অনেক তথাকথিত অপসম্প্রদায়ী বৈষ্ণব বলে থাকেন তারা বেদ মানেন না, শুধু বৈষ্ণব সিদ্ধান্ত মানেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো একজন বৈষ্ণবের এই কথা বলার কোন অধিকার ই নেই। কারণ পৌরাণিক বৈষ্ণব সিদ্ধান্তই বলছে বেদ মানা বাধ্যতামূলক। যদিও আমাদের নিকট পুরাণ স্বীকার্য নয় তারপরেও দূর্জনতোষণ ন্যায় অনুসারে তথাকথিত বৈষ্ণবদের মুখোশ উন্মোচনের নিমিত্তে তাদেরই গ্রন্থ প্রদর্শন করা হচ্ছে । চলুন দেখে নিই তাদের শাস্ত্র থেকে -
👉 বৈষ্ণবদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বৈষ্ণব হচ্ছেন শম্ভু। ভগবত পুরাণে বলা আছে-
✅নিম্নগানাং যথা গঙ্গা দেবানামচ্যুতো যথা।বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভুঃ পুরাণামিদং তথা।।(ভাগবত- ১২/১৩/১৬)অনুবাদ: নদীসমূহের মধ্যে যেমন গঙ্গা ,দেবগণের মধ্যে বিষ্ণু ও বৈষ্ণবগণের মধ্যে যেমন শিব প্রধান, তদ্রুপ পুরাণনিচয়ের মধ্যে এই ভাগবতই শ্রেষ্ঠ।
🥀 এহেন শ্রেষ্ঠ বৈষ্ণব শম্ভুর মুখেই শোনা যাক বৈষ্ণবের সংজ্ঞা কী-
✅
বেদপরায়ণতাঃ কর্ম্ম কুর্ব্বন্তি বৈদিকম্।।সত্যং বদন্তি যে দেবি নাসূয়ন্তি পরান্ ক্কচিৎ।পরনিন্দাং ন কুর্ব্বন্তি পরস্বং ন হরন্তি চ।।ন স্মরন্তি ন পশ্যন্তি ন স্পৃশ্যন্তি কদাচন।পরদারান্ সুরূপাংশ্চ যে চ তান্ বিদ্ধি বৈষ্ণবান্।।(স্কন্দ পুরাণ বিষ্ণুখণ্ডে-বেঙ্কটাচলমাহাত্ম্য-৬/৫৫-৫৭)।অনুবাদ: যাঁহারা বেদপাঠনিরত হইয়া বৈদিক কর্মের আচরণ করেন, যাঁহারা সত্য কথা কহেন, কদাচ অপরের অসচয়া করছন না, পরনিন্দা বা পরধন হরণ করেন না, পরনারী সুরুপা হইলেও কদাচ স্মরণ , দর্শন বা স্পর্শ করে না তাহাদিককেই বৈষ্ণব বলিয়া জানিবেন।
✅
শ্রুতিস্মৃত্যুক্তমাচারং যো ন সেবেত বৈষ্ণবঃ ।
স চ পাষণ্ডমাপন্নো বৌরবে নরকে বসেৎ।।
(পদ্মপুরাণ, উত্তর খণ্ড- ২৫৩/৩৬)
অনুবাদ: যে বৈষ্ণব শ্রুতি(বেদ)-স্মৃতি বিহিত আচার অনুষ্ঠান না করে পাষণ্ড রৌরব নরকে বাস করে থাকে।
👉 ভাগবতে পুরাণেও বলা হয়েছে -
✅
বেদপ্রণিহিতো ধর্ম্মো হ্যধর্ম্মস্তদ্বিপর্য্যায়ঃ।বদো নারায়ণঃ সাক্ষাৎ সয়ম্ভরিতি শুশ্রম।।(ভাগবত-৬/১/১৪০)অনুবাদ: বেদে যাহা 'কর্ত্তব্য' বলিয়া বিহিত হইয়াছে, তাহাতেই 'ধর্ম্ম' ; তদ্বিপরীত অধর্ম্ম । বেদ সাক্ষাৎ নারায়ণ এবং স্বতঃসম্ভূত।
অর্থাৎ বেদই ধর্ম, বেদে যা বলা আছে তাই ধর্ম। বেদের বাইরে যা আছে তার সব ই অধর্ম। বুঝতেই পারছেন যে বৈষ্ণব বেদ মানেন না অর্থাত তিনি পুরোই অধার্মিক তার বৈষ্ণব সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই।
✅
নাচরেদ্যস্ত্ত বেদোক্তং স্বয়মঙ্গোঽজিতেন্দ্রিয়ঃ। বিকর্ম্মণা হ্যধর্ম্মেণ মৃত্যোমৃত্যুমুপৈতি সঃ।।(ভাগবত-১১/৩/৪৫)অনুবাদ: যে অজিতেন্দ্রিয় ব্যক্তি বেদ বিহিত কর্ম্ম করে না, সে সেই কর্ম্মত্যাগের অধর্ম্মে অনন্ত যমযন্ত্রণা ভোগ করিয়া থাকে।
💥 বৈষ্ণবাচার্য্য শ্রীলরূপ গোস্বামী তাঁর ‘ভক্তিরসামৃতসিন্ধু’ গ্রন্থে ব্রহ্মযামলের প্রমাণ উদ্ধৃত করে লিখেছেন-
✅
শ্রুতি-স্মৃতি-পুরাণাদি-পঞ্চরাত্র-বিধিং বিনা ।ঐকান্তিকী হরেভক্তিরুৎপাতায়ৈব কল্পতে।। শ্রীশ্রীভক্তিরসামৃতসিন্ধু-১/২/১০১অনুবাদঃ শ্রুতি, স্মৃতি, পুরাণ ও পঞ্চরাত্রপ্রভৃতির বিধিকে না মানিয়া যদি কেহ একান্তভাবেও শ্রীহরিভক্তির অনুষ্ঠান করে, তথাপি তাহাতে উৎপাতই লাভ হয়।
অর্থাৎ বৈষ্ণবদের সবচেয়ে নামকরা গ্রন্থ ভাগবতসহ সকল গ্রন্থ ই বলছে বৈষ্ণবদের বেদ মানা বাধ্যতামূলক, বেদের সিদ্ধান্ত মানা বাধ্যতামূলক। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় প্রেমাঞ্জন দাস না বৈষ্ণব, না হিন্দু, না ধার্মিক। তিনি অধর্মের সাগরে বাস করা একটি হাস্যকর পাত্র মাত্র।
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক
0 মন্তব্য(গুলি)