https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

হরফ প্রকাশনীর বৈদিক 'একেশ্বরবাদ' বনাম ইসলামে নবী-অনুসরণের বাধ্যবাধকতা

Sunday, May 25, 2025

🍁 হরফ প্রকাশনীর 'একেশ্বরবাদ ' বেদের পরমাত্মা বনাম ইসলামে নবী-অনুসরণের বাধ্যবাধকতা ❗
 
অধুনা ধর্মতাত্ত্বিক আলোচনায় অনেকেই এমন একটি বস্তুনিষ্ঠ ত্রুটি করে থাকেন তা হলো , কেবলমাত্র শব্দতাত্ত্বিক মিল খুঁজে পেয়ে ভিন্ন ধর্মীয় কাঠামোর অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্যগুলোকে একীভূত বা সমতুল্য করে উপস্থাপন করা। বিশেষত একেশ্বরবাদ(Monotheism) শব্দটি একটি বহুল ব্যবহৃত উদাহরণ , যেখানে কোরান ও বেদকে প্রায়শই একই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখানো হয় যেন উভয়েই একইরূপ 'এক ঈশ্বর'- এ বিশ্বাস করে , এবং সেই সূত্রে উভয়ের দার্শনিক ভিত্তিও নাকি অভিন্ন বা সামঞ্জস্যপূর্ণ । কিন্তু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয় , এই তুলনা সামান্য শব্দমিলের উপর ভিত্তি করে গঠিত একটি স্পষ্ট যুক্তিভ্রান্তি (logical fallacy) বিশেষ করে equivocation fallacy, যেখানে এক শব্দের বিভিন্ন প্রেক্ষিতভিত্তিক অর্থকে গুলিয়ে ফেলা হয় একে শব্দবিভ্রম-জনিত হেত্বাভাস বলে
‎ইসলামে তাওহীদ অর্থাৎ একেশ্বরবাদ এমন এক ধর্মতাত্ত্বিক কাঠামো , যেখানে কেবল আল্লাহকে একমাত্র উপাস্য রূপে মেনে নেওয়া যথেষ্ট নয় ; বরং সেই ঈশ্বরের সঙ্গে নবী মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি আবশ্যিক , অন্ধ এবং নিরঙ্কুশ আনুগত্যও অপরিহার্য । ইসলামিক শরিয়া মতে , নবীর আদেশ বা কার্যাবলি প্রশ্নাতীত , তিনি যা বলেন তা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ , এবং তাঁর আচরণ বা নির্দেশ অমান্য করা কেবল নৈতিক বিচ্যুতি নয় বরং তা ঈমানবিরোধী (কুফরি) অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় । নবী অনুসরণ সেখানে ফরজ (obligatory) এবং সেই অনুসরণ ছাড়া পরমেশ্বরের স্বীকৃতিও অসম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হয় ।
 
‎অন্যদিকে , বেদের একেশ্বরবাদ একেবারেই ভিন্ন এক দার্শনিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত । এখানে পরমাত্মা তিনি নিত্য , শুদ্ধ , অজ, নিরাকার , সর্বজ্ঞ , সর্বব্যাপী ও সর্বশক্তিমান এবং অপরিবর্তনীয় । বেদে বর্ণিত একেশ্বরবাদ একান্তভাবে নির্দ্বন্দ্ব (absolute) ও নির্ভরহীন (non-mediated) । সেখানে পরমাত্মা-ই একমাত্র গন্তব্য , একমাত্র পরমগুরু , একমাত্র শ্রেয়সাধ্য । 
 
ত্বং নৃ॒চক্ষা॑ অসি সোম বি॒শ্বত॒: পব॑মান বৃষভ॒ তা বি ধা॑বসি । স ন॑: পবস্ব॒ বসু॑ম॒দ্ধির॑ণ্যবদ্ব॒য়ং স্যা॑ম॒ ভুব॑নেষু জী॒বসে॑ ॥ পুরু॑ষঽএ॒বেদꣳ সর্বং॒ যদ্ভূ॒তং যচ্চ॑ ভাব্যম্ ।উ॒তামৃ॑ত॒ত্বস্যেশা॑নো॒ যদন্নে॑নাতি॒রোহ॑তি॥
‎❝তাঁর কোন দূত নেই এবং তিনি সকল আত্মার সাথে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করেন । তিনিই সৃষ্টিকর্তা , বিধাতা সর্বজ্ঞ সাক্ষী ও সকল কিছুর অধিষ্ঠাতা❞ ।
‎[ ঋ০ ৯।৮৬।৩৮, যজু০ ৩১।২ ]
 
‎মানুষের দ্বারা প্রদত্ত নির্দেশ নয় , বরং ঋষিদৃষ্ট জ্ঞান , নিজস্ব বিচারবুদ্ধি এবং ধ্যান, সাধনা ও তপস্যা-র মাধ্যমে সেই পরমাত্মাকে উপলব্ধি করার নির্দেশই মুখ্য ।তিনি কোনও একক ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছা প্রচার করেন না , বরং তিনি উপলব্ধ হোন ধ্যান , তপস্যা , আত্মজিজ্ঞাসা ও ঋষিদের অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে ।
‎বেদে গুরু বা আচার্যর গুরুত্ব অবশ্যই আছে , তবে তা শর্তসাপেক্ষ এবং গৌণ:
 
‎❝তদ্বিজ্ঞানার্থং গুরুমেবাভিগচ্ছেত্❞ জ্ঞানলাভের জন্য গুরুর শরণ নেওয়া উচিত । কিন্তু সেই গুরু হতে হবে ‘শ্রোত্রিয়’ (যিনি শাস্ত্রজ্ঞ) এবং ‘ব্রহ্মনিষ্ঠ’ (যিনি পরমাত্মার সাথে সংযুক্ত) ।
 
🍁
১] ন ত্বাবাঁ অন্যো দিব্যো ন পার্থিবো ন জাতো ন জনিষ্যতে [ঋ০ ৭।৩২।২৩] অর্থাৎ , হে ঈশ্বর ! দিব্য শক্তিসম্পন্ন তোমার মতো আর কোনো সত্তা বা পদার্থ নেই । এমন কোনো সত্তা বা পদার্থ এই পৃথিবীতে কখনো জন্মগ্রহণ করে নি , আর কখনো জন্মগ্রহণ করবেও না ।
🍁
২] প্রজাপতে ন ত্বদেতান্যন্যো বিশ্বা জাতানি পরি তা বভূব [ঋ০ ১০।১২১।১০] অর্থাৎ সকল প্রজার বা মানবজাতির অধিপতি ঈশ্বর ! তুমি ছাড়া আর কেউ না অর্থাৎ , একমাত্র তুমিই পালন ও নিয়ন্ত্রণ করছ এই সমগ্র উৎপন্ন মহাবিশ্বকে ।
🍁
৩] স নো বন্ধুর্জনিতা স বিধাতা ধামানি বেদ ভূবনানি বিশ্ব [যজু০ ৩২।১০]
‎অর্থাৎ , তিনি একাই অর্থাৎ একমাত্র ঈশ্বর আমাদের নিকটতম মিত্র একমাত্র তিনিই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, ধারণকর্তা । মহাবিশ্বের সকল পদার্থ সম্বন্ধেই তিনি অবগত আছেন । ঈশ্বরের বৈশিষ্ট্য ও গুণ অনন্ত ।
 
✳️ অর্থাৎ , পরমেশ্বর সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একমাত্র স্রষ্টা, বিধাতা ও পোষক । তাঁর কোনো প্রতিনিধি বা দূতের প্রয়োজন নেই , কারণ তিনি নিজেই প্রত্যেক আত্মার নিকটতম বন্ধু , এবং প্রত্যেক আত্মায় ব্যাপ্ত প্রত্যক্ষ সাক্ষী এবং সরাসরি সম্পর্কস্থাপনকারী সর্বশক্তিমান সত্তা । অতঃ বৈদিক ধর্মে ঈশ্বরকে জানার জন্য কোনো নবী বা মধ্যস্থ মানব কর্তৃপক্ষ অপরিহার্য নয় ; ঈশ্বরের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্কই যথেষ্ট ।
‎শাস্ত্র অনুযায়ী গুরু মূলত ২ প্রকার । একজন পরমগুরু অর্থাৎ পরমেশ্বর আর দ্বিতীয় প্রকার হলো মাতা পিতা আচার্যসহ সকল সদুপদেশদাতা ।
 
➡️ যোগদর্শনে ভগবান্ পতঞ্জলি বলেছেন -
‎স এষ পূর্বেষামপি গুরুঃ কালেনানবচ্ছেদাৎ ।
‎[ যোগদর্শন ১।২৬ ]
‎শব্দার্থ - (সঃ এষঃ) সেই ঈশ্বর (পূর্বেষাম্) পূর্বে উৎপন্ন গুরুদের (অপি) ও (গুরুঃ) গুরু অর্থাৎ বিদ্যা দাতা (কালেন-অনবচ্ছেদাৎ) সময় দ্বারা মৃত্যুকে প্রাপ্ত না হওয়ায় ।
‎সূত্রার্থ - সেই ঈশ্বর পূর্বে উৎপন্ন গুরুদেরও গুরু অর্থাৎ বিদ্যা দাতা , তার কারণ হল কালের দ্বারা তিনি কখনো মৃত্যুকে প্রাপ্ত হননা ।
 
‎এই সূত্রে ঈশ্বরের স্বরূপকে বর্ণনা করা হয়েছে ।পূর্ববর্তী গুরুরা সময় দ্বারা নষ্ট হয়ে গেছেন কিন্তু ঈশ্বরকে নষ্ট করার জন্য কালের প্রবৃত্তি দেখা যায় না । এই জন্য তিনি সকল গুরুদেরও গুরু । যেমন এই সৃষ্টির আরম্ভে জ্ঞান দিয়েছেন , সেই রকম অতীত সৃষ্টিতেও দিয়েছিলেন এবং ভবিষ্যৎ সৃষ্টিতেও দেবেন , এরকম জানা উচিৎ ।
 
➡️ মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী ❝আর্যোদ্দেশ্যরত্নমালা❞ গ্রন্থের ৬১ সংখ্যক রত্নে বলেছেন -
 
‎বীর্যদান হতে আরম্ভ করে ভোজনাদি দিয়ে পালন করেন বলে পিতাকে "গুরু" বলা হয় । যিনি স্বীয় সত্যোপদেশ দ্বারা হৃদয়ের অজ্ঞানরূপী অন্ধকারকে দূর করে দেন , তিনি ''গুরু'' অর্থাৎ "আচার্য"।
 
➡️ সত্যার্থ প্রকাশের স্বমন্তব্যামন্তব্যপ্রকাশঃ অংশেও বলেছেন -
 
‎❝মাতা এবং পিতা ‘গুরু’; তদ্ব্যতীত যাঁর উপদেশে সত্যগ্রহণ এবং অসত্য বর্জন করা হয় তাঁকেও ‘গুরু’ বলে❞ ।
 
🏵️ গুরু সম্পর্কে পবিত্র বেদ বলছে -
🌼
তে পূতাসো বিপশ্চিতঃ সোমাসো দধ্যাশিরঃ ।
‎সূরাসো ন দর্শতাসো জিগত্নবো ধ্রুবা ঘৃতে ॥
‎[ সামবেদ ১১০২ ]
‎সরলার্থঃ যারা পবিত্র , বিদ্বান , জ্ঞানের ধারণকর্ত্তা ও পরিপক্ব , পরমাত্মাতে আশ্রিত , সূর্যের ন্যায় দর্শনীয় অর্থাৎ কান্তিমান অধ্যাত্ম সত্যের মার্গ তথা দৃষ্টি প্রদানকারী , গতিমান্ ও কর্মণ্য , ধীর এবং বিবেকবান তারাই বিনয় , বিদ্যা , ধর্ম , আদির প্রেরণা দানকারী বিনয়স্বভাবযুক্ত গুরু হবেন ।
🌼
প্র মন্দিনে পিতুমদর্চতা বচো য়ঃ কৃষ্ণগর্ভা নিরহন্নৃজিশ্বনা । অবস্যবো বৃষণং বজ্রদক্ষিণং মরুত্বন্তং সখ্যায় হুবেমহি ॥
‎[ সামবেদ ৩৮০ ]
‎সরলার্থঃ হে সহপাঠীগণ ! তোমরা আনন্দদাতা তথা বিদ্যার ঐশ্বর্যযুক্ত আচার্যের জন্য উৎকৃষ্ট অন্নের সাথে আদরপূর্ণ প্রিয়বচন উচ্চারণ করো, যে আচার্য সরল শিক্ষাপদ্ধতি দ্বারা অন্ধকার অজ্ঞান যার গর্ভে আছে , এমন অবিদ্যা রূপ রাত্রিকে নষ্ট করেন । বিদ্যার আকাঙ্ক্ষাকারী তোমরা আমরা সদ্গুণের বর্ষণকারী, কুপথ দূরকারী বিদ্যা আর বিদ্যাযজ্ঞের ঋত্বিক প্রশস্ত বিদ্বান অধ্যাপক যার কাছে আছেন , তেমন আচার্যকে মিত্রতার জন্য স্বীকার করি ।
 
‎শিষ্যদের উচিত গুরু চয়নের পূর্বে সেই গুরু আদতে বেদাদি শাস্ত্রের সংজ্ঞা অনুযায়ী গুরু পদবাচ্য কিনা তা অনুসন্ধান করা । শিষ্য গুরুর লক্ষণ কীভাবে বুঝবে তা নিয়ে বেদে বলা হয়েছে -
🌼
ভ্রাজন্ত্যগ্নে সমিধান দীদিবো জিহ্বা চরত্যন্তরাসনি।
‎স ত্বং নো অগ্নে পয়সা বসুবিদ্রয়িং বর্চো দৃশেঽদাঃ ॥
‎[ সামবেদ ৬১৫ ]
‎সরলার্থঃ আচার্য রূপ অগ্নিতে নিজেকে আহুতি দেবার জন্য সমিধ হাতে গুরুকুলে আগত শিষ্য আচার্যের উদ্দেশ্যে বলছেন - হে স্বয়ং জ্ঞানদীপ্ত , তথা শিষ্যদের জ্ঞান দ্বারা প্রদীপ্তকারী , বিদ্বান আচার্যদেব ! আপনার মুখের ভেতর , শাস্ত্রজ্ঞান দ্বারা উপদেশ প্রদানের ফলে প্রাপ্ত যশ দ্বারা দীপ্তিমান জিহ্বা , শব্দসমূহের উচ্চারণের জন্য তালু , দন্ত প্রভৃতি স্থানে বিচরণ করে । সেই মহিমান্বিত , বিবিধ বিদ্যা রূপ ধনের দাতা , হে আচার্য্যদেব ! আপনি আমাদের কর্তব্য-দর্শনের জন্য বেদজ্ঞান রূপ দুধের সাথে সদাচারের সম্পদ এবং ব্রহ্মবর্চস তথা ব্রহ্মতেজ আমাদেরকে প্রদান করুন ।
 
‎আমাদের কেমন গুরুর কাছে যাওয়া উচিৎ ?
‎প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেছে মুণ্ডক উপনিষদও বলেছে -
🌼
পরীক্ষ্য লোকান্ কর্মচিতান্ ব্রাহ্মণো নির্বেদমায়ান্নাস্ত্যকৃতঃ কৃতেন।
‎তদ্বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেবাভিগচ্ছেৎ সমিৎপাণিঃ শ্রোত্রিয়ং ব্রহ্মনিষ্ঠম্॥
‎[ মুণ্ডকোপনিষদ্‌ ১.২.১২ ]
‎সরলার্থঃ ব্রহ্মবিদ্যার অধিকারী মনুষ্য কর্ম দ্বারা প্রাপ্ত অবস্থাকে (কর্মফল বা ভোগসমূহকে) পরীক্ষা করে বৈরাগ্য অবলম্বন করবেন , কারণ সাংসারিক অনিত্য কর্ম দ্বারা নিত্য পরমাত্মাকে লাভ করা যায় না । এজন্য তাঁকে জানার জন্য সেই ব্রহ্মজিজ্ঞাসু ব্যক্তি সমিধা (যজ্ঞকাষ্ঠ) হাতে নিয়ে বেদজ্ঞ , ব্রহ্মপরায়ণ গুরুর নিকট উপস্থিত হবেন ।
 
🍁 একইভাবে গুরুরও কর্তব্য সম্পর্কে বলা হয়েছে -
🌼
তস্মৈ স বিদ্বানুপসন্নায় সম্যক্ প্রশান্তচিত্তায় শমান্বিতায়।
‎য়েনাক্ষরং পুরুষং বেদ সত্যং প্রোবাচ তাং তত্ত্বতো ব্রহ্মবিদ্যাম্॥
‎[ মুণ্ডকোপনিষদ্ ১.২.১৩ ]
‎সরলার্থঃ যথাবিধি শরণাগত , শান্তচিত্ত এবং শম-দমাদি সাধন-সম্পন্ন (সংযতেন্দ্রিয়) সেই শিষ্যকে উক্ত বেদবিদ্‌ এবং ব্রহ্মনিষ্ঠ গুরু সেই ব্রহ্মবিদ্যার যথার্থরূপে উপদেশ প্রদান করবেন , যে বিদ্যা দ্বারা সেই অবিনাশী নিত্য পূর্ণ পরমাত্মাকে জানা যায় ।
 
‎❝কঠ উপনিষদ (১.২.৭) বলছে❞- নিপুণ আচার্যের কাছে কেউ আত্মজ্ঞান লাভ করেছে , এই রকম ব্যাক্তিও সচরাচর পাওয়া যায়না । কথাটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে চিন্তা করলে সম্পূর্ণ সত্যতা নিজেই উপলোব্ধি করতে পারবেন ।
 
‎মহাভারতের ❝গীতায় (২.৭)❞ শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ব্রহ্মবিদ্যা সহ নানা প্রকার জ্ঞান দান করেছিলেন । কিন্তু সেটি অর্জুন শিষ্যত্ব গ্রহণের পর । অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্পিত ছিলেন । সমর্পণ , শ্রদ্ধা এবং ভক্তি সহকারে জ্ঞান অর্জন করা উচিৎ ।
 
‎এজন্য ❝শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ (৬.২৩)❞ বলছে , পরমেশ্বরের প্রতি যার ভক্তি আছে , তার পক্ষেই গুরুর দানকৃত বিদ্যা প্রকাশিত হয় ।
 
‎সুতরাং ঈশ্বর হলেন পরমগুরু । সুতরাং আসলেই মূখ্যভাবে পরমাত্মারূপী গুরু ছাড়া গতি নেই , কেননা তিনিই মূল লক্ষ্য । আর সামবেদে বলা হয়েছে কোন গুরুর কাছে শিষ্য যাবে না । সেখানে বলা হয়েছে -
🌸
অতীহি মন্যুষাবিণং সুষুবাংসমুপেরয়।
‎অস্য রাতৌ সুতং পিব ॥
‎[ সামবেদ ২২৩ ]
‎সরলার্থঃ হে বিদ্যুতের ন্যায় তীব্র বুদ্ধিমান বিদ্যার্থী ! ক্রোধ , দ্বেষ প্রভৃতি যুক্ত বিদ্যাদানকারী গুরুকে তুমি ত্যাগ করো , তার কাছে বিদ্যা পাঠের জন্য যেও না । প্রেমের সাথে বিদ্যাদানকারীর কাছে পৌঁছে বিদ্যালাভের জন্য প্রার্থনা করো । এই গুরু বিদ্যাদানে প্রবৃত্ত হওয়ার পর জ্ঞানরসকে গ্রহণ করো ।
 
✅ গুরু-শিষ্য বরং পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে অধ্যাপন-অধ্যয়নে প্রবৃত্ত হবেন । বেদে বলা হচ্ছে -
🌸
ব্রাহ্মণাদিন্দ্র রাধসঃ পিবা সোমমৃতূং রনু।
‎তবেদং সখ্যমস্তৃতম্‌ ॥
‎[ সামবেদ ২২৯ ]
‎সরলার্থঃ হে বিদ্যুতের ন্যায় তীব্র বুদ্ধিমান বিদ্যার্থী ! তুমি অধ্যয়ন-অধ্যাপন যজ্ঞের সাধক ব্রহ্মবেত্তা , বেদবেত্তা এবং ব্রাহ্মণ স্বভাবের আচার্যের থেকে প্রত্যেক ঋতুতে জ্ঞান রস পান করো । তোমার এই গুরুশিষ্য সম্বন্ধরূপ মিত্রতা অবিনশ্বর থাকুক ।
 
