
শ্রী নীলকন্ঠ পুরী,যিনি প্রায় শত বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি যত্র তত্র থেকে ঋগবেদের দেড় শত মন্ত্রের সংগ্রহ করে মন্ত্র রামায়ন দিয়ে রাম কথা পরক নামে একটা ভাষ্য লেখেন। এর পর ত্রিশটি মন্ত্রের আর একটা সংকলন মন্ত্র ভাগবত নামক গ্রন্থ বের করেন। যার মধ্যে কৃষ্ণ কথাত্মক ভাষ্য লেখেন। তাছাড়া অল্প বিস্তর ব্যাখ্যাতো তাদের সমর্থনকারী কিছু লোক রয়েছেনেই।এরা সকলেই পৌরাণিক।
কল্যাণ পত্রিকায় এর সমর্থনে প্রায়ই লেখা ছাপা হয়।
তাহলে আসুন এসব পৌরাণিক বিদ্বানদের একটা ভাষ্য দেখে নেই-
ভদ্রো ভদ্রয়া সচমান আগাৎ স্বাসারং জারো অভ্যেতি পশ্চাৎ।
সপ্রকেতৈর্দ্যুগ্নির্বিতিষ্ঠন্নু শদ্ভিবর্ণের নিরামমস্থাৎ।
(ঋগবেদ ১০.৩.৩ / সামঃ ১৫৪৮)
(মন্ত্র রামায়ন পৃষ্ঠা ২১২-২১৩ সং ১৯৬৭ দি ভেঙ্কটেশ্বর মুদ্রাণালয় বোম্বাই থেকে মুদ্রিত)
অনুবাদঃ রামভদ্রের সীতা সহ আগত হলে দন্ড কারণ্যে রামের অনুপস্থিতিতে সীতাকে হরণ করার জন্য রাবন এসেছিলো। সেই সময় সীতার সহচর অগ্নিদেব ছিল। সুতরাং দ্যুলোক থেকে অবতরন করে সীতা সহ রামের সম্মুখে স্থিত হয়ে রামের পত্নি সীতার নির্দোষত্ব সূচিত করে।
(অনুবাদক - শ্রী রাম কুমার রায়,এম.এ)
সমীক্ষাঃ পৌরাণিকরা হনুমানকে রামের অতিশয় শ্রদ্ধাসেবক ভক্ত মেনে থাকেন। রামায়নের মতে হনুমান সমস্ত বেদ বেদাঙ্গের জ্ঞাতা এবং বিদ্বান ছিলেন। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে অনভিজ্ঞ ছিলেন তার শ্রদ্ধেয় রামের বর্ণনা বেদে আছে। তাহলে তিনি রামকে অবশ্যই বলতেন যে, বেদের বর্ণনা অনুয়ায়ী দশানন রাবণ সীতাকে হরণ করেছে। তাকে আর কষ্ট করে সমুদ্র লঙ্ঘন করতে হতো না। যদি রামও বাস্তবে এই তত্তজ্ঞান প্রাপ্ত করতেন, কমপক্ষে তারা সতর্ক হয়ে যেতেন। তাহলে সীতার হরন ও হতো না এবং তাদের এত কষ্ট স্বীকার করতে ও হতো না।
সর্বাধিক আশ্চার্য এই যে, পৌরাণিক জগতের সর্বমান্য সায়ন আচার্য ও এ মন্ত্রের সঙ্গে সহমত পোষন করেন নি। তিনি এ মন্ত্রে রামম শব্দের অর্থ কৃষ্ণ বর্ণ যুক্ত অন্ধকার করেছে। রামাবতার অর্থ করে নি।
আচার্য সায়ন কৃত মন্ত্রার্থ-
"কল্যাণ রূপ ও সেবনীয় ঊষার থেকে সেবন করা অগ্নি গার্হপত্য থেকে আহ্বানীয় প্রাপ্ত হয়। তদনশ্বর শত্রুদের নাশক সে স্বয়ংআগ্রতা ঊষাকে প্রাপ্ত হয়। "
এখন এই মন্ত্রের উপর আর্য জগতের বিদ্বানদের ভাবার্থ দেখুন-
"সূর্য প্রকাশস্বরূপ শক্তির দ্বারা সঙ্গত। যখন সে পূর্বে পলায়নরতা রাত্রি প্রাপ্ত হয়, তখন ক্ষীণ জীর্নায়মান হয়। সেই স্থান থেকে আরো ক্ষীণ হতে থাকে। যখন ঊষা প্রকাশ শক্তির পশ্চাতে প্রকাশমান সূর্য উপরে উঠতে থাকে, তার উপরে উঠার কারনে পৃথিবী ও অনান্য লোকের পৃষ্ঠপরি সুপ্রাপ্ত হয়ে দিন হয়। প্রকাশ শক্তির বর্ণগুলি দ্বারা অন্ধকারে সূর্য প্রবেশ করে। এই রকম বিদ্যা সূর্য বিদ্বান তার জ্ঞান জ্যোতি থেকে মুক্ত জ্ঞান জ্যোতিষ্মান হওয়া অবধি ভ্রান্তিকে সরিয়ে দেয়। জ্ঞানলোক দ্বারা অজ্ঞান অন্ধকার যুক্ত স্থানে প্রবেশ করে তাড়িয়ে দেয়।"
( স্বামী ব্রহ্মমুণি পরিব্রাজক বিদ্যা মার্তন্ড)
সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, এই সব পৌরাণিক পন্ডিতরা এখনো নিজেদের নাম বেদে অন্বেষন করে নি। এদের পদ্ধতি দ্বারা সেটাও সহজে পাওয়া সম্ভব। শুধু নাম পেতে হবে, অর্থ এক রকম বের করে আনাই যাবে। যেমনটি তারা বের করেছে। এবং মন্ত্রের বিকৃত ও হাস্যাস্পদ স্থিতি বানিয়ে দিয়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি)