উত্তর- শ্রীকৃষ্ণের আত্মায় প্রকটিত হয়ে পরমেশ্বরই দেখিয়েছেন। দেখুন-
"হে পরমেশ্বর! তুমি যে আত্মতত্ত্ব বলেছ তা সব ঠিক। তথাপি হে পুরুষোত্তম! এখন তোমার ঈশ্বরীয় রূপ দেখতে ইচ্ছা করি।"
(গীতা ১১।৩)
(গীতা ১১।৩)
লক্ষ করুণ পাঠকগণ এখানে কৃষ্ণের কথা বলা হয়নি, বলা আছে পরমেশ্বর ও পুরুষোত্তম। যদিও তথাকথিত কৃষ্ণ ভক্তরা তাদের গীতা ভাষ্যে
ভুল অনুবাদ করে জোরপূর্বক কৃষ্ণ লিখেছেন। এরপর যথাক্রমে গীতা ১১।৪,৫,৬,৭ নং শ্লোকে অর্জুনকে পরমেশ্বর ওনার বিশ্বরুপ দেখার জন্য বললেন। এরপর পরমেশ্বর বললেন -
ভুল অনুবাদ করে জোরপূর্বক কৃষ্ণ লিখেছেন। এরপর যথাক্রমে গীতা ১১।৪,৫,৬,৭ নং শ্লোকে অর্জুনকে পরমেশ্বর ওনার বিশ্বরুপ দেখার জন্য বললেন। এরপর পরমেশ্বর বললেন -
"তুমি তোমার এই চর্মচক্ষুদ্বারা আমার এই রূপ দর্শণ করতে সমর্থ হবে না, আমি তোমাকে দিব্যচক্ষু দিচ্ছি, তুমি আমার ঈশ্বরীয় বা ঐশ্বরিক যোগসামর্থ বা যোগশক্তি দেখ।"
(গীতা ১১।৮)
(গীতা ১১।৮)
এখানে লক্ষ করুণ পাঠকগণ, ঈশ্বর নিজেই বলছেন যে চোখ দিয়ে ওনাকে দেখা যায় না। যারা বলেন ঈশ্বর সাকার তাদের কাছে প্রশ্ন হল সাকার হলে চোখে দেখা যায় না কেন??? কারণ ঈশ্বর সাকার নয়। অনেকেই তখন বলবেন যে দিব্যচক্ষু দ্বারা দেখা যায়, এই দিব্যচক্ষু কি?
রামকৃষ্ণ মিশনের গীতা এর ভালো ব্যাখ্যা পাবেন। আর তা হল দিব্যং মানে অলৌকিক, চক্ষুঃ মানে
জ্ঞানরূপ চোখ। অর্থাৎ দিব্যচক্ষু মানে অলৌকিক জ্ঞান চোক্ষু। অর্থাৎ জ্ঞানের চোখ জাগ্রত হলেই তাকে জানা যায়।
রামকৃষ্ণ মিশনের গীতা এর ভালো ব্যাখ্যা পাবেন। আর তা হল দিব্যং মানে অলৌকিক, চক্ষুঃ মানে
জ্ঞানরূপ চোখ। অর্থাৎ দিব্যচক্ষু মানে অলৌকিক জ্ঞান চোক্ষু। অর্থাৎ জ্ঞানের চোখ জাগ্রত হলেই তাকে জানা যায়।
এরপর সঞ্জয় বলিলেন-
"হে রাজন, মহাযোগেশ্বর হরি এইরূপ বলিয়া অর্জুনকে নিজের বিশ্বরূপ দেখালেন।"
(গীতা ১১।৯)
"হে রাজন, মহাযোগেশ্বর হরি এইরূপ বলিয়া অর্জুনকে নিজের বিশ্বরূপ দেখালেন।"
(গীতা ১১।৯)
এখানেও সঞ্জয় কৃষ্ণের নাম নেয় নাই, কিন্তু তথাকথিত কৃষ্ণ ভক্তরা এখানেও কৃষ্ণকে জুড়ে দিয়েছে! এরপরই যথাক্রমে গীতার ১১।১০ থেকে অনেকগুলো শ্লোক পর্যন্ত বিশ্বরূপের বিবরণ দেওয়া আছে, আপনারা তা দেখে নিবেন। এখানে গীতার ১১।১৬নং শ্লোক খুব তাৎপর্য বহন করে। কারণ যারা বলে ঈশ্বর সাকার তাদের কথাই এই
শ্লোকটা মিথ্যা প্রমাণ করে। কেননা এখানে স্পষ্ট করেই অর্জুন বলেছে যে-
শ্লোকটা মিথ্যা প্রমাণ করে। কেননা এখানে স্পষ্ট করেই অর্জুন বলেছে যে-
"....কিন্তু হে বিশ্বেশ্বর, হে বিশ্বরূপ, আমি তোমার আদি, মধ্য ও অন্ত কিছুই দেখিতেছি না।"
(গীতা ১১।১৬)
(গীতা ১১।১৬)
দিব্যচক্ষু দ্বারাও যেখানে অর্জুন পরমেশ্বরের রূপের আদি ও অন্ত খুজে পেলনা, সেখানে চর্ম চক্ষু দ্বারা কিভাবে ঈশ্বরকে সাকার বানিয়ে ফেলে পৌরাণিক দাদারা? সাধারণত যোগীরা যখন যোগাবস্থায় থাকে তখন তাদের আত্মাতে কৃপা করিয়া পরমেশ্বর প্রকট হন, কিন্তু অর্জুনের ক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম হয়েছে। এর কারণ হল
মোক্ষ প্রাপ্ত আত্মা কৃষ্ণের মোক্ষের সুখভোগ বা আনন্দভোগ।
মোক্ষ প্রাপ্ত আত্মা কৃষ্ণের মোক্ষের সুখভোগ বা আনন্দভোগ।
পবিত্র বেদ থেকে একটু দেখে নেই, যোগীরা কেমন করে আত্মাতে পরমেশ্বরকে ধারণ করেন এবং যোগীরা তা পারেন কিনা তাও দেখি-
.
"য়েনেদং ভূতং ভুবনং ভবিষ্যৎ পরিগৃহীতমমৃতেন সর্বম্।
য়েন য়জ্ঞস্তায়তে সপ্তহোতা তম্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু।।"
(যজুর্বেদ ৩৪।৪)
.
"য়েনেদং ভূতং ভুবনং ভবিষ্যৎ পরিগৃহীতমমৃতেন সর্বম্।
য়েন য়জ্ঞস্তায়তে সপ্তহোতা তম্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু।।"
(যজুর্বেদ ৩৪।৪)
অনুবাদ- "হে জগদীশ্বর! যদদ্বারা যোগীগণ ভূত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমান কার্য জানিতে পারেন, যাহা অবিনাশী জীবাত্মাকে পরমাত্মার সহিত মিলিত করিয়া সর্বপ্রকারে ত্রিকালজ্ঞ করে, যাহাতে জ্ঞান ও ক্রিয়া আছে, যাহা পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়, বুদ্ধি ও
আত্মার সহিত সংযুক্ত এবং যা দ্বারা যোগীগণ যোগরূপে যজ্ঞের বৃদ্ধি সাধন করেন, আমার মন সেই যোগবিজ্ঞান সম্পন্ন হইয়া অবিদ্যাদি ক্লেশ হতে দূরে থাকুক।"
আত্মার সহিত সংযুক্ত এবং যা দ্বারা যোগীগণ যোগরূপে যজ্ঞের বৃদ্ধি সাধন করেন, আমার মন সেই যোগবিজ্ঞান সম্পন্ন হইয়া অবিদ্যাদি ক্লেশ হতে দূরে থাকুক।"
এছাড়াও পবিত্র বেদ থেকে আরো কিছু মন্ত্র প্রমাণ স্বরূপ দেখানো হল-
"(য়ুঞ্জানঃ) যোগাভ্যাসী মনুষ্যেরা (তত্ত্বায়) তত্ত্ব অর্থাৎ ব্রহ্মবস্তু বা ব্রহ্মজ্ঞান লাভের জন্য, প্রথম মনঃ সর্বাগ্রে মনকে পরমেশ্বরে যুক্ত করিয়া থাকেন, (সবিতা) পরমেশ্বরও এইরূপ যোগীর
প্রতি কৃপা করিয়া তাহার (ধিয়ম্) বুদ্ধিকে আপনাতে যুক্ত করিয়া নেন। (অগ্নের্জ্যো) তখন সেই যোগী পরমেশ্বরের প্রকাশকে নিশ্চয়
করিয়া অর্থাৎ জ্ঞাত হয়ে (অধ্যাভরৎ) স্বীয় আত্মাতে পরমেশ্বরকে ধারণ করেন। (পৃথিব্যাঃ) পৃথিবী মধ্যে যোগীর উপরোক্ত লক্ষণ প্রসিদ্ধ আছে।"
(যজুর্বেদ ১১।২)
প্রতি কৃপা করিয়া তাহার (ধিয়ম্) বুদ্ধিকে আপনাতে যুক্ত করিয়া নেন। (অগ্নের্জ্যো) তখন সেই যোগী পরমেশ্বরের প্রকাশকে নিশ্চয়
করিয়া অর্থাৎ জ্ঞাত হয়ে (অধ্যাভরৎ) স্বীয় আত্মাতে পরমেশ্বরকে ধারণ করেন। (পৃথিব্যাঃ) পৃথিবী মধ্যে যোগীর উপরোক্ত লক্ষণ প্রসিদ্ধ আছে।"
(যজুর্বেদ ১১।২)
মনুষ্যমাত্রেই এরূপ ইচ্ছা করিবেন- "(বয়ম্) যেন আমরা (স্বর্গায়) মোক্ষসুখ হেতু, (শক্ত্যা)
যথাযোগ্য সামর্থ্য ও যোগবলানুসারে, (দেবস্য)
সর্ব্বপ্রকাশক ও সর্ব্বানন্দপ্রদ (সবিতু) সর্বান্তযার্মী পরমেশ্বরের সৃষ্টি মধ্যে উপাসনারূপ যোগসাধন
দ্বারা (য়ুক্তেন মনসা) শুদ্ধান্তঃকরণ হয়ে, নিজ আত্মায় সেই পরমাত্মাস্বরূপ আরাধিত করিয়া পরমানন্দ প্রাপ্ত হই।"
(যজুর্বেদ ১১।৩)
যথাযোগ্য সামর্থ্য ও যোগবলানুসারে, (দেবস্য)
সর্ব্বপ্রকাশক ও সর্ব্বানন্দপ্রদ (সবিতু) সর্বান্তযার্মী পরমেশ্বরের সৃষ্টি মধ্যে উপাসনারূপ যোগসাধন
দ্বারা (য়ুক্তেন মনসা) শুদ্ধান্তঃকরণ হয়ে, নিজ আত্মায় সেই পরমাত্মাস্বরূপ আরাধিত করিয়া পরমানন্দ প্রাপ্ত হই।"
(যজুর্বেদ ১১।৩)
"(স্বর্য়ত দেবান্) এইরূপ শুদ্ধভাব প্রেমযুক্ত উপাসক যোগীকে, (সবিতা) অন্তর্যামী পরমাত্মা ও (ধিয়া দিবম্) অত্যন্ত সুখ বা আনন্দ প্রদান করিয়া থাকেন এবং ঐ যোগীগনের আত্মাতে
(বৃহজ্জ্যোতিঃ) অনন্ত প্রকাশ প্রকট করেন। এই পরমাত্মাই সমগ্র জগতের সবিতা অর্থাৎ পিতাস্বরূপ, (প্রসুবাতি) তিনি ঐ সকল যোগী
উপাসকগণকে জ্ঞান ও মুক্তি প্রদান পূবর্ক সদানন্দে পরিপূর্ণ করিয়া থাকেন। যেহেতু (করিষ্যতঃ) যে জন সত্য প্রেম ও ভক্তিসহকারে
পরমেশ্বরের উপাসনা করিবেন, তাহাকেই পরম কারুণিক অন্তর্যামী পরমাত্মা মোক্ষানন্দ
প্রদানপূর্বক সদাকালের জন্য আনন্দযুক্ত বা সুখী করেন।"
(যজুর্বেদ ১১।৪)
(বৃহজ্জ্যোতিঃ) অনন্ত প্রকাশ প্রকট করেন। এই পরমাত্মাই সমগ্র জগতের সবিতা অর্থাৎ পিতাস্বরূপ, (প্রসুবাতি) তিনি ঐ সকল যোগী
উপাসকগণকে জ্ঞান ও মুক্তি প্রদান পূবর্ক সদানন্দে পরিপূর্ণ করিয়া থাকেন। যেহেতু (করিষ্যতঃ) যে জন সত্য প্রেম ও ভক্তিসহকারে
পরমেশ্বরের উপাসনা করিবেন, তাহাকেই পরম কারুণিক অন্তর্যামী পরমাত্মা মোক্ষানন্দ
প্রদানপূর্বক সদাকালের জন্য আনন্দযুক্ত বা সুখী করেন।"
(যজুর্বেদ ১১।৪)
বোধ করি কৃষ্ণও মোক্ষলাভ করা আত্মা যিনি
কিনা পূর্ব জম্মে যোগী ছিলেন, ওনার মোক্ষের পরমানন্দ বা সুখ ভোগ হেতু অর্জুনকে পরমেশ্বরের বিশ্বরূপ দেখাতে সাহায্য করেছেন কৃষ্ণ। আর পরমেশ্বরও অর্জুনকে তা দেখিয়েছেন, কারণ অর্জুন তা দেখার যোগ্য ছিলেন।
কিনা পূর্ব জম্মে যোগী ছিলেন, ওনার মোক্ষের পরমানন্দ বা সুখ ভোগ হেতু অর্জুনকে পরমেশ্বরের বিশ্বরূপ দেখাতে সাহায্য করেছেন কৃষ্ণ। আর পরমেশ্বরও অর্জুনকে তা দেখিয়েছেন, কারণ অর্জুন তা দেখার যোগ্য ছিলেন।
লাস্টের লাইটা বোঝলাম না। কৃষ্ণ মোক্ষলাভ করা আত্মা কেমনে? উনি বিষ্ণুর অবতার না?
ReplyDeleteGOURHORIBOL,
ReplyDeleteDivine eye or divyachakshu is visible. A tattadarshivi guru can give divyachakshu or divine eye at the time of intuition. Based on BHAGBAT GITA 3.21 like Arjun if you want to prove you are most welcome. GOURHORIBOL
Shantimission2020bharat@gmail.com
ReplyDelete