https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ব্যাসদেব কি বেদকে চারভাগে বিভক্ত করেছেন?

Tuesday, July 25, 2017

বিষ্ণুপুরাণ তথা মহাভারত আদি গ্রন্থে বলা হয়েছে যে,  প্রথমে এক বেদ ছিলো।  পরবর্তীতে ব্যাস এবং তার শিষ্য বৈশম্পায়ন বেদ কে চার ভাগে ভাগ করে তার নাম ঋগবেদাদি রেখেছে। কিন্তু এ ধারনা সম্পূর্ণ ভ্রমমূলক। যেমনঃ  মহাভারতের মধ্যে এক জায়গায় বেদ এক হওয়ার কথা মিলে, তেমনি অন্য জায়গায় চার বেদের উল্লেখ মিলে।  বৈদিক সাহিত্যে চার বেদ এতোটাই প্রসিদ্ধ যে তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ ভ্রমমূলক।  কারন বেদই চার বেদের উৎপত্তির পক্ষে স্পষ্ট সাক্ষ্য  দেয় -

তস্মাৎ যজ্ঞাত্ সর্বহুত ঋচঃ সামানি জজ্ঞিরে।
ছন্দাংসি জজ্ঞিরে তস্মাৎ যজুস্তস্মাদজায়ত।।
(ঋঃ ১০।৯০।৯, যজুঃ ৩১।৭, অথর্বঃ ১৯।৬।১৩)

অর্থাৎ সেই পূজনীয় পরমেশ্বর হতে ঋগবেদ, সামবেদ উৎপন্ন হয়েছে এবং অথর্ববেদ ও যজুর্বেদ তাহা হতে উৎপন্ন হয়েছে।

বাল্মীকি রামায়নে যখন শ্রীরাম এবং লক্ষ্মণ কিষ্কিন্ধা পর্বতে ছিলো, তখন রামচন্দ্র হনুমান জীর কথা শুনে এ কথা বলেন -

ন অন ঋগবেদ বিনীতস্য ন অ যজুর্বেদ- ধারিন।
ন অ সামবেদ বিদুষ শক্যম এবম বিভাষিতু মদম।।
( বাল্মীকি রামায়ন ৪।৩।২৮)

ঋগবেদ অধ্যয়নে অনভিজ্ঞ এবং যজুর্বেদে যার বোধ নেই তথা যার সামবেদ অধ্যয়ন নেই , সেই ব্যক্তি এইরূপ পরিস্কৃত বাক্য বলতে পারবে না।

বাল্মীকি রামায়নের এই শ্লোক দ্বারা স্পষ্ট যে, সেই সময় ঋগবেদাদি পৃথক পৃথক ছিলো।  তাহলে তার হাজার বছর পর ব্যাস কালে তার এক হওয়া এবং ব্যাস আদি দ্বারা তার চার বিভাগ ইহা কি প্রকারে স্বীকার করা যেতে পারে?

এখন প্রশ্ন এই যে, ব্যাসদেব যদি বেদ কে চার ভাগে ভাগ না করে থাকে তবে তার নাম বেদব্যাস কেন হলো?

বেদব্যাস নাম তার বেদ কে বিভক্ত করার জন্য হয় নি   ব্যাসদেব বেদ অধ্যয়ন - অধ্যাপন দ্বারা বেদার্থ বিস্তার করেছিলেন এজন্য তার নাম "বেদব্যাস" হয়েছিলো। পারাপারের মধ্য রেখাকে "ব্যাস" বলা হয়।  অর্থাৎ ঋগবেদের আরম্ভ থেকে অথর্ববেদের পার পর্যন্ত চার বেদ পড়েছিলেন। আর শুকদেব এবং জৈমিনি প্রভৃতি শিষ্যদের পড়িয়েছিলেন।  বাস্তবিক পক্ষো তার জন্ম নাম ছিলো "কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন"।  যদি কেউ বলে যে, ব্যাসদেব বেদ চার ভাগে বিভক্ত করেছিলেন। একথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেননা ব্যাসদেবের পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ, পরাশর, বশিষ্ঠ এবং ব্রহ্মা প্রভৃতিও চারবেদ অধ্যয়ন করেছিলেন।