https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ব্রহ্মা সরস্বতী নিয়ে অপপ্রচারের জবাব

Wednesday, December 6, 2023

 


যখনই আমরা " সরস্বতী " নিয়ে কথা বলতে চাই তখনি আমাদের মাথায় ব্রহ্মার সাথে সরস্বতী সম্পর্কের কথা মনে হয়। পুরাণের লিখিত তথ্য অনুযায়ী ব্রহ্মা সরস্বতীর পুত্রী তথাপি স্ত্রীও বটে। তার সাথে রয়েছে কিছু অশ্লীল গল্পসমগ্র। কিন্তু বৈদিক শাস্ত্রে এনিয়ে রয়েছে ভিন্ন বর্ণন। সেবিষয়ে অত্র লেখনীতে আলোকপাত করা হল।
 
💢ব্রহ্মা এবং সরস্বতী💢
-------------------------------
সরস্বতী নাম নানান অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে ব্রহ্ম অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে। সরস্বতী শব্দের অর্থ নিরুক্ত আদি শাস্ত্রীয় গ্রন্থে সরস্বতী নাম বাণী অর্থে পাওয়া যায় — 
 
শ্লোকঃ । ধারা । ইলা । গৌঃ গৌরী গান্ধবী । গভীরা গম্ভীরা । মন্ত্রা । মন্দ্ৰাজনী । বাশী । বাণী । বাণীচী বাণঃ । পবিঃ ভারতী ধমনিঃ । নালীঃ মেলিঃ । মেনা সূর্যা । সরস্বতী নিবিৎ । স্বাহা । বন্ধুঃ । উপব্দিঃ । মায়ুঃ কাকুৎ । জিহ্বা । ঘোষঃ । স্বরঃ । শব্দঃ । স্বনঃ । ঋক্‌ । হোত্রা । গীঃ । গাথা । গণঃ । ধেনা । ণ্ণাঃ । বিপা । ননা । কশা । ধিষণা । নৌঃ । অক্ষরম্ । মহী । অদিতিঃ । শচী । বাক্ । অনুষ্টুপ্ ধেনুঃ বন্ধুঃ । গল্‌দা । সরঃ । সুপর্ণী । বেকুরা—ইতি সপ্তপঞ্চাশদ্ বানামানি ৷৷ [ নিঘণ্টু: ১/১১। ] 
অর্থাৎ : এখানে ৫৭ টি নাম বাণী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এরমধ্যে সরস্বতী, ইলা, ভারতী আদি নাম উল্লেখ পাওয়া যায়। 
 
এটি বৈদিক কোষ নিঘণ্টুর প্রমাণ। এখন আমরা লৌকিক কোষের প্রমাণ দেখব - 
 
ব্রাহ্মী তু ভারতী ভাষা গীর্বাগ বাণী সরস্বতী। ব্যাহার উক্তির্লপিতং ভাষিতং বচনং বংচঃ ∥ [ অমরকোষ : প্রথম কাণ্ড০ ৬/১ ] 
 
বেদে উক্ত সরস্বতী শব্দ নদী এবং বাণী উভয় অর্থে বহুবার উদ্ধৃত হয়েছে। কিন্তু আজকাল তা দেবী ' বীণাপুস্তকধারিণী ' মানা হয়ে থাকে বসন্তপঞ্চমী আদি তিথিতে তাঁর পূজা হয়ে থাকে। তথাপি এরূপ পূজা বৈদিক কালে কোব প্রচলন ছিল না। এরূপ কতিপয় বেদ মন্ত্র উদ্ধৃত করা হল : 
 
পাবকা নঃ সরস্বতী বাজেভির্বাজিনীবতি। যজ্ঞং বষ্টু ধিয়াবসুঃ।
চোদয়িত্রী সূনৃতানাং চেতন্তী সুমতীনাম্। যজ্ঞং দধে সরস্বতী।
মহো অর্ণঃ সরস্বতী প্র চেতয়তি কেতুনা। ধিয়ো বিশ্বা বি রাজতি। [ ১/৩/১০-১২ ] 
 
অর্থাৎ : (বাজেভিঃ) গানের বিবিধ প্রকারের যেসব গ্রাম - মূর্ছনা আদি ক্রিয়াস্বরূপ গতি আছে, তাকে বাঁজ বলে থাকে। সেই গতির সাথে ( সরস্বতী) সরস বাণী, অর্থাৎ পরম পবিত্র বেদবাণী এবং তৎসদৃশ্য অন্য বাণী (নঃ) সেইখানের লোকের অন্তঃকরণকে (পাবকা) পবিত্র করতে থাকে । এরূপ কোন ব্যক্তি আপনি ( বাজিনীবতী) যেসব সাধারণ প্রশস্ত বিবিধ তান, স্বর আদি গতি দ্বারা যুক্ত হয়ে পুনঃ (ধিয়াবসুঃ) যে শীঘ্র বুদ্ধিতে বাস করে থাকে। এরূপ বাণী সমূহ (যজ্ঞম্) যজনীয় পরমাত্মা অথবা যজ্ঞের (বষ্টু) কামনা করে থাকেন। 
 
(সূনৃতানাম্) সত্য প্রিয় বাক্যকে (চোদয়িত্রী) প্রেরণা করে থাকা (সুমতীনাম্) সেই শুভ বুদ্ধি যুক্ত পুরুষ (চেতন্তী) চেতনাযুক্ত (সরস্বতী) বাণী, সেই (যজ্ঞম্) যজনীয় পরমাত্মাকে অথবা বিবিধ যজ্ঞকে (দধে) ধারণ করে থাকেন।
 
(সরস্বতী) পূর্বোক্ত গুণ বিশিষ্ট বাণী (কেতুনা) নিজ কর্ম দ্বারা (মহঃ) বহু (অর্ণঃ) আনন্দময় রসকে জগতে (প্রচেতয়তি) উৎপন্ন করে থাকে। অর্থা সেই পবিত্র বাণী দ্বারা কেবল মাত্র নিজের উপকার হয় না বরং জগতে সর্বত্র আনন্দ লাভ হয় এবং সেই বাণী তখন (বিশ্বা) নিখিল (ধিয়ঃ) কর্মকে (বিরাজতি) প্রভাবিত করে থাকে। যথা বাণী শুদ্ধ হয় তখন নিখিল কর্মও শুদ্ধ হয়ে থাকে।
 
ইলা সরস্বতী মহী তিস্ত্রো দেবীর্ময়োভুবঃ। বর্হিঃ সীদন্ত্বস্ত্রিধঃ। [ ঋ০ ১/১৩/৮ ]
অর্থাৎ : (ইলা + সরস্বতী + মহী) ইলা সরস্বতী এবং মহী - তা তিন প্রকারের বাণীর নাম হয়ে থাকে। উক্ত প্রকারভেদ সঙ্গীতশাস্ত্রে প্রতীত হয়ে থাকে । সেই (তিস্ত্র+দেবীঃ) তিন প্রকারের দেদীপ্যমান বাণী (ময়োভুবঃ) সুখ উৎপন্ন করে থাকে এবং (অস্ত্রিধঃ) সরস হয়। উক্ত তিন প্রকারের বাণী (বর্হি) আমার হৃদয় স্বরূপ আসনে ( সীদন্তু) বিরাজমান হোন। 
 
আরো পড়ুন -

বেদ ও সরস্বতী

 
 
💢সরস্বতী এবং তিন দেবী💢
--------------------------------------
শুচির্দেবেষ্বর্পিতা হোত্রা মরুৎসু ভারতী। ইলা সরস্বতী মহী বর্হিঃ সীদন্তু যজ্ঞিয়াঃ। ∥ [ ঋ০ ১/১৪২/৭ ]
অর্থাৎ : (মরুৎসু + দেবেষু) অনেক প্রকারের বায়ু দেবের মধ্য দিয়ে (অর্পিতা) সমর্পিত হও। এখানে মরুৎ শব্দ বিবিধ প্রকারের গানের ষডজ, ঋষভ, গান্ধার, মধ্যম, পংচম, ধৈবত, নিষাদ্ — উক্ত সাত স্বর এবং গ্রাম, মূর্চ্ছনা আদি গতিকে গ্রহণ করো। যখন বাণী সেই স্বর রূপ দেবতার মধ্যে অর্পিত হোন তখন (শুচিঃ) পবিত্র এবং (হোত্রা) হোম নিষ্পাদক অর্থাৎ যজ্ঞ সম্পাদন যোগ্য হয়ে থাকেন। উক্ত প্রকারে (ভারতী+ইলা+সরস্বতী) ভরতী ইলা সরস্বতী তিন প্রকারের (মহী) বাণী (বর্হিঃ) হৃদয়রূপ আসনে (সীদন্তু) বসেন। সেই তিন (যজ্ঞিয়াঃ) ঈশ্বর সম্বন্ধী বা যজ্ঞ সম্বন্ধীয় হয়ে থাকেন। 
 
দ্রষ্টব্য — এ বিষয়ে সায়ণাচার্য দ্যুস্থান বাণীর নাম ভারতী, পার্থিব বাণীর নাম ইলা, মাধ্যমিক বাণীর নাম সরস্বতী বলে উল্লেখ করেন। এখানে মহী শব্দ তিনি বিশেষণ মেনেছেন। 
 
ভারতীলে সরস্বতী বঃ সর্বা উপব্রুবে। তা নশ্চোদয়ত শ্রিয়ে ∥ [ ঋ০ ১/১৮৮/৮ ]
অর্থাৎ : (ভারতী + ইলে + সরস্বতী) হে ভারতী , হে ইলা, হে সরস্বতী, (য়া ব সর্বা) আমরা যারা আপনাদের সবাইকে (উপব্রুবে) ভোগ করে থাকি, (তাঃ) আপনি (নঃ) সেই আমাদের (শ্রিয়ে) কল্যাণের জন্য (চোদয়ত) প্রেরণা করেন অর্থাৎ আমাদের শুভ কর্মে প্রেরণাদান করেন। 
 
আদিত্যৈর্নো ভারতী বষ্টু যজ্ঞ সরস্বতী সহ রুদ্রৈর্ন আবীত। ইডোপহুতা বসুভিঃ সজোষা যজ্ঞং নো দেবীরমৃতেষু ধত্ত ∥ [ যজু০ ২৯/৮ ]
অর্থাৎ : (ভারতী) ভারতী বাণী (আদিত্যৈঃ) আদিত্যের সাথে (নঃ + যজ্ঞম) আমাদের যজ্ঞকে (বষ্টু) কামনা করে থাকে । (সরস্বতী) সরস্বতী বাণী (রুদ্রৈঃ) রুদ্রের সাথে (নঃ) আমাদের যজ্ঞকে (আবীত) রক্ষা করো। (উপহুতা) সম্যকভাবে (ইডা) ইলা বাণী ( বসুভিঃ) বসুর সাথে (সজোষাঃ) প্রীতি দ্বারা যুক্ত হও। (ন+যজ্ঞম) আমাদের যজ্ঞকে (অমৃতেষু) বায়ু আদি অমর দেবের মধ্যে (ধত্ত) স্থাপিত করো।
 
হোতা যক্ষত্ তিস্ত্রো দেবীর্ণ ভেষজং ত্রয়স্ত্রিধাতবোऽ পস ইডা সরস্বতী ভারতী মহীঃ। ইন্দ্রপত্নীর্হবিষ্মতীর্ব্যন্ত্বাজ্যস্য হোতর্যজ ∥ [ যজু০ ২৮/৮ ]
যথা : উক্ত মন্ত্রের ভাব পূর্বক্রম। এখানে ইডা সরস্বতী ভারতীকে ' ইন্দ্রপত্নী ' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইন্দ্রিয়ের পালন করেন যে তাকে ইন্দ্রপতি বলা হয়। মহিধর বলেন " ইন্দ্রপত্নী ইন্দ্রস্য পত্ন্যঃ পালয়িত্র্যঃ " পত্নী শব্দের অর্থ পালয়িত্রী হয়। 
 
পাবমানীর্যো অধ্যেত্যৃষিভিঃ সংভৃতং রসম্। তস্মৈ সরস্বতী দুহে ক্ষীরং সর্পির্মধুদকম্ ∥ [ ঋ০ ৯/৬৭/৩২ ]
অর্থাৎ : যে বানীর মধ্যে (ঋষিভিঃ) ঋষি গণ (রসম্) পরমাত্মা সম্বন্ধীয় বিজ্ঞানরূপ রসকে (সংভৃতম্) পূর্ণ করেন , তাকে (পাবমানীঃ) অন্তঃকরণে পবিত্র করা বাণী (যঃ) যে জ্ঞানী জন (অধ্যেতি) পড়েন তথা বিচার করেন (তস্মৈ) সেই অধ্যেতাদের মধ্যে (সরস্বতী) বাণী (ক্ষীরম্) এবং (সর্পিঃ) ঘৃত ও (মধুদকম্) মধুরস (দুহে) দিয়ে থাকে। 
 
প্র ক্ষোদসা ধায়সা সস্ত্র এষা সরস্বতী ধরুণমায়সী পুঃ। প্র বাবধানা রথ্যেব য়াতি বিশ্বা অপো মহিনা সিন্ধুস্ন্যাঃ ∥ [ ঋ০ ৭/৯৫/১ ]
অর্থাৎ : (এষা) এই (সরস্বতী) সরস্বতী নদী (ধায়সা) তীক্ষ্ণ (ক্ষোদসা) জলপ্রবাহের সাথে (প্র+সস্ত্রে) ক্ষিপ্রতার সহিত চলমান (আয়সী+পূঃ) লৌহ নির্মিত নগরীর সমান (ধরুণম্) আমাদের রক্ষাকারী। (সিন্ধুঃ) প্রবল বেগে প্রবাহিত সরস্বতী (মহিনা) নিজ মহিমায় অর্থাৎ তীক্ষ্ণ ধারার দ্বারা (অন্যাঃ+অপঃ) অন্যান্য নদীকে (বাবধানা) বাধিত করে থাকে (রথ্যা+ইব) সারথির মত (প্রয়াতি)যেয়ে থাকে।
 
পঞ্চ নদ্যঃ সরস্বতীমপি যন্তি সস্ত্রোতসঃ। সরস্বতী তু পঞ্চধা সো দেশোऽভবন্ সরিত্। [ যজু০ ৩৪/১১ ]
অর্থাৎ : (সস্ত্রোতসঃ) সমান স্তুতিকারী (পঞ্চ + নদ্যঃ) পাঁচ নদী (সরস্বতীম্+অপি যন্তি) সরস্বতীর মধ্যে মিলে থাকে। (তু) নিশ্চয় (সা+উ+সরস্বতী) সেই সরস্বতী (পঞ্চধা) পাঁচে মিলে (দেশে) দেশের মধ্যে (সরিত+অভবত্) নদী হয়ে থাকে। 
 
দ্রষ্টব্য : এখানে পঞ্চ শব্দ উপলক্ষণ মাত্র। যখন একাধিক নদী একটি নদিতে এসে মিশে যায় তখন সেই নদী এক মহানদীতে পরিণত হয়। এখানে উক্ত ঋক বাণী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যা পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের এক ইন্দ্রিয়ে মিশে মহানদী হয়ে যাওয়া বুঝিয়েছে।
 
💢 সরস্বতী এবং অমরকোষ আদি💢
--------------------------------------------
যেখানে অমরকোষে শিব এর সাথে পার্বতী তথা বিষ্ণুর সাথে লক্ষ্মীর বর্ণন করা হয়েছে। সেখানে অমরসিংহ তার এই নব্য শব্দার্থ গ্রন্থে সরস্বতীকে ব্রহ্মার শক্তিরূপ মানেন নি। যার ফলে প্রতীত হয় যে সেই সময়েও সরস্বতী ব্রহ্মার অজাচার সম্পর্কে তেমন প্রচারিত হয় নি। পুরাণের মধ্যে কোথাও কোথাও সরস্বতী বিষ্ণু পত্নী বলে উল্লেখ করেছে। এছাড়াও নানা সম্পর্কের কথা শুনা যায়, যাতে এবিষয়ে ভ্রান্তি আরো দৃড় হয় বটে।
 
লক্ষ্মী সরস্বতী গঙ্গা তিস্ত্রো ভার্যা হরেরপি। প্রেম্ণা সমাস্তাস্তিষ্ঠন্তি সততং হরিসত্রিধৌ ∥ [ দে:ভা০ ৯/৬/১৭ ]
দেবীভাগবতে সাবিত্রী ব্রহ্মার প্রিয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্ররূপা সাবিত্রী গায়ত্রী ব্রহ্মণঃ প্রিয়া। [ দে : ভা০ ৯/১/৪০ ]
মনু সংহিতায় সরস্বতী নদীর উল্লেখ পাওয়া যায়। মনুজি লিখেন — 
 
সরস্বতী দৃষদ্বত্যোর্দেবনদ্যোর্যদন্তরম্। তং দেবনির্মিতং দেশং ব্রহ্মাবর্ত প্রচক্ষতে ∥ [ মনু০ ২/১৭ ]
 
এছাড়াও ব্রাহ্মণগ্রন্থে সরস্বতী নদীর কূলের বর্ণন অধিক মাত্রায় পাওয়া যায়। সেই নদীর কূলের ধারে ঋষিগণ প্রায়ঃ নিবাস করে থাকতেন। ঈশ্বরের করুণ দশায় আজ সেই সরস্বতী নদীর অস্তিত্ব খুজে পাওয়া দুষ্কর। এনিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে সরস্বতী নদী ঋষিগণের অতি পবিত্র স্থান ছিল। 
 
💢ব্রহ্মা তথা তাঁর আবাস্থল💢
----------------------------------------
যেরূপ বিষ্ণু মহাদেব আদিদের নির্দিষ্ট বাসস্থান এর উল্লেখ পাওয়া যায়, কিন্তু ব্রহ্মার ক্ষেত্রে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। তবে পুরাণে ব্রহ্মার পদ্ম /কমল ফুলে আবাসের উল্লেখ পাওয়া যায়, কিন্তু সে সম্বন্ধেও নানান মতানৈক্য রয়েছে। অমরকোষে কমলের নানান অর্থ পাওয়া যায়। যথা — 
 
বিসপ্রসুনরাজীবঃ পুষ্করাংথোরুহাণি চ। [ অমর০ প্রথম কাণ্ডম্ ১০/৪১ ]
অর্থাৎ : বিস, প্রসুন্, রাজীব, পুষ্কর এবং অম্ভোরুহ আদি অনেক নাম অর্থ কমল হয়ে থাকে।
তাছাড়া পুষ্কর শব্দের নাম আকাশ=অন্তরিক্ষের হয়ে থাকে। যথাঃ
অম্বরম্। বিয়ত্। ব্যোম্। বর্হিঃ। ধন্ব। অন্তরিক্ষম্। আকাশম্। আপ্। পৃথিবী। ভূঃ। স্বয়ম্ভু। অধ্বা। পুষ্করম্। সাগরঃ। সমুদ্রঃ। অধ্বরম্। ইতি ষোডশান্তরিক্ষনামানি ∥ [ নি০ ১/৩ ]।
 
এছাড়াও বেদমন্ত্রে পুষ্কর শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। —
 
উতাসি মৈত্রাবরুণো বসিষ্ঠোর্বশ্যা ব্রহ্মণ্ মনসোধি জাতঃ। দ্রপ্সং স্কত্রং ব্রহ্মণা দৈব্যেন বিশ্বেদেবা পুস্করে ত্বাদদন্তঃ ∥ [ ঋ০ ৭/৩৩/১১ ]।
উক্ত মন্ত্রের ব্যাখ্যায় যাস্কাচার্য " পুস্করমন্তরিক্ষং পোষতি ভূতানি " পুস্কর শব্দের অর্থ অন্তরিক্ষ করেন। তাই এখানে ব্রহ্মার আবাস্থল পুষ্কর অর্থাৎ বায়ু হয়। বায়ুতে তথা অন্তরিক্ষে ব্রহ্মার আবাস্থল। 
 
💢ব্রহ্মা নামক ঋষি 💢
----------------------------
তদ্ধৈতদ্ ব্রহ্মা প্রজাপত্য উবাচ। প্রজাপতির্মনবে। মনুঃ প্রজাভ্যঃ [ ছা০ উ০ ৩/১১/৪ ]
তুর কাবষেয়ঃ। প্রজাপতির্ব্রহ্মণঃ। [ বৃ০ উ০ ৬/৫/৫ ]
ব্রহ্মা উক্ত জ্ঞান প্রজাপতিকে দেন। প্রজাপতি মনুকে। মনু প্রজাকে। এর দ্বারা প্রতীত হয় যে ব্রহ্মা নিশ্চয় কোন মনুষ্য রূপ প্রসিদ্ধ ঋষি।
ব্রহ্মা দেবানাং প্রথমঃ সম্বভূব কর্ত্তা ভুবনস্য গোসা। স ব্রহ্মবিদ্যাং সর্ববিদ্যাপ্রতিষ্ঠামথর্বায় জ্যেষ্ঠপুত্রায় প্রাহ। [ মুণ্ডুক উপ০ ১/১/১ ]।
এখানে বিদ্বান ব্রহ্মা ঋষির প্রশংসা মাত্র আছে । নিঃসন্দেহে বিদ্বান লোক নিজ বিদ্যা দ্বারা পুরো জগতের কর্তা তথা অভ্যন্তরীণে পরিপূর্ণ থাকেন। এছাড়া উপনিষদে আরো উল্লেখ পাওয়া যায়।
 
যো ব্রহ্মাণং বিদধাতি পূর্ব যো বৈ বেদাংশ্চ প্রহিণোতি তস্মৈ। তং হ দেবমাত্মবুদ্ধিপ্রকাশং মুমুক্ষুবৈ শরণমহং প্রপদ্যে। [ শ্বেতা০ ৬/১৮ ]
অর্থাৎ : এখানে ব্রহ্মজ্ঞানী ঋষি সম্পর্কে বলা হয়েছে। কারণ সৃষ্টির আদিতে যেসব শুদ্ধ পবিত্র আত্মা থাকেন, তাদেরকেও ভগবান বেদের জ্ঞান প্রদান করেন।
 
উপসংহার : এর দ্বারা এটাই প্রতীত হয় যে সরস্বতী সাথে ব্রহ্মার যে পৌরাণিক কাহিনী পাওয়া যায় তা সমূলে মিথ্যা। এছাড়াও বৈদিক শব্দভাণ্ডার সহ পৌরাণিক উভয় ক্ষেত্রে শব্দার্থের ভিন্নতা লক্ষিত হয়। তাই ব্রহ্মা সরস্বতী অজাচারের রূচক কাহিনী যে কতবড় নোংরা মিথ্যাচার তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। 
 
 
ও৩ম্ কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম 
 
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক