मां हि पार्थ व्यपाश्रित्य येऽपि स्युः पापयोनयः ।
स्त्रियो वैश्यास्तथा शूद्रास्तेऽपि यान्ति परां गतिम् ॥
মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেঽপি স্যুঃ পাপযোনয়ঃ।
[পার্থ—হে
পার্থ (অর্জুন); স্ত্রিয়ঃ—স্ত্রীলোক; বৈশ্যাঃ—বৈশ্য; শূদ্রাঃ—শূদ্র;
তথা—এবং; যে—যারা; পাপযোনয়ঃ অপি—পাপযোনিসম্ভূত; স্যুঃ—হয়; তে অপি—তারাও;
মাম্—আমাকে; ব্যপাশ্রিত্য—আশ্রয় করে; পরাম্ গতিম্ হি—পরম গতিই;
যান্তি—প্রাপ্ত হয়।]
হে পার্থ (অর্জুন)! স্ত্রীলোক, বৈশ্য, শূদ্র এবং যারা পাপযোনিসম্ভূত হয়, তারাও আমাকে আশ্রয় করে পরম গতিই প্রাপ্ত হয়।
- টীকাটিপ্পনী:
এই শ্লোকে “পাপযোনয়ঃ” পদটিকে শঙ্করভাষ্য অনুসারে কিছু গীতায় নারীজাতি,
বৈশ্যজাতি এবং শূদ্রজাতির বিশেষণরূপে গ্রহণ করা হয়েছে।
কিন্তু শ্রীধর,
মধ্ব, বালগঙ্গাধর সহ আধুনিক টীকাকারগণ উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। কেননা
এরূপ ধরা হলে স্বয়ং গীতা বিরুদ্ধ সিদ্ধান্ত হয়।
শ্রীভগবান্ বিভূতিযোগের
৩৪তম শ্লোকে বলেছেন—
“আমি নারীগণের মধ্যে কীর্তি, শ্রী, বাক্, স্মৃতি, মেধা,
ধৃতি এবং ক্ষমা।”
অর্থাৎ প্রতিটি নারীর মধ্যেই ঈশ্বরের প্রধান বিভূতিসমূহ
বিরাজ করছে। সুতরাং নারীগণকে কোনভাবেই “পাপযোনয়ঃ” পদের বিশেষণরূপে গ্রহণ
করা যায় না। মূলত “পাপযোনয়ঃ” বা “পাপযোনিসম্ভূত” শব্দটি স্বতন্ত্র। বিবাহ
সংস্কার ছাড়া অর্থাৎ ধর্মানুকূল কাম ছাড়া কেবল যৌ
ন আনন্দের হেতু যে সন্তান উৎপন্ন হয়েছে, সেই সকল সন্তানদের সমাজ অবৈধ ঘোষণা করে। সমাজপতি ও সাধারণ মানুষেরা সেই সন্তানদের পাপজন্মা বা নীচকুলজাত মনে করে।
ন আনন্দের হেতু যে সন্তান উৎপন্ন হয়েছে, সেই সকল সন্তানদের সমাজ অবৈধ ঘোষণা করে। সমাজপতি ও সাধারণ মানুষেরা সেই সন্তানদের পাপজন্মা বা নীচকুলজাত মনে করে।
সেজন্য ভগবান্
বলছেন—পাপযোনিসম্ভূত হলেও যদি সে আমাকে আশ্রয় করে তাহলে সেও পরম গতিই
প্রাপ্ত করে।
তাহলে ভগবান্ পাপজন্মা সন্তানের সাথে স্ত্রী, বৈশ্য এবং
শূদ্রদের একসাথে উল্লেখ করলেন কেন? —
বস্তুতঃ মহাভারতের যুগেও অনেক অঞ্চলে
পাপযোনিসম্ভূত সন্তান, স্ত্রীলোক, বৈশ্য এবং শূদ্রদের নিচু স্থরের মানুষ
বলে গণ্য করা হতো। সেই সব অজ্ঞানতাপূর্ণ অঞ্চলের মানুষেরা মনে করতো তারা
কখনোই পরমগতি প্রাপ্ত হয় না। এই ভুল ভাঙ্গানোর জন্যই ভগবান্ এদের সবাইকে
একত্রে উল্লেখ করে বলেছেন—যারা আমাকে আশ্রয় করে, তারা অবশ্যই পরমগতি
প্রাপ্ত করে।
-শুদ্ধধ্বনি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা: ৯/৩২
0 মন্তব্য(গুলি)