বেদের মহত্ব সনাতন ধর্মে সর্বাপেক্ষা অধিক এবং ঐশ্বরীয় গ্রন্থ নামে সমাদৃত। কারন বেদের প্রকাশকর্তা স্বয়ং ঈশ্বর যিনি ঋষিদের হৃদয়ে বেদ প্রকাশ করেছেন। এবং ঋষিদের নিকট হতে ক্রমে ক্রমে এই বেদ আমরা পুস্তক আকারে লাভ করেছি। বেদের মূল ভাষা সংস্কৃত হওয়ায় তার ভাষ্য অনেক পন্ডিতবর্গ নিজ নিজ শৈলীতে করে গিয়েছেন।
প্রাচীন ভাষ্যকারদের মধ্যে সায়নাচার্য্য, মহিধর, উব্বট, এবং পশ্চিমা ভাষ্যকারদের মধ্যে Griffith, Maxmuller অন্যতম। কিন্তু কেউই সম্পূর্ণরূপে বেদের গূঢ় রহস্য ভেদ করতে পারেন নি। তাই তাদের ভাষ্যে ত্রুটি বিচ্যুতি থেকেই গিয়েছে। সেই ভাষ্যের ত্রুটি গুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক সমালোচিত দাবী হচ্ছে বেদে অশ্লিলতার বর্ণন। অপপ্রচারকারীরা এসব জায়গাগুলো সম্মুখে উপস্থাপন করে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে, বেদে যেহেতু অশ্লিল বর্ণনা রয়েছে সেহেতু এটা ঈশ্বরীয় গ্রন্থ হতে পারে না। সেরকমই একটি দাবীর উল্লেখ নিম্নে করে তাহার খন্ডন করা হইবে -
♦ উর্বশী, মিত্রবরুণ এবং বসিষ্ঠ কথা -
উতাসি মৈত্রাবরুণো বসিষ্টোর্বশয়া ব্রহ্মন্মনসোহধিজাতঃ।
দ্রপ্সং স্কন্নং ব্রহ্মণা দৈবেন বিশ্বেদেবাঃ পুষ্করে ত্বা দদন্ত।।
(ঋগবেদ ৭।৩৩।১১) (নিরুক্ত ৫।১৪)
সায়ন উক্ত মন্ত্রের ভাষ্য এরূপ করেছেন -
" উত অপি চ হে বসিষ্ঠ মৈত্রাবরুণঃ মিত্রাবরুণয়োঃ পুত্রঃ অসি। হে ব্রহ্মণ্ বসিষ্ঠ উর্বশয়াঃ অপ্সরসঃ মনসঃ মমার্য় পুত্রঃ স্যাদিনীদৃশাত সংকল্পাত্ দ্রপ্সং রেতঃ মিত্রাবরুণয়োরুর্বশী দর্শনাত্ স্কন্নম্ আসীত্ --- এবং জাতং ত্বা ত্বাং দৈবেন দেবসমন্ধিনা ব্রহ্মণা বেদরাশিনা অহংভূবা যুক্তং পুষ্করে বিশ্বে দেবাঃ অদদন্ত অধারয়ন্ত"
অর্থাৎ আরো হে বসিষ্ঠ! তুমি তুমি মিত্র ও বরুণের পুত্র। হে ব্রহ্মণ বসিষ্ঠ উর্বশী অপ্সরার মন হতে জাত পুত্র। মিত্র ও বরুণের উর্বশী দর্শনে বীর্য নির্গত হয়েছিলো, বিশ্বদেবগন দৈব স্তোত্রদ্বারা তোমায় পুষ্কর মধ্যে ধারণ করেছিলো।
বিচারঃ সায়নের প্রদত্ত এই ভাষ্য অপপ্রচার মহলে বহুল প্রচারিত। কারণ বেদে যদি একটুও অশ্লিলতার আভাস পাওয়া যায় নিন্দাকারীরা তা বৃহত্তর আকারে প্রকাশ করে। যদিও এই সুযোগ সায়ন নিজেই করে দিয়েছে, কারণ মন্ত্রের ভাষ্যতে তিনি উক্ত ঘটনাকে ঐতিহাসিকভাবেই বর্ণনা করেছেন। কোনরূপ আধ্যাত্মিক বা অলংকারীক বর্ণনার আভাস তিনি দেন নি । কিন্তু বেদ বাণী নিত্য গূঢ রহস্যপূর্ণ ঐশ্বরীক জ্ঞান, তাহাতে এরূপ অশ্লিল বর্ণনা থাকা সম্ভবপর নয়। মন্ত্রে মিত্র বরুণ না তো কোন দেহধারী ব্যক্তি আর না তো তারা অসংযমী পুরুষ যাদের কি না উর্বশী দর্শনে বীর্যপাত হতে পারে। পরন্ত মিত্র বরুণ বিশ্বের ভৌতিক পদার্থের নাম মাত্র। যথাঃ
" দ্যাবাপৃথিবী মিত্রবরুণো" (শ০ ১২।৯।২।১২)
"প্রাণাপানৌ মিত্রাবরুণৌ" (তৈ০ ৩।৩।৬।৯)
"অয়ং বৈ বায়ুমিত্রো যোহয়ং পবতে" (শ০ ৬।৫।৪।১৪)।
অর্থাৎ দ্যাবাপৃথিবীকে মিত্র বরুণ বলে। প্রাণ অপানের নাম মিত্র বরুণ। এই গতিশীল বায়ু মিত্র। ইত্যাদি অনেক প্রমাণ রয়েছে যাহাতে মিত্র বরুণ কে ভৌতিক পদার্থের বাচক বলা হয়েছে। তথা এই স্থলে প্রদত্ত নিরুক্তকার শব্দও মিত্র ও বরুণ কে ভৌতিক পদার্থই সিদ্ধ করে -
অপ্যসি মৈত্রাবরুণো বসিষ্ঠ। উর্বশয়া ব্রহ্মণ্ মনসোহধিজাতঃ। দ্রপসং স্কন্নম্। ব্রহ্মণা দৈব্যেন। দ্রপ্সঃ সংভৃতঃ। প্সানীয়ো ভবতি। সর্বে দেবাঃ পুষ্করে ত্বাধারায়ন্ত। পুষ্করমন্তরিক্ষম্। পোষতি ভূতানি। উদকং পুষ্করম্। পূজাকরম্। পূজয়িতব্যম্। ইদমপীতরৎপুষ্করমেতস্মাদেব। পুষ্করং বপুষ্করং বা। পুষ্পং পুষ্পতেঃ।
(নিরুক্ত ৫।১৪)
এখনে মন্ত্র উল্লেখিত শব্দ গুলোর অর্থ নিরুক্তাকার নিম্নরূপে করেছেন -
দ্রপ্সঃ সংভৃতঃ, প্সানীয়ো; বিশ্বেদেবাঃ সর্বে দেবাঃ ; অদদন্তঃ অধারায়ন্ত ; পুষ্করম্ঃ অন্তরিক্ষম্।
মিত্র এবং বরুণের অর্থ এখানে নিরুক্তাকার দেন নি কিন্তু পুষ্কর শব্দের অর্থ অন্তরিক্ষ করেছেন যেখানে অন্তরিক্ষরূপ পুষ্করে মিত্র এবং বরুণ হতে উৎপন্ন বসিষ্ঠ কে সমস্ত দেব ধারণ করেছেন। এই বর্ণন অনুসারে তো মিত্র বরুণ আকাশে স্থিত কোন ভৌতিক পদার্থই সিদ্ধ হয়। অন্য স্থলে নিরুক্তাকার মিত্র এবং বরুণ কে আকাশীয় ভৌতিক পদার্থই সিদ্ধ করেছেন -
মেঘোদকের নিচে প্রেরিতকারী অগ্নয়াত্মা কে মিত্র বলা যায় -
" মিত্রো জনাতায়াতয়তি প্রণুবাণ শব্দং কুর্বন্ মিত্র এবং ধারয়তি পৃথিবী চ দিবং চ মিত্রঃ কৃষ্টীরনিমিষন্নভি বিপশ্যতীতি। কৃষ্টয় ইতি মনুষ্যনাম কর্মবন্তো ভবন্তি বিকৃষ্টদেহা বা। মিত্রায় হব্যং ঘৃতবজ্জুহীতেতি ব্যাখ্যাতম্। জুহোতিদানকর্ম।।"
(নিরুক্ত ১০।২২)
"প্রণুবান স্তনয়িত্নুশব্দং কুর্বন্ মিত্র ( ইতি দূর্গাচার্য্য)
অর্থাৎ মিত্র (মেঘ দ্বারা) শব্দ করে লোকদের কর্মে প্রবৃত্ত করেন এবং দৌ ও পৃথিবীকে ধারন করেন, ইত্যাদি।
স্বামী ব্রহ্মমুনি জী মিত্র অর্থ নিম্নরূপে করেছেন -
মিত্রঃ Radiation Pressure. বৃষ্টেরন্তরং প্রত্নুবাণঃ প্রকৃষ্টং শব্দং কুর্বাণঃ প্রমরণাত্ ত্রায়মাণঃ, আর্দ্রতা সিঞ্চন স্নেহময়ঃ প্রবহমাণো বায়ুর্জনান সমত্নাদ্ বাতয়তি প্রযত্নে প্রেরয়তি, ইদানীং বৃষ্টিঃ সমাপ্তা য়য়ুং জনাঃ স্বস্বকার্য কুরুত বিশেষতঃ কৃষকান্ প্রৈরয়তি ক্ষেত্রাণি কর্ষত বিলিখত বীজং বপত।
এভাবে নিরুক্তকার বরুণ শব্দের অর্থ নিম্নভাবে করেছেন -
নীচীনদ্বারং বরুণঃ কবন্ধং মেঘম্। কবনমুদকং ভবতি তদস্মিন্ ধীয়তে, উদকমপু কবন্ধমুচ্যতে বন্ধিরনিভৃতত্বে, কমনিভৃতং চ প্রসৃজতি, দ্যাবাপৃথিব্যৌ চান্তরিক্ষং চ মহত্বেন, তেন সবস্য ভূবনস্য রাজা যবমিব বৃষ্টির্ব্যুনত্তি ভূমিম্।।
(নিরুক্ত ১০।১৪)
ভাষ্য - " বরুণ" ইতি দেবতাপদম্। বৃণোতি হি স আকাশম্। " বৃঞ্ বরণে" সতঃ কৃবৃদারিভ্য উনন্" (উণা০ ৩।৫৩) সুক্ষজলযুক্তৌ বায়ুর্বৃষ্টি যঃ প্রেরয়তি - আকাশং বৃত্বা তিষ্ঠতি স বরুণঃ
বরুণ মেঘ কে নিচে দৌ পৃথিবী এবং অন্তরিক্ষের প্রতি ছেড়ে দেয় এই কর্মের কারনে ভূবনের রাজা (বরুণ) ক্ষেতে সিঞ্চনের ন্যায় ভূমিকে ভরিয়ে দেন।
স্বামী ব্রহ্মমুনি জী নিম্নরূপে বরুণ অর্থ বিশ্লেষন করেছেন
বরুণো দেবঃ সুক্ষ্মজলযুক্তো বায়ুঃ ( Electrification of clouds by induction) সূর্যমাচ্ছাদয়তি ক্ষেত্রে ধান্যবীজমিব বিকিরতি ক্ষিপতি সামর্থ্যজলবৃষ্টিম্। সা চ বৃষ্টির্ভূম ভূমু ব্যুনত্তি কলৈদয়তি। ইতু বর্ষকর্ম বরুণস্য কার্যম্।
মিত্র এবং বরুণের বর্ষার সাথে সম্পর্ক তা নিম্ন মন্ত্রগুলোতে আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে -
মিত্রবরুণো ত্বা বৃষ্টয়াবতাম্।। (যজু০ ২।১৬)
অর্থাৎ মিত্র ও বরুণ তোমাকে এবং তোমার রাষ্ট্রকে বৃষ্টি দ্বারা রক্ষা করে।
মিত্রাবরুণো বৃষ্টয়াধিপতী (অর্থব০ ৫।২৪।৫)
অর্থাৎ মিত্র ও বরুণ বৃষ্টির অধিপতি
উপরিউক্ত প্রমাণ দ্বারা মিত্র এবং বরুণ বৃষ্টির সাথে সম্বন্ধযুক্ত আদিত্য তেজ এবং অভ্রধারক বায়ু ইহাই সিদ্ধ হয়। আদিত্য তেজ এবং অভ্রধারক বায়ু বৃষ্টির কারণ এটা নিরুক্তে আরো স্পষ্ট -
শুনাসৌরৌ শুনো বায়ুঃ শু এতত্যন্তরিক্ষে, সৌর আদিত্যঃ সরণাত্।।
(নিরুক্ত ৯।৪০)
আদিত্য এবং বায়ু জল বৃষ্টি সম্পাদন করে পৃথিবী সিঞ্চন করে।
এই প্রকার মিত্র এবং বরুণ মেঘমন্ডলের সাথে যুক্ত আদিত্য এবং বায়ুর বাচক সিদ্ধ হওয়াতে উর্বশী এখানে বিদ্যুৎ এর নাম। নিরুক্তে -
উর্বশয়াপ্মরা উর্বভ্যশ্নুতে........ অপ্সরা অপ্সারিণী......অপ্স ইতি রূপনান.....ব্যাপনীয়ম্।
(নিরুক্ত ৫।১৩)
"অপ্সরা ইত্যনেন বিদ্যুৎখলুলক্ষ্যতে " অর্থাৎ অপ্সরা বিদ্যুৎ লক্ষণীয়।
দূর্গাচার্য বলেছেন - "উর্বশী বিদ্যুৎ"
স্কন্ধস্বামীও একই কথা বলেছেন - "নিত্যপক্ষে তু উর্বশী বিদ্যুৎ" অর্থাৎ নিত্যপক্ষে উর্বশী বিদ্যুৎ।
এই প্রকার মন্ত্রের বিজ্ঞানদৃষ্টিতে -
"বৃষ্টিবিজ্ঞানমেবাত্র, উর্বশী বিদ্যুৎ তৎসম্বন্ধং বৃষ্টিবিজ্ঞানমস্তি। অত্র মন্ত্রগতস্য "পুষ্করে" পুস্করশব্দত্যার্থোহন্তরিক্ষউক্তম। মিত্রবরুণাবপ্যন্নান্তরিক্ষস্খাবেব পদার্থবিত্যনায়াসেন সিদ্ধয়তি থৌ চ বৃষ্টিপ্রসঙ্গে স্থাতামুপয়ুক্তৌ। মেঘোদকস্য নীচৈঃ প্রেরয়িতাহ্অগ্নয়াত্মা দেবো মিত্রঃ " প্রণুবাণঃ শব্দং কুর্বন (দূর্গাচার্য্য) মিত্রাবরুণো ত্বা বৃষ্টয়াবতাম্" (যজু০ ২।১৬) "মিত্রাবরুণাবপি বায্বাদিত্যৌ " (স্কন্ধস্বামী) এবং প্রমাণৈরায়তমিদং বৃষ্টিসম্বদ্ধাবাদিত্যবায়ু মিত্রাবরুণৌ, আদিত্য মেঘস্য প্রৈরয়িতৃত্বাত্ - মিত্রঃ। বায়ুর্মেঘস্য বরয়ুতৃত্বাদ্ ধারয়িতৃত্বাদ বরুণঃ। তয়োর্মিত্রাবরুণয়োঃ রেতঃ - মেঘরূপং চৎকন্দ পুনর্বসিষ্ঠস্যোদকসমূহস্য প্রকটীভাব - ইত্যালঙ্কারিকভূক্তম্" (স্বামী ব্রহ্মমুনি)
অর্থাৎ বৃষ্টিবিজ্ঞান মাত্র উর্বশী বিদ্যুৎ এবং তাহার সম্বন্ধি বৃষ্টিবিজ্ঞান । মন্ত্রে পুষ্কর শব্দে অন্তরিক্ষ। অর্থাৎ মিত্র বরুণ অন্তরিক্ষ স্খানের পদার্থ সিদ্ধ হয় এবং বৃষ্টিপ্রসঙ্গে যুক্ত হয়। মেঘ উদক এর নিচে প্রেরনাকারী অগ্নয়াত্মা দেব মিত্র (প্রণুবাণঃ শব্দং কুর্বন ; দূর্গাচার্য্য) মিত্রাবরুণ বৃষ্টয়াবতাম্ (যজু০ ২।১৬) "মিত্রবরুণ বায়্বাদিত্যৌ" (স্কন্ধস্বামী) এরূপ প্রমাণে এই বৃষ্টিসম্বন্ধি আদিত্যবায়ু মিত্র বরুণ, আদিত্য মেঘের প্রেরণাকারী - মিত্রঃ। এরূপে মিত্র বরুণের রেতঃ - মেঘরূপ বসিষ্ঠ অর্থাৎ উদকসমূহের প্রকট ভাব - ইত্যাদি অলঙ্কারযুক্ত।
এই প্রকার স্পষ্টিকরণের অনন্তর নিরুক্তবচনের অভিপ্রায় বিদিত হওয়া যায় যে, মেঘের মধ্যে চমকানো বিদ্যুৎ উর্বশী। তাহার চমকানোর পর মিত্র অর্থাৎ মেঘ কে নিচে প্রেরিত কারী স্তনয়িত্নুশব্দকারী ধর্মরূপ রশ্মিসমূহ অগ্নয়াত্মা এবং বরুণ অর্থাৎ মেঘ কে বিস্তার কারী সুক্ষ ভাষ যুক্ত বায়ুর রেতঃ ক্রমশঃ তেজ এবং অপ নির্গত হয়। বসিষ্ঠ অর্থে স্কন্ধস্বামী বলেছেন " বসিষ্ঠোহপ্যাচ্ছাদিত উদকসংঘাত" তথা বৃষ্টি বিন্দুর জন্য "দ্রপ্সং " শব্দ "আ নো দ্রপ্স মধুমন্তো "(ঋ০ ১০।৯৮।৪) মন্ত্রে স্পষ্ট। তথা "সৌর্যং রেতঃ" (তৈ০ ৩।৯।১৩।৫) " রেতঃ বা আপঃ (ঐ০ ১।৩) যাহার বর্ণনা বেদের উক্ত মন্ত্রে। যথাঃ
উতাসি মৈত্রাবরুণো বসিষ্টোর্বশয়া ব্রহ্মন্মনসোহধিজাতঃ।
দ্রপ্সং স্কন্নং ব্রহ্মণা দৈবেন বিশ্বেদেবাঃ পুষ্করে ত্বা দদন্ত।।
(ঋগবেদ ৭।৩৩।১১)
অথ মন্ত্রার্থঃ -
হে আকাশীয়োদকসমূহ! ত্বং রশ্মিসমূহবতঃ সূর্যস্য সূক্ষাবাষ্পবতো বায়োশ্চ সহযোগতঃ সম্ভূতোহসি, হে পরিবৃদ্ধবৃষ্টিজল! ত্বভূর্বশয়া বিদ্যুতো মনসঃ কান্তাত্ -চঞ্চলঘর্ষণবলাত্ প্রকটীভূতঃ "মন্যতে কান্তিকর্মা" (নিঘ০ ২।৬) বৃষ্টিবিন্দুঃ স্কন্নো যদাহভূত্ তদৈব বিশ্বে দেবা রশ্ময়ঃ - "এতে বৈ রশ্ময়ো বিশ্বে দেবাঃ" (শত০ ১২।৪।৪।৬) ত্বাং পরিবৃদ্ধেন তেজসা - অন্তরিক্ষে ধারয়ন্তি।। ( স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক)
ভাষ্যার্থঃ (বসিষ্ঠ মৈত্রাবরুণ উতাসি) হে বসিষ্ঠ বিস্তারিত বৃষ্টিজল! তুমি মিত্র ও বরুণ অর্থাৎ ধর্মরূপ রশ্মিসমূহ অগ্ন্য়াত্মা এবং সুক্ষ্মভাষযুক্ত বায়ুর সম্বন্ধী (ব্রহ্মন্ উর্বশয়া মনসোহধিজাতঃ) হে পরিবৃদ্ধ বৃষ্টিজল! তুমি উর্বশী অর্থাৎ বিদ্যুতের তন দ্বারা নয় বরং মনের চঞ্চল ধর্ম দ্বারা বা চমকানো দ্বারা উৎপন্ন "মন্যতেঃ কান্তিকর্মা" (নিঘন্টু ২।৬)। মিত্র - স্তনয়িত্নু শব্দকারীর তেজ এবং বরুণ - অপ্সঘাতকারীর অপ্ স্ববশ দ্বারা বাহির হয়ে পরস্পর মিলে পতিত হয়। এবং ইহার ঐক্যভাব দ্বারাই বৃষ্টিজল তৈরী হয় যা ( দ্রপ্সং স্কন্নমং ত্বা বিশ্বেদেবা ব্রহ্মণা দৈব্যেন পুষ্কর অদদন্ত) বৃষ্টি বিন্দুর রূপে পতিত তোমাকে রশ্মিময় পরিবৃদ্ধ সৌর তেজ দ্বারা অন্তরিক্ষে ধারণ করেন।
।। ইত্যোম।।
নিবন্ধ টি অসাধারণ এবং সমগ্র সনাতন সমাজের জন্য এই যৌক্তিক নিবন্ধটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।।
ReplyDeleteঅসাধারন! প্রতিটি সনাতনীকে এই আর্টিক্যালটি পড়া উচিত।
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDelete