▪️ঋগ্বেদ
অ॒গ্নিমী॑ল়ে পু॒রোহি॑তং য॒জ্ঞস্য॑ দে॒বমৃ॒ত্বিজ॑ম্ ।
হোতা॑রং রত্ন॒ধাত॑মম্ ॥
ঋগ্বেদ ১।১।১
সরলার্থ: আমি, যজ্ঞ ও ব্রহ্মাণ্ড নির্মাণকর্মের সম্পাদক এবং ধারণকারী, [সৃষ্টি নির্মাণের] পূর্বেই সমস্ত পরমাণু, প্রকৃতি এবং [সৃষ্টি নির্মাণের পরে] সৃষ্টিকে ধারণকারী, প্রত্যেক সৃষ্টি-উৎপত্তির সময়ে সৃষ্টির ঘটক পদার্থসমূহকে একত্রকারী, সমস্ত রমণ করার যোগ্য পৃথিবী প্রভৃতি লোকসমূহের সর্বোত্তম ধারণকারী, সকল পদার্থের দাতা, সবকিছুর দ্রষ্টা এবং প্রকাশক, সকলের পূর্বে বিদ্যমান, জ্ঞানবান, প্রকাশস্বরূপ পরমেশ্বরের স্তুতি করি।
▪️ যজুর্বেদ
ই॒ষে ত্বো॒র্জে ত্বা॑ বা॒য়ব॑ স্থ দে॒বো বঃ॑ সবি॒তা প্রার্প॑য়তু॒ শ্রেষ্ঠ॑তমায়॒ কর্ম॑ণ॒ঽআপ্যা॑য়ধ্বমঘ্ন্যা॒ঽইন্দ্রা॑য় ভা॒গং প্র॒জাব॑তীরনমী॒বাঽঅ॑য়॒ক্ষ্মা মা ব॑ স্তে॒নঽঈ॑শত॒ মাঘশ॑ꣳসো ধ্রু॒বাঽঅ॒স্মিন্ গোপ॑তৌ স্যাত ব॒হ্বীর্যজ॑মানস্য প॒শূন্ পা॑হি॥
যজুর্বেদ ১।১
সরলার্থ: হে মানবগণ!
১. যিনি সমস্ত জগতের উৎপত্তিকর্তা, সম্পূর্ণ ঐশ্বর্যযুক্ত, সর্ব সুখদাতা ও সর্ববিদ্যা প্রসিদ্ধিকারী পরমাত্মা,
২. তিনি তোমাদের-আমাদের এবং আপন বন্ধুবান্ধবদের সর্বকর্মসিদ্ধিদাতা, স্পর্শগুণযুক্ত প্রাণ, অন্তঃকরণ ও যে সমস্ত ইন্দ্রিয় আছে - তাদের সকলকে অতি উত্তম সর্বোপকারক যজ্ঞাদি কর্তব্য কর্মে উত্তমরূপে [তিনি] যেন সংযুক্ত করেন।
৩. আমরা অন্ন প্রভৃতি উত্তম-উত্তম পদার্থসমূহ এবং বিজ্ঞানের ইচ্ছা ও পরাক্রম অর্থাৎ উত্তম রস প্রাপ্তির জন্য সেবায় নিযুক্ত করার যোগ্য ধন এবং জ্ঞান পরিপুরিত উক্ত গুণ যুক্ত তথা শ্রেষ্ঠ পরাক্রমাদি গুণ প্রদানকারী আপনার [পরমাত্মার] সর্বপ্রকার আশ্রয় আমরা কামনা করছি।
৪. হে বন্ধুগণ! তোমরাও এমন হয়ে উন্নতি লাভ করো এবং আমরাও লাভ করি ।
৫. হে ভগবান জগদীশ্বর! আমাদের সকলের পরম ঐশ্বর্য প্রাপ্তির জন্য যাদের বহু সন্তান আছে এং যে ব্যাধি এবং যাদের মধ্যে রাজযক্ষ্মা আদি রোগ নেই, তারা -
‘অঘ্ন্যা’ যে সমস্ত গরু আদি পশু বা উন্নতি করার যোগ্য রয়েছে, যারা হিংসাযোগ্য নয়,
ইন্দ্ৰিয়সমূহ অথবা যে সমস্ত পৃথিবী আদি লোক রহিয়াছে
সেগুলোকে সদৈব নিযুক্ত রাখুন।
৬. হে জগদীশ্বর! আপনার কৃপায় আমাদের মধ্যে কেউ যেন দুঃখদায়ী পাপী বা চোর ডাকাত উৎপন্ন না হয়
৭. আপনি জীবের ও পরমেশ্বর - সর্বোপকারক ধর্ম পালনকারী বিদ্বানের গৌ, অশ্ব ও হস্তি প্রভৃতি ও লক্ষ্মী এবং প্রজাকে সর্বদা রক্ষা করুন যাতে এই পদার্থসমূহ হরণ করতে কোনও পাপী চোর যেন সমর্থ না হয়।
৭. এই পৃথিবী আদি পদার্থসমূহের রক্ষা কামনাকারী ধার্মিক মানবের কাছে নিকট বহু পরিমাণে গো নিশ্চল স্থায়ী সুখের কারণ।
▪️সামবেদ
অগ্ন আ যাহি বীতয়ে গৃণানো হব্যদাতয়ে ।
নি হোতা সৎসি বর্হিষি ॥
সামবেদ ১
সরলার্থ: হে সর্ব অগ্রণী, সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপী, সর্বসুখপ্রদাতা, সর্ব প্রকাশক পরমাত্মা ! তুমি কর্তব্যের উপদেশ প্রদান করে আমাদের প্রগতির জন্য, আমাদের বিচার এবং কর্মে ব্যাপ্ত হওয়ার জন্য, আমাদের হৃদয়ে সদ্গুণ উৎপন্ন করার জন্য, আমাদেরকে স্নেহ করার জন্য, আমাদের মধ্যে উৎপন্ন কাম-ক্রোধ প্রভৃতিকে বাইরে নিক্ষেপ করার জন্য এবং দিব্য পদার্থ, শ্রেষ্ঠ বুদ্ধি, শ্রেষ্ঠ কর্ম, শ্রেষ্ঠ ধর্ম, শ্রেষ্ঠ ধন প্রভৃতি দান করার জন্য এসো। শক্তি দাতা এবং দুর্বলতা হরণকারী হয়ে হৃদয়রূপ অন্তরিক্ষে বিরাজমান হও।
▪️ অথর্ববেদ
যে ত্রি॑ষ॒প্তাঃ প॑রি॒য়ন্তি॒ বিশ্বা॑ রূ॒পাণি॒ বিভ্র॑তঃ।
বা॒চস্পতি॒র্বলা॒ তেষাং॑ ত॒ন্বো॑ অ॒দ্য দ॑ধাতু মে ॥
অথর্ববেদ ১।১।১
সরলার্থ: আমাদের চারপাশে বিচরণশীল জীব ও জড়জগৎকে যে একুশটি তত্ত্ব টিকিয়ে রাখে, সেগুলোর শক্তি ও ক্ষমতাকে, পরমেশ্বর সদাসর্বদার জন্য আমাকে অর্পণ করুন।
ত্রিষপ্তাঃ ~ এর 'ত্রি' পদ তিন কাল (ভূত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ) তিন লোক (দ্যুলোক, অন্তরিক্ষ এবং ভূলোক) তিন গুণ (সত্ত্ব, রজ এবং তম) ও তিন সত্ত্বা (ঈশ্বর, জীব এবং প্রকৃতি)।
যদি ৩+৭=১০ বোঝায় তবে,
১. চার দিক, চার বিদিক, এক উপরের এবং এক নিচের দিক। মোট দশ দিক - ১। পূর্ব,
২। পশ্চিম,
৩। উত্তর,
৪। দক্ষিণ,
৫। উত্তর-পূর্ব বা ঈশাণ,
৬। দক্ষিণ-পূর্ব বা অগ্নি,
৭। দক্ষিণ-পশ্চিম বা নৈঋত,
৮। উত্তর-পশ্চিম বা বায়ু,
৯। আকাশ বা উর্দ্ধ এবং
১০। পাতাল বা অধঃ।
২. পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয় = কান, ত্বক, নেত্র, জিহ্বা, নাসিকা এবং পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয় = বাক্, হাত, পা, পায়ু, উপস্থ।
অথবা, ৩×৭=২১ হলে পাঁচটি মহাভূত, পাঁচটি প্রাণ, পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়, পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয়, একটি অন্তঃকরণ । এভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব ।
© বাংলাদেশ অগ্নিবীর ঢাকা বিভাগীয় শাখা
Om namoste
ReplyDelete