‎বেদেও গুরুকে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে শিষ্যকে সে কী বলবে -
🌸
ইমমিন্দ্র সুতং পিব জ্যেষ্ঠমমর্ত্যং মদম্।
‎শুক্রস্য ত্বাভ্যক্ষরন্ধারা ঋতস্য সাদনে ॥
‎[ সামবেদ ৩৪৪ ]
‎সরলার্থঃ শিষ্যের প্রতি আচার্যের উক্তি - হে জিজ্ঞাসু এবং বিদ্যুতের মতো তীব্রবুদ্ধিসম্পন্ন আমার শিষ্য ! তুমি আমার প্রদানকৃত এই শ্রেষ্ঠ , চিরস্থায়ী , তৃপ্তিপ্রদ , অধ্যয়ন-অধ্যাপন-বিধি দ্বারা নিষ্পাদিত জ্ঞানরস পান করো । পবিত্র অধ্যয়ন-অধ্যাপন-রূপ যজ্ঞের গৃহে , অর্থাৎ গুরুকুলে আমার বাণী সেই জ্ঞানরসকে তোমার প্রতি ক্ষরণ করে ।
 
‎এই দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে দেয় , সনাতন দর্শনে কোনও মানবগুরু বা নবীকে ঈশ্বরীয় আদেশের চূড়ান্ত মাধ্যম হিসেবে অন্ধভাবে গ্রহণের কোনও অবকাশ নেই । বরং শাস্ত্র ও যুক্তির আলোকে গুরু-নির্বাচন এবং পরমাত্মার সাধনাই প্রাধান্য পায় । শিষ্য এমনকি গুরুকেও প্রশ্ন করতে পারে , সত্য অন্বেষণ করা এখানে মৌলিক নীতি ।
 
‎সুতরাং ইসলামের নবীকেন্দ্রিক একেশ্বরবাদ ও বেদের বিশুদ্ধ , নির্ভরহীন , আত্মানুসন্ধানমূলক একেশ্বরবাদের মধ্যে মৌলিক কাঠামোগত ও দার্শনিক বিভাজন রয়েছে। এখানে লক্ষ্যযোগ্য , ইসলামে নবীকে মান্য করা ঈমানের শর্ত, অথচ বেদে কোনো ব্যক্তিকে (যত জ্ঞানীই হোন না কেন) ঈশ্বরের পরিপূরক বা তার আদেশের একমাত্র বাহক হিসেবে মান্য করার কথা নেই । বরং বেদ সর্বদা অনুসন্ধান , মুক্তচিন্তা ও আত্মবিকাশের পথ নির্দেশ করে যেখানে কিনা পরমাত্মা স্বয়ং গুরু , এবং গৌণ গুরু কেবল মাত্র পথপ্রদর্শক, অনুগত নয় ।
 
‎এই বাস্তবতা প্রমাণ করে যে , শুধুমাত্র ‘একেশ্বরবাদ’ শব্দটি উভয় ধর্মে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে তাদের মধ্যে সামঞ্জস্য বা অভিন্নতা দাবি করা এক ধরনের বস্তুনিষ্ঠ বিভ্রান্তি । বরং , এইরকম ভ্রান্ত তুলনা পাঠকের দার্শনিক বোধকে বিপথে চালিত করে এবং মূল সত্যচিত্রকে আড়াল করে দেয় ।
 
🔰 ইসলামের বর্ণনা অনুযায়ী -
 
১. নবীকে অমান্য করা ঈমানহীনতা ও জাহান্নামের কারণ
‎আর যে ব্যক্তি সৎপথ স্পষ্ট হওয়ার পরও রাসূলের বিরোধিতা করে এবং মুমিনদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দেব, যেদিকে সে ফিরে যেতে চায় এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব । আর তা কত মন্দ আবাস!
♓ সূরা আন-নিসা (৪:১১৫)
‎তাফসীর ইবনে কাসীর-এ এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে , রাসূলের বিরোধিতা এবং মুমিনদের পথ ত্যাগ করে অন্য পথ অনুসরণ করা ইসলাম থেকে খারিজ হওয়ার শামিল এবং এর পরিণতি জাহান্নাম । এক আল্লাহর রাসূলের বিরোধিতাকারী জাহান্নামী , কোন ব্যাপারে হক তথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত প্রকাশিত হওয়ার পর সেটার বিরোধিতা করাও জাহান্নামীদের কাজ ।
২. নবীর আনুগত্য মানেই আল্লাহর আনুগত্য
‎যে কেউ রাসূলের অনুগত হলো , সে আল্লাহরই অনুগত হলো ।
♓ সূরা আন-নিসা (৪:৮০)
‎এই আয়াত স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে , রাসূলের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যের সমান । অর্থাৎ , নবী মুহাম্মদ কে মানা ও অনুসরণ করা আল্লাহর আদেশ মানার অন্তর্ভুক্ত ।
৩. নবীর আদেশ মেনে চলা ফরজ
‎তোমরা যা কিছু রাসূল তোমাদের দেন তা গ্রহণ করো , আর যা তিনি নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থেকো ।
♓ সূরা হাশর (৫৯:৭)
‎এই আয়াতে আল্লাহ্‌ স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন যে , রাসূলের আদেশ মেনে চলা এবং তাঁর নিষেধ মানা বাধ্যতামূলক ।
৪. নবীর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ঈমানের শর্ত
‎কিন্তু না , আপনার রবের শপথ তারা মুমিন হবে না যতক্ষন পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করে ; অতঃপর আপনার মীমাংসা সম্পর্কে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয় ।
‎মুফতী তাকী উসমানী -
‎না , (হে নবী!) তোমার প্রতিপালকের শপথ ! তারা ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না , যতক্ষণ না নিজেদের পারস্পরিক ঝগড়া-বিবাদের ক্ষেত্রে তোমাকে বিচারক মানবে , তারপর তুমি যে রায় দাও , সে ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোনওরূপ কুণ্ঠাবোধ না করবে এবং অবনত মস্তকে তা গ্রহণ করে নেবে ।
♓ সূরা আন-নিসা (৪:৬৫)
‎এই আয়াতে বলা হয়েছে , নবী মুহাম্মদ ﷺ-এর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ঈমানের অপরিহার্য অংশ ।
৫. নবীকে ভালোবাসা ঈমানের অংশ
‎পরিচ্ছেদঃ ২/৮. আল্লাহ্‌র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালোবাসা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত ।
‎আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না , যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা , তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই ।
✴️(মুসলিম ১/১৬ হাঃ ৪৪, আহমাদ ১২৮১৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪)
‎এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ বলেছেন , তাঁর প্রতি ভালোবাসা ঈমানের অপরিহার্য অংশ ।
৬. নবী মুহাম্মদ এর অনুসরণ ব্যতীত মুক্তি নেই
‎নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ , তার জন্য যে আল্লাহ ও পরকালের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে ।
♓ সূরা আল-আহযাব (৩৩:২১)
‎এই আয়াতে আল্লাহ্‌ ঘোষণা করছেন যে , নবী মুহাম্মদ এর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ , যা অনুসরণ করা মুমিনদের জন্য অপরিহার্য ।
৭. নবীর আদেশ অমান্য করা গোমরাহি ও শাস্তির কারণ
‎সাবধান ! যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে , তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন , যেখানে তারা চিরকাল থাকবে ।
♓ সূরা জিন (৭২:২৩)
‎এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে , নবী মুহাম্মদ এর আদেশ অমান্যকারীরা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে ।
৮. নবীর আদেশ অমান্য করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ
‎আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে এবং তাঁর সীমা লঙ্ঘন করে , আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, যেখানে সে চিরকাল থাকবে ।
♓ সূরা আন-নিসা (৪:১৪)
‎এই আয়াতে বলা হয়েছে, নবী মুহাম্মদ এর বিরোধিতা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এর পরিণতি জাহান্নাম ।
৯. নবী মুহাম্মদ-এর আদেশ অমান্য করা ঈমানহীনতা
‎আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে , তারা নিশ্চয়ই কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত ।
♓ সূরা আত-তাওবা (৯:৬১)
‎এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে , নবী মুহাম্মদ এর বিরোধিতা করা ঈমানহীনতার শামিল ।
১০.নবীর আদেশ মানা বাধ্যতামূলক
‎তোমরা যা কিছু রাসূল তোমাদের দেন তা গ্রহণ করো , আর যা তিনি নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো ।
♓ সূরা আল-হাশর ৫৯:৭
‎তাফসীর: এই আয়াতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে , রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ দেন তা মেনে চলা এবং যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকা মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক ।
‎এই আয়াতে বলা হয়েছে , নবী মুহাম্মদ এর আদেশ অমান্য করা গোমরাহি এবং এর পরিণতি জাহান্নাম ।
‎১১. সহীহ বুখারী (হাদীস ৭১৩৭): আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত , নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন:
⛎
‎যে আমার আনুগত্য করে , সে আল্লাহ্‌র আনুগত্য করে ; আর যে আমার অবাধ্যতা করে , সে আল্লাহ্‌র অবাধ্যতা করে ।
‎১২. সহীহ বুখারী (হাদীস ৭১৪৪): নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন:
⛎
‎একজন মুসলিমের উচিত শোনা ও মান্য করা , যদিও সে পছন্দ না করে ; যতক্ষণ না তাকে আল্লাহ্‌র অবাধ্যতায় আদেশ দেওয়া হয় । যদি তাকে পাপের আদেশ দেওয়া হয় , তবে সে তা শুনবে না বা মান্য করবে না ।
 
💥উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে , ইসলামে নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে মানা , তাঁর আদেশ-নিষেধ পালন করা , এবং তাঁকে ভালোবাসা ঈমানের অপরিহার্য অংশ এটি ইসলামের মৌলিক আকীদা ও বিশ্বাসের অংশ । তাঁর আদেশ-নিষেধ মান্য করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক , এবং এটি আল্লাহ্‌র আনুগত্যের সমতুল্য। এই নির্দেশনা কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত । অন্যদিকে , বেদে পরমাত্মাকে পরম গুরু হিসেবে মান্য হলেও , গৌণ গুরুর ক্ষেত্রে শিষ্যকে বিচার-বিবেচনা করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে । তাই , হরফ প্রকাশনীর লেখক আব্দুল আজীজ আল-আমান কর্তৃক বেদ ও কোরআনের একেশ্বরবাদের মধ্যে সামঞ্জস্য প্রদর্শনের প্রচেষ্টা একটি লজিক্যাল ফ্যালাসি‌ , কারণ দুই ধর্মের একেশ্বরবাদে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান সেটা স্পষ্ট ।
 
‎ইসলামে তাওহীদ তথা একেশ্বরবাদ একটি কঠোর কাঠামোর অধীন সেখানে কেবল (আল্লাহ)-এর অস্তিত্ব স্বীকারই যথেষ্ট নয় , বরং নবী মুহাম্মদ (স.)-কে সর্বদা সর্বক্ষেত্রে মেনে চলা বাধ্যতামূলক (ফরজ) । তাঁর আদেশ অমান্য করা ঈমানবিরোধী এবং চূড়ান্তভাবে ধ্বংসাত্মক (কুফরি) । কোরআনের ভাষায় , নবীর কথাই শেষ কথা , এবং তাঁর প্রতি প্রশ্ন তোলা বা বিচার বিশ্লেষণের সুযোগ নেই । অতঃ এখানে 'একেশ্বরবাদ ' একটি নবী-আশ্রিত একেশ্বরবাদ , যেখানে মানবিক কর্তৃত্ব ও ঐশ্বরিক কর্তৃত্বে পার্থক্য রেখেই উভয়কেই মান্য করা বাধ্যতামূলক । কিন্তু বেদে গুরু পরম নয় , গুরু যোগ্যতানির্ভর , এবং তাঁর প্রতি অন্ধ আনুগত্য নয় , বরং তত্ত্বগত বিচারে ও পরমাত্মায় স্থিত বলেই তাঁর কথা মূল্যবান । সনাতন একেশ্বরবাদে নবী-সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক কোনও অনুসরণ , বা আনুগত্যের শর্ত নেই সেখানে আত্মজিজ্ঞাসাই প্রধান । সুতরাং , ইসলামের নবীকেন্দ্রিক একেশ্বরবাদ এবং বেদের নিখাদ পরমাত্মাকেন্দ্রিক একেশ্বরবাদের মধ্যে মৌলিক কাঠামোগত পার্থক্য রয়েছে শুধুমাত্র ' একেশ্বরবাদ ' শব্দটি উভয় ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে বলে এদের মধ্যে সামঞ্জস্য টানার চেষ্টা একটি প্রলুব্ধকর কিন্তু ভ্রান্ত তুলনা । এইরকম আংশিক উপস্থাপন আসলে বৃহত্তর সত্যকে আড়াল করে এবং যাকিনা পাঠককে বিভ্রান্ত করে ।
 
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক ।