https://www.idblanter.com/search/label/Template
https://www.idblanter.com
BLANTERORBITv101

ব্রাহ্মণ‌ শাস্ত্রে এবং মহর্ষি দয়ানন্দ জীর বেদ ভাষ্যে সোম‌ শব্দের বিবিধ‌ প্রকার অর্থ

Wednesday, June 7, 2023

 


ओ३म्
 
নমস্কার
 

  • 🟦 ব্রাহ্মণ‌ শাস্ত্রে 
 
ব্রাহ্মণ গ্রন্থগুলোতে সোম এর অনেক অর্থের বর্ণনা রয়েছে । এখানে আধ্যাত্মিক, আধি‌ভৌতিক অর্থ‌ ছাড়া‌ও আধিদৈবিক অর্থের‌ও বর্ণনা রয়েছে ‌ ।
 
যেমন - " সত্য‌ং বৈ শ্রী‌র্জ্যোতিঃ‌ সোমঃ । " [ শতপথ‌ ব্রাহ্মণ. ৫/১/২/১০ ; ৫/১/৫,২৮ ] এখানে সোম‌ এর অর্থ " জ্যোতি " নির্দেশ করা হয়েছে । " শ্রী‌বৈ সোম‌ঃ " । [ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৪/১/৩/৯ ] এখানে সোম দ্বারা শ্রী‌ অর্থাৎ, ঐশ্বর্য অথবা‌ শোভা‌ অর্থ‌ নির্দেশ করছে ।
 
" রাজা বৈ সোমঃ " । [ শতপথ‌ ব্রাহ্মণ. ১৪/১/৩/১২ ] এখানে সোম‌ এর অর্থ‌ রাজা বর্ণনা করা হয়েছে ; কেননা, সোম শব্দ " ষু প্রসবৈশ্বর্য়য়োঃ " দ্বারা‌ গঠিত হয়েছে । তার ঐশ্বর্য আদি অর্থ গ্রহণ‌ করে রাজ‌পরক অর্থ‌ দর্শিত করা হয়েছে ।
" সোমো‌ হি প্রজাপতিঃ । [ শতপথ‌ ব্রাহ্মণ. ৫/১/৫/২৬ ] " সোমো‌ বৈ প্রজাপতিঃ " ইত্যাদি‌ উক্তি‌ অনুসারে প্রজাগণের স্বামী পরমেশ্বরকে নির্দেশ করে সোম শব্দের প্রয়োগ হয়েছে । 
 
' য়ো‌ ' বৈ‌ বিষ্ণুঃ সোমঃ সঃ । [ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৩/৩/৪/১ ] অর্থাৎ, বিষ্ণু — সর্বব্যাপক পরমেশ্বরকেই সোম নামে সম্বোধন করা হয়ে থাকে । " য়ো‌ऽয়ং বায়ুঃ পবত‌ এষ‌ সোমঃ " ।
 
[ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৭/৩/১/১ ] এখানে সোমের‌ অর্থ বায়ু‌ । " সোমো‌ বৈ‌ চতুর্হোতা "
[ তৈত্তিরীয়. ২/৩/১/১ ] এর অর্থ‌ চতুর্বেদ দ্বারা যজ্ঞকারী ব্রহ্মাকে‌ও সোম বলা হয় ।
" এষ‌ বৈ‌ য়জ‌মানো‌ য়ৎ‌ সোমঃ " [ তৈত্তিরীয়. ১/৩/৩/৫ ] এর অর্থ‌ যজমানকেও সোম বলা হয় । " বর্চঃ সোমঃ " । [ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৫/২/৫/১ ] এখানে‌ বর্চ-কে সোম বলা হয়েছে । " ক্