https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

গীতা বিশ্লেষণঃ৪৯- পরজম্ম কি ঠিক? গীতা এই ব্যাপারেকি বলে?

Friday, July 21, 2017
                      সম্পর্কিত চিত্র
প্রশ্ন- পরজম্ম কি ঠিক? কিভাবে ঠিক?
আপনারা কি তা মানেন? গীতা এই ব্যাপারে
কি বলে?

উত্তর- আমরা সকলে প্রায়ই ভাবি, আমরা এক
ঈশ্বরের সন্তান হয়েও কেন জম্মগত ভাবে
ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়, ভিন্ন ভিন্ন আচার
অনুষ্ঠান পালন করে আসা জাতিগুলোতে জম্ম
নেই? কেন জীব গাছপালা পশুপাখি হয়েও
জম্ম নেই? কেন দুটি শিশু একই সময়ে জম্ম
নিলেও কেহ হিন্দুর ঘরে, আবার কেহ মুসলিম
ঘরে বা আরো অন্য অনেক সম্প্রদায়ের ঘরে
জম্ম নেই? শ্রষ্টা এক হলে এত বৈচিত্রতা
কেন? যার ফলে সৃষ্টি হয় নানাবিধ কলহ-
বিবাধ, তথা সংঘাত।
.
প্রকৃত পক্ষে এগুলো তো যার যার কর্মফল
ভিন্ন কিছুই নয়! যিনি ভালো কর্ম করেন তার
ভালো জম্ম আর যিনি খারাপ কর্ম করেন
তিনি নিচু যোনিপ্রাপ্ত হন, আর এটাই হল
জম্মান্তরবাদ। এখন অনেকে বলবে যে তা
অসম্ভব! কারণ আমরা জম্মান্তরবাদ মানি না,
জম্মান্তরবাদ বলে কিছু নেই। তাদের প্রতি
আমার প্রশ্ন, যদি জম্মান্তরবাদ নাই থাকে
তহলে জম্মের শুরুতেই কেন একটি শিশু
মুসলিমের ঘরে, আর আরেকটি শিশু হিন্দুর ঘরে
জম্ম নিয়েছি? কেন একটি শিশু ধনীর ঘরে ও
আরেকটি শিশু গরিবের ঘরে জম্ম নেয়?
আপনার কথানুসারে যদি পূর্ব জম্মের কর্মফল
বলে কিছু নাই থাকে তাহলে শ্রষ্টা কেন এই
বহু নীতি অনুসরণ করলেন? এর ফলে ওনাকে কি
ন্যায়কারী বলা যাবে? তিনি তো তাহলে
অন্যায়কাী হয়ে যাবেন! কারণ কোন কারণ
ছাড়াই তিনি কাওকে ধনী, কাওকে গরীব,
কাওকে হিন্দু, কাওকে মুসলমান বানীয়ে
দিলেন! এটা কি শ্রষ্টার কার্য হতে পারে?
যদি বল যে তিনি পরীক্ষা নিচ্ছেন, তাহলেও
কথাটা যৌক্তিক নয়। কারণ, পরীক্ষাই যদি
নিয়ে থাকেন তাহলেও সকলের সমান
পরীক্ষা নেওয়াই যৌক্তিক, কারো কঠিন
পরীক্ষা এবং কারো সহজ পরীক্ষা নেওয়া
কোন ক্রমেই হতে পারে না। এটা তো শ্রষ্ঠা
সুলভ আচরণ বা কার্য নয়। প্রকৃত সত্য তো এটাই
যে, এর পেছনে কাজ করে অতীত জম্মের
কর্মফল। এই ব্যাপারে গীতায় অর্জুন
শ্রীভগবানের কাছে প্রশ্ন করে বলেছেন-
.
"হে মহাবাহো, ব্রহ্মলাভের পথে কর্মযোগ ও
ধ্যানযোগ উভয় মার্গ থেকে চ্যুত, নিরাশ্রয়
বিমূঢ় ব্যক্তি, ছিন্ন মেঘের মত বিনষ্ট হয়
নাকি?"
গীতা ৬/৩৮.
.
উত্তরে শ্রীভগবান বলিলেন-
"হে পার্থ! তার এই লোকেও বিনাশ নেই
পরলোকেও নেই। হে বৎস! কল্যানকারীর
কখনো অধোগতি হয় না।" গীতা৬/৪০.
"যোগভ্রষ্ঠ ব্যক্তি পুণ্যকারিদের লোকসকলে
সুদীর্ঘ বৎসরকাল বাস করে সদাচারি ধনীদের
ঘরে  জম্মগ্রহণ করেন।" গীতা ৬/৪১.
"অথবা যোগনিষ্ঠ জ্ঞানীদদের কূলে
জম্মগ্রহণ করেন। এই রকম জম্ম এই লোকে অতি
দূর্লভ।" গীতা ৬/৪২.
"হে কুরুনন্দন! সেই জম্মে পূর্বজম্ম থেকে সেই
বুদ্ধিযোগ লাভ করেন এবং পূর্ব জম্মকৃত
সাধনের পর হতে সিদ্ধিলাভের জন্য অধিকতর
প্রযত্ন করতে থাকে।" গীতা ৬/৪৩.
"যোগভ্রষ্ট যোগী পূর্বজম্মের অভ্যাসবশেই
যেন অবশ হয়ে সেই পূর্ব জম্মকৃত যোগ
অব্যাসের প্রতি আকৃষ্ট হয়, এরূপ যোগস্বরূপ
জানতে ইচ্ছুক ব্যক্তিও বেদোক্ত
কর্মানুষ্ঠানের ফল অতিক্রম করে।" গীতা
৬/৪৪.
"যোগী বর্তমান জম্মে পূর্বজম্ম অপেক্ষা
অধিকতর প্রচেষ্টা করে নিষ্পাপ হন ও পরে
অনেক জম্মে সংসিদ্ধ হয়ে পরম গতি লাভ
করেন।" গীতা ৬/৪৫.
"যোগী ব্রত উপবাসাদি পালনকারী
তপস্বিগণের চাইতে শ্রেষ্ঠ, শাস্ত্রজ্ঞানীগণ
ের চাইতেও, এমন কি যজ্ঞপরায়ন কর্মীগণের
চেয়েও শ্রেষ্ঠ। তাই হে অর্জুন! যোগী_হও ।"
গীতা ৬/৪৬.
.
প্রশ্ন হল কখনই বা জীব উত্তম জম্ম ও অধগতি
বা অধম জম্ম লাভ করে এবং কখন মুক্তি লাভ
করেন? এই ব্যাপারে শ্রীভগবান বলছেন-
.
"যখন সত্ত্বগুণ বৃদ্ধিপায় (তখন যদি) দেহীর
মৃত্যু হয়, তখন উত্তম তত্ত্বজ্ঞানীগণের দিব্য
লোকসমূহ লাভ করেন।" গীতা ১৪/১৪.
"রজগুণের প্রাবল্যে মৃত্যু হলে কর্মাসক্ত মনুষ্য
মধ্যে জম্ম হয়, সেইরূপ তমোগুণের প্রাবল্যে
মৃত্যু হলে মূঢ় যোনিগুলোতে জম্ম হয়।" গীতা
১৪/১৫.
"দেহ উৎপত্তির কারণ এই  তিনগুণ অতিক্রম
করে জীব জম্ম-মৃত্যু-জরা-দুঃখ হতে মুক্ত হয়ে
অমৃতত্ব লাভ করে।"
গীতা ১৪/ ২০.
.
অর্জুন বলিলেন-
"কি কি চিহ্নের দ্বারা বোঝা যাবে যে
সাধক এই তিনগুণ অতিক্রম করেছেন? তাঁর
আচরণই বা কিরূপ? কিভাবে এই
তিনগুণ অতিক্রম করেন ?" গীতা ১৪/২১.
.
প্রতি উত্তরে ভগবান বলিলেন-
"হে পান্ডব! যিনি সত্ত্বগুণের প্রকাশ,
রজোগুণের প্রবৃত্তি ও তমগুণের মোহ
আবির্ভাব হলে বিদ্বেষ করেন না এবং
নিবৃত্ত হলে আকাঙ্ক্ষাও করেন না, তিনিই
ত্রিগুণাতীত।" গীতা ১৪/২২.
"উদাসীনের মত থেকে যিনি গুণসকলের কার্য
সকলের দ্বারা বিচলিত হন না। গুণসমূহ
স্বকার্যে প্রবৃত আছে-এইরূপ বিচার করিয়া
অবস্থান করেন, চঞ্চল হন না (তিনিই
গুণাতীত)।"
গীতা ১৪/২৩.
"যিনি সুখে ও দুঃখে সমভাব এবং আত্মস্বরূপে
অবস্থিত থাকেন। যিনি মৃত্তিকা, পস্তর খন্ড
ও সোনাকে সমজ্ঞান করেন এবং প্রিয় ও
অপ্রিয় বস্তুতে যার সমবুদ্ধি। যিনি ধীর এবং
নিন্দা ও আত্মপ্রশংসাকে তুল্যজ্ঞান করেন,
সম্মানে ও অপমানে এবং মিত্র পক্ষ ও শত্রু
পক্ষে যিনি সমবুদ্ধি সম্পন্ন। তিনি গুণাতীত
বলিয়া কথিত হন।" গীতা ১৪/২৪,২৫.
.
প্রশ্ন হল এইগুণ সকলকে অতিক্রম করা যায়
কিভাবে? এই ব্যাপারে ভগবান বলেছেন-
"যিনি ঐকান্তিক ভক্তিযোগে আমাকেই
সেবা করেন, তিনি এই গুণসকল সাম্যকরূপে
অতিক্রম করিয়া ব্রহ্মলাভের যোগ্য হন।"
গীতা ১৪/২৬.

  1. যিনি ভালো কর্ম করেন তার ভালো জম্ম আর যিনি খারাপ কর্ম করেন তিনি নিচু যোনিপ্রাপ্ত হন, আর এটাই হল জম্মান্তরবাদ। এখন প্রশ্ন হলো সকোল মানব জাতি এক যৌনপ্রাপ্ত দ্বারায় জম্ম গ্রহণ করে, কিন্তু কর্ম দ্বারায় ফল ভোগ করে তা ও ঠিক কিন্তু #নিচু যোনিপ্রাপ্ত হন এটা ঠিক বুঝলাম না দাদা। একটু বুঝিয়ে বলেন।

    ReplyDelete