https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

গীতা বিশ্লেষনঃ ১৪ - ও৩ম্ এ কয়টি অক্ষর রয়েছে এবং এর উচ্চারন বিধি কি?

Monday, May 15, 2017


প্রশ্ন- ওম্ কে গীতায় এক অক্ষর বলা হয়েছে। অথচ এতে তো ৩টা অক্ষর আছে যথা, অ ,উ ,ম। এখন এই ব্যাপারে কি বলবেন?

উত্তর- গীতার শ্লোক দিয়েই শুরু করি-

ओमित्येकाक्षरं ब्रह्म व्याहरन्मामनुस्मरन्।
यः प्रयाति त्यजन्देहं स याति परमां गतिम्।।8.13।।



 "ওমিত্যেকাক্ষরং ব্রহ্ম ব্যাহরন্ মাম্ অনুস্মরন্।
যঃ প্রয়াতি ত্যজন্ দেহং স যাতি পরমাং গতিম্।।"
( গীতা ৮।১৩)
অর্থাৎ ওম্ এই এক অক্ষর ব্রহ্মবীজ উচ্চারণ এবং আমাকে অনুস্মরণ করতে করতে দেহ ত্যাগ করে যিনি প্রয়াণ করেন ,তিনি পরম গতি প্রাপ্ত হন।
উপরের শ্লোকে ওম্ বলতে এক অক্ষরকেই বুঝানো হয়েছে ,এতে কোন সন্দেহ নেই। বৈদিক অন্যান্ন শাস্ত্রসমূহও ওম্ কে এক অক্ষরই বলা হয়েছে। কিন্তু অ-কার, উ-কার, ম-কার কে অক্ষর বলা হয় নাই, এগুলো হল মাত্রা, আর এই তিন মাত্রার সমন্বয়েই এক অক্ষর ওম্ বা ওঙ্কার হয়। এটা আমার কথা নয় আর্য ঋষিদেরই কথা। উপনিষদ থেকেই প্রমাণ দেখুন-
         
          
"যে ব্যক্তি কিন্তু অ ,উ ,ম এই ত্রিমাত্রাত্মক ওঁ এই অক্ষর দ্বারা পরম্ পুরুষকে অভিধ্যান করেন, তিনি জ্যোতির্ময় পরমাত্মা সূর্য্যে মিলিত হন।...।"
(প্রশ্নোপনিষদ্ ৫।৫)
       
"ওমিত্যেতদক্ষরমিদং সর্বম্।"
অর্থাৎ এই সমস্তই- 'ওম্' এই অক্ষরাত্মক।
(মাণ্ডূক্যোপনিষদ্ ১)
          
"অভিধান প্রাধান্যে বর্ণনাকালেও সেই প্রণব আত্মা হতে অভিন্ন। এই ওঙ্কার মাত্রারূপেও বর্তমান। আত্মার পাদসমূহই প্রণবের মাত্রা এবং প্রণবের মাত্রাসমূহই আত্মার পাদ- অকার ,উকার ও মকার ইহারাই প্রণবের মাত্রা।"
(মাণ্ডূক্যোপনিষদ ৮)
আর এই তিন মাত্রা বা কার থেকে পরমেশ্বরের অনেক নাম সূচিত হয় ও গৃহীত হয়। কঠ উপনিষদে নচিকেতা তাহার গুরু যমকে বলিলেন-
          
"ধর্ম হতে ভিন্ন ,অধর্ম হতে ভিন্ন ,এই কার্য ও কারণ হতেও পৃথক এবং ভূত ,ভবিষ্যৎ ও বর্তমান হতেও ভিন্ন বলে যাকে আপনি প্রত্যক্ষ করছেন ,তা ই আমায় বলুন।"
কঠোপনিষদ ১।২।১৪.
            
যম বলিলেন-
"বেদ সমূহ ও সকল ধর্মানুষ্ঠান রূপ তপশ্চর্য্যা যাহার বিষয় বর্ণনা করে ও যাকে মান্য করে এবং যার প্রাপ্তি কামনা করে ব্রহ্মচর্য্য আশ্রমকে অবলম্বন করে ,আমি তোমায় সেই প্রাপ্যবস্তুর সম্বন্ধেই সংক্ষেপে বলছি, ইহা 'ওম্'।"
(কঠোপনিষদ্ ১।২।১৫)
ওম্ কার উচ্চারণ বিধি -
বেদমন্ত্র উচ্চারণের প্রারম্ভে ও অন্তে প্রণব (ও৩ম্) উচ্চারন করতে হয় (মনু ২।৭৪)
ওম্ কার সর্বতা প্লুতস্বরূপে করা উচিৎ
(অষ্টাধ্যায়ীন ৮।২।২৭)
হ্রস্বস্বর "অ" কার উচ্চারন করতে যত সময় লাগে দীর্ঘস্বর "আ" কার উচ্চারনে তাহার দ্বিগুন সময় লাগে এবং প্লুতস্বরে উচ্চারন করিতে সেই দীর্ঘস্বরের তিনগুন সময় লাগে অর্থাৎ তিনিটি "অ" বর্ণ ঠিক পর পর উচ্চারন করিবার মতো বুঝতে হবে।
"ও" এবং "ম" এর মধ্যে যে সংখ্যাবাচক "৩" অক্ষরটি ব্যবহার হয়,  তা প্লুতস্বর চিহ্ন। এই প্লুতস্বরকে তিমাত্র স্বর বলে।