https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

সর্বব্যাপী পরমেশ্বরকে কি বসতে দেওয়া সম্ভব

Thursday, July 14, 2016
পূর্নস্যা  বাহনং কুত্র সর্বাধারস্য চাসানম।
ন্বচ্ছস্য পাদ্যমর্ঘং চ শুদ্ধস্যাচমন্য কুত।।
সর্ব্ব্যপকের আবাহন কিভাবে করা যেতে পারে? সর্বাধারকের বাসানোর দরকার কি? নিত্য স্বচ্ছ চরণ ধোয়ানোর জন্য পাদ্য, মুখ ধোয়ানোর জন্য অর্ঘ্য  এবং নিত্য শুদ্ধ আচমন করার জন্য জল কিভাবে দেওয়া যেতে পারে।


কাউকে সেখানে ডাকা হয় যেখানে আহুত ব্যক্তি প্রথম থেকে বিদ্যমান না থাকে।  যে প্রথম থেকেই যেখানে উপস্থিত রয়েছে তাকে আওয়াজ দিয়ে আসার জন্য ডাকাটা একেবারেই মূর্খতা হবে। জড় পাষাণ থেকে নির্মিত মূর্তিতে ভগবান তখন আসেন যখন তার আহ্বান করা হয়। একে মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা  বলা হয়। কণে কণে ব্যপ্ত হওয়াতে সে সর্বদা মূর্তিতে বিদ্যমান আছে ভিতরেও এবং বাইরেও তাকে ডাকার পরে সেখানে উপস্থিত হওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না।
গতির নিয়ম হলো- A thing does not more where it is,  it  can not move where it is not, it moves from where it is to where it is not. অর্থাৎ কোন বস্তু সেখানে গতি করতে পারে না যেখানে সে রয়েছে।  এবং সেই স্থানেও  গতি করতে পারে না,  যেখানে সে নেই। কোন বস্ত যেখানে আছে সেখান থেকে যেখানে সে  নেই সেখানে গতি করতে পারে।
গতি বিধানের এ নিয়ম একদেশী (পরিচ্ছিন্ন) বস্তুতে ঘটতে পারে,  সর্বব্যাপক(বিভু) এ নয়। পরমেশ্বরকে আহ্বান করা নিজেকে এবং সবাইকে প্রতারণা করা মাত্র। আসা-যাওয়া সেখানে হয় যেখানে সে প্রথম থেকে না থাকে।
শ্রীরামচন্দ্রকে বনবাস দেওয়া হলো - কারন সে বনে থাকতো না। সে অযোধ্যা ছেড়ে বনে গিয়েছিলো। ১৪ বৎসর অবধি সমাপ্ত হওয়ার পর সে বন থেকে অযোধ্যায় ফিরে গেল। কেননা ১৪ বৎসর সে অযোধ্যায় ছিলো না। যেমন আকাশ হলো অনন্ত এবং সর্বব্যাপক হওয়াতে তাহার কোন যাওয়া আসা নেই। তেমনি অনন্ত সর্বব্যাপী তথা অন্তর্যামী হওয়ার জন্য পরমাত্মার কোথাও যাওয়া আসা সম্ভব নয়।
বেদান্তদর্শনের একটি সূত্রে বলা হয়েছে যে, আত্মার উৎক্রান্তি গতি এবং আগতি হওয়ার জন্য আত্মা অনু পরিমাণ অথবা হলো পরিচ্ছিন্ন। উৎক্রান্তিগত্যাগতীনাম (বেদান্ত দর্শন ০২।০৩।২৮)
এখানে সূত্রের অর্থ করাতে অনু পদের অধ্যাহার (শব্দের লোপ) করা হয়েছে। এইভাবে একটি স্থান ছেড়ে দেওয়া এবং অন্য স্থানে চলে যাওয়া আত্মার পরিচ্ছিন্ন ( LIMITED) বা অনুপরিমাণ হওয়াকে সিদ্ধ করে। অর্থাপত্তি থেকে এর অর্থ হলো যে, সর্বব্যাপক পরমাত্মাতে আসা যাওয়া সম্ভব নয়।
এই আহ্বান থেকে পরমাত্মার সর্বব্যাপকতার উপরেও প্রশ্নচিহ্ন লেগে যায়। কেননা কণে কণে ব্যপ্ত পরমেশ্বরের মূর্তিতে  না হওয়া সিদ্ধ হয়। সেখানে যদি হতো তাহলে তার আহ্বান কি করে করা যেতো? আর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরেও প্রাণাদির স্থাপন হওয়ার লক্ষণ মূর্তিতে দেখা যায় না। না তো শ্বাস প্রশ্বাস নেয়,  না বলতে  পারে, না তো খাওয়া দাওয়া করে, না হাসে না খেলে এবং না তো যাওয়া আসা করে। পূর্বের মতোই নিষ্ক্রীয় থাকে। যদি মন্ত্রবলে পরমেশ্বরকে যেখানে চাও ডেকে নিয়ে মূর্তিতে প্রবিষ্ট করানো যেতে পারে তাহলে প্রিয় জনের মৃত্যু হলে তার আত্মাকে তার শরীরে প্রবিষ্ট করে প্রাণসঞ্চার করা সম্ভব কেন হচ্ছে না? যে সব মন্ত্রগুলিতে সর্বশক্তিমান পরমেশ্বরকে ডাকার শক্তি রয়েছে। সেই সব মন্ত্রগুলোর দ্বারা অল্পশক্তি জীবাত্মা ডাকতে কি বাধা হতে পারে? সত্য তো এটা যে, ঈশ্বরীয় ব্যবস্থাতে হস্তক্ষেপ করে তার নিয়মকে অন্যথা করার শক্তি কারো নেই। যে পদার্থকে (পাষাণাদি) জড়রূপে তৈরী করা হয়েছে সে সকল চেতন হতে পারে না।