https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

পৌরাণিক কাহিনী ও প্রাচীন "আচার্যগণ"এর মত

Tuesday, May 7, 2019


নব্য বঙ্গীয় পাঁচমিশালী সম্প্রদায় তথাকথিত অষ্টাদশ পুরাণ নিয়ে বড়ই তালবাহানা করেন । তাঁরা পুরাণ মানেন অথচ ক্ষেত্রবিশেষে কিছু অতীব অশ্লীল কাহিনী রূপক কিংবা কোন রাস্তা না পেলে পরবর্তীকালে সংযোজিত বলে চালিয়ে দেয়  ।  পুরাণে রূপকতা নেই একেবারে এ কথা মোটেও নয় । বেদ ও ব্রাহ্মণাদি গ্রন্থের প্রভূত উপমালঙ্কার পুরাণে স্থূল রূপ ধারণ করিয়ে পরিবেশন করা হয়েছে । ফলশ্রুতিতে বৈদিক ঈশ্বর যাকে পরম ঐশ্বর্যশালী বলে ইন্দ্র বলে অভিহিত হতেন তিনি পুরাণে হয়ে গিয়েছেন কুটিল চরিত্রের এক লম্পট দেবতা যিনি দেবরাজের পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত !

শতপথের ইন্দ্র অহল্যা রামায়ণে হয়েছে পল্লবিত যার প্রকৃতার্থ পড়ুন এই লিংকে-অহল্যা উদ্ধারের বাস্তবিকতা

পৌরাণিক স্বর্গগণিকা উর্ব্বশি ও মিত্র বরুণের কাহিনী যা বেদের একটি প্রাকৃতিক বর্ণনা তার বিকৃত রূপ যা পুরাণে বর্ণিত । তার সত্যার্থ বিস্তারিত তথ্য প্রমাণ সহ পড়ুন এই লিংকে- বেদে অশ্লিলতার ব্যর্থ আরোপঃ উর্বশী, মিত্রবরুণ এবং বসিষ্ঠ কথা

বর্তমানে পৌরাণিকগণ সব কিছুকেই রূপক বা আধ্যাত্মিক বলে বৈধতা প্রদানে ব্যস্ত তার পেছনে আদৌ তার রূপকতা থাকুক বা না থাকুক বরং এই দোষ চাপানো হয় আমরা পুরাণ বুঝি না  !!

বেশ ভালো কথা যত দোষ নন্দ ঘোষ।  কিন্তু কথা হল রূপক বাদ দিয়েও যেসব কাহিনীর অশ্লীলতা বা বিরোধীতা ঢাকার জন্য জোর করে আকাশ পাতাল হতে  রূপক বা আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা করেন তার ভিত্তি কি  ? আপনার অপ্রাকৃত মস্তিষ্ক  ??

                           ব্রহ্মসূত্র ভাষ্যকারদের পৌরাণিক দেবদেবী সম্পর্কিত ধারণা :

¤¤আমাদের আদি গুরু আচার্য শঙ্কর কিন্তু ইন্দ্র অহল্যা মত ইন্দ্রকে রূপক বলে ধরেনই নাই  তিনি সোজাসুজি কুন্তীর নিকট আদিত্যর পুরুষ (দেহ ?  ) ধারণের যুক্তি টেনে দেবতাদের দেহ মেনে নিয়েছেন

আদিত্যঃ পুরুষো ভূত্বা কুন্তীমুপজগাম হ -
ব্রহ্মসূত্র ১.৩.৩৩ ভাষ্যে

¤¤আচার্য শঙ্কর তো দেবতাদের দেহ কল্পান্তরেও একই থাকে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন  তার ভাষ্যে

যথাভিমানিনোতীতা স্তুল্যাস্তে সাম্প্রতৈরিহ ।
দেবা দৈবৈরততীতৈ র্হি রূপৈ র্নামভিরেব চ ।।
ব্রহ্মসূত্র১.৩.৩০ ভাষ্য

ইংরেজি অনুবাদ (দেবতা অনুবাদ superman, higher personality করা হয়েছে  !!)




                                  
উপনিষদ ভাষ্যকারদের পার্বতী শিবের দেহাদি স্বীকার

মজার বিষয় হল অদ্বৈতবাদ প্রবর্তক নির্বিশেষবাদের একচ্ছত্র সমর্থক শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য স্বয়ং তাঁর ভাষ্যে হিমালয় দুহিতা পার্বতী এবং মহাদেবের কথা বলেছেন বিশ্বাস নাহলে কেন উপনিষদ ৩.১২ এর শঙ্করভাষ্য পড়ুন

শ্বেতাশ্বতর এর ৩.৫-৬ ভাষ্যে সকল ভাষ্যকার গিরিতে অবস্থিত দেহধারী রুদ্র (যাহা কিনা পুরাণ মতে শিব পেয়েছেন )

ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী  মন্ত্রে তনু পেয়ে তা অবশ্যই দেহ  (?) বলে ঘোষণা করেছেন
এখন আধ্যাত্মিকতা কোথায় গেল  ?

এখন প্রশ্ন হল তবে পুরাণে শিব -পার্বতী নিয়ে যা পাওয়া যায় তা রূপক না ধরে দেহই হবে যা স্বয়ং শঙ্করাচার্য  ( আমাদের গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতে যিনি শিবের অবতার ) বলেছেন অর্থাত তাঁর আমলেও এই টানাবুনা করে পুরাণে আধ্যাত্মিকতা কপচানোর দুষ্টুবুদ্ধি ছিল না

                গীতা ভাষ্যকারগণ কি পৌরাণিক দেবদেবীদের দৈহিক অস্তিত্ব মানতেন ?

গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ অবশ্য বিনোদন প্রদানে ওস্তাদ বড়ই  যেমন গীতার ১১.১৫ এ আছে -

 অর্জুন উবাচ -
পশ্যামি দেবাংস্তব দেব দেহে সর্বাংস্তথা ভূতবিশেষসঙ্ঘান্।
ব্রহ্মাণমীশং কমলাসনস্থমৃষীংশ্চ সর্বানুরগাংশ্চ দিব্যান্ ।। ১৫
=>> অর্জুন বলিলেন - হে দেব, তোমার দেহে আমি সমস্ত দেবগণ, স্থাবর জঙ্গমাত্মক বিবিধ সৃষ্ট পদার্থ, সৃষ্টিকর্তা কমলাসনস্থ ব্রহ্মা, নারদ-সনকাদি দিব্য কবিগণ এবং অনন্ত্য-তক্ষকাদি সর্পগণকে দেখিতেছি ।

শঙ্কর ও শ্রীধর গোস্বামী এতে ব্রহ্মা বলতে কোন রূপক নয় বরং চতুর্মুখ ব্রহ্মাই ধরছেন

শঙ্কর পশ্যামি উপলভে হে দেব তব দেহে দেবান্ সর্বান্ তথা ভূতবিশেষসংঘান্ ভূতবিশেষাণাং স্থাবরজঙ্গমানাং নানাসংস্থানবিশেষাণাং সংঘাঃ ভূতবিশেষসংঘাঃ তান্ কিঞ্চ -- ব্রহ্মাণং চতুর্মুখম্ ঈশম্ ঈশিতারং প্রজানাং কমলাসনস্থং পৃথিবীপদ্মমধ্যে মেরুকর্ণিকাসনস্থমিত্যর্থঃ ঋষীংশ্চ বসিষ্ঠাদীন্ সর্বান্ উরগাংশ্চ বাসুকিপ্রভৃতীন্ দিব্যান্ দিবি ভবান্৷৷

শ্রীধর স্বামী ভাষণমেবাহ -- পশ্যামীতি ৷ হে দেব তব দেহে দেবানাদিত্যাদীন্পশ্যামি৷ তথা সর্বান্ভূতবিশেষাণাং জরাযুজাণ্ডজাদীনাং সঙ্ঘাংশ্চ তথা দিব্যানৃষীন্বসিষ্ঠাদীন্ উরগাংশ্চ তক্ষকাদীন্ তথা দেবানামীশং স্বামিনং ব্রহ্মাণং চ৷ কথংভূতম্৷ কমলাসনস্থং পৃথ্বীপদ্মকর্ণিকাযাং মেরৌ স্থিতম্ যদ্বা ত্বন্নাভিপদ্মাসনস্থম্৷ 



রামানুজ অর্জুন উবাচ -- দেব তব দেহে সর্বান্ দেবান্ পশ্যামি তথা সর্বান্ প্রাণিবিশেষাণাং সংঘান্ তথা ব্রহ্মাণং চতুর্মুখম্ অণ্ডাধিপতিম্ তথা ঈশং কমলাসনস্থং কমলাসনে ব্রহ্মণি স্থিতম্ ঈশং তন্মতে অবস্থিতং তথা দেবর্ষিপ্রমুখান্ সর্বান্ ঋষীন্ উরগান্ চ বাসুকিতক্ষকাদীন্ দীপ্তান্৷

আমাদের প্রভুপাদ আর মধ্বাচার্য অবশ্য শঙ্করাচার্যের এক কাঠি ওপরে তারা ঈশং অর্থ শিবই করে দিলেন  !

মধ্বাচার্য শিবকে বসালেন ব্রহ্মার কোলে  !!



শ্রীল প্রভুপাদের ভাষ্য :

এখন শিব এতে থাকুক বা না থাকুক ব্রহ্মা আছে এবং ভাষ্যকার পৌরাণিক দেহধারী চতুর্মুখ ব্রহ্মাই করেছেন তবে নিচের সৌর পুরাণের বর্ণনাতে কি আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা করবেন মশাই  ??

আবার গীতার ১০.২৪ বিভিন্ন ভাষ্য সহ পড়ুন

পুরোধসাঞ্চ মুখ্যং মাং বিদ্ধি পার্থ বৃহস্পতিম্ ।
সেনানীনামহং স্কন্দঃ সরসামস্মি সাগরঃ ।।
=>>হে পার্থ ! আমাকে পুরোহিতগণের প্রধান বৃহস্পতি জানিও, আমি সেনানায়কগণের মধ্যে স্কন্দ এবং জলাশয় সমূহের মধ্যে আমি সাগর ।

শাঙ্করভাষ্য পুরোধসাং চ রাজপুরোহিতানাং চ মুখ্যং প্রধানং মাং বিদ্ধি হে পার্থ বৃহস্পতিম্৷ স হি ইন্দ্রস্যেতি মুখ্যঃ স্যাত্ পুরোধাঃ৷ সেনানীনাং সেনাপতীনাম্ অহং স্কন্দঃ দেবসেনাপতিঃ৷ সরসাং যানি দেবখাতানি সরাংসি তেষাং সরসাং সাগরঃ অস্মি ভবামি৷৷



শ্রীধর ভাষ্য পুরোধসামিতি৷ পুরোধসাং মধ্যে দেবপুরোহিতত্বান্মুখ্যং বৃহস্পতিং মাং বিদ্ধি৷ সেনানীনাং সেনাপতীনাং মধ্যে দেবসেনাপতিঃ স্কন্দোহমস্মি৷ সরসাং স্থিরজলাশযানাং মধ্যে সমুদ্রোস্মি৷


রামানুজ ভাষ্য পুরোধসাম্ উত্কৃষ্টো বৃহস্পতিঃ যঃ সঃ অহম্ অস্মি৷ সেনানীনাং সেনাপতীনাং স্কন্দঃ অহম্ অস্মি? সরসাং সাগরঃ অহম্ অস্মি৷

মধ্বাচার্যের ভাষ্য


শ্রীল প্রভুপাদের ভাষ্য ও ব্যাখ্যা

এর ব্যাখ্যাতে ভাষ্যকারগণ সরাসরি  কার্তিক বলেছেন  এখন কি করবেন  ? তারাও পুরাণের চরিত্রে অহেতুক রূপক বলেনি

অতএব দেখা গেল সব ভাষ্যকার সাকার বলেছেন আধ্যাত্মিক বলেননি  সুতরাং আধ্যাত্মিক টানা স্রেফ জোরাজুরি করে এড়িয়ে যাও ব্যতীত অন্য কিছু নেই

শ্রীল প্রভুপাদ গীতার ৭.২৪ এর ব্যাখ্যাতে বলেছেন তাই


আর তথাকথিত গুরুপরম্পরাতে জ্ঞানী প্রভুপাদ শিব পার্বতী নিয়ে তার গীতা ২.৬২-৬৩ এর ব্যাখ্যাতে বলেছেন

আর ৪.১২ এ তো স্পষ্টতঃই কৃষ্ণ, বিষ্ণু,দেবতাদি  অভেদবাদিদের পাষণ্ড বলে অলংকৃত করেছেন

আধ্যাত্মিকতা পেলেন কি  ?
অবশ্য এই কথা স্বয়ং পুরাণেই আছে  যে...

মানুষস্য শরীরস্য সন্নিবেশস্ত্ত যাদৃশঃ |
তল্লক্ষণং তু দেবানাং দৃশ্যতে তত্ত্বদর্শনাৎ |
বায়ুপুরাণ ৫৯. ১৩
=>>দেবতাদের সমস্ত লক্ষণ মানুষের মতই 



শুধু একটু একস্ট্রা অর্ডিনারি এই যা পার্থক্য

শাক্তদের দেবী ভাগবত এর ব্যাস এই সাকার রূপ মেনেই অতীব 'বিজ্ঞের" মত বলেছেন
হরি র্ব্রহ্মা শচীকান্ত স্তথান্যে সুরসত্তমা | 
সর্বেছলবিধৌ দক্ষা মনুষ্যাণাঞ্চ কা কথা |
দেবী ভা ৪.১৩.১০
=>>হরি ব্রহ্মা ইন্দ্র সকলেই ছলে দক্ষ মনুষ্যের আর  কি কথা



সুতরাং বোঝাই গেল দেবতাদের পুরাণকার কখনই আধ্যাত্মিক বা রূপক বলে ধরেননি
তবে আমাদের ব্যাখ্যাকারও কম যাননা তিনি বলবেন "ওরে অজ্ঞ পুরাণে পড়ে দেখ অভেদ তত্ত্ব নিরাকার, সর্বব্যাপী বলা আছে  ব্রহ্মা বিষ্ণু শিবকে  তারা দেহধারী হয়ে ঐ রূপ কর্মাদি করবে কি করে  "
এর পর তিনি বিভিন্ন পুরাণ,  গীতা ঘেটে নিরাকার সর্বব্যাপী বলা এমন কিছু তথ্য প্রমাণ হিসেবে দেবেন যেমন

 ২.১৪
ন চ স্ত্রী ন পুংনেষ নৈব চায়ং নপুংসকঃ।
অপূর্ত্তঃ পুরুষোপূর্ণো দ্রষ্টা সাক্ষী স
জীবনঃ।।
-তাঁর(শিব) স্ত্রীত্ব, পুংত্ব বা নপুংসকত্ব নাই, তিনি
অপরিচ্ছিন্ন, পূর্ণ, দ্রষ্টা ও সাক্ষীস্বরূপ, তাঁহার
সত্তাতেই প্রাণেন্দ্রিয়াদি স্ব স্ব ক্রিয়াতে প্রবৃত্ত
হয়েছে (অতএব তিনি কদাচ শোকার্হ নহে)।

 ......ইত্যাদি ইত্যাদি টানবেন সাথে অভেদ বলে  conclusion টানবেন


বলিহারি বাপু  ! ওই গুটিকয়েক গীতা ও পুরাণেই যা সাকার ও দেহধারী বলা আছে তা এড়িয়ে গেলেন কেন  ?? নাকি বলবেন ওগুলোও রূপক আর গভীর অর্থ আছে (গীতার বৈদিক ব্যাখ্যা চাইবেন না , দয়া করে । আমাদের কাছে গীতার যথাযথ ব্যাখ্যা আছে । তবে যেহেতু তা মানবেনই না তাই দেয়াটা অপাত্রে দান হবে )


প্রথমতঃ স্মৃতি শাস্ত্রীয় প্রমাণে আমরা জানতে পারি নারায়ণ এর প্রকৃতার্থ নিম্নলিখিত রূপ

আপো নারা ইতি প্রোক্তা আপো বৈ নরসূনবঃ।
তা যদ্যস্যায়নং পূর্বং তেন নারায়ণঃ স্মৃতঃ।।
[মনুস্মৃতি ১/১০]
পদার্থঃ
(বৈ) পরমাত্মা (আপঃ) বাষ্পরুপ কারণ (নরসূনবঃ) ভূত উৎপত্তির স্থান থেকে (আপঃ) বাষ্পরুপ কারণ (নারা) নার (ইতি, প্রোক্তাঃ) বলে (তাঃ) সেই বাষ্পরুপ কারণ (যত্) যে কারণ (অস্য) ওই পরমাত্মা (পূর্বস্) প্রথম (অয়নস্) নিবাস স্থান (তেন) তার কারণে পরমাত্মাকে (নারায়ণঃ) নারায়ণ (স্মৃত্ঃ) বলে।
ভাবার্থঃ
"আপ" শব্দ থেকে যে সূক্ষ্ম বাষ্পরুপ কারণ গ্রহণ করে আর সেই কারণ পূর্বে উৎপন্ন হয়েছিল। পরমাত্মা প্রথম স্থান করেছিল, সে সূক্ষ্ম ভূত সর্বব্যাপক তার সম্পূর্ণ উৎপাদনের কারণ। সেই সূক্ষ্ম দ্রব্যবাষ্প ব্যাপক ভাব থেকে পরমাত্মা নিবাসস্থানের কারণ ও "নার" নাম এবং যার মধ্যে ব্যাপক হয়ে সেই পরমাত্মার নাম "নারায়ণ" বলে।

বিষ্ণু অর্থও কিন্তু প্রকৃতভাবে সর্বব্যাপক পরমেশ্বর তবে এই ব্রহ্মা বিষ্ণু যে অহংকার তা কোথায় পেলেন  ? গীতায় তো আমরা ব্রহ্মা পেলাম যা ভাষ্যকার পৌরাণিক দেহধারী চতুর্মুখ ব্রহ্মা বলেছেন তবে ?
এই কাহিনী লিঙ্গ পুরাণ এর বিংশ অধ্যায় এ  পরিষ্কার চতুরানন ব্রহ্মার কথা আছে যা আমরা গীতার আদি ভাষ্যকারদের ভাষ্যেও পেয়েছি  (সেটার অন্য ব্যাখ্যা থাকলেও কেউ তা পুরাণের আধারে গ্রহণ করেননি ) রয়েছে


 এখন বড়জোর আপনি দুম করে যদি গীতার ১১শ অধ্যায় থেকে

বায়ু, যম, অগ্নি, বরুণ, চন্দ্র তুমিই; পিতামহ ব্রহ্মাও তুমি এবং ব্রহ্মার জনকও (প্রপিতামহ) তুমি । তোমাকে সহস্রবার নমস্কার করি, আবার পুনঃ পুনঃ তোমাকে নমস্কার করি । ৩৯

এটা দেখানোর চেষ্টা করলেও আপনি ব্যর্থ হবেন কারণ ১৫নং শ্লোকে আমরা দেহধারী ব্রহ্মা পেয়েছি এবং গৌড়ীয় ভাষ্যকার বোনাস হিসেবে শিবও পেয়েছেন  !

অনেকে গীতার ১৩.১৭ এর প্রভুপাদভাষ্য টেনে অভেদ দেখানোর চেষ্টা করে



 কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঐ শ্লোকে প্রভুপাদ একটু বিষ্ণুত্ব ফ্লেভার দিয়ে অহেতুক পালনকর্তা - আলাদা করেছেন কিন্তু ওতে তেমন কিছুই নেই প্রকৃত অনুবাদ

তিনি (তত্ত্বতঃ বা স্বরূপতঃ) অপরিচ্ছিন্ন হইলেও সর্বভূতে ভিন্ন-ভিন্ন বলিয়া প্রতীত হন । তাঁহাকে ভূতসকলের পালনকর্তা, সংহর্তা ও সৃষ্টিকর্তা বলিয়া জানিবে ।

প্রকৃতপক্ষে প্রভুপাদ সম্পূর্ণ ভুল কারণ তিনি "হয়েও" যে শব্দটা টেনেছেন তার যদি "অপি" প্রয়োগ নেই বরং "চ" যার অর্থ এবং, ও

আরেকটি কাহিনী পদ্মপুরাণ ৬.২৫৫.৬-৪৩ - ঋষি ভৃগু শিবের সাথে দেখা
করতে যান তার গৃহে, কিন্তু নন্দী তাকে গৃহে
প্রবেশে করতে বাধা দেয়। নন্দী বলে শিব ও
শক্তি এখন রতীক্রিয়াতে ব্যাস্ত, তাই গৃহে যাওয়া
যাবে না। ঋষি ভৃগু রেগে গিয়ে তখন শিব কে
অভিশাপ দেয় এবার থেকে শিপূজিত হবে
যুক্তলিঙ্গ হিসাবে।
ইহার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়
শিবের এর কোনো আকার নাই লিঙ্গও নাই তাই
রতীক্রিয়া তার দ্বারা সম্ভব নয়। এখানে ঋষি ভৃগু
প্রথমে সর্ব্ব্যাপী পরমেশ্বরের দর্শনের
জন্য চেস্টা করলেন এবং নন্দী হল এখানে সেই
দর্শনে বাধা, এরপর ঋষি ভৃগু লিঙ্গশরীরের অর্থ্যাৎ
যাতে দুটি উপাদান পুরুষ ও প্রকৃতি বর্তমান তার পূজার
মাধ্যমে তিনি প্রাপ্তি বস্তু পেয়ে যান অর্থ্যাৎ
কুন্ডলীনির জাগরণ। এই লিঙ্গশরীরের প্রতিক এই
যুক্তলিঙ্গ বা শিবলিঙ্গ।

যাক!  অন্ততঃ ভৃগুমুনি আধ্যাত্মিক হননি দেখে বড়ই আনন্দিত হলাম কিন্তু শঙ্কর তো আগেই পার্বতীকে মেনে গিয়েছেন  , সাথে শ্রীধরও তো স্থূল চরিত্র মেনেছেন এই আধ্যাত্মিক কাহিনীর প্রমাণ কি এরকম কাহিনী তো অনেক আধ্যাত্মবাদীগণ মহাভারত যুদ্ধ সম্পর্কেও দেন  তাহলে কি মহাভারতও রূপক  ? নাকি ওগুলো ইতিহাস কিন্তু আপনার ব্যাখ্যাই সত্য  বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার  !!

আর ঐ কাহিনীতে সর্বশেষে বিষ্ণুকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে  তখন একজন বললেন  আরে এই অধ্যায় সাপেক্ষে বিষ্ণু সর্বশ্রেষ্ঠ তাই অন্যের নিন্দা কারণ ঐ পুরাণেই শিব গীতাতে শিব পরমেশ্বর বলা

আমাদের বক্তব্য  সোজা বাংলাতে ঘণ্ট অবস্থা যদি শিব গীতাই ধরি যা থেকে আপনি আগে নিরাকার সর্বব্যাপী ইত্যাদি টেনেছেন তাতেও ৫ম অধ্যায়ে তো স্পষ্ট দেহও আছে মহাশয়




সুতরাং সব কিছু টেনে আধ্যাত্মিক রূপক বলে আড়াল করে অপরকে দোষারোপ করা নিজেকে দিগম্বর করা ব্যতীত কিছুই নয়