https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

রহস্য -ঈশ্বরে সমতা ও বৈষম্য

Wednesday, April 25, 2018
                   Image result for love you  the world vedas
প্রঃ। শ্রীভগবান্ পূর্বে অনেক বার বলিয়াছেন,'আমার ভক্ত আমার প্রিয়' 'আনাট জ্ঞানী ভক্ত আমার অতীব প্রিয়' (৭।১৭, ১২।১৩-২০); 'আমাকে যাহারা দ্বেষ করে সেই নরাধমদিগকে অসুর-যোনিতে নিক্ষেপ করি' ইত্যাদি কথাও অন্যত্র আছে (১৬।১৮-১৯)। ইহাতে এই বুঝায় যে, তিনি ভক্তবৎসল, অসুর-বিদ্বেষী। এস্থলে কিন্তু বলা হইতেছে, 'আমি সর্বভূতে সমদর্শী ; আমার প্রিয়ও নাই, দ্বেষ্যও নাই। ' ইহা কি পরস্পর-বিরুদ্ধ কথা নহে?
উঃ। একটি কথা মনে রাখা উচিত যে, ঈশ্বরের যদি কোনরূপ সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে তাহা এই যে, যাঁহাতে পরস্পর-বিরুদ্ধ গুনের সমাবেশ হয়। তিনি নির্গুণ হইয়াও সগুণ হন কিরূপ?
অকর্তা হইয়াও জগৎকর্তা হন কিরূপ? পরমেশ্বর সম, শান্ত, নির্বিকার - ইহাই অধ্যাত্ম-তত্ত্ব; কিন্তু তিনিই আবার ভূতস্রষ্টা, ভূতধারক, ভূত-পালক, জীবের প্রভু, সখা, শরণ ও সুহৃৎ। তিনি নিঃসঙ্গ হইলেও জীব তাঁহার সহিত যখন দাস্য, সখ্যাদি ভাব স্থাপন করে, তখন তিনিও ঐ সকল ভাবে সংসৃষ্ট হন, সুতরাং স্বরূপতঃ সমদর্শী হইয়াও তত্তৎস্থলে ভক্তবৎসল ভাবেই প্রকাশিত হন। বস্তুতঃ এই যে ভক্ত-বৎসল্য বা অসুর-বিদ্বেষ, ইহা তাঁহাতে নাই , কারণ তিনি দ্বন্দ্বাতীত। জীব তাঁহার সহিত যেরূপ সম্বন্ধ স্থাপন করে, যেরূপ অন্তঃকরণ লইয়া, যেরূপ ভাব লইয়া তাঁহার নিকট আসে, সে সেইরূপ ভাব প্রাপ্ত হয়- 'যো যচ্ছ্রদ্ধঃ স এব সঃ' (১৭।৩)

। নির্মল স্ফটিকের নিকটে রক্তজবা রাখিলে স্ফটিক রক্তাভ দেখায়, নীলপদ্ম রাখিলে উহা নীলাভ হয়, কিন্তু স্বরূপতঃ স্ফটিক রক্তও নহে, নীলও নহে | দুগ্ধপোষ্য শিশুর প্রতি স্নেহ  দেখাইলে সে তোমাকে দেখিয়া হাসিবে,ঘৃণা-বিদ্বেষ ভাব দেখাইলে সে তোমাকে দেখিয়া মুখ ফিরাইবে। শিশুর শুদ্ধ নির্মল অন্তঃকরণে রাগও নাই,দ্বেষও নাই।উহা তোমারই প্রীতি বা বিদ্বেষের প্রতিক্রিয়া। ভগবানের প্রতি প্রীতি বিদ্বেষও সেইরূপ জীবেরই প্রীতি বা বিদ্বেষের প্রতিক্রিয়া মাত্র।  মেঘ সর্বত্রই সমভাবে বারিবর্ষণ করে,কিন্তু কোনো ক্ষেত্রে শস্য জন্মে,কোথাও জন্মে কণ্টকবৃক্ষ। উহার কারণে মেঘের পক্ষপাতিত্ব নহে,ক্ষেত্রের স্বভাব। বিদ্বেষের ফল বিদ্বেষ,প্রেমের প্রতিদান প্রেম, ইহা স্বভাবেরই নিয়ম। উহার একটি অধ্যাত্মতত্ত্বের কথা,অন্যটি ভক্তিতত্ত্বের কথা।উভয়ই সত্য।