https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ঋগ্বেদ ও শতপথ ব্রাহ্মণে চারকোণা পৃথিবীর মিথ্যাচার খণ্ডন

Thursday, May 18, 2023

 


অপপ্রচারঃ ঋগ্বেদ ১০।৫৮।৩ এ চারকোণা পৃথিবীর কথা আছে ।

খণ্ডনঃ  

যত্তে ভূমিং চতুর্ভৃষ্টিং মনো জগাম দূরকম্ ।
তত্ত আ বর্তয়ামসীহ ক্ষয়ায় জীবসে ॥
ঋগ্বেদ ১০।৫৮।৩ 

স্বামী ব্রহ্মমুনিকৃত ভাষ্যঃ (তে) হে মানসরোগে গ্রস্ত জন ! তব (যৎ-মনঃ) যন্মনোঽন্তঃকরণম্ (চতুর্ভৃষ্টিং ভূমিম্) চতস্রো ভ্রষ্টয়ো ভর্জন্যো বিষমভূমিবিভক্তয়ো যস্যাং তাং ভূমিম্ (দূরকং জগাম) দূরং গতম্ (তে তৎ…) পূর্ববৎ ॥৩॥


অনুবাদঃ (তে) হে মানস রোগগ্রস্ত মানব ! তোমার (যৎ-মনঃ)! যে মন (চতুর্ভৃষ্টিং ভূমিম্) চার অর্থাৎ উঁচু-নিচু , গোল-বক্র , সন্তাপ-কষ্টদাতা,  বিভক্ত-অবিভক্ত ভূমির প্রতি (দূরকং জগাম) দূরে চলে গিয়েছে (তে তৎ…পূর্ববৎ) তা ফিরিয়ে আনি ॥৩॥


  • চতুর্ভৃষ্টিং পদের অর্থ বিচার


পণ্ডিত জয়দেব শর্মা - চতুর্দিক থেকে ভ্রষ্ট গোল ভূমি বা চার পুরুষার্থ 



পণ্ডিত হরিশরণ সিদ্ধান্তালঙ্কার - গোল হওয়ার জন্য চারদিকে নিম্নতর


পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর  -চারদিক থেকে তপ্ত ভূমি



সায়ণভাষ্যঃ হে সুবন্ধো “যৎ “মনঃ “ভূমিং “চতুর্ভৃষ্টিম্ । চতুর্দিক্ষু ভ্রংশো যস্যাঃ সা । তাং “জগাম “তৎ আবর্তয়ামঃ ॥



শ্রী রমেশচন্দ্র দত্তের সায়ণভাষ্যনুবাদঃ চতুর্দিকে ভ্রষ্ট হইয়া যায়, অর্থাৎ খসিয়া খসিয়া পড়ে, এরূপ অতি দূরবর্তী দেশে তোমার যে মন গিয়াছে, তাহাকে আমরা, (ইত্যাদি)।



ড. ভীষ্মদত্ত শর্মার সায়ণভাষ্যনুবাদঃ ... চারদিক..

 



অর্থাৎ এখানে উপলব্ধ কোন ভাষ্য বা অনুবাদেই 'চতুর্ভৃষ্টিম্ ' অর্থ চার কোণা করা হয়নি । সেখানে এককভাবে কেবল এইচ এইচ উইলসনের অনুবাদ কিভাবে প্রামাণ্য হতে পারে যা কিনা প্রচলিত সায়ণভাষ্যের সাথেও সামঞ্জস্যহীন । 


প্রসঙ্গতঃ যদি ' চতুর্ভৃষ্টিম্' অর্থ Four corner of Earth করা হতো তাহলে তা চারদিক বোঝাতো  সায়ণভাষ্যানুযায়ী । কিন্তু উইলসনের অনুবাদে Four cornered earth [ চারকোণা বিশিষ্ট পৃথিবী ] করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ মূর্খতা সুলভ অনুবাদ । উক্ত পাশ্চাত্য অনুবাদকের করা অনুবাদ অনুযায়ী অন্য কোন অভিধানের অর্থও একই দোষে দুষ্ট হওয়ায় অগ্রাহ্য ।


অপপ্রচারঃ শতপথ  ব্রাহ্মণে [৬.১.২.২৯ ] বলা হয়েছে এই পৃথিবীর চারটি কোণা । 

 
খণ্ডনঃ এখানেও অসম্পূর্ণ উদ্ধৃতি ও ভ্রান্ত ব্যাখ্যা । সম্পূর্ণ কণ্ডিকাটি নিম্নরূপ - 


তদাহুঃ । কস্মাদস্যা অগ্নিশ্চীয়ত ইতি যত্র বৈ সা দেবতা ব্যস্রংসত তদিমামেব রসেনানু ব্যক্ষরত্তং যত্র দেবাঃ সমস্কুর্বংস্তদেনমস্যা এবাধি সমভরন্ত্সৈষৈকৈবেষ্টকেয়মেবেয়ং হ্যগ্নিরস্যৈ হি সর্বোঽগ্নিশ্চীয়তে সেয়ং চতুঃস্রক্তির্দিশো হ্যস্যৈ স্রক্তয়স্তস্মাচ্চতুঃস্রক্তয় ইষ্টকা ভবন্তীমাং হ্যনু সর্বা ইষ্টকাঃ । 

 শতপথ ব্রাহ্মণ ৬.১.২.২৯


ইংরেজি অনুবাদঃ Here now they say, 'Wherefore is Agni (the fire-altar) built of this (earth)?' But, surely, when that deity (Pragâpati) became relaxed (fell asunder), he flowed along this (earth) in the shape of his life-sap; and when the gods restored him (put him together), they gathered him up from this earth: this earth then is that one brick , for Agni is this earth, since it is there of that the whole Agni is built up. Now this earth is four-cornered, for the quarters are her corners: hence the bricks are four-cornered; for all the bricks are after the manner of this earth.



বাংলা অনুবাদঃ বলা হয়ে থাকে, এই অগ্নি অর্থাৎ বেদী মৃত্তিকা নির্মিত। যখন দেবতা [ প্রজাপতি ] শিথিল হন তখন রসের সাথে পৃথিবীতে সে নির্গত হলো । জলদেবগণ তাকে উজ্জীবিত করলেন তো একে পৃথিবীতেই একে একত্রিত করলেন । এজন্য পৃথিবী এক ইষ্টকা [ ইট ]। এই পৃথিবীই অগ্নি, কেননা এর দ্বারাই অগ্নি [ বেদী ] বানানো হয়ে থাকে । এই পৃথিবী চারকোণা । দিকই এর কোণ । এজন্য ইটও চার কোণা হয়ে থাকে । সব ইট পৃথিবীরই অনুকরণ । 


এখানে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে চার দিকই মূলতঃ চার কোণ । 

 


এর সাথে পৃথিবীর ভৌগলিক আকৃতির কোন সম্পর্ক নেই । বর্তমানেও সকল কম্পাসে মূখ্যভাবেই উত্তর - দক্ষিণ - পূর্ব - পশ্চিম এই চারিদিকের উল্লেখ থাকে ।