দগ্ধ করে দাও"
এই বিষয়ে  ব্যাখ্যা আমরা আরোপ ৫ বিস্তারিতভাবে করবো।                       

=>> আরোপ - ০৫
“তু বেদ নিন্দুককো কাট ডাল, চির ডাল, ফাড় ডাল, জ্বালা দে, ফুক দে, ভষ্ম কর দে,”
অর্থাৎ বেদের নিন্দাকারীকে, কেটে ফেল, চিড়ে ফেল,ফেড়ে ফেল,জ্বালিয়ে দাও,ফুকে
দাও,ভষ্ম করে দাও" (অথর্ববেদ ১২।৫।৬২)
এগুলো যে চরম মানবতার লঙ্ঘন এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

যৌক্তিকতা বিচারঃ
এ মন্ত্রটির আশয় পরবর্তী মন্ত্রে স্পষ্ট হয়েছে যে,  বেদ মূলত কাদের এমন কঠোরতম দন্ডের বিধান দিচ্ছে। পরের মন্ত্রটিতে বলা হয়েছে যে,  "ব্রহ্মজ্যং অনুসংদহ "  অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞানী বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের হানিকারক কে জ্বালিয়ে দাও।  ব্রহ্মজ্ঞানীর (ব্রাহ্মণের) একটি সমাজ তথা রাষ্টে প্রয়োজনিতা কতটুকু এ সমন্ধে অথর্ববেদ ৫।১৯।৬ এ বলা হয়েছে যে,   " যে উগ্র রাজা অভিমানী হয়ে বেদবিদ বিদ্বান ব্রাহ্মণ কে নষ্ট করতে চায় তার রাষ্ট্র সম্পদ শূণ্য হয়ে যায়।  যেখানে ব্রহ্মজ্ঞানী ব্রাহ্মণ কষ্ট প্রাপ্ত হয় সেই রাষ্ট্র পরাজিত হয়।"
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে, একটি রাষ্ট্রে ব্রহ্মজ্ঞানীর গুরত্ব কতটুকু।  কিন্তু যেসব অধার্মিক এই ব্রহ্মজ্ঞানীদের ধ্বংস করতে সদা উদ্যত বেদ তাদের কঠোরতম শাস্তির নির্দেশ দিচ্ছে। যাতে একটি রাষ্ট্র সদা জ্ঞানবান বিদ্বান দ্বারা পূর্ণ থাকে এবং জ্ঞানের বিনাশক কেহ না থাকে।
"হে শত্রুকে পরাজিত কারী অহন্তব্য বেদবাণী! তুমি এই ব্রাহ্মণের [ব্রহ্মজ্ঞানীর] হিংসক কে অর্থাৎ জ্ঞান বিনাশক কে কেটে ফেলো, উত্তমরূপে কেটে ফেলো, সম্যক কেটে ফেলো, এদের জ্বালিয়ে দাও, প্রকর্ষেন দগ্ধ করে দাও এবং সম্যক দগ্ধ করে দাও"
(অথর্ববেদ ১২।৫। ৬২-৬৩,  হরিশরন সিদ্ধান্তলংকার)

অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছেঃ
দাদার মতে এখানে ব্রহ্মজ্ঞানী বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের হানিকারক কে জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ যে ব্যাক্তি কোণ ব্রাক্ষনের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে তাকে জালিয়ে পুড়িয়ে মারার কথা বলা হয়েছে (এখানে স্পষ্টই বোঝা যায় যে বেদ ঈশ্বর লিখেছেন নাকি স্বার্থবাদি ব্রাক্ষনসমাজ নিজেদের হাতে লিখেছে)।
যাক গে, যৌক্তিকতা বিচার করি এবার, ব্রাক্ষন সমাজ কেন রাষ্ট্রের জন্য এতটা গুরুত্বপুর্ন যে কেউ তার ক্ষতির চেষ্টা করলেই বেদ তাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারার আদেশ দেয় ?
দাদার লিখলেন "একটি সমাজ তথা রাষ্টে প্রয়োজনিতা কতটুকু এ সমন্ধে অথর্ববেদ ৫।১৯।৬ এ বলা হয়েছে যে, " যে উগ্র রাজা অভিমানী হয়ে বেদবিদ বিদ্বান ব্রাহ্মণ কে নষ্ট করতে চায় তার রাষ্ট্র সম্পদ শূণ্য হয়ে যায়। যেখানে ব্রহ্মজ্ঞানী ব্রাহ্মণ কষ্ট প্রাপ্ত হয় সেই রাষ্ট্র পরাজিত হয়।"
দাদার মতে যে রাষ্ট ব্রাক্ষনদের নষ্ট করতে চায় সে রাষ্ট্র সম্পদ শূন্য হয়ে যায়। আমার প্রশ্ন, আমেরিকার রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় তো ব্রাক্ষন নেই, তো তারা এত ধনী কিভাবে? সৌদিতেও তো ব্রাক্ষণ নেই, তারা ধনী কিভাবে ? বিশ্বের সেরা দশ ধনী রাষ্ট্রের একটিরও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ব্রাক্ষন তো দূরে থাক হিন্দুই নেই, তো তারা ধণী কেন ? দাদা ও তার বেদের মতে তাদের সম্পদ শুন্য হয়ে যাচ্ছে না কেন ?
আর হ্যা জ্ঞানবান বিদ্বান আর ব্রাক্ষন দুটো কিন্তু এক নয়। একজন জ্ঞানবান বিদ্বান হলেই কিন্তু তাকে ব্রাক্ষন বলা হয় না। যেমন স্টিফেন হকিং কে কি হিন্দুরা ব্রাক্ষন বলবে ? কিংবা রিচার্ড ডকিংসনকে ? কিংবা ইবনে সীনা, ইবনে বতুতাকে বা শেখ সাদীকে কি তারা ব্রাক্ষন সম্মোধন করবে ? করবে না, তাই জ্ঞানী ও ব্রাক্ষন এক নয়, বরং শুধু বেদ জ্ঞানীকেই ব্রাক্ষন বলা হয়, একিসাথে ব্রাক্ষণ জন্মসুত্রেই হয়ে থাকে একমাত্র, হোক সে জ্ঞানী, মুর্খ বা চোর,ব্রাক্ষন এমনকি নাস্তিকও হতে পারে। যেমন,
মনুসংহিতা ৩/১৫০ এ বলা আছে,
"যাহারা চৌর্যবৃত্তি করে, যে মহাপাতকী, যে নপুংসক, যার পরলোকে বিশ্বাস নেই, এমন সকল ব্রাক্ষন দৈব ও পৈত কার্যে অগ্রাহ্য।"
অর্থাৎ ব্রাক্ষন একিসাথে চোর, মহাপাপী এমনকি নাস্তিকও হতে পারে। সুতরাং এটা পরিস্কার গুনাবলি দ্বারা ব্রাক্ষন নয় বরং জাত বা জন্মসুত্র দ্বারাই ব্রাক্ষন। এটা নিয়েও দাদারা মিথ্যাচার করে, এটা নিয়ে পরবর্তীতে তাদের মিথ্যাচার ধরিয়ে দেয়া হবে।
যাক গে, এখন হিঁদুদের মধ্যে ব্রাক্ষনের ক্ষতিকারীর প্রতি এত কেন ভয়াবহ শাস্তি ? এটা কি যৌক্তিক হতে পারে ? শুদ্ররা তবে কি দোষ করল ? তাদের শ্রমেই তো সভ্যতা সৃষ্টি হয়। শ্রমিকের শ্রমেই সভ্যতা দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু শুদ্রের ক্ষতিকারীর প্রতি তো বেদ কিছুই বলেনি? বৈশ্য ব্যাববসা বানিজ্যের দ্বারা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামো মজবুত করে, কই তার ক্ষতিকারীর প্রতিও কোণ আদেশ দেয়া হয়নি। অপরদিকে ব্রাক্ষন, যিনি শুধু বেদ পড়ে, তার ক্ষতিকারীর প্রতি এমন কঠোর আদেশ, এটা কি গ্রহনযোগ্য ?
আর হ্যা আমি যে মন্ত্রটি দিয়েছি সেখানে কোণ ব্রাক্ষনের ক্ষতিকারকের কথা নেই, স্পষ্ট বলা রয়েছে বেদ নিন্দুক এর কথা।আর্য সমাজের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে দেয়া অনুবাদটিই আমি প্রদান করেছি, পন্ডিত কেম কারন দাস ত্রিবেদির। aryasamajjamnagar.org/atharvaveda_v2/pages/p576.gif
দাদা ট্রিক করে পরবর্তী মন্ত্র আনতে চাইলেন কিন্তু পরবর্তী মন্ত্র দ্বারা আগের মন্ত্রের অর্থ চেইঞ্জ হয়নাই। ৬২ নাম্বার মন্ত্রে বেদ এর নিন্দাকারীকে ভয়াবহভাবে মারতে আদেশ দিচ্ছে এবং ৬৩ নাম্বার মন্ত্রে ব্রাক্ষনের ক্ষতিকারকের প্রতিও একি আদেশ দিচ্ছে। এরপর আমার নোটে এ পরবর্তী অথর্ববেদ ১২/৫/৫৪ মন্ত্রটি নিয়ে দাদা আর কিছুই বললেন না, সেটা বাদ দিয়ে গেলেন, কারন সেখানে আমি আর্য সমাজের বেদ ভাষ্য দিয়ে প্রমান করেছি স্পষ্ট লেখা বেদ অনুযায়ী ধার্মিক ব্যাক্তির কাজ নাস্তিকদের হত্যা করা।
“জালাতে হুয়ে, ভষ্ম কর দেতে হুয়ে তু বেদ নিন্দুককে লিয়ে ঈশ্বরকা বজ্ররুপ হ্যায়”
অর্থাৎ বেদ নিন্দুক বা নাস্তিককে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দেয়া হচ্ছে বেদ অনুযায়ী ধার্মিকের কাজ।
মন্ত্রটির কমেন্টারিতে লেখা আছে,
“বেদানুযায়ী সত্যবীর পুরুষ নাস্তিকোকা নাশ করে”
অর্থ, বেদ অনুযাই সত্যবীর পুরুষ নাস্তিকদের হত্যা করবে।
কথা একেবারে স্পষ্ট। এজন্যই দাদা মন্ত্রটি এড়িয়ে গেলেন।

আমাদের জবাবঃ
আমরা আরোপ ৪ এ ব্যাখ্যা করেছি যে ব্রহ্মজ্ঞানীদের ব্রাহ্মণ বলা হয়ে থাকে।   তাই বেদ যে ব্রাহ্মণদের রচিত সেটা অপপ্রচারকারীর নিজ মনগড়া দাবী।   কারণ এর পক্ষে অপপ্রচারকারীর কোন প্রমাণ নেই।  আর  বেদ সর্বদা এরূপ ব্রহ্মজ্ঞানীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।  কারণ একটি সমাজ তথা রাষ্ট্রে এরূপ ব্রহ্মজ্ঞানীদের নির্দেশনা অত্যন্ত জরুরী। কারন একজন বেদজ্ঞানী তথা ব্রহ্মজ্ঞানী বিদ্বানই সমাজকে ধর্ম ও ন্যায় পথে পরিচালিত করে ৷ ব্রাহ্মণের একটি সমাজ তথা রাষ্টে প্রয়োজনিতা কতটুকু এ সমন্ধে অথর্ববেদ ৫।১৯।৬ এ বলা হয়েছে যে,   " যে উগ্র রাজা অভিমানী হয়ে বেদবিদ বিদ্বান ব্রাহ্মণ কে নষ্ট করতে চায় তার রাষ্ট্র সম্পদ শূণ্য হয়ে যায়।  যেখানে ব্রহ্মজ্ঞানী ব্রাহ্মণ কষ্ট প্রাপ্ত হয় সেই রাষ্ট্র পরাজিত হয়।"

এর প্রেক্ষিতে অপপ্রচারকারী লিখলেন - ////// আমেরিকার রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় তো ব্রাক্ষন নেই, তো তারা এত ধনী কিভাবে? সৌদিতেও তো ব্রাক্ষণ নেই, তারা ধনী কিভাবে ? বিশ্বের সেরা দশ ধনী রাষ্ট্রের একটিরও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ব্রাক্ষন তো দূরে থাক হিন্দুই নেই, তো তারা ধণী কেন ? দাদা ও তার বেদের মতে তাদের সম্পদ শুন্য হয়ে যাচ্ছে না কেন ? //////

এই হচ্ছে  মন্দমতি অপপ্রচারকারীর জ্ঞান।  মন্ত্রে বলা হচ্ছে- যে উগ্র রাজা অভিমানী হয়ে বেদবিদ বিদ্বান ব্রাহ্মণ কে নষ্ট করতে চায় তার রাষ্ট্র সম্পদ শূণ্য হয়ে যায়। মন্ত্রে ব্রাহ্মণদের ধ্বংসকারীদের কি অবস্থা হবে সেটা বলা হচ্ছে।  অপরদিকে আমেরিকা, সৌদিতে কোন ব্রাহ্মনই নেই তাই সেখানে ব্রাহ্মণ শাস্তিই পাবে বা কি করে?  আর তাদের সম্পদ বিনষ্ট হবেই বা কি করে? 
এরপর অপপ্রচারকারী  কয়েকজন বিজ্ঞানী এবং ইসলাম প্রচারকদের নামউল্লেখ করে বললেন তাদেরকে আমরা ব্রাহ্মণ বলবো কি না?  অবশ্যই তাদের ব্রাহ্মণ বলবো না।  কারণ পুথিগত বিদ্যায় পারদর্শি কেউ হলেই ব্রাহ্মণ হন না।  মূলত ব্রহ্ম জানাতি স ব্রাহ্মণ অর্থাৎ ব্রাহ্মণকে যিনি জেনেছেন তিনিই ব্রাহ্মণ। এখানে একটা কথা আরো উল্লেখ্য যে শুধু মেধাবী ও জ্ঞানী হলেই তাকে ব্রাহ্মন বলা যাবে না ৷ কারন সে তার মেধা ও জ্ঞানকে অপরাধ ও অন্যায় পথেও পরিচালিত করতে পারে ৷ সেকারনেই ব্রহ্মজ্ঞানটাও একটা জরুরী বিষয় ৷ অবশ্য অপপ্রচারকারী এটা স্বিকার করেছেন বেদ জ্ঞানীদের ব্রাহ্মণ বলা হয়।  খুব সুন্দর কথা এটি।   

কিন্তু এর পরে বললেন -//// ব্রাক্ষণ জন্মসুত্রেই হয়ে থাকে একমাত্র, হোক সে জ্ঞানী, মুর্খ বা চোর,ব্রাক্ষন এমনকি নাস্তিকও হতে পারে। /////

একথা একদম অসত্য।  কারণ বর্ণ জন্ম দিয়ে নির্ধারন হয় না।  গুন এবং কর্মের দ্বারা হয়ে থাকে।  গীতা ৪। ১৩ এ স্পষ্ট বলা আছে - আমি চার বর্ণের সৃষ্টি করেছি গুন এবং কর্মের দ্বারা জন্মের দ্বারা নয়।  কারণ  ব্রাহ্মণ ও শুদ্র হতে পারে এবং শুদ্রও ব্রাহ্মণ হতে পারে। এই প্রকার ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যও নিজ নিজ বর্ণ পরিবর্তন করতে পারে। মনু ১০।৬৫।  ইতিহাসে আমরা এরূপ বহু প্রমাণ পাই - যেমনঃ বিশ্বামিত্র ক্ষত্রিয়কুলে জন্মে পরে ব্রাহ্মণ হয়েছিলেন। পরশুরাম ক্ষত্রিয় হয়েছিলেন।জবালার পুত্র সত্যকাম ব্রাহ্মণ হয়েছিলো। দাসীপূত্র বিদুর ব্রাহ্মণ হয়েছিলো এরূপ বহু প্রমাণ মেলে।

তারপর মনুস্মৃতির প্রমাণ দিয়ে বললেন - /////// ব্রাক্ষন একিসাথে চোর, মহাপাপী এমনকি নাস্তিকও হতে পারে।///// 

শ্লোকটি নিন্মরূপ
যেসব ব্রাহ্মন চোর, পতিত ও নপুংসক এবং যারা নাস্তিক বৃত্তি তারা হব্য কব্য (দৈব ও পিতৃকার্যে) অযোগ্য বা অনধিকারী বলে মনু নির্দেশ করেছেন ৷
(মনুসংহিত ৩।১৫০)
(নাস্তিক= যারা শাস্ত্রীয় উপদেশে শ্রদ্ধাহীন)
এই শ্লোকের মাধ্যমে মনু বুঝিয়েছেন যে,  একজন ব্যক্তি ব্রাহ্মণ হতে পারে।  কিন্তু যদি তার  শাস্ত্রীয় উপদেশে শ্রদ্ধা না থাকে, সে যদি চোর হয়, অধঃপতিত হয় তাহলে সেই ব্যাক্তিও পরিত্যাজ্য ৷ অর্থাৎ দূর্জন বিদ্বান হলেও সর্বদা পরিত্যাজ্য ৷   মহাভারতে এটা আরো স্পষ্ট হয়েছে -
ব্রাহ্মণঃ পতনীয়েষু বর্তমানো বিকর্মসু।।১৩
দাম্ভিকো দুষ্কৃতঃ প্রায়ঃ শুদ্রেণ সদৃশো ভবেত।
তস্ত শুদ্রো দমে সত্যে ধর্মে চ সততোত্থিতঃ।।১৪
তং ব্রাহ্মণামাং মন্যে বৃত্তেন হি ভবেৎ দ্বিজ। ১৫
(মহাভারত বন পর্ব, অঃ ২১৬, শ্লোক ১৩-১৫)
সরলার্থঃযে ব্রাহ্মণ পতনের গর্ভে পাপকর্ম দ্বারা পতিত হয় এবং দুষ্কর্মকারী সে শুদ্রের সমান। ইহার বিপরীত যে শুদ্র শম দম সত্য ধর্ম তথা ধর্মকে পালন করার জন্য সদা উদ্যত থাকে তাকে আমি ব্রাহ্মণ মানি। কারন মানুষ সদাচার দ্বারাই দ্বিজ হয়।
এরপর অপপ্রচারকারী একটা দোষরোপ করলো যে,  শুধু ব্রাহ্মণদের হিংসাকারীকে ভয়ানক শাস্তি কেন?  এবং বৈশ্য শুদ্ররা কি দোষ করলো?
না তো বৈশ্য,  শুদ্ররা কোন দোষ করে নি। কারণ চারটি বর্ণ দ্বারাই একটি পূর্ণাঙ্গ সমাজ ব্যবস্থা।  একটি সমাজে উপদেষ্টা,  রক্ষাবাহিনী,  ব্যাবসায়ী এবং সমাজের উপকার্থে সেবা শশ্রূষাবান প্রত্যেকেরই প্রয়োজন আছে। এর মধ্যে উপদেষ্টাকে গুরত্ব এ কারণে দেওয়া হয়েছে কারণ তারা যদি সঠিক মার্গ দেখায় তবে রাষ্ট্রের অনেক উন্নতি সম্ভব।   উদাহরণস্বরূপ রাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি,  খেলার মধ্যে কোচ কে অধিক গুরত্বপূর্ণ ধরা হয়ে থাকে।  তেমনি রাজ্যেব্ রহ্মজ্ঞানী ব্রাহ্মণকে গুরত্বপূর্ণ ধরা হয়।  তাই বলে যে বৈশ্য শুদ্র কে ঘৃণা করা হচ্ছে এমন কোথাও নেই।  পবিত্র বেদ বলেছে -
রুচং নো ধেহি ব্রাহ্মণেষু রুচ রাজসু নস্কৃধি।
রুচং বিশ্যেষু শুদ্রেষু ময়ি ধেহি রুচা রুচম।।
(অথর্ববেদ ১৯।৬২।২)
সরলার্থঃ  আমাদের প্রীতি কে ব্রাহ্মণদের মধ্য ধারন করো আমাদের প্রীতি কে রাজাদের [ক্ষত্রিয়দের] মধ্যে ধারন করো।  আমাদের প্রীতিকে কে বৈশ্যদের মধ্যে এবং শুদ্রদের মধ্যে [ধারন করো] আমার মধ্যে প্রীতির সাথে [তাদের ] প্রীতিকে ধারন করো।

এরপর অপপ্রচারকারী দাবী করেছে -/////আমি যে মন্ত্র দিয়েছি সেখানে কোণ ব্রাক্ষনের ক্ষতিকারকের কথা নেই, স্পষ্ট বলা রয়েছে বেদ নিন্দুক এর কথা।
দাদা ট্রিক করে পরবর্তী মন্ত্র আনতে চাইলেন কিন্তু পরবর্তী মন্ত্র দ্বারা আগের মন্ত্রের অর্থ চেইঞ্জ হয়নাই। ৬২ নাম্বার মন্ত্রে বেদ এর নিন্দাকারীকে ভয়াবহভাবে মারতে আদেশ দিচ্ছে এবং ৬৩ নাম্বার মন্ত্রে ব্রাক্ষনের ক্ষতিকারকের প্রতিও একি আদেশ দিচ্ছে।///////

 ১২।৫।৬২ নাম্বার মন্ত্রে শুধু একাধারে দন্ডের আদেশ দেওয়া রয়েছে। কিন্তু কাকে দেওয়া হবে এরূপ দন্ড এইরকম  শব্দ উক্ত মন্ত্রে আসে নি।  এজন্য ক্ষেমকরন দাস third bracket [ ] এর মধ্যে [ বেদ নিন্দক ] শব্দ বসিয়েছে।  এটা মূল মন্ত্রের কোন কথা নয়।  মন্ত্রে মূলত কাদের দন্ড দিতে বলা হয়েছে এটা বোঝার জন্য  আমরা পরবর্তী মন্ত্রে গিয়েছিলাম।  সেখানে বলা হয়েছে - ব্রহ্মজ্যং অনুসংদহ "  অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞানী বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের হানিকারক কে জ্বালিয়ে দাও।


এতে নাকি পূর্বের মন্ত্রের কোন পরিবর্তনই হয় নি।  ৬২ টি নাম্বারে শুধু বেদ নিন্দককেই মারতে বলা হয়েছে। তো আমি বলবো অপপ্রচারকারী কি ৬২ নাম্বার মন্ত্রে  [বেদ নিন্দক] এর সংস্কৃত শব্দ দেখাতে পারবে?   মূলত ৬২,৬৩,৬৪ মন্ত্র মিলিয়ে মন্ত্রটির পূর্ণাঙ্গ  ভাবার্থ।  এজন্য অনান্য অনুবাদ যেমন হরিশরণ তিনটি মন্ত্র একত্রে অর্থ করেছে-


এরপর অপপ্রচারকারী আমাদের উপর একটা দোষারোপ করেছে,  সেটা হলো আমরা নাকি অথর্ববেদ ১২।৫।৫২  মন্ত্র বাদ দিয়েছি।  এ প্রসঙ্গে একটা কথা বারবরই বলে এসেছি  আমরা যে সাইট থেকে তথ্যগুলো পেয়েছি এবং সেখানে যেসব অপপ্রচার ছিলো আমরা প্রত্যেকটির জবাব দেবার চেষ্টা করেছি।  এটা যদি অপপ্রচারকারীর নতুন অথবা পুরাতন সংযোজন হয়ে থাকে আমাদের কোন আপত্তি নেই জবাব দিতে।

দাবীটি হচ্ছে -  ///// আমি আর্য সমাজের বেদ ভাষ্য দিয়ে প্রমান করেছি স্পষ্ট লেখা বেদ অনুযায়ী ধার্মিক ব্যাক্তির কাজ নাস্তিকদের হত্যা করা।
“জালাতে হুয়ে, ভষ্ম কর দেতে হুয়ে তু বেদ নিন্দুককে লিয়ে ঈশ্বরকা বজ্ররুপ হ্যায়”
অর্থাৎ বেদ নিন্দুক বা নাস্তিককে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দেয়া হচ্ছে বেদ অনুযায়ী ধার্মিকের কাজ।
মন্ত্রটির কমেন্টারিতে লেখা আছে,
“বেদানুযায়ী সত্যবীর পুরুষ নাস্তিকোকা নাশ করে”
অর্থ, বেদ অনুযাই সত্যবীর পুরুষ নাস্তিকদের হত্যা করবে।////////

উক্ত অনুবাদটি ক্ষেমকরণ দাসের। মূল  মন্ত্রটি হচ্ছে -  ঔষন্তী সমোষন্তী ব্রহ্মণো ব্রজঃ।। ৫৪।।
এখানে (ঔষন্তী) জ্বালিয়ে (সমোষন্তী) ভষ্ম করে দাও (ব্রহ্মণঃ) ব্রহ্ম (ব্রজঃ) বজ্র। অর্থাৎ  মন্ত্রে কাকে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে তা কিন্তু বলা নেই।   এটা স্পষ্ট হয়েছে উপরের ৫২ নাম্বার মন্ত্রে।  এখানে তিনটি মন্ত্রকে পর পর খেয়াল করতে হবে ৷ কারন ৫৩ ও ৫৪ মন্ত্রটি হলো ৫২ নং মন্ত্রের ধারাবাহিকতা ৷ আমরা যদি ৫২ নং মন্ত্রটি খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাব মন্ত্রে "  ব্রহ্মজ্যম" শব্দ এসেছে যার অর্থ ব্রহ্মজ্ঞানীর নাশক বা জ্ঞানের ধ্বংসকারী।  ৫২ নাম্বার মন্ত্রে জ্ঞানীগনের হিংসকগনের উপর চড়াও হতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী মন্ত্রগুলোতে তাদের ধ্বংস করার কথা বলা হয়েছে ৷এই সূত্র অনুসারে ৫৪ নাম্বার মন্ত্রে ক্ষেমকরণদাস  ব্রাকেটে [ বেদ নিন্দক] শব্দ এনেছেন। অর্থাৎ এখানে বেদ নিন্দক অর্থ হচ্ছে জ্ঞানকে ধ্বংসের জন্য সর্বদা যে প্রয়াস  করে।  অথবা বেদ জ্ঞানের সর্বদা কুৎসা রটনা করে বেড়ায়।  সমাজে এরূপ ব্যক্তি সর্বদাই ভয়ংকর।  তাই  এরূপ ব্যক্তিকে বেদ শাস্তির বিধান দিয়েছে। এবং ইহা হওয়া উচিৎ। হ রিশরনের অনুবাদে ইহা আরো স্পষ্ট রূপে বর্ণিত হয়েছে -

               

==>আরোপ - ০৬
“তাদেরকে হত্যা কর, যারা বেদ ও উপাসনার
বিপরীত,  অথর্ববেদ ২০।৯৩।১" এবং যজুর্বেদ ৭/৪৪ তাদের যুদ্ধের মাধ্যম বশ্যতা স্বীকার করাতে হবে।

যৌক্তিকতা বিচারঃ
এ মন্ত্রে "ব্রহ্মাদ্বিষ"  এবং "জহি" শব্দ এসেছে।  "ব্রহ্মাদ্বিষ" তাদের বলা হয় যারা ব্রহ্মজ্ঞানে অথবা বেদজ্ঞানে অপ্রীতিকারী।  এসব ব্যক্তিদের সঙ্গ সর্বদাই অকল্যানকর হয়ে থাকে। তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে,  হে প্রভূ সেসব ব্যক্তিদের আমাদের নিকট হইতে "অব জহি" দূরে রাখুন।
হে আদরণীয় প্রভূ!  আপনাকে  আমাদের স্তুতি উৎকৃষ্টরূপে আনন্দিত করে।আপনি আমাদের জন্য কার্যসাধক ধন প্রদান করুন। এবং ব্রহ্মজ্ঞানে অপ্রীতিকারী লোক কে আমাদের নিকট হইতে দূরে রাখুন।
(অথর্ববেদ ২০।৯৩। ১,  হরিশরন সিদ্ধান্তলংকার)
যজুর্বেদ ৭।৪৪ এ  তেজময় সেনাপতির প্রতি উদেশ্য করে বলা হচ্ছে যে,  এই সেনাপতি আমাদের শত্রুদের দূর্গ  কে বিদীর্ণ করে ঐশ্বর্য দান করেন  এবং শত্রুদের উপর বিজয় লাভ করে।
"এই  অগ্নি, নেতাপুরুষ সেনাপতি আমাদের ঐশ্বর্য প্রদান করে  এই সংগ্রাম সমন্ধী দূর্গ কে বিদীর্ণ করে চলে সংগ্রামের কার্য মধ্যে ধন বা ঐশ্বর্য কে বিজয় করে এবং খুব প্রসন্ন হয়ে উত্তম পরাক্রম করে  শত্রুকে জিতে।
(যজুর্বেদ ৭।৪৪, জয়দেব শর্মা)

অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছেঃ
আমি আসলে খুব স্পষ্ট অনুবাদ প্রদানের মাধ্যমেই দেখিয়েছি যে সেখানে ধর্মের বাইরে যারা তাদেরকে শত্রু আখ্যা দিয়ে ধংস করার কথা বলা হচ্ছে। আসুন আরেকটু ব্যাখা করি। এখানে মুলত বৈদিক ধর্মের অনুসারী নয় যারা তাদেরকেই হত্যা করার কথা বলেছে, কোন সাধারন শত্রুকে নয়। এখানে চার প্রকার যোদ্ধার কথা বলা হয়েছে, প্রথম, যারা চিকিতসক, কারন তারা রোগের বিরুদ্ধে লড়ে, দ্বিতীয় যোদ্ধা হচ্ছে যারা যুদ্ধের ময়দানে শত্রুকে হত্যা করে, তৃতীয় যোদ্ধা হচ্ছে যারা ধর্ম প্রচার করে। আর চতুর্থ যোদ্ধা হচ্ছে সে, যে ধর্মের বাইরের লোকদেরকে নাশ করে।
এখন লক্ষ্য করুন যে যুদ্ধের ময়দানে শত্রুকে হত্যা করে তাকে দ্বিতীয় যোদ্ধাকে বলা হয়েছে । তাহলে চতুর্থ যোদ্ধা যিনি সে যাদের হত্যা করে তারাও যদি স্বাভাবিক শত্রু হয়ে থাকে তবে দ্বিতীয় ও চতুর্থ যোদ্ধার মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। কিন্তু এখানে পার্থক্য করা হয়েছে। মোট ৪ টি ভাগ করা হয়েছে যোদ্ধাদের। দ্বিতীয় ভাগের যোদ্ধা শত্রুদের হত্যা করে, চত্তুর্থ ভাগের যোদ্ধা ধর্মহীণদের হত্যা করে। অর্থাৎ বেদ এখানে স্পষ্টভাবে যারা বৈদিক ধর্মের বাইরে তাদেরকে অধর্মী ও তাদের হত্যাকারীকে চতুর্থ যোদ্ধা বলে আখ্যা দিয়েছে।
এরপর পুনরায় দাদা আমার দেয়া আরেকটি মন্ত্র এড়িয়ে গেলেন, যেখানে এই ধর্মের বাইরের শত্রুদের পুড়িয়ে মারতে বলা হয়েছে। দাদা এর কোন জবাব দেয় নি। নিচে স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতির অনুবাদের স্ক্রীণশটসহ উক্ত মন্ত্রটি দেয়া হল, যযুর্বেদ ১৩/১২,
“হে তেজধারী সভার স্বামী, রাজ্যে ধার্মিকদের প্রতি সুখের বিস্তার কর এবং ধর্ম বিদ্বেষীদের নিরন্তর ভাবে পোড়াও।”
আমার দেয়া এর পরবর্তী মন্ত্রটিরও কোন জবাব দেন নি দাদা।
পরবর্তী মন্ত্রটি হচ্ছে,
যজুর্বেদ ১৩/১৩, শত্রুদের হত্যা কর ও তাদের জায়গা জমী ও রান্নাঘর ধংস কর।
মুলত এই দুটি মন্ত্রে দাদার জবাব দেয়ার কিছুই নেই, তাই তিনি এদুটি এড়িয়ে গেলেন। কারন শুধু ধর্ম না মানা কিংবা বিদ্বেষ রাখার কারনে পুড়িয়ে মারা ও এরপর তাদের জায়গা জমি ও রান্নাঘর ধংস করা কোন সভ্য মানুষের কর্ম হতে পারে না। এগুলো হচ্ছে sadistic বা ধর্ষকামী মানসিকতা থেকে নির্গত।

আমাদের জবাবঃ
প্রথমত আমাদের অথর্ববেদ ২০।৯৩।১ মন্ত্রটির জবাবে অপপ্রচারকারী কোন কথাই বলেন নি।  এর পর আমরা যজুর্বেদ ৭।৪৪ মন্ত্রটির অনুবাদ জয়দেব শর্মার অনুবাদ দেখিয়ে বলেছিলাম - মন্ত্রে  তেজময় সেনাপতির প্রতি উদেশ্য করে বলা হচ্ছে যে,  এই সেনাপতি আমাদের শত্রুদের দূর্গ  কে বিদীর্ণ করে ঐশ্বর্য দান করেন  এবং শত্রুদের উপর বিজয় লাভ করে। এর প্রক্ষিতে অপপ্রচারকারী মহর্ষি দয়ানন্দের ভাষ্য উপস্থাপন করে বললেন যে,///  সেখানে ধর্মের বাইরে যারা তাদেরকে শত্রু আখ্যা দিয়ে ধংস করার কথা বলা হচ্ছে।   /////
আসুন তবে মহর্ষির অনুবাদ  থেকেই আমরা মূল বিষয় পর্যালোচনা করে দেখি -
মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী মন্ত্রে যুদ্ধে অবতীর্ণ  চার প্রকার বীরের  উল্লেখ করেছেন এবং তাদের   যুদ্ধে ভিন্ন ভিন্ন কাজ ভাগ করে দিয়েছেন।  যেমন প্রথম বীর হচ্ছে বৈদ্য ।  তার কাজ সমন্ধ্যে মহর্ষি লিখেছেন - য়হ প্রথম বৈদ্যক বিদ্যা কা প্রকাশ করনে বালা বৈদ্য,  বৈদ্যক ঔর যুদ্ধ কী শিক্ষাযুক্ত বাণী সে যুদ্ধ মে হাম লোগো কো সুখকারক  সেবন করে। অর্থাৎ বৈদ্যের কাজ হচ্ছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে  আহতদের সেবা প্রদান করা।
 এর পর দ্বিতীয় বীর সমন্ধ্যে মহর্ষি লিখেছেন  - য়হ দুসরা যুদ্ধ করনে বালা মুখ্য বীর শত্রুওকে বিদীর্ণ করতা হুয়া  সংগ্রামের আগে  চলে।   অর্থাৎ দ্বিতীয় যোদ্ধা শত্রুদের  বিদীর্ণ করে সামনে এগিয়ে চলবে।
এরপর তৃতীয় বীর হচ্ছে উৎসাহপ্রদানকারী।  মহর্ষি অনুবাদ লিখেছেন - য়হ তিসরা বীর  রসকারক উপদেশ করনে বালা যোদ্ধা অত্যন্ত বেগাদিযুক্ত বীরোও কো উৎসাহ করতা রহে।  অর্থাৎ তৃতীয় বীর  বেগবান বীর কে সর্বদা উৎসাহ করবে।  কারণ যুদ্ধে উৎসাহ প্রদানও একটা মূখ্য ভূমিকা।
এবং শেষ চতুর্থ বীর হচ্ছে  শত্রুর উপর বিজয় লাভ কারী।  মহর্ষি লিখেছেন - য়হ চৌথা বীর নিরন্তর আনন্দযুক্ত হোকর ধর্মবিরোধী শত্রুজনকো জীতে।  এখানে মহর্ষি শত্রু শব্দের অর্থ ধর্মবিরোধী করেছেন এবং তাদের উপর জয় লাভ করতে বলেছেন।  এখানে ধর্ম্মবিরোধ কথাটি খুব গুরত্বপূর্ণ।  ধর্মবিরোধ কথাটির অর্থ হচ্ছে যে ধর্মের বিরোধিতা করে । ধর্মে হচ্ছে সত্য,  ন্যায়ের সমন্বয়। মনু মহারাজ ধর্মের ১০ টি লক্ষণ বর্ণনা করেছেন - ধৃতি, ক্ষমা, দম অস্তেয়, , শুচিতা, ইন্দ্রিয় নিগ্রহ ,ধী(বুদ্ধি), বিদ্যা, সত্য, অক্রোধ।  কিন্তু যে ধর্মের বিরোধী অর্থাৎ  ধর্মের যেসব লক্ষণ রয়েছে সেগুলোর অমান্যকারী   অধার্মিক  বিদ্রুপ তথা বিরোধীতাকারী তাকে  নাশ করাই একজন যোদ্বার কর্তব্য।


এরপর আবারো আমাদের উপর মন্ত্র বাদ দেবার দোষারূপ।  আমরা পূর্বেই বলেছি সম্পূর্ণ জবাব আমাদের প্রাপ্ত তথ্য মতে।  তাই কোন মন্ত্র ছেড়ে যাওয়া ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃত নয়।   

অপপ্রচারকারীর দুটি মন্ত্রের দাবী হলো -যজুর্বেদ ১৩।১২ তে //// ধর্মের বাইরের শত্রুদের পুড়িয়ে মারতে বলা হয়েছে।  /////

মন্ত্রটিতে মোটেই ধর্মের বাইরের লোকদের পুড়িয়ে দিতে বলে নি।  মন্ত্রটিতে ধর্মের বিদ্বেষী শত্রুকে শত্রুতা আচরনকারী ও উৎসাহকারীকে জ্বালিয়ে দিতে  বলেছে।  অপপ্রচারকারী একটু টেনে ধর্মের বাইরের লোক করলেন কারন ধর্মের বিদ্বেষী শত্রু কথাটি মনপ্লুত হয় নি। কারন ধর্ম বিদ্বেষী শত্রু শাস্তি পাবে এটাই স্বাভাবিক।মহারাজ মনু বলেছেন - যেরূপ ধান্য ও তৃণ একত্রে জন্মালে কৃষক ধান্য রক্ষা করিয়া তৃণাদি ছেদন  করে সেরূপ রাজা রাজ্যে দুষ্টকে নষ্ট করে শিষ্ঠের পালন করবে। (মনু ৭।১১০ )বেদ মন্ত্রেরও একই অভিপ্রায়-
" হে তেজধারী সভার স্বামী! আপনি রাজধর্মের মধ্যে উন্নতিকে প্রাপ্ত হও। ধর্মাত্মা পুরুষের জন্য সুখের বিস্তার করুন।  হে তীব্র দন্ড দানকারী রাজপুরুষ! ধর্মের বিদ্বেষী শত্রুকে নিরন্তর জ্বালাও।  হে তেজধারী জন! যে আমাদের শত্রুকে উৎসাহী করে,  তাকে নীচ দশা করে শুষ্ক কাষ্ঠের সমান জ্বালাও "
মন্ত্রটির ভাবার্থে মহর্ষি লিখেছেন - রাজা আদি সভাজন্যের উচিৎ যে ধর্ম এবং বিনয়ে সমাহিত হয়ে জলের সমান মিত্র কে শীতল করে, অগ্নির সমান শত্রুকে জ্বালাবে। যে উদাসীন হয়ে আমাদের শত্রুকে বাড়াবে, তাকে দৃঢ বন্ধন দ্বারা বেধে নিষ্কন্টক রাজ্য করবে।


এর পরে যজুর্বেদ ১৩।১৩  মন্ত্রে শত্রুের সাথে "যাতুজুনাম" শব্দের প্রয়োগ হয়েছে যার অর্থ যেসব শত্রু পরপদার্থ কে প্রাপ্ত প্রাপ্ত করে। সেরুপ বেগবান আক্রমনকারী  শত্রুদের   ভোজন তথা অন্য ব্যবহারের স্থান কে উত্তম প্রকারে নষ্ট এবং শত্রুকে নাশ করতে বলা হয়েছে।  মনুস্মৃতিতে ৭।১৮০ তে বলা হয়েছে শত্রু যেন রাজ্যে কোন প্রকারে ক্ষতি করতে না পারে রাজা এরূপ ব্যবস্থা করবেন।
" হে তেজস্বী বিদ্বান পুরুষ! যেজন্য আপনি উত্তম হউন,  ধর্মের অনুকুলে হয়ে দুষ্ট শত্রুকে তাড়না দেন,  আমাদের নিশ্চল বিদ্বানের রচিত পদার্থ কে প্রকট করুন, সুখ কে বিস্তার করুন,  পর পদার্থ কে প্রাপ্ত হওয়া এবং বেগবান শত্রুজনের ভোজনের এবং অন্য ব্যবহারের স্থান কে উত্তম প্রকার বিস্তারপূর্বক নষ্ট করুন এবং শত্রুকে বলের সাথে মারুন,  এই জন্য আমি আপনাকে অগ্নির প্রকাশের সম্মুখ স্থাপিত করি। "
উক্ত মন্ত্রের ভাবার্থে মহর্ষি লিখেছেন - মনুষ্যের উচিৎ যে রাজ্যের ঐশ্বর্য্য কে প্রাপ্ত হয়ে উত্তম গুন, কর্ম এবং স্বভাব দ্বারা যুক্ত হবে। প্রজা এবং দরিদ্র কে নিরন্তর সুখ দেবে। দুষ্ট অধর্মচারী মনুষ্য কে নিরন্তর শিক্ষা করে এবং সবচেয়ে উত্তম পুরুষ কে সভাপতি মানবে।


অপপ্রচারকারী বলছে ধর্মদ্বষী শত্রুকে নাশ করা তাদের বিভিন্ন স্থান কে নষ্ট করা  এগুলো ধর্ষকামী মানিষকতা।   অপপ্রচারকারী কি রাজধর্ম বিষয়ে কি আদৌ পড়েছে নাকি আদৌ কিছু জানে?  একজন আর্যাবর্ত্তের রাজা তার রাজ্যে ধার্মিকদের নিরন্তর বৃদ্ধি করে শত্রুমুক্ত রাজ্য গড়বে।                       

=>> আরোপ - ০৭
“সেনাপ্রধান হিংস্র ও নির্দয়ভাবে শত্রুদের
পরিবারের সদস্যদের সাথেও যুদ্ধ করবে।”(যজুর্বেদ ১৭।৩৯)
যজুর্বেদ ১৭/৩৮ শত্রূদের পরিবারকে হত্যা কর, তাদের জমি ধংস কর।
এইসব যুদ্ধের মুল প্রেরনা কি ?মূল প্রেরনা হচ্ছে শত্রুদের লুট করে ধনসম্পদ বৃদ্ধি। 

যৌক্তিকতা বিচারঃ
একটি রাষ্ট্রকে সুন্দররূপে গড়ার জন্য রাষ্ট্রে ধার্মিক বিদ্বানদের যেমন প্রয়োজন। তদ্রুপ রাষ্ট্রে অধার্মিক তথা যারা ধার্মিকদের উপর কুপিত হয় অথবা শত্রু ভাবাপন্ন তাদের বিনাশ করা। যদি একটি রাজা অপরাধী তথা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না গ্রহন করে।  তার ফলাফল কি হবে মনুস্মতিতে স্পষ্ট হয়েছে - " রাজা যদি আলস্যের পরতন্ত্র হয়ে অপরাধীদের দন্ডবিধান না করে তাহা হইলে লোকেরা শূলে মৎস পাক করবার ন্যায় দূর্বলদিগকে যাতনা দিতে পারে,  মনু  ৭।২০) ।   এ জন্য  মনুস্মৃতিতে  যুদ্ধ কে ক্ষত্রিয়দের ধর্ম বলা হয়েছে (সংগ্রামাৎ ক্ষাত্রং ধর্মমনুস্মরম,  মনু ৭।৮৭)
যজুর্বেদ ১৭।৩৮ মন্ত্রটি  মূলত যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সেনাদের উদ্যেশ্য করে বলা হয়েছে। তারা যেন সর্বোতভাবে সেনাপতিকে অনুসরন করে।  কারন একজন সেনাপতি যুদ্ধবিদ্যায় অত্যন্ত দক্ষ হয়ে থাকে এবং সবার সুরক্ষা কবজ হয়ে দাড়িয়ে থাকে।  এ জন্য মন্ত্রটিতে বলা হচ্ছে সেনাগন জন যেন তারই অনুকুলে থেকে যুদ্ধ করে।
"হে বল কীর্তি বর্ণ আদি সমান রূপে বিখ্যাত বীর পুরুষ আপনি শত্রুর গোত্রের নাশক পৃথিবীকে প্রাপ্ত কারী বাহুতে বীর্যমান  সংগ্রামে বিজয়কারী এবং বল পরাক্রম দ্বারা  বিনাশ কারী সেনাপতিকে অনুসরন করে বীরতার কার্য করো।  হে মিত্র লোক আপনারা তারই অনুকুলে থেকে উত্তম প্রকারে যুদ্ধ  আরম্ভ করো।
(যজুর্বেদ ১৭।৩৮, জয়দেব শর্মা)
যুদ্ধে একটি সেনাপতির উত্তর দায়িত্ব কি তা পরের মন্ত্রে স্পষ্ট হয়েছে।  সমস্ত সেনার নেতা হওয়ার দরুন একটি সেনাপতির দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সর্বদা রক্ষা করা।  তাই মন্ত্রটিতে বলা হচ্ছে তিনি যেন সর্বতোভাবে আমাদের সেনাকে রক্ষা করে।
" নিজ শত্রু পরাজয়কারী বল দ্বারা শত্রু কুলের উপর আক্রমন করে  দয়া রহিত  শুরবীর অনেক প্রকারে কোপ করার সামর্থ শত্রু দ্বারা অবিচলিত  শত্রু সেনাকে বিজয় করার সামর্থ যুদ্ধ মধ্যে শত্রু দ্বারা অজেয় সেনাপতি সংগ্রাম মধ্যে আমাদের সেনাকে উত্তম রীতি দ্বারা রক্ষা করে।"
(যজুর্বেদ ১৭।৩৯,  জয়দেব শর্মা)

অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছেঃ
আমি (যজুর্বেদ ১৭।৩৯) এর রেফারেন্স দিলাম যেখানে বলা আছে, শুধু শত্রুদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হওয়া যাবে না, তাদের পরিবারকেও ধংস করতে হবে।
দাদা তার কোন জবাব দেন নি বরং সেনার কি কাজ ইত্যাদি অপ্রাসংগিক আলোচনা শুরু করলেন।
দাদার কথানুসারেই ধরি মন্ত্রগুলো যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বলা আছে। কিন্তু তাহলেও শত্রুদের পরিবার কি দোষ করল ? যুদ্ধের ময়দানে শত্রু নাশ করে তাদের পরিবারকেও ধংস করতে এগোতে বলা হয়েছে। এটা কেমন কথা বা কেমন মানবিকতা ? এরপর দাদা টেনেটুনে বলতে চাইলেন যে অপরাধীকে দন্ডাদেশ রাজার কর্ম। মন্ত্রে রয়েছে শত্রু, দাদার ব্যাখায় হয়ে গেল অপরাধী, সেক্ষেত্রে তো বেদ রচনাকারীও বিপক্ষের নিকট শত্রু ও সেক্ষেত্রে সেও অপরাধী। অপরাধীকে শাস্তি দেয়া আর শত্রুদের পরিবারকে হত্যা করা দুটি বিষয় কি এক হল ? এরপর দাদা জয়দেব শর্মার অনুবাদ এনে তেনা পেচিয়ে বিষয়টাকে অন্যদিকে নিতে চাইলো, অথচ যেখানে আমি আর্য সমাজের প্রতিষ্টাতা স্বামী দয়ানন্দের অনুবাদ দিয়েই দেখিয়ে দিলাম। আমার প্রধান আর্গুমেন্টটা ছিল শত্রুদের পরিবার হত্যা, আর সেটা দাদার দেয়া জয়দেব শর্মার অনুবাদেও স্পষ্টভাবে আছে, যেটা দাদা চটকদারভাবে বাংলা শব্দের জালে আড়াল করতে চাইলেন। নীচে দাদার দেয়া জয়দেব শর্মার স্ক্রীনশটেই পরিস্কার, দেখুন,
“শত্রুওকে গোত্র কা তোড়নে বালে, শত্রুওকা বংশনাশক”
অর্থাৎ বেদ তার সেনাপতিকে বলছে সে হচ্ছে শত্রুর গোত্র ধংসকারী তার বংশ ধংসকারী।
স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি লিখেছেন
সেই সেনাপতিকে উতসাহিত কর, যে শত্রুর পরিবারকে ধংস করে, তাদের জড় কাটে, তাদের জমি দখল করে। নীচে স্ক্রীনশট।
সরাসরি পড়ুন aryasamajjamnagar.org/yajurveda/yajurveda.htm
অর্থাৎ মন্ত্রটিতে কি রয়েছে তা স্পষ্ট। এখানে শত্রুর পরিবারকেও ধংস করে তাদের সম্পত্তি জমি দখল করার কথা বলা হয়েছে।
এরপরবর্তী মন্ত্র যজুর্বেদ ১৭/৩৮ শত্রূদের পরিবারকে হত্যা কর, তাদের জমি ধংস কর। এটার জবাবে দাদা লিখলেন,
যুদ্ধে একটি সেনাপতির উত্তর দায়িত্ব কি তা পরের মন্ত্রে স্পষ্ট হয়েছে। সমস্ত সেনার নেতা হওয়ার দরুন একটি সেনাপতির দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সর্বদা রক্ষা করা। তাই মন্ত্রটিতে বলা হচ্ছে তিনি যেন সর্বতোভাবে আমাদের সেনাকে রক্ষা করে।
" নিজ শত্রু পরাজয়কারী বল দ্বারা শত্রু কুলের উপর আক্রমন করে দয়া রহিত শুরবীর অনেক প্রকারে কোপ করার সামর্থ শত্রু দ্বারা না বিচলিত হওয়া ব্যক্তি শত্রু সেনাকে বিজয় করার সামর্থ যুদ্ধ মধ্যে শত্রু দ্বারা অজেয় সেনাপতি সংগ্রাম মধ্যে আমাদের সেনাকে উত্তম রীতি দ্বারা রক্ষা করো। "
আমার জবাবঃ
দাদা আবারো চটকদার বাংলা শব্দের পর শব্দ বসিয়ে মুল ব্যাপারটাকে আড়াল করতে চাইলো।এবং মন্ত্রে আমার অভিযোগকৃত অংশকে বাদ দিয়ে গেল। একিসাথে ভালো করে দাদার নিজের অনুবাদটি পড়ে দেখুন তো, কিছু বোঝা যাচ্ছে কিনা আদৌ। যাক গে দাদার মতে এখানে একটি সেনাপতির দাইত্ব কি তা বলা হয়েছে। তা দাদার দেয়া স্ক্রীনশট অনুসারেই দেখে আসি যে সেনাপতির দাইত্ব কি।
তার দেয়া জয়দেব শর্মার স্ক্রীনশটেই রয়েছে,
“আপনে শত্রু পরাজয়কারী বলসে শত্রুওকে কুল পর আক্রমন করতাহুয়া, দয়ারহিত শূরবীর অনেক প্রকারকে কোপ করনেমে সমর্থ”
অর্থাৎ সেনাপতির দাইত্ব শত্রুকে পরাজয় করার পর সেই শক্তি নিয়েই তাদের বংশ পরিবারে সে দয়ারহিত নির্দয়ভাবে আক্রমন করবে।
দাদা মন্ত্রটিতে এই অংশটা এড়িয়ে গেলেন আর সেনপতি নিজ সৈন্যকে রক্ষা করবে এই দাইত্বটা হাইলাইট করলেন। সেনাপতি নিজ সৈন্যদের রক্ষা করবে এটাই তো স্বাভাবিক, কিন্তু শত্রুদের হত্যার পর তাদের পরিবারকে নির্দয়ভাবে ধংস করা এটা কোন আদর্শ সেনাপতির কাজ ? বেদ কি শিক্ষা দিচ্ছে মানুষকে ? জনৈক দাদাও নিজের চোখে কালো পট্টি বেধে কিসেরই বা জবাব লিখতে বসেছেন? নাকি অনলাইন হিন্দুদের ধোকা দিতে কোনরকম কিছু একটা লিখে দিলেই হল ?


আমাদের জবাবঃ
যজুর্বেদ ১৭।৩৯ মন্ত্রে অপপ্রচারকারীর দাবী হচ্ছে আমরা না কি বাংলার পর বাংলা শব্দ বসিয়ে মূল বিষয়কে আড়াল করতে চাচ্ছি।  আপনারা দেখে থাকবেন আমরা প্রথম থেকেই   প্রতিটি মন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ দিয়েছি।  কিন্তু এ স্থলে এসে অপপ্রচারকারী ভ্রমে পড়ে মূলতো এমন দোষারোপ করে বসলো।  আর একটা দাবী হচ্ছে মন্ত্রটির অনুবাদ নাকি বোঝা যায় নি। তাই  অনুবাদটি আবার উল্লেখ করলাম এখানে।  মূলত অনুবাদে কমার ব্যবহার না করা এবং  টাইপিং মিসটেক ছাড়া কিছু ভূল ছিলো না।  সম্পূর্ণ জয়দেব শর্মার হিন্দি অনুবাদ থেকে -
" নিজ শত্রু পরাজয়কারী বল দ্বারা শত্রু কুলের উপর আক্রমন করে  দয়া রহিত,  শুরবীর অনেক প্রকারে কোপ করার সামর্থ শত্রু দ্বারা অবিচলিত , শত্রু সেনাকে বিজয় করার সামর্থ ,যুদ্ধ মধ্যে শত্রু দ্বারা অজেয় ,সেনাপতি সংগ্রাম মধ্যে আমাদের সেনাকে উত্তম রীতি দ্বারা রক্ষা করে।"
(যজুর্বেদ ১৭।৩৯,  জয়দেব শর্মা)


এর পর অপপ্রচারকারী বললেন - ///// “আপনে শত্রু পরাজয়কারী বলসে শত্রুওকে কুল পর আক্রমন করতাহুয়া, দয়ারহিত শূরবীর অনেক প্রকারকে কোপ করনেমে সমর্থ”
অর্থাৎ সেনাপতির দাইত্ব শত্রুকে পরাজয় করার পর সেই শক্তি নিয়েই তাদের বংশ পরিবারে সে দয়ারহিত নির্দয়ভাবে আক্রমন করবে। দাদা মন্ত্রটিতে এই অংশটা এড়িয়ে গেলেন //////

অপপ্রচারকারী পুরো লাইন তুলে ধরলেন না।  অর্ধেক লাইন তুলে  সবাইকে ভূল বোঝানোর চেষ্টা করলেন।  আসলে তিনি হিন্দি অর্থ বুঝতেই পারে নি। সম্পূর্ণ লাইনটি হচ্ছে  - [ “আপনে শত্রু পরাজয়কারী বলসে শত্রুওকে কুল পর আক্রমন করতাহুয়া  দয়ারহিত ,শূরবীর অনেক প্রকারকে কোপ করনেমে সমর্থ শত্রু সে বিচলিত না হোনে বালা" ]
দ্বিতীয় লাইনটির দিকে লক্ষ্য করুন " শূরবীর অনেক প্রকারকে কোপ করনেমে সমর্থ শত্রুওকো সে না হোনে বালা"  অর্থাৎ বিভিন্নভাবে আক্রমন করতে সমর্থ শত্রুদের হতে বিচলিত না হতে বলা হয়েছে। আর অপপ্রচারকারী ভূল বুঝে প্রথম লাইনটার সাথে দ্বিতীয় লাইন জুড়ে দিয়ে ভূল অর্থ করেছে।
 আমাদের অনুবাদে দেখুন  স্পষ্টভাবে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। এড়িয়ে যাবার কোন কারনই নেই।   এ মন্ত্রে শূরবীর  সমন্ধ্যে বলা হয়েছে যে, শূরবীর  শত্রুপরাজয়কারী বলে বলীয়ান হয়ে, দয়ারহিত হয়ে শত্রুর কুলের উপর আক্রমন করবে ৷ তারপর শত্রুর গোত্রে নানা ভাবে আক্রমনে সমর্থ লোকদের পরাজিত করবে ৷
এরপর যজুর্বেদ ১৭।৩৮ মন্ত্রের ব্যাখ্যার জন্য  আমরা মনুস্মৃতির উল্লেখ করে বলেছিলাম - রাজা যদি আলস্যের পরতন্ত্র হয়ে অপরাধীদের দন্ডবিধান না করে তাহা হইলে লোকেরা শূলে মৎস পাক করবার ন্যায় দূর্বলদিগকে যাতনা দিতে পারে,  মনু  ৭।২০) ।   এ জন্য  মনুস্মৃতিতে  যুদ্ধ কে ক্ষত্রিয়দের ধর্ম বলা হয়েছে (সংগ্রামাৎ ক্ষাত্রং ধর্মমনুস্মরম,  মনু ৭।৮৭)।  অর্থাৎ আমরা দেখিয়েছি যে অপরাধীদের দন্ড প্রদান করা রাজার ধর্ম।  এর প্রেক্ষিতে অপপ্রচারকারী বললো -///// /দাদা টেনেটুনে বলতে চাইলেন যে অপরাধীকে দন্ডাদেশ রাজার কর্ম। মন্ত্রে রয়েছে শত্রু, দাদার ব্যাখায় হয়ে গেল অপরাধী, সেক্ষেত্রে তো বেদ রচনাকারীও বিপক্ষের নিকট শত্রু ও সেক্ষেত্রে সেও অপরাধী। অপরাধীকে শাস্তি দেয়া আর শত্রুদের পরিবারকে হত্যা করা দুটি বিষয় কি এক হল?//////
মনুস্মৃতি থেকে স্পষ্ট অপরাধীদের দন্ডাদেশ দেখানোর পরও নাকি আমরা টেনেটুনে বলছি।  আর আমরা  মনুস্মৃতি থেকে লঘুতর অপরাধের  দন্ডাদেশ যে অন্যায় নয় সেটাই দেখিয়েছি।  ধরুন ক্লাসের শিক্ষক ছাত্র কে সহজে করে উপদেশ দিচ্ছে চুরি করা অন্যায়। যদি ছাত্র বুঝে নেয় যে শিক্ষক তো ডাকাতি করা অন্যায় বলেনি তবে তো সেটা অন্যায় হবে না।  এখানে অপপ্রচারকারীর ব্যাপারটা ঠিক তাই।  আমরা অপরাধী দিয়ে ব্যাখ্যা করেছি বলে মনে করছে শত্রুদের দন্ড দান অন্যায় কাজ।  যেখানে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে সেখানে তো শত্রু পক্ষকে শাস্তি দেওয়া রাজার প্রধান কর্তব্য যা বলার অপেক্ষা রাখে না। শত্রু এবং শত্রুর নাশ করা সমন্ধ্যে মনু বলেছেন -
যেরূপ ধান্য ও তৃণ একত্রে জন্মালে কৃষা ধান্য রক্ষা করিয়া তৃণাদি ছেদন  করে সেরূপ রাজা রাজ্যে দুষ্টকে নষ্ট করে শিষ্ঠের পালন করবে। (মনু ৭।১১০)


 আর একজন মহৎ ব্যক্তিরও শত্রু থাকতে পারে যেখানে শত্রুপক্ষের নিকট সেই মহৎ ব্যক্তি শত্রু। আর   
অপপ্রচারকারী দুটি মন্ত্রেরই বরাবর একই দাবী ছিলো যে- /////শত্রুদের হত্যার পর তাদের পরিবারকে নির্দয়ভাবে ধংস করা এটা কোন আদর্শ সেনাপতির কাজ ? বেদ কি শিক্ষা দিচ্ছে মানুষকে ?////// 
যুদ্ধ নীতির জ্ঞানের অভাব  থাকলে এরকম দাবীই এসব মন্দমতিদের কাছ থেকে সম্ভব। শত্রুকুলের উপর আক্রমন বলতে অপপ্রচারকারী বোঝাতে চাচ্ছে  নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ নির্বিশেষে হত্যা।  কিন্তু  যুদ্ধে একজন সেনাপতি শুধুমাত্র যুদ্ধে সমর্থ শত্রুদের উপর অস্ত্র ওঠাবে। যদি সে  শত্রু  নিরস্ত্র হয় তবে তার উপর অস্ত্র  ওঠাবে না। এক জন যোদ্ধা শরণাগত,  নপুংসক,  আহত,  ভয়ে ভীত শত্রুকে হিংসা করবে না (মনু ৭। ৯১- ৯৩)।


অপপ্রচারকারী বলেছে কি শিক্ষা দিচ্ছে বেদ মানুষকে?  বেদ শত্রু মুক্ত  রাষ্ট্রগড়ার শিক্ষা দিচ্ছে আমাদের।   রাষ্ট্রে যেন প্রজা সকল বিদ্বেষ শূণ্য হয়।  কিন্তু ঈশ্বর বিদ্বেষী,  বেদ বিদ্বেষী তথা  ধর্মবিরোধী শত্রুপক্ষ সর্বদা রাষ্ট্রে অশান্তির সৃষ্টি করে। তাই রাজার কর্তব্য হচ্ছে রাজ্য শত্রুে কবল থেকে রক্ষা করা এবং প্রজাদের সুখ নিশ্চিত করা ।
এরপর  মন্দমতি  আমাদের উপর দোষারোপ করে যে,  আমরা নাকি অন্ধ হয়ে জবাব লিখতে বসেছি। মানে ব্যাপার টা হলো   দুই লাইন বেদ পড়া মন্দমতি অনলাইনে দুটো একটা মন্ত্রের স্ক্রীন সট ছোড়াছুড়ি করে নিজের জ্ঞানের বাহার দেখাতে চাচ্ছে।  আর আমাদের অনলাইন  হিন্দুদের ধোকা দেবার কোন প্রশ্নই নেই।  কারণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সনাতনীরা বহুকাল ধরে করে আসছে যার সাক্ষী রামায়ন ,  মহাভারত।        
        
আরোপ - ০৮
যজুর্বেদ ১৮/৭৪, "হে সেনাপ্রধান, আমাদের আশা পুর্ণ করো। হে ধনসম্পদের বাদশা, তোমার সহায়তায় আমরা  যেন সম্পদশালী হতে পারি এবং যুদ্ধে জয় লাভ করে প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হতে পারি।”
আর যজুর্বেদ ২৯/৩৯ এ, এভাবেই যুদ্ধে ধনসম্পদ লুট খুনের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব দখল করতে বলেছে। 
এই সব মন্ত্রে স্পষ্টভাবে কোন আত্তরক্ষার্থে নয় বরং যারা শান্তিপ্রিয় তাদেরকে আক্রমন করে দখল করতে বলছে।

যৌক্তিকতা বিচারঃ
বেদ কখনো শান্তিপ্রিয় মানুষদের শাস্তির আদেশ দেয় নি।   বেদে পরিষ্কার বলা হয়েছে,  "অনাগে হত্যা বৈ ভীমা কৃত্যে ; অথর্ববেদ ১০।১।২৯ " অর্থাৎ নির্দোষের হত্যা নিশ্চয়রূপে ভয়ানক।    অর্থাত্ বেদ নির্দোষের উপর অত্যাচার কে অপরাধ বলে গণ্য করছে।  মনুস্মৃতি ৭।১৯ এ বলা হয়েছে রাজা যদি নিরাপরাধ ব্যক্তিকে দন্ড প্রদান করে তবে তার রাজ্যের বিনাশ ঘটবে।
অতএব বেদের নির্দেশ মতে অস্ত্রের ব্যবহার শুধু অপরাধীদের জন্য। এবং বেদ সর্বদা শত্রুদের উপর বিজয় প্রাপ্তির নির্দেশ দিয়েছেন। কারন বেদ কখনো সজ্জন ব্যক্তিদের হীনবল বা পরাজয়তাকে স্বীকার করে না।  বেদ সর্বদা মানুষদের সাবলীল হতে শিক্ষা দেয় যাতে কোন শত্রু সেনা তাদের ক্ষতি করতে না পারে -
হে বীর পুরুষ!  যেমন আমরা যে শস্ত্র - অস্ত্র খারাপ কামনাকে নষ্ট করে,  সেই ধনুক আদি অস্ত্র শস্ত্র বিশেষ দ্বারা পৃথিবীকে এবং উক্ত শস্ত্র বিশেষ দ্বারা সংগ্রাম কে জয় করি তোপ আদি অস্ত্র শস্ত্র দ্বারা তীব্র বেগবান আনন্দের সাথে বর্তমান শত্রু সেনাকে জয় করি ধনুক দ্বারা সব দিশা প্রদিশা কে জয় করি।
(যজুর্বেদ ২৯।৩৯, দয়ানন্দ সরস্বতী)
একটি সংগ্রামের পরিচালনার মূল দায়িত্ব সেনাপতির হয়ে থাকে।  এবং একজন যোদ্ধা সবসময় সেনাপতির রক্ষায় থেকে সমরে যুদ্ধ করে সংগ্রামের বিজয় কে প্রাপ্ত করে।
হে যুদ্ধবিদ্যা জ্ঞাত সেনাপতি! আমরা তোমার রক্ষা আদিকে বিদ্যা দ্বারা সেই কামনা কে প্রাপ্ত হই প্রশস্ত ধনযুক্ত উত্তম বীর প্রাপ্ত হই,  যাহার দ্বারা সেই ধন কে প্রাপ্ত হই সংগ্রাম করে আমরা সংগ্রামের বিজয় কে উত্তম প্রকারে প্রাপ্ত হই, হে বৃদ্ধপন রহিত সেনাপতি  আমরা তোমার প্রতাপ দ্বারা অক্ষয় ধন এবং কীর্তিকে প্রাপ্ত হই।
(যজুর্বেদ ১৮।৭৪, দয়ানন্দ সরস্বতী)
অপপ্রচারকারী উক্ত জবাবে পুনঃ লিখেছেঃ
দাদার মতে বেদ কখনো শান্তিপ্রিয় মানুষদের শাস্তির আদেশ দেয়নি। দাদা বেদ এর একটি মন্ত্রও আনলেন এটা প্রমানে, অথর্ববেদ ১০/১/২৯ যেখানে বলা, নির্দোষের হত্যা নিশ্চয়রুপে ভয়ানক। খুব ভালো কথা। কিন্তু মন্ত্রটি আমরা যদি যাচাই করতে যাই, আমরা এই কথাটি তখন একটু অন্য অর্থে পেয়ে যাবো। ধরুন কোণ গোত্রকে আক্রমন করার সময় গোত্র প্রধান জীবন বাচাতে বললেন, নির্দোষকে হত্যা ভয়ানক, তাই আমাদের গোত্রকে মেরো না। তখন তার এই কথাটিকে কি স্বার্বজনীন অর্থে নেয়া যায়? এখানে সে নির্দোষ দাবি করেছে নিজেদেরকে এবং যাতে তাদের কিছু না বলা হয় এর আর্জি পেশ করছে। ধরুন আদালতে এক আসামী নিজেকে নির্দোষ দাবি করল, এবং বলল সে নির্দোষ, তাই তাকে দন্ড দেয়া অন্যায় কাজ। এখন এখানে কি সে মানবজাতির জন্য স্বার্বজনীন কোন বানী পেশ করল নাকি নিজেদের জীবন বাচাতে বুলি আওড়ালো মাত্র? নির্দোষকে যে হত্যা করা খারাপ কাজ এটা মানুষ মাত্রই জানে, বুঝে। কিন্তু বেদ মতে নির্দোষ কারা ? শুধুমাত্র মিত্রপক্ষরা। অর্থাৎ বেদ রচনাকারীদের মিত্রপক্ষরা। এই মন্ত্রটি শত্রুপক্ষের আক্রমনের প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, নির্দোষকে হত্যা ভয়ানক কাজ, এজন্য আমাদের গরু, ঘোড়া ও মানুষদের মেরো না।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন দাদা যেভাবে মন্ত্রটির অংশগত তুলে ধরে এটাকে বেদ এর মহান স্বার্বজনীন বানী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছিলেন এখানে সেই অর্থে সেটা বলা হয়নি। কোরানে রয়েছে যে কোন নিরীহকে হত্যা করে সে পুরো মানবতাকেই হত্যা করে। কোরান যদি এরপরেই লিখত যে এজন্য কোন মুসলিম বা আমাদের লোকদের মেরো না, তাহলেই কোরানের মানবতার পরিধিটা বোঝা যেত। বেদ এর মানবিকতার পরিধি যেমন শুধু মিত্রপক্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেল।
এরপর দাদা মনুস্মৃতি ৭।১৯ এর রেফারেন্স আনলেন প্রমানে যে নিরিহ মানুষ হত্যা হিন্দু ধর্মমতে সঠিক নয়। কিন্তু মনুস্মৃতি ৭।১৯ এ মুলত রাজ্যের প্রজাদের দন্ডের ব্যাপারে বলা হয়েছে, শত্রুপক্ষের ব্যাপারে নয়। এখানে বলা রয়েছে রাজা যদি সঠিক বিবেচনা না করে প্রজাদের দন্ড প্রদান করে তবে রাজ্য ধংস হয়। আর এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক, রাজা অবিবেচক দন্ডদাতা হলে প্রজারাই তার বিদ্রোহ করবে। এখানে শত্রুপক্ষের ব্যাপারে কোন কিছুই বলা হয়নি।
এরপর যজুর্বেদ ২৯।৩৯ এর ব্যাপারে বলছি, আমি দেবী চাদের যে ইংরেজী অনুবাদটি পড়েছিলাম, সেখানে শত্রুদের ease loving বা শান্তিপ্রিয় বা আরামপ্রিয় বলা হয়েছে। কিন্তু দয়ানন্দের হিন্দি ভাষ্যে এমনটা নেই। তাই আর এই মন্ত্রটি নিয়ে তাদের জবাব সম্পর্কে আর কমেন্ট করলাম না।
পরবর্তী মন্ত্র যজুর্বেদ ১৮/৭৪ নিয়ে দাদার লেখা
“হে সেনাপ্রধান, আমাদের আশা পুর্ণ করো। হে ধনসম্পদের বাদশা, তোমার সহায়তায় আমরা যেন সম্পদশালী হতে পারি এবং যুদ্ধে জয় লাভ করে প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হতে পারি।”
যৌক্তিকতা বিচারঃ
একটি সংগ্রামের পরিচালনার মূল দায়িত্ব সেনাপতির হয়ে থাকে। এবং একজন যোদ্ধা সবসময় সেনাপতির রক্ষায় থেকে সমরে যুদ্ধ করে সংগ্রামের বিজয় কে প্রাপ্ত করে।
হে যুদ্ধবিদ্যা জ্ঞাত সেনাপতি! আমরা তোমার রক্ষা আদিকে বিদ্যা দ্বারা সেই কামনা কে প্রাপ্ত হই প্রশস্ত ধনযুক্ত উত্তম বীর প্রাপ্ত হই, যাহার দ্বারা সেই ধন কে প্রাপ্ত হই সংগ্রাম করে আমরা সংগ্রামের বিজয় কে উত্তম প্রকারে প্রাপ্ত হই, হে বৃদ্ধপন রহিত সেনাপতি আমরা তোমার প্রতাপ দ্বারা অক্ষয় ধন এবং কীর্তিকে প্রাপ্ত হই।
(যজুর্বেদ ১৮।৭৪, দয়ানন্দ সরস্বতী)
পাল্টা যৌক্তিকতা বিচারঃ
আমার প্রশ্নের কোন জবাবই এখানে পেলাম না, আমার অভিযোগ ছিল বেদ এ প্রার্থনা করা হয়েছে যেন যুদ্ধের মাধ্যমে ধনসম্পদ অর্জন করা যায়। দাদা এটা নিয়ে কোন জবাবই দিলেন না। দাদার দেয়া দয়ানন্দের স্ক্রীনশটেও এটা স্পষ্টই দেয়া আছে, যুদ্ধের মাধ্যমে যেন প্রচুর ধনসম্পদ ও বিজয় লাভ করা যায়।
এরপর দাদা আবারো আমার দেয়া একটি মন্ত্র বাদ দিয়ে গেলেন, যজুর্বেদ ৭/৩৮, যেখানে লেখা “যুদ্ধই তোমাদের উন্নতির উৎস, এজন্যই তোমাদেরকে আমি যুদ্ধে প্রেরন করি”
দাংগবাজ আর্যজাতির উন্নতির উতস ছিল যে লুটপাট ও দাংগা সেটা বেদেও অকপটে লেখা হল, দাদা এই মন্ত্রটার জবাব না দিয়ে এড়িয়ে গেলেন, নীচে স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতির অনুবাদ,
এরপর বেদাঙ্গ গ্রন্থ নিরুক্ত ৪/৫ এর রেফারেন্স দিলাম ধনসম্পদ লুটের, দাদা সেটারো কোন জবাব দিলেন না , এখানে লেখা আছে,“শত্রুদের ধংস করে তাদের সম্পদ কেড়ে আনো। তাদের সম্পদ ও খাদ্য ঘর থেকে ছিনিয়ে আনো।

আমাদের জবাবঃ
আমাদের জবাবে আমরা বলেছিলাম " নির্দোষের হত্যা ভয়ানক অপরাধ " এর প্রেক্ষিতে অপপ্রচারকারী লিখেছে -////// ধরুন কোণ গোত্রকে আক্রমন করার সময় গোত্র প্রধান জীবন বাচাতে বললেন, নির্দোষকে হত্যা ভয়ানক, তাই আমাদের গোত্রকে মেরো না। তখন তার এই কথাটিকে কি স্বার্বজনীন অর্থে নেয়া যায়? এখানে সে নির্দোষ দাবি করেছে নিজেদেরকে এবং যাতে তাদের কিছু না বলা হয় এর আর্জি পেশ করছে। /////
"নির্দোষের হত্যা ভয়ানক" এই কথাটি সত্য এবং সবার বলার অধিকার রয়েছে।  কিন্তু সে প্রকৃতপক্ষে নির্দোষ কি না সেটা অবশ্যই বিচারপূর্বক যোদ্ধা অস্ত্র উঠাবে। অপরাধী হয়েও যদি গোত্র প্রধান অস্ত্রহীন হয়ে তারকাছে আত্মসমর্পন করে বা অস্ত্রত্যাগ করে, তাহলে তাকে রাজা হত্যা করবেন না বরং তাকে অপরাধী মনে হলে বিচারের মুখোমুখি করবেন, সেখানে নির্দোষ প্রমানিত না হলে দন্ড দেবেন ৷ মনু ৭/১৯ এ অপরাধীকে দন্ডদানের আদেশ আছে ৷ হত্যা তখনই করা যাবে যখন সে অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত ৷ এরপর অপপ্রচারকারী লিখলেন -
///// ধরুন আদালতে এক আসামী নিজেকে নির্দোষ দাবি করল, এবং বলল সে নির্দোষ, তাই তাকে দন্ড দেয়া অন্যায় কাজ। এখন এখানে কি সে মানবজাতির জন্য স্বার্বজনীন কোন বানী পেশ করল নাকি নিজেদের জীবন বাচাতে বুলি আওড়ালো মাত্র? /////
আমরা আগেই বলেছি বেদ কোন আসামীর বুলি নয়।  এটা ঋষিদের সত্যপোলব্ধি। সত্য কথা সব সময়্ সার্বজনীন। একটি উদাহরণের  সাহায্য বিষয়টা পরিষ্কার করা যাক - স্বাস্থ বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করলেন যে, ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।  এখন যদি আমার পার্শ্ববর্তী ধুমপানরত কাউকে বলি যে, আমার পাশে ধুমপান করো না,  কারণ ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।  এখানে আমি আমার স্বাস্থের কথা চিন্তা করে তাকে "ধুমপান করতে নিষেধ করে বললাম  " ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর "  এই কথাটি নিজেকে সেভ রাখতে যদিও বললাম তবুও কিন্তু কথাটি সার্বজনিন সত্য।  কারন সার্বজনীন এই সত্য কথাটি একজন শিক্ষক যেমন  ক্লাসে উপদেশ রূপে ব্যবহার করতে পারে তেমনি কেউ নিজের স্বাস্থগত চিন্তা করে কাউকে নিষেধ করতে পারে।  সেরূপ একটি প্রজার প্রার্থনা "নির্দোষের হত্যা অপরাধ তুমি আমাদের পুরুষ,  গাভী, অশ্বদের মেরো না।  এখানে নির্দোষের হত্যা অপরাধ কথাটি সার্বজনীন সত্য।  কারণ এটা ঋষিদের সত্য উপলব্ধি।  এই সত্য কথাটি মানুষ নিজেকে বাচাতে বা কাউকে উপদেশ করতে ব্যবহার করতে পারে। এরপর অাপ্রচারকারী কোরানের কিছু প্রসঙ্গ এনেছেন। এ সমন্ধ্যে আমি কোন মন্ত্যব্য করবো না। অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা শুধু অনুচ্ছেদ টিকেই বৃদ্ধি করবে।
এরপর মনুস্মৃতি থেকে আমরা উল্লেখ করেছিলাম - রাজা যদি নিরাপরাধ ব্যক্তিকে দন্ড প্রদান করে তবে তার রাজ্যের বিনাশ ঘটবে।(মনু ৭।১৯)।  এর প্রেক্ষিতে অপপ্রচাকারী বললো - ///// মনুস্মৃতি ৭।১৯ এ মুলত রাজ্যের প্রজাদের দন্ডের ব্যাপারে বলা হয়েছে, শত্রুপক্ষের ব্যাপারে নয়। /////
আমরা নিরাপরাধ ব্যক্তিকে দন্ড দেওয়া যে, অপরাধ তার প্রমাণস্বরূপ মনুস্মৃতির শ্লোক উদ্ধৃত করেছিলাম।   এখানে শত্রুপক্ষের প্রসঙ্গ আনাটাই অবান্তর। কারন অস্ত্রত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করলে সে তখন রাজার অধীনস্থ হয়ে যায় ৷ তারপর নিজেকে নির্দোষ দাবী করলে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করা অবশ্যই যাবে ৷
এর পর আমাদের দয়ানন্দ সরস্বতীর অনুবাদ সমন্ধ্যে কোন কমেন্ট করে নি অপপ্রচারকারী।  তাই আমাদের বলার কিছুই নেই।
এরপর যজুর্বেদ ১৮। ৭৪ মন্ত্রের জবাবে অপপ্রচারকারী লেখে - ///// আমার প্রশ্নের কোন জবাবই এখানে পেলাম না, আমার অভিযোগ ছিল বেদ এ প্রার্থনা করা হয়েছে যেন যুদ্ধের মাধ্যমে ধনসম্পদ অর্জন করা যায়। দাদা এটা নিয়ে কোন জবাবই দিলেন না। দাদার দেয়া দয়ানন্দের স্ক্রীনশটেও এটা স্পষ্টই দেয়া আছে, যুদ্ধের মাধ্যমে যেন প্রচুর ধনসম্পদ ও বিজয় লাভ করা যায়। //////
মহর্ষি দয়ানন্দের অনুবাদ আসুন দেখে নেই -
হে যুদ্ধবিদ্যা জ্ঞাত সেনাপতি! আমরা তোমার রক্ষা আদিকে বিদ্যা দ্বারা সেই কামনা কে প্রাপ্ত হই প্রশস্ত ধনযুক্ত উত্তম বীর প্রাপ্ত হই, যাহার দ্বারা সেই ধন কে প্রাপ্ত হই সংগ্রাম করে আমরা সংগ্রামের বিজয় কে উত্তম প্রকারে প্রাপ্ত হই, হে বৃদ্ধপন রহিত সেনাপতি আমরা তোমার প্রতাপ দ্বারা অক্ষয় ধন এবং কীর্তিকে প্রাপ্ত হই। (যজুর্বেদ ১৮।৭৪, দয়ানন্দ সরস্বতী)


আমরা  জবাবে স্পষ্টই বলেছিলাম - একজন যোদ্ধা সবসময় সেনাপতির রক্ষায় থেকে সমরে যুদ্ধ করে সংগ্রামের বিজয় কে প্রাপ্ত করে।  একটা রাজ্যের রাজার নানা কারনে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এই জন্যে এবং শত্রুরাজ্যের আক্রমনের আশঙ্কা থেকে সেনাবাহিনীকে সবসময় প্রস্তুত রাখতে হয় ৷ এই সব যুদ্ধে যদি কোন সম্পদ অর্জন হয় তবে বিজীত ধন অবশ্যই রাজা প্রাপ্ত হবে এবং সেগুলোর যথাযোগ্য বন্টন করবেন (মনু ৩।৯৭) আর এ মন্ত্রের যে ধনের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে অক্ষয় ধন। অর্থাৎ পার্থীব ধন নয়,  কারণ পার্থিব ধন অক্ষয় নয়।
মহর্ষি ভাবার্থে স্পষ্ট করে বলেছেন - প্রজা যোগ্য রাজপুরুষকে রক্ষা এবং রাজপুরুষ প্রজাজনের রক্ষা দ্বারা পরস্পর ইষ্ট কামনাকে প্রাপ্ত হবে। অর্থাৎ সেনাপতির নিরাপত্তা কৌশলে রক্ষিত প্রজারা যেন যশ কীর্তি লাভ করে।
এরপর অপ্রচারকারীর আরোপ - ///// যজুর্বেদ ৭/৩৮, যেখানে লেখা “যুদ্ধই তোমাদের উন্নতির উৎস, এজন্যই তোমাদেরকে আমি যুদ্ধে প্রেরন করি”
দাংগবাজ আর্যজাতির উন্নতির উতস ছিল যে লুটপাট ও দাংগা সেটা বেদেও অকপটে লেখা হল, দাদা এই মন্ত্রটার জবাব না দিয়ে এড়িয়ে গেলেন, নীচে স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতির অনুবাদ,///////
আমরা কোন মন্ত্রই এড়িয়ে যাই নি।  বরাবরই বলে এসেছি আমরা প্রাপ্ত তথ্যের সবকয়টির জবাব দিয়েছি।  যদি এই মন্ত্রও থেকে থাকে আরোপে আমাদের কোন আপত্তি নেই জবাব দিতে।  সর্বপ্রথম আসুন মন্ত্রটির পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ দেখে নেই -
হে শত্রু বিজীত সভাপতি!  যেই কারণে আপনি রাজনিয়ম দ্বারা স্বীকারকৃত হও, এইজন্য আমরা আপনাকে যাহাতে উত্তম উত্তম অস্ত্র এবং শস্ত্রের কর্ম রয়েছে,  সেই পরমৈশ্বর্য কে প্রাপ্তকারী যুদ্ধের জন্য যুক্ত করি,  যাহাতে  আপনার এই যুদ্ধ পরমৈশ্বর্যের কারণ হয়। এই জন্য আপনাকে সেই যুদ্ধের জন্য বলছি যে,আপনি  প্রত্যেক বড় বড় বিচারের কামনায় প্রকাশমান  প্রসংশনীয় প্রজাযুক্ত এবং অত্যন্ত শ্রেষ্ঠ হও। যুদ্ধ এবং আনন্দের জন্য প্রত্যেক ভোজনে সোমলতাদি পুষ্টকারী ঔষুধের রস কে পান করো,  উত্তম সংস্কার দ্বারা প্রস্তুত অন্নের মধুর রসের তরঙ্গ কে নিজের উদরে উত্তম প্রকারো স্থাপন করো। (যজুর্বেদ ৭।৩৮,  মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী)


দেখলেন তো অপপ্রচারকারী মন্ত্রে লুটপাট ও  দাংগা খুজে পেয়েছে।দাংগা আর যুদ্ধের সংজ্ঞাটা কি আদৌ কি সে জানে?   যুদ্ধ সর্বদা শত্রু পক্ষের সাথে হয়ে থাকে।  আর মনুস্মৃতিতে যুদ্ধকেই ক্ষত্রিয়ের ধর্ম বলেছে । সংগ্রামাৎ ক্ষাত্রং ধর্মমনুস্মরম,  মনু ৭।৮৭। গীতাতেও কৃষ্ণ বলেছে - ধর্মযুদ্ধ অপেক্ষা ক্ষত্রিয়ের অন্য কিছু শ্রেয় আর নাই।গীতা ২/৩১।   মূলমন্ত্রে "ইন্দ্রায়" শব্দটার উল্লেখ রয়েছে, ইন্দ্রায় শব্দের দ্বারা বোঝায় "ইন্দ্রত্ব প্রাপ্তির জন্য" গুরু দয়ানন্দজীও এখানে ইন্দ্রায় শব্দের অর্থ পরমৈশ্বর্য বুঝিয়েছেন যেটা আসলে সন্মান, প্রতিপত্তি ও শত্রুহীন অর্থাৎ শত্রুদের উপর বিজয় প্রাপ্তিকে বুঝায়।  এই মন্ত্রের মূলকথা হলো যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য শারিরীকভাবে সুস্থ থাকার আহবান ৷ যেটা মন্ত্রের ভাবার্থে দয়ানন্দজী পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন ৷
" সভা এবং সেনাপতি আদি মনুষ্যের  উচিৎ যে,  উত্তম থেকে উত্তম পদার্থের ভোজন দ্বারা শরীর এবং আত্মাকে পুষ্ট করে শত্রুকে জীতে ন্যায় ব্যবস্থা দ্বারা প্রজার পালন করা। "
এছাড়াও বেদে সুস্পষ্টভাবে কৃষিকর্ম, বস্ত্রবয়ন, ব্যবসা বানিজ্য ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের ও সমাজের উন্নতি করার আদেশ দেয়া হয়েছে ৷ ঋগবেদ ১/১১৭/২১, ৪/৫৭/১-৮, ১০/১০১/৩, ১০/১০৬/১ এই মন্ত্রগুলোসহ আরো অন্যান্য মন্ত্রে এই উপদেশ দেয়া হয়েছে আরো বরং জুয়া পাশা ইত্যাদি খেলতে কঠিন ভাবে নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে ৷ অথচ অপপ্রচারকারী বলছে "লুটপাট আর দাঙ্গাই নাকি আর্যদের উন্নতির উৎস" ৷
এরপর অপপ্রচারকারী লিখলেন - ////// এরপর বেদাঙ্গ গ্রন্থ নিরুক্ত ৪/৫ এর রেফারেন্স দিলাম ধনসম্পদ লুটের, দাদা সেটারো কোন জবাব দিলেন না এখানে লেখা আছে,“শত্রুদের ধংস করে তাদের সম্পদ কেড়ে আনো। তাদের সম্পদ ও খাদ্য ঘর থেকে ছিনিয়ে আনো। //////
নিরুক্তে উল্লেখিত মন্ত্রটি মূলত ঋগবেদের ৫।৪।৫ মন্ত্র। মন্ত্রটির মহর্ষি দয়ানন্দকৃত  অর্থ হচ্ছে -
"হে বিজুলির সমান শ্রষ্ঠগুন সম্পন্ন রাজন! সেবিত বা প্রসংশিত শম,দম আদি দ্বারা যুক্ত আকস্মাৎ এসে গৃহে প্রাপ্ত হয়ে বিদ্বান আপনি আমাদের লোকের এই প্রত্যক্ষ্য অন্ন আদি উত্তম পদার্থের দান কে প্রাপ্ত হও এবং শত্রুতার সমান আচরনকারীকে সম্পূর্ণ সম্মুখে প্রাপ্ত হয়ে শত্রুসেনার অনেক প্রকার বধ দ্বারা নাশ করে প্রজাপালন বা খাবার যোগ্য অন্ন কে ধারন করুন"
উক্ত মন্ত্রের ভাবার্থে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী লিখেছেন - যে রাজা দুষ্টের নাশ করে ন্যায় দ্বারা প্রজাকে পালন করেন,  তিনি প্রজাদের নিকট অনেক প্রিয় হন।


নিরুক্তের অনুবাদে বলা হয়েছে,  হে অগ্নি সব সম্মুখ সেনাকে মেরে শত্রুতাকারীর ধন আমাদের প্রদান করুন।


অর্থাৎ এ মন্ত্রে যুদ্ধ পরিস্থিতির বর্ণনা করা হয়েছে এবং  শত্রুদের বিজয়লব্ধ ধন  প্রজা পালনের জন্য ধারন করার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে।   মনুস্মৃতিতে ইহার ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়েছে যে- রাজা জয়প্রাপ্ত ধন রক্ষা করবেন,  কৃষিবাণিজ্য দ্বারা বৃদ্ধি করবেন এবং ব্রাহ্মণাদি সৎপাত্রে তা দান করবেন (মনু ৭। ৯৯ - ১০১)।


                   

=>> আরোপ - ০৯
বেদের নিয়মের কারনে মনুসংহিতাতেও সব কিছু দখল করতে বলা হয়েছে -
“গাড়ি, ঘোড়া, হাতি, অর্থ, শস্য , গবাদিপশু ও
নারী তার দখলে যে যুদ্ধের মাধ্যমে তা জয় করে।”(মনু ৭।৯৬)
 অর্থাৎ শত্রু পরিবারের নারীরাও যাবে দখলকারীর ভোগের জন্য।

যৌক্তিকতা বিচারঃ
 মনুসংহিতার ৭ম অধ্যায়টি হলো রাজধর্ম বিষয়ক, রাজার আচরন ও বৈশিষ্ট্য কেমন হওয়া উচিত এখানে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে ৷ অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কতকগুলো হলো মদ্যপান, পাশাখেলা বা জুয়াখেলা, স্ত্রীসম্ভোগ, মৃগয়া বা অকারন পশুহত্যা, পরধনঅপহরন, অকারনে দন্ডদান ও কঠোর বাক্য প্রয়োগ এইগুলির থেকে দূরে থাকতে রাজাকে উপদেশ করা হয়েছে (মনু ৭/৫২) ৷
এবং মনু ৭।৫০ এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে মদ্যপান,  পাশক্রীড়া, স্ত্রীসম্ভোগ, পশুমারন এ চারটি অতিশয় দুঃখহেতু।  অর্থাৎ মনু মহারাজ কোন পরস্ত্রীকে ভোগ অথবা পরের সম্পদকে দখল  করাকে সমর্থন করে নি বরং দুঃখদায়ক বলেছেন। একজন ক্ষত্রিয় রাজা হিসেবে বিভিন্ন সময় যুদ্ধে অবতীর্ণ হতেই হয় সেই যুদ্ধে অনেকসময় ধনাদি লাভ হয়, শত্রুপক্ষের নিরীহ স্ত্রীও হস্তগত হয় ৷ এখানে সেটাই বলা হয়েছে ৷ সেই অসহায় স্ত্রীর রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও তাকেই নিতে হবে ৷ ধনসম্পদ রাজাকে হস্তান্তরিত করতে হবে যাতে সেগুলো রাজকার্যে ব্যায়িত হতে পারে (মনু ৭/৯৭) ৷ এবং রাজা নিরীহ নরনারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন ৷ কারন যুদ্ধসজ্জাবিহীন বা অস্ত্রধারী লোকেদের হত্যা করা যাবে না (মনু ৭/৯২)। অর্থাৎ পরাজীতনারী ও পুরুষের নিরাপত্তা ও তাদের স্বাভাবিক জীবনের দায়িত্ব রাজাকেই নিতে হবে ৷ যেমনটা রামচন্দ্র লঙ্কা বিজয়ের পর পরাজিত লঙ্কা রাজ্যের সকল নরনারীদের নিরাপত্তা প্রদান করেছিলেন।

অপপ্রচারকারী পূনঃ লিখেছেঃ
দাদা লিখলেন মনু ৭।৫০ এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে মদ্যপান, পাশক্রীড়া, স্ত্রীসম্ভোগ, পশুমারন এ চারটি অতিশয় দুঃখহেতু । লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এখানে স্ত্রী সম্ভোগকেই দুখঃহেতু বলা হয়েছে। পরস্ত্রীসম্ভোগ নয়।অর্থাৎ যে কোণ প্রকারে নারী সম্ভোগই নারী বিদ্বেষী মনুর নিকট দুঃখের ব্যাপার। আবার সেই এক মনুসংহিতায়ই আবার বলা রয়েছে, “মাংস ভক্ষণ, মদ্যপান ও মৈথুনাদিতে কোন দোষ নাই। ইহা জীবেরই প্রবৃত্তি।” (৫/৫৬) .
এখন দাদা কি বলবে ?
দাদা এরপরে লিখলেন একজন ক্ষত্রিয় রাজা হিসেবে বিভিন্ন সময় যুদ্ধে অবতীর্ণ হতেই হয় সেই যুদ্ধে অনেকসময় ধনাদি লাভ হয়, শত্রুপক্ষের নিরীহ স্ত্রীও হস্তগত হয় ৷ এখানে সেটাই বলা হয়েছে ৷ সেই অসহায় স্ত্রীর রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও তাকেই নিতে হবে । দাদা কোথায় পেলেন সেই অসহায় স্ত্রীদের রক্ষনাবেক্ষনের দাইত্ব তাকে নিতে হবে এই কথা ? এরপর লিখলেন, এবং রাজা নিরীহ নরনারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন ৷ কারন যুদ্ধসজ্জাবিহীন বা অস্ত্রধারী লোকেদের হত্যা করা যাবে না (মনু ৭/৯২)।
মনু ৭/৯২ এ যুদ্ধ ময়দানে যুদ্ধবিহীন দর্শনার্থি, নিরস্ত্র লোকদের হত্যা করা যাবে না, বুঝলাম, কিন্তু এ দ্বারা তো এটা বুঝায় না যে শত্রুদের স্ত্রীদের ধর্ষন করা যাবে না ?
দাদার মত অনুসারে যদি মনুর উক্ত বানী দ্বারা শত্রুপক্ষের নিরিহ লোকদের রাজা দ্বারা নিরাপত্তা বোঝায় তবে সেখানে নারীর সাথে নর এর কথাও উল্লেখ থাকত, বা স্বাভাবিকভাবে বলা হত শত্রুপক্ষের মানুষ বা নরনারী। কিন্তু তা না করে লিখা হল, শত্রুপক্ষের হাতি, ঘোড়া শস্য ও নারী তার দখলে থাকবে যে জোর করে ছিনিয়ে আনবে। এদ্বারা স্পষ্টই বোঝা যায় নারীকে কি কাজে রাখা হবে।
একিসাথে দাদাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ, পরাজিতদের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক জীবনের দাইত্ব রাজা নিবে এরকম কোন কথা বেদ, পুরান, সংহিতা বা যেকোন জায়গা থেকে কমপক্ষে মাত্র একটা রেফারেন্স দিয়ে পারলে প্রমান করুক। বেদ অনুসারে আমরা দেখেছি শত্রুদের হত্যা ব্যাতীত আর কোন পথ রাখে নি। তাদের পরিবারকে হত্যা করতে বলা হয়েছে, আর মনু মতে তাদের নারীদের নিজ দখলে আনতে বলেছে।

আমাদের জবাবঃ
আমরা মনুস্মৃতির রেফারেন্স উল্লেখ করে  দেখিয়েছিলাম নারী সম্ভোগ দুঃখের হেতু। এর প্রক্ষিতে অপপ্রচাকারী লিখলেন - ///লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এখানে স্ত্রী সম্ভোগকেই দুখঃহেতু বলা হয়েছে। পরস্ত্রীসম্ভোগ নয়।অর্থাৎ যে কোণ প্রকারে নারী সম্ভোগই নারী বিদ্বেষী মনুর নিকট দুঃখের ব্যাপার।///
যে কোন নারী সম্ভোগ মনুর নিকট মোটেই দুঃখের ব্যাপার নয়। মনুসংহিতায় মনু মহারাজ সবকিছুতেই সীমার মধ্য থেকেই করার পরামর্শ দিয়েছেন ৷ তিনি রাজাকে শুভলক্ষনবিশিষ্টা ভার্যা গ্রহন করতে আদেশ দিয়েছেন (মনু৭/৭৭), তার স্ত্রীকে সময় দিতে বলেছেন (মনু ৭/২২১) আবার বলেছেন স্ত্রী লোকের প্রতি অত্যধিক আসক্তি পরিত্যাগ করতে ৷ (মনু ৭/৪৭)।
এরপর অপপ্রচারকারী লিখলেন - ///“মাংস ভক্ষণ, মদ্যপান ও মৈথুনাদিতে কোন দোষ নাই। ইহা জীবেরই প্রবৃত্তি।” (৫/৫৬) .এখন দাদা কি বলবে ?////
অপপ্রচারকারী ছলের নমুনা দেখুন অর্ধেক শ্লোক তুলে ধরে ভ্রান্তির প্রচেষ্টা। পরের লাইনে স্পষ্টভাবে মনু বলেছেন - " এগুলি থেকে নিবৃত্তি হওয়াই মহাপূণ্যের কারন, ফলতঃ এসব না করাই সর্বোত্তম জানিবে "


লেখাটি কি চোখে পড়েনি এই মন্দমতির??  এই মন্ত্রে বোঝানো হয়েছে যে মাংস ভক্ষন, মদ্যপান, স্ত্রীমৈথুন এগুলো মানুষের প্রবৃত্তি তবে এগুলো থেকে নিবৃত হওয়াটাই পূণ্যের কাজ ৷ অর্থাৎ একজন মানুষের অপরের ধন চুরি করতে ইচ্ছা হতে পারে, পরনারীর সহিত সঙ্গম করতে ইচ্ছা হওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু এগুলো পাপের কাজ এবং এগুলো ত্যাগ করাটাই পূণ্যের কাজ ৷
এর পর আমরা বলেছিলাম - একজন ক্ষত্রিয় রাজা হিসেবে বিভিন্ন সময় যুদ্ধে অবতীর্ণ হতেই হয় সেই যুদ্ধে অনেকসময় ধনাদি লাভ হয়, শত্রুপক্ষের নিরীহ স্ত্রীও হস্তগত হয় ৷ এখানে সেটাই বলা হয়েছে ৷ সেই অসহায় স্ত্রীর রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও তাকেই নিতে হবে ।
এর প্রক্ষিতে মন্দমতি বললেন -////  দাদা কোথায় পেলেন সেই অসহায় স্ত্রীদের রক্ষনাবেক্ষনের দাইত্ব তাকে নিতে হবে এই কথা ?
মনু ৭/৯২ এ যুদ্ধ ময়দানে যুদ্ধবিহীন দর্শনার্থি, নিরস্ত্র লোকদের হত্যা করা যাবে না, বুঝলাম, কিন্তু এ দ্বারা তো এটা বুঝায় না যে শত্রুদের স্ত্রীদের ধর্ষন করা যাবে না ?/////
মনুসংহিতা (৭/২০১) এ স্পষ্টরূপে  পরাজিত অঞ্চলের সন্মানীত ব্যাক্তিদের সন্মান করার আদেশ দেয়া আছে ৷ শুধু তাই না ঐ দেশের অধিবাসীদেরকে বিশেষভাবে দান করতে বলা হয়েছে এবং সবচেয়ে বড়কথা সেখানকার সকল অধিবাসীদেরকে অভয়দান করার আদেশ দেয়া হয়েছে ৷ আর স্ত্রী ধর্ষনকারীদের মনুসংহিতাই স্পষ্ট শাস্তি দেবার বিধান রয়েছে-
" রাজা পরদারসম্ভোগে প্রবৃত্ত মনুষ্যদিগকে নানা প্রকার উদ্বেগজনক নাসা ওষ্ঠ কর্তনাদি দন্ড দ্বারা চিহ্নিত করিয়া দেশ থেকে বহিষ্কার করবেন। মনু ৮।৩৫২


এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে পরাজিত অঞ্চলের নারীদের ধর্ষন করার কথা দূরে থাক বরঞ্চ পরাজিত অঞ্চলের নরনারী তথা সকল অধিবাসীদেরকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের অভয়দান করতে হবে ৷

এর পর অপপ্রচারকারী লিখলেন -//// /দাদার মত অনুসারে যদি মনুর উক্ত বানী দ্বারা শত্রুপক্ষের নিরিহ লোকদের রাজা দ্বারা নিরাপত্তা বোঝায় তবে সেখানে নারীর সাথে নর এর কথাও উল্লেখ থাকত, বা স্বাভাবিকভাবে বলা হত শত্রুপক্ষের মানুষ বা নরনারী। কিন্তু তা না করে লিখা হল, শত্রুপক্ষের হাতি, ঘোড়া শস্য ও নারী তার দখলে থাকবে যে জোর করে ছিনিয়ে আনবে। এদ্বারা স্পষ্টই বোঝা যায় নারীকে কি কাজে রাখা হবে।/////
অপপ্রচারকারীর এই কথার জবাব আমরা পূর্বেও দিয়েছিলাম এখন আবার দিচ্ছি ৷ এই মন্ত্রে নারীর কথাটা এসেছে এই কারনে যে যুদ্ধে শত্রুসৈন্য নিহত হয় অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যায় এসময় অনেক নারীরাই অসহায় হয়ে যায় সেক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব ঐ সেনাপতির উপর পড়ে ৷ এই মন্ত্রে ধর্ষনের কোন কথা বলা নেই বরং অন্যান্য মন্ত্রে পরাজিত অঞ্চলের অধিবাসীদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করে তাদের অভয় দানের কথা বলা আছে এবং অস্ত্রহীনদের আঘাত না করার কথা বলা হয়েছে ৷ যেটা প্রমান করে মনু ৭/৯৬ মন্ত্রে নারীদের নিরাপত্তার ব্যপারেই বলা হয়েছে ৷
এর পর অপপ্রচারকারী চ্যালেন্জ করে বললেন -///// পরাজিতদের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক জীবনের দাইত্ব রাজা নিবে এরকম কোন কথা বেদ, পুরান, সংহিতা বা যেকোন জায়গা থেকে কমপক্ষে মাত্র একটা রেফারেন্স দিয়ে পারলে প্রমান করুক। /////
আমরা রেফারেন্সটির উল্লেখ এবং  ব্যাখ্যা আগেই করেছি।  এক্ষনে অপপ্রচারকারীর চ্যালেন্জ হেতু রেফারেন্সটি পূণর্বার উল্লেখ করছি।  মনুস্মৃতি ৭।২০১ নং শ্লোকে স্পষ্ট পরাজিতদের নিরাপত্তা এবং তাদের জীবন ধারণের ব্যবস্থা  করে বলা হয়েছে যে,  রাজা ঐ দেশের অধিবাসিগণকে জয়লব্ধ দ্রব্য পরিহার রূপে অর্থাৎ বিশেষভাবে দান করবেন  এবং সেখানকার সকল অধিবাসিকে অভয়দান করবেন।

    
          
আরোপ - ১০
যজুর্বেদ ১৬/৩৬, “তার প্রতি শ্রদ্ধা, যার রয়েছে তলোয়ার, তীর। তার প্রতি সন্মান যার রয়েছে ধারালো অস্র। তার প্রতি খাদ্য নিবেদন যার রয়েছে ভাল অস্র।”
অর্থাৎ বেদ সমগ্র বিশ্ব দখল করবে জ্ঞান বা ভালবাসা দিয়ে নয়, বরং অস্র দিয়ে, শান্তিপ্রিয় মানুষদের হত্যা করে ও তাদের এলাকা দখল করে।

যৌক্তিকতা বিচারঃ
 মন্ত্রটিতে  মূলত একজন সেনাপতি তথা যোদ্ধার প্রতি সম্মান জানানো হয়েছে। একটি রাজ্যে একজন যোদ্ধা যিনি নিজ রাজ্যকে সুরক্ষার জন্য সর্বদাই প্রচেষ্টা করে থাকে।  এরূপ অস্ত্রধারী যোদ্ধাকে সবার কর্তব্য সম্মান জানানো এবং তার সৎকার করা।  যেমন একটি দেশে  অস্ত্রধারী সেনাবাহীনিদের সবাই সম্মান করে। কারন তারা রাষ্টের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করে। যদি কেউ এরূপ যোদ্ধাকে সম্মান করে তার মানে কি তারা শুধু হত্যা করতে পছন্দ করে? বেদ শুধু মাত্র দন্ডের কথাই বলেনি সাথে সবাইকে  বলেছে - আমরা যেন সবাইকে মিত্রের চোখে দেখি এবং সবাই আমাকে মিত্রের চোখে দেখে (যজুর্বেদ ৩৬।১৮)। কিন্তু যারা সর্বদা মিত্রের চোখে না দেখে শত্রুর চোখে দেখে এবং ব্রহ্মজ্ঞানীদের নাশ করতে সদা উদ্যত হয়।  বেদ শুধু মাত্র তাদের উচিৎ দন্ডের আদেশ দিয়েছে কোন শান্তিপ্রিয় মানুষদের নাশ করতে বলে নি।  কারন নির্দোষের হত্যা যে ভয়ানক তা বেদ নিজেই বলেছে (অঃ ১০।১।২৯) ।  অতএব একজন রাজা হিসেবে কর্তব্য এইযে নিজ রাজ্যকে শত্রুমুক্ত এবং বিদ্বাপূর্ণ করা এবং একজন প্রজা হিসেবে কর্তব্য উত্তম শস্ত্রধারী যোদ্ধাকে সর্বদা সৎকার এবং সম্মান করা।
যে রাজা এবং প্রজার  অধিকারী লোক  দৃঢ এবং উত্তম বিচারশীল তথা কোমল স্বভাবযুক্ত পুরুষকে অন্ন দেবে বহু শস্ত্রবান এবং প্রসংশিত শস্ত্র এবং কোশবান কে  ও সৎকার করবে এবং তীক্ষ অস্ত্রশস্ত্র যুক্ত এবং উত্তম প্রকার তোপ আদি দ্বারা লড়া বীর দ্বারা  অধক্ষ্যপুরুষকে ও সৎকার করবে সুন্দর আয়ুধো বান এবং উত্তম ধনুক যুক্ত তথা অনেক রক্ষোক কে অন্ন দেবে।
(যজুর্বেদ ১৬।৩৬, দয়ানন্দ সরস্বতী)

অপপচারাকারী পুনঃ লিখেছেঃ
দাদার মতে মন্ত্রটিতে একজন সেনাপতিকে সন্মান জানানো হয়েছে, এজন্যই অস্র শস্রের দিকে শৃদ্ধা জানানো হয়েছে। যাকগে এটুকু মেনে নিলাম। একিসাথে দাদা দেখালেম যজুর্বেদ ৩৬/১৮ এর রেফারেন্স দিয়ে যে এখানে প্রার্থনা করা হয়েছে সবাইকে যেন সে মিত্রের চোখে দেখে এবং সবাই যেন তাকে মিত্রের চোখে দেখে। প্রকৃতপক্ষে বেদ নামক গ্রন্থটি যে একজন ব্যাক্তি নয় বরং একাধিক জনের লেখা প্রার্থনা বচনসমষ্টি এটা আগেই প্রমান করেছি। তাই শুধু যে বিদ্বেষপরায়ন ব্যাক্তিদের প্রার্থনাই বেদ এ এসেছে এমন নয়, সহিষ্ণু ব্যাক্তিদের প্রার্থনাও এসেছে। এজন্যই বেদ এর একটি মন্ত্র প্রায়শই আরেকটি মন্ত্রের বিপরীতে চলে যায়। যেমন বেদ যদি সবাইকে বন্ধুর চোখে দেখার কথা বলে, তবে কিকাট গোষ্টির কি দোষ ছিল ? তাদের কেন বন্ধুর চোখে দেখা হল না ? ধর্ম পালন না করাই ছিল তাদের অপরাধ। তাহলে বন্ধুর চোখে দেখা হবে তাদের যারা বৈদিক ধর্মাবলম্বি। বৈদিক ধর্মের বাহিরে যারা রয়েছে, যারা অগ্নিতে ঘি ঢেলে পুজা করেনা তাদের কি করতে হবে বেদ প্রাকটিকালি দেখিয়ে দিয়েছে কিকট গোষ্টীর মাধ্যমে।
পরিশেষে বলি, বেদ হতে এরকম আরো গন্ডাখানেক এরও বেশি হানাহানি মারামারি ও অমানবিক মন্ত্র বের করা যাবে। বেদ এর বিরাট একটি অংশেই জাত প্রথা ও ধর্মের বাইরের লোকদের প্রতি ভেদাভেদ তুলে ধরা আছে। আশা করি ভবিষ্যতে এটা নিয়ে এর দ্বিতীয় পর্ব লেখা হবে।

আমাদের জবাবঃ
আমাদের প্রদত্ত জবাব অপপ্রচারকারী মেনে নিয়েছে তাই মন্ত্র সমন্ধ্যে আমাদের বলার কিছু বলার নেই। এর পর অপপ্রচারকারী বলেছেন -///প্রকৃতপক্ষে বেদ নামক গ্রন্থটি যে একজন ব্যাক্তি নয় বরং একাধিক জনের লেখা প্রার্থনা বচনসমষ্টি এটা আগেই প্রমান করেছি। /////
কোথাই কোন জায়গায় প্রমাণ করেছে?  বেদ স্বয়ং ঈশ্বরীয় জ্ঞান যা ঋষিগণ প্রাপ্ত করেছেন। বেদের নিত্যতা এবং অপৌরুষেয়তা ব্যাসদেব স্বীকার করে গিয়েছেন।  আর এ অপপ্রচারকারী  বেদকে নাকি ব্যক্তিবাচকের লেখা প্রমাণ করেছে। হাতি ঘোড়া গেলো তল মশা বলে কত জল আর কি।  বেদে দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালন করার উপদেশ রয়েছে।  যা কখনো পরস্পর বিরোধী উক্তি নয়।  কীকট গোষ্ঠিকে কেন মিত্রের চোখে দেখা হলো না তা আমরা আরোপ ২ এ স্পষ্টভাবে বিস্তারিত করে উল্লেখ করেছি।  এক প্রসঙ্গ পুনরায় উল্লেখ অনাবশ্যক।
এরপর অপপ্রচারকারী লিখলেন - /////বেদ হতে এরকম আরো গন্ডাখানেক এরও বেশি হানাহানি মারামারি ও অমানবিক মন্ত্র বের করা যাবে। ////
অপপ্রচারকারী একটা মন্ত্রও কি দেখাতে পেরেছে যেখানে কোন নির্দোষ মানুষকে দন্ড দেওয়া হয়েছে?  আমরা দেখেছি "ব্রহ্মদ্বেষী" ব্রহ্মজ্যম" দানহীন,  সুদখোর ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গকে দন্ড দেওয়া হয়েছে।  রাষ্ট্রে অধর্মের নাশ এবং ধর্মের বৃদ্ধি করাই রাজার কর্তব্য।  যোগীরাজ কৃষ্ণও বলেছেন দুষ্টের দমন এবং সাধুদের পরিত্রাণের জন্য অবতীর্ণ হই। ত্রেতা দ্বাপরেও দেখতে পাই। অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।  কোথাই সেগুলোতে অমানবিকতা ছিলো? পরন্তু আমরা সর্বদা ধর্মেরই বিজয় দেখেছি ।
এর পর অপ্রচারকারী লিখলেন -/// /বেদ এর বিরাট একটি অংশেই জাত প্রথা ও ধর্মের বাইরের লোকদের প্রতি ভেদাভেদ তুলে ধরা আছে। আশা করি ভবিষ্যতে এটা নিয়ে এর দ্বিতীয় পর্ব লেখা হবে।/////
বেদে কোথায় জাতি প্রথা রয়েছে তার যেন অপপ্রচারকারী উল্লেখ করে। আর আমরাও সদা জবাব দেবার জন্য প্রস্তুত থাকবো।

  1. বেদ ঈশ্বরীয় তার কী প্রমাণ আছে?

    ReplyDelete
  2. তুই যে তোর বাপ মায়ের সন্তান তার কি প্রমান আছে? বেদের সময়কাল দেখে নিস তখন তোদের আল্লাও জন্ম নেয়নি

    ReplyDelete
    Replies
    1. বেদের বয়স মাত্র 500 বছর

      Delete
    2. ওদিকে বেদের সবচেয়ে পুরাতন পান্ডুলিপিটার বয়স কত সেটা কি জানা আছে?

      Delete
    3. ওদিকে বেদের সবচেয়ে পুরাতন পান্ডুলিপিটার বয়স কত সেটা কি জানা আছে?

      Delete
  3. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete