https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

বেদে মাংস ভক্ষনের অনুমতি নেই

Friday, July 15, 2016


হাজার বছরের বৈদিক ধর্মধারার পথকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যেসকল অপপ্রচারকারী প্রয়াস করে আসছে তার মধ্যে অন্যতম হল বেদে প্রাণীমাংস ভক্ষনের বিধান সিদ্ধ করা। কারন বেদ সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রাণস্বরুপ। আর বেদ থেকে মাংস ভক্ষনের অনুমতি বের করা গেলে তাদের প্রচারের পথ আরো সুগম হয় উঠবে।
আর এই ধরনের অপপ্রচার সাধারন ধর্মপ্রান হিন্দুদের বিশ্বাসের ভিত্তিকে দূর্বল করে দেয়। এইসব অপপ্রচারের প্রতিকার করতেই আজকের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।


=>>অপপ্রচারকারীর দাবী-
অথর্ববেদ ৯/৪/৯ ‘যো ব্রাক্ষণ উস ঋষভ(ষাড়) য়জন (দান) করতে হ্যায়, বোহ একি মুখ(মাধ্যম) মে হাজারো কা দান করতে হ্যায়” অর্থঃ যে ব্রাক্ষন গরু উৎসর্গ করে সে হাজারটা উতসর্গদান এর সমান করে।
দাবীর সত্যতা -
উপরিউক্ত মন্ত্রটির অনুবাদ শ্রীরাম শর্মার।তিনি তার অনুবাদে ষাড় কে উতসর্গ করার কথা বলেন নি। তিনি মূল অনুবাদে যজন= দান অর্থ করেছেন। কিন্তু অপপ্রকারী একটু চালাকি করে অর্থ করেছে উৎসর্গ। নিচে মন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ দেখুন-
"হে পয়স্বান ঋষভ! আপনি দিব্যগুণ সম্পন্ন প্রজাকে রূপ প্রদান করেন। আপনাকে ইন্দ্র এবং সরস্বান বলা হয়। যে ব্রাহ্মণ এই ঋষভ কে যজন (দান) করেন, সে একই মাধ্যমে হাজারো কে দান করেন"
(অথর্ববেদ ৯।৪।৯, শ্রীরাম শর্মা)
                  


=>>অপপ্রচারকারীর দাবী-
অথর্ববেদ ৯/৪/১৮, ‘উস ঋষভ(ষাড়) কা য়জন(উৎসর্গ) করনে বালে ব্রাক্ষণ শতয়জ যজ্ঞ কা পুন্য অর্জিত করতে হ্যায়’। অর্থঃ উক্ত ষাড় এর উৎসর্গকারী ব্রাক্ষন শতগুন যজ্ঞের পুন্য অর্জন করে।
দাবীর সত্যতা -
এ মন্ত্রের অনুবাদও শ্রীরাম শর্মার। অতএব এ মন্ত্রেও যজন শব্দের অর্থ দান। কিন্তু অপপ্রচারকারীর এখানেও সেই একই চালাকীর চেষ্টা।নিচে পূর্নাঙ্গ অনুবাদ দেখুন-
"এই ঋষভ কে যজন (দানকারী) ব্রাহ্মণ শতযজ্ঞের পূণ অর্জন করে। সমস্ত দেব তাহাকে তৃপ্তি প্রদান করেন এবং অগ্নিতে জ্বালিয়ে তাহাকে সন্তপ্ত করে না"
(অথর্ববেদ ৯।৪।১৮, শ্রীরাম শর্মা)
                   

=>>অপপ্রচারকারীর দাবী -
ঋগ্বেদ ১০/২৭/১৭ “ বুড়ো নে বলশালী মেষকো পরিপাক কিয়া” এখানে मेष (মেষ)=ভেড়া पचत
(পাচত)= রান্না মূল সংস্কৃতিতেই একেবারে স্পষ্ট,
=>>দাবীর সত্যতাঃ
উপরিউক্ত রেফারেন্সটি রাম শর্মার।এ মন্ত্রে তিনি মেষ কে রান্নার কথা স্বীকার করেন নি। তিনি মেষ= স্পর্ধাকারী এবং পচন= পরিপক্ব এরূপ অর্থ করেছেন।তিনি লিখেছেন-
[বীরো নে বলশালী মেষ( স্পর্ধা করনে বালো) কো পরিপক্ব কিয়া]
নিচে মন্ত্রটির পূর্নাঙ্গ অনুবাদ-

"বীরগণ বলশালী মেষ ( স্পর্ধাকারী) কে পরিপক্ক করে। ক্ষেত্র মধ্যে ক্রিয়ার জন্য আকস্মিক নিক্ষেপ হয়ে গেলো। তারা দুই বলশালী ধনুকের সহিত বৃহৎ আপঃ (মূলতত্ত্ব অথবা জল) মধ্যে বিচরন করতে লাগলো। পবিত্রতার যোগাযোগ করতে লাগলো"
(ঋগ্বেদ ১০/২৭/১৭, শ্রীরাম শর্মা)
             
     

=>>অপপ্রচারকারীর দাবী-
ঋগবেদ ১০/৮৬/১৪, লৌগ জীস ষাড় ইয়া ভেইল কো পাকাতে হ্যায়, উসহে খা কর ম্যায় মোটা হোতা হু। অর্থঃ লোকেরা যে ষাড় অথবা গরু রান্না করে তা খেয়ে আমি সাস্থবান হই।
দাবীর সত্যতা -
উপরিউক্ত মন্ত্রে "উক্ষণ" শব্দটি রয়েছে।
সংস্কৃত অভিধান মতে উক্ষাণ শব্দের অর্থ ষাড়। কিন্তু এ মন্ত্রে "উক্ষাণ" শব্দ ব্যবহার করা হয় নি। করা হয়েছে উক্ষণ। যার একমাত্র অর্থ হলো সিঞ্চন করা। নিচে মন্ত্রের যথার্থ অনুবাদ-
"আমার জন্য সত্য দ্বারা প্রেরিত পনেরো- বিশ উক্ষণ (সেচন সামর্থ্য, ইন্দ্রিয় তথা প্রাণ উপপ্রাণ আদি) এক সাথে পরিপক্ক হয়। তাদের গ্রহন করে আমি পরিপুষ্ট হই। আমার দুই পার্শ্ব উহা দ্বারা পূর্ন হয়ে যায়। বিশ্ব মধ্যে ইন্দ্রদেব সর্বোপরি।"
(ঋগবেদ ১০/৮৬/১৪, শ্রীরাম শর্মা)
                      

=>>অপপ্রচারকারীর দাবী-
বেদে ইন্দ্রের প্রতি গরু উতসর্গের স্পষ্ট কথা আছে, ঋগবেদ ৫/২৯/৮, ‘হে ইন্দ্র, যব তুমনে তিনশ মহিষ কা মাস কা ভোজন কিয়া থা’।
অর্থাৎ যখন তুমি তিনশ মহিষের মাংস ভোজন করেছিলে।
দাবীর সত্যতাঃ
উপরিউক্ত মন্ত্রে "মহিষ" শব্দটি রয়েছে। শতপথ ব্রাহ্মণ ৬।৭।৪।৫ এ প্রাণকে মহিষ বলা হয়েছে। "প্রাণা বৈ মহিষ"।



এবং রাম শর্মাও তার অনুবাদে মহিষ = প্রাণ প্রবাহ করেছে। [জব তুমনে তিন সো মহিষ (প্রাণপ্রবাহ) কো স্বীকার কিয়া] তিনি উক্ত মন্ত্রটির এরুপ অর্থ করেছেন। ( মাস কা ভোজন কিয়া থা) এরূপ অর্থ করেন নি।
নিচে মন্ত্রের পূর্নাঙ্গ অনুবাদ-

হে ইন্দ্রদেব! যখন আপনি তিনশ মহিষ (প্রাণ প্রবাহ) কে স্বীকার করেন এবং সোমের তিন পাত্রকে পান করেন। তারপর আপনি বৃত্ত কে মারেন। দেবগন দক্ষ কর্মকারী মতো ইন্দ্রদেব কে আহ্বান করেন।
(ঋগবেদ ৫।২৯।৮, শ্রীরাম শর্মা)
              
     

=>>অপপ্রচারকারীর দাবী -
ঋগবেদ ১০/৯১/১৪ ‘জিস অগ্নিমে ঘোড়ে, বল বৃষোং অওর পৌরুষহীন মেষোকো অশ্বমেধমে আহুতি দে যাতে হ্যায়।‘ অর্থঃ যে অগ্নিতে ঘোড়া, বলবান ষাড় ও বন্ধা মেষকে অশ্বমেধে আহুতি দেয়া হয়।
দাবীর সত্যতা -
এ মন্ত্রে "আহুতা" এবং "চারুমঅগ্নয়ে" ভিন্ন দুটি পদ। কিন্তু অপপ্রচারকারী দুই পদ একত্রে করে "অগ্নয়ে আহুতা" করেছেন। যেটা সম্পূর্নই ভূল অনুবাদ। মূলত এ মন্ত্রে "আহুতা" শব্দের অর্থ ডেকে নেওয়া। এবং "চারুমঅগ্নয়ে" শব্দের অর্থ উত্তম তেজোময়তা। নিচে পূর্নাঙ্গ অনুবাদ দেখুন-

"(পশুপালের অধীনে) যেই অশ্ব, ষাড়, গাভী এবং মেষ আদি ছেড়ে দিয়ে যায় এবং আবার ডেকে নেওয়া হয়। সোম ধারন কারী (ভুমি) পৃষ্টের সুমিষ্ট জলে, বিধাতার জন্য হৃদয়ের অনুভুতিকে উৎপন্ন করি উত্তম তেজোময়তার জন্য"
(ঋগবেদ ১০।৯১।১৪)
           
    
=>>অপপ্রচারকারীর দাবী -

ঋগবেদ ১/১৬১/১০ ‘দুছরে ছুড়ি ছে মাসকো কাটকে রাখতে হ্যায়’। মুল সংস্কৃতিতে স্পষ্টভাবে मास = মাংস এর কথা আছে।
দাবীর সত্যতা -
এ মন্ত্রে শ্রীরাম শর্মা মাংসাদি শব্দের অর্থ অঙ্গ অবয়ব এবং ফলের রসালো অংশ  করেছেন। এবং তাকে উন্নিতকরনের কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন - [ মাংসাদি (অঙ্গাদি অবয়ব) কে সংবর্ধন মে নিয়োজিত কিয়া] নিচে মন্ত্রটির পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ -
"এক পূত্র গো (কিরণ - ইন্দ্রিয়ো) কে জল (রস) প্রেরিত করে । দ্বিতীয় জন তার মাংসাদি (অঙ্গ অবয়ব ফলের রসালো অংশ) কে উন্নিত করনে নিয়োজিত করে। তৃতীয় জন সূর্যাস্ত (অন্তিম চরন) সময় তার অবশেষ (বিকার) কে দূর করে। এভাবে পূত্রবান পিতা আর কি অপেক্ষা করে?"
(ঋগবেদ ১।১৬১।১০, শ্রীরাম শর্মা)
   
=>>অপপ্রচারকারীর দাবী -
               
ঋগবেদ ১/১৬২/১০ ‘পবিত্র মাস(মাংস) দেবোকো লিয়ে উপযোগী করকে পাকাবে(রান্না করবে)’। অর্থঃ পবিত্র মাংস দেবতাকে শ্রাদ্ধ করে রান্না করবে।
দাবীর সত্যতা -
এ মন্ত্রে "মাংস " নামক শব্দের কোন উল্লেখ নেই। অতএব তা দিয়ে শ্রাদ্ধ করার প্রশ্নই আসে না। এ মন্ত্রে প্রাপ্ত পরিপক্ক পদার্থ কে প্রস্তুত করার কথা বলা হয়েছে। নিচে মন্ত্রের পূর্নাঙ্গ অনুবাদ
.
"হে বিদ্বানো! প্রাপ্ত হওয়া অন্ন কে সিদ্ধ করতে প্রস্তুতকারী আপনি যাহা উদর মধ্যে স্থিত অপক্ক ক্রমে বাহির যোগ্য অন্নের গন্ধ অপান বায়ু দ্বারা বাহির হয়ে যায় বা যাহা তাড়ানোর যোগ্য হয়। তাহাকে ছেদন করো এবং প্রাপ্ত হওয়া পরিপক্ক পদার্থ কে পরিপাক করো, এভাবে উহাকে সিদ্ধ করে সুন্দরতা দ্বারা প্রস্তুতকৃত পদার্থ গ্রহন করো।
(ঋগবেদ ১/১৬২/১০, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী)
                   
  
অর্থাৎ বেদে মাংস ভক্ষনের কোন বিধান নেই।
কারন বেদ নিরীহ এবং নির্দোষ প্রাণীদের হত্যার সমর্থন করে না ।
অহিংসা, সত্য,দয়া মানুষের পরম ধর্ম। এর বিপরীতে পশুহিংসা এবং তার মাংস ভক্ষণ করে কি কোন ধর্ম রক্ষা হতে পারে?

  1. অসাধারণ জবাব

    ReplyDelete
  2. জয় সনাতন
    আমরা সত্য কে জানার জন্য প্রস্তুত
    🙏🙏🙏 ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি

    ReplyDelete