https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

মহর্ষি দয়ানন্দের মূর্তিপূজা খণ্ডন ও প্রত্যুত্তর

Sunday, December 10, 2023



পৌরাণিক অপপ্রচারকারীরা ১৫০ বছর ধরে গোয়েবলসের নীতি অনুযায়ী একই মিথ্যাচার করে চলছে । কারণ তারা জানে একই কথা বারবার বললে তা মিথ্যা হলেও মানুষের কাছে সত্য লাগবে৷ কিন্তু কালুরাম থেকে জ্বালাপ্রসাদ কারো মিথ্যাচারের খণ্ডনই বাদ যায়নি৷ এদেরও যাবে না৷ বরং প্রতিটি মিথ্যাচারকে ধূলিস্যাৎ করে দেওয়া হবে। 

বিশেষঃ এই লেখার জবাব দিতে গিয়ে প্রতিপক্ষ বৃথা প্রলাপ ব্যক্ত করে ব্রাহ্মণ বেদ ইত্যাদি নিয়ে অপলাপ করেছেন । মহর্ষি দেব বিষয়ে সত্যার্থ প্রকাশ, ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকাতেই স্পষ্ট লিখেছেন । এটা না পড়া উক্ত ব্যক্তির মূর্খতা । পাশাপাশি যে বইয়ের কথা বলেছে কালুরাম তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ রইলো " শুধু কালুরামের বই " ওর উপর ভিত্তি করে কালুরাম যা বলেছে তা ইতোমধ্যে বহুবার শাস্ত্রার্থ মহারথীরা খণ্ডন করেছেন । তা এই বই এখন কেন বের করেনা ?  করে আসুক কালুরামের অনুসারীরা সামনে । তা না করে হম্বিতম্বি করাই সার এদের ।

আর্যাভিবিনয়ের কখনোই আমরা বলিনি যে হিন্দির বা ব্র‍্যাকেটের লেখা মূল না । এতে বিপক্ষ স্পষ্টভাবেই ছল করেছে তা প্রমাণ হয়৷ আপনারা নিচে সম্পূর্ণ খণ্ডন বিদ্যমান আছে তাতেই পাবেন । আর ভোগ শব্দ নিয়ে এই মূর্খ বঙ্গীয় শব্দকোষ দেখায় । ওহে বোকা,  ভোগ শব্দ তো মহর্ষি লিখেনই নাই। তাহলে তুমি ভোগ দেওয়া দাবি করলে কীভাবে হবে ? মিথ্যাচারের সীমা থাকা উচিত । 

যাস্কের বিষয়ে আমরা এটাও বলেছি যাস্ক নির্বচন ও ত্রিবিধ ভাষ্যই মানতেন। তিনি এক প্রকার দেখিয়েছেন বলে অন্যাদি প্রকার সম্ভব না এমন না। আমাদের মতামত স্পষ্ট এখনো আছে যে মহর্ষির আধ্যাত্মিক ভাষ্যকে যাস্কের আধিদৈবিক দিয়ে ভুল দেখানো বোকামি । আর সায়ণ তো যাজ্ঞিক অর্থও সম্পূর্ণ ঠিক না করে তাতে ইতিহাস ঢুকিয়েছে । ঋগ্বেদে ঋভু আর অশ্বিনীদ্বয় নিয়ে যে বিশাল ইতিহাস তাতে সায়ণ সব মন্ত্রের ইতিহাস কোথা থেকে নিয়েছে তার কোন প্রমাণই নেই । কোন পৌরাণিক সাহস থাকলে এসে সায়ণের এই কাহিনীর উৎস প্রমাণ করুক । 

আর মহর্ষি ঋগ্বেদ ও আর্যাভিবিনয় উভয়তেই প্রথমে আধ্যাত্মিক অর্থ দেখিয়ে নিরুক্তের প্রমাণ উল্লেখ করে ভৌতিক অর্থও দেখিয়েছেন যা প্রমাণও আমরা দিয়েছিলাম কিন্তু শঠের বুদ্ধিতে তা কুলোয়নি বলে এড়িয়ে গিয়েছে । 

ইন্দ্র শব্দের অর্থ মহর্ষি প্রথম সমুল্লাসে যেমন ঈশ্বর করেছেন তেমনি অন্যত্রও নানাবিধ অর্থ করেছেন যে পক্ষে যে অনুযায়ী হবে । এই দোষ তো তাহলে সায়ণের বেলাতেও যাবে । তখন নীরব কেন ? আর বিশুদ্ধমনুস্মৃতি যেমন আর্যসমাজী বাদে নিরপেক্ষরাও মানে তেমনি অদ্বৈতবাদীদের গ্রন্থ বিশিষ্টাদ্বৈত বা দ্বৈতবাদীরা পরস্পর মানে কী ? এসব একপাক্ষিক বক্তব্য দিয়ে চোখে ধুলো দেওয়া স্মার্তদের পুরাতন ছল-কপটতা মাত্র । আর বাকি অনুবাদ নিচেই সম্পূর্ণ দিয়ে দিলাম - 









কালুরাম বেদ মন্ত্রের অপব্যাখ্যা করে পৃথিবী স্থির মানতো , করপাত্রীও মানতো , বাল্যবিবাহ মানতো যে রজস্বলা হওয়ার আগেই বিয়ে দিতে হবে । কালুরামের এই ব্রোকার তা মানে তো এসব যে এতো কালুরামের গান গাইছে ? তোমার এসব বহু আগেই খণ্ডিত বৎস ।


আর রইলো কালুরামের ১৯৮৬ বিক্রমী সম্বতের বই 'পুরাণবর্ম' । ইংরেজিতে যার সাল ১৯২৯ । 


অথচ পণ্ডিত মনসারাম বৈদিক তোপ ১৯৩৬ সালে যে বই লিখেন ' পৌরাণিক পোল প্রকাশ ' তারপর আর জন্মে পালটা খণ্ডন কিছু লেখার সাহসই হয়নি । 

অপপ্রচারঃ আর্যাভিবিনয়ের ৭ নং মন্ত্রে দয়ানন্দ সরস্বতী সোমলতার রস পান করার কথা লিখেছে / ভোগ দেওয়ার কথা লিখেছে । 

খণ্ডনঃ প্রথমে আমরা উক্ত মন্ত্রের [ ঋগ্বেদ ১।২।১ ] বাংলা অনুবাদ দেখি - 

হিন্দি অনুবাদ - 


এখানে মহর্ষি স্পষ্টভাবে লিখেছেন ' উন কো আপ স্বীকার করো( সর্বাত্মা সে পান করো) '। এখানে মহর্ষি স্বীকার অর্থই মূখ্য রূপে নিয়েছেন ও পরে ব্র‍্যাকেটে পান লিখেছেন । যদি এমন হতো যে মহর্ষি 'পান করো ' লিখে ব্র‍্যাকেটে স্বীকার করো লিখেছেন তবে আপনার অভিযোগের যৌক্তিকতা থাকতো যে মহর্ষি অর্থ পরিবর্তন করেছেন । বরং মহর্ষি স্পষ্টভাবে লিখেছেন ' সর্বাত্মা সে পান করো ' । মহর্ষির এই শব্দে স্পষ্টভাবেই প্রভুকে সর্ব্যব্যাপক ও নিরাকার বলা হয়েছে । আর যজ্ঞে যা আহুতি দেওয়া হয় তা কি আধ্যাত্মিক না  ? পরমাত্মার প্রতিই সব । তাতে কী ঈশ্বর খান  ? নাকি স্মার্তদের স্রষ্টা খাওয়াদাওয়াও করেন স্বীকারের সাথে  ? মলমূত্র পায় না তাঁর ? তাহলে এখানে সাকারবাদ বা মূর্তিপূজার প্রসঙ্গই অবান্তর যা কিনা তিনি বহুবার খণ্ডন করেছেন নানা গ্রন্থে । বাংলা অনুবাদ তাই মহর্ষির ভাষ্যানুকূল এবং অভিপ্রায় অনুযায়ীই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ।

মূলতঃ এখানে 'সর্বাত্মা সে পান করো ' রক্ষার বিষয়টিকেই দ্যোতিত করছে । মহর্ষি স্বীয় ঋগ্বেদ ভাষ্যেও এই মন্ত্রের ব্যাখ্যায় লিখেছেন -

❝ (তেষাং)তান্ পদার্থান্ (পাহি) রক্ষয়েতি ❞ = সেই পদার্থগুলোর রক্ষার হেতু । 


অনেকে নিরুক্ত ১০।২ দ্বারা প্রমাণ করতে চান এখানে 'পিব' = পান করার বিষয় আছে । 

এখানে ১০।১ এ স্পষ্টভাবেই বলা আছে মধ্যমস্থানীয় = অন্তরিক্ষের দেবতা বিষয়ে এখানে কথিত হয়েছে । অর্থাৎ এখানে বিষয়টি নিরুক্ত মতে প্রাকৃতিক । 


জড়কে কেন এভাবে সম্বোধন করা যায় তা বিষয়ে নিরুক্তের প্রমাণ সম্বলিত এই লেখাটি পড়ুন -

নিরুক্তে দেবতার আকার প্রসঙ্গে

প্রত্যক্ষকৃৎ ঋক হওয়ায় এখানে মধ্যম পুরুষ সম্পর্কে বলা হয়েছে । নিরুক্ত ৯।২৭ এ ঋগ্বেদ ১০.৯.১ তথা জলকে যেমন দর্শনীয় বলা হয়েছে এটিও প্রাকৃতিক অর্থাৎ আধিভৌতিক ব্যাখ্যা । 

এখানে ইন্দ্র = বায়ু সকলকে স্পর্শরূপ গ্রহণ = পান করে । শুধু তাই নয় নিরুক্ত ১০।৪ দেখলেই এই আধিদৈবিক ব্যাখ্যাই যে নিরুক্তকার এখানে করেছেন তা সুস্পষ্ট হবে - 


মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী এখানে আধ্যাত্মিক অর্থ করেছেন । তাই নৈরুক্তিক আধিদৈবিক অর্থ প্রদর্শন করা মূর্খামি মাত্র । মহর্ষির পাহি অর্থ রক্ষা করাস যে পা ধাতু থেকে তাঁর পক্ষেও আমরা বিস্তর প্রমাণ দিতে পারি । অবতারবাদের তথাকথিত মন্ত্রও নিরুক্তক্তার আধিদৈবিক প্রদর্শন করেছেন ? তখন সেটা না মেনে সায়ণাদি অনুসরণ করে দ্বিচারিতা কেন ? 


অপপ্রচারঃ বলিবৈশ্বদেব যজ্ঞে ভদ্রকালী, ইন্দ্র, যম, বরুণ এরা কারা ? এরা তো ৩৩ দেব না । 

খণ্ডনঃ প্রথমেই অপপ্রচারকারীর বৈদিক দেবতা সম্পর্কে আমাদের সিদ্ধান্ত পড়ে নিক -

বৈদিক দেবতা বিষয়

এই বিষয়ে আমরা এখানেও বিস্তারিত আলোচনা করেছি - 


 

মূর্খের এটা বোধ নেই যে দেবতা আর্যসমাজ ৩৩ কোন হিসেবে বলে, দেবতা বলতে তারা কি বোঝায় ইত্যাদি । দেবতা তো মন্ত্রের উদ্দিষ্ট বিষয়কেও বলে । আর মহর্ষি এই মন্ত্রের অর্থ প্রদর্শন করেননি এখানে । এর অর্থ বিশুদ্ধমনুস্মৃতিতে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রদর্শিত হয়েছে - 



 

এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত তথ্যসূত্রসহ বিশ্লেষণ আমরা করেছি - http://back2thevedas.blogspot.com/2023/03/blog-post_97.html

আর অপপ্রচারকারীরা যে বলে এখানে 'ভোগ' দেওয়ার কথা আছে তারা দেখাক মহর্ষি কোথায় 'ভোগ' শব্দের উল্লেখ করেছেন ? মহর্ষি বলিবৈশ্বদেব যজ্ঞে প্রাণীদের জন্য খাদ্যদানকে বলিদান লিখেছেন যা মহর্ষি মনুও লিখেছেন মনুস্মৃতির ৩য় অধ্যায়ের ৮১ শ্লোকে - 

মহর্ষির এই শব্দ প্রয়োগ বলি = ভাগ , কর ইত্যাদি  অথর্ববেদ ১৯.৫৫.৬ অনুযায়ী বেদানুকূল । 

অর্থাৎ এখানে মূর্তিপূজা ও সাকারবাদ অন্বেষণ পৌরাণিক নিষ্কর্মা অপগণ্ডদের মূর্খ স্বভাবের উজ্জ্বল উদাহরণ ।

শুধু তাই নয় এই প্রাণীদের জন্য দেওয়ার সময় যদি কোন অতিথি আসে তবে তাকেও দিতে বলেছেন - 


এই কথাটি মহাভারতেও [ অনুশাসন পর্ব ৯৭।১৫ ] আছে -

এখানে বলিবৈশ্বদেব প্রকরণে কোথাও মহর্ষি পরমাত্মাকে ভোগ দেওয়ার কথা বলেননি পাশাপাশি এই ধরনের কল্পনা প্রকরণবিরুদ্ধ ও মহর্ষির অভিপ্রায় বিরুদ্ধ । 


[ যত নতুন অপপ্রচার আসবে খণ্ডন ক্রিয়া চলবে, হালনাগাদ হবে ]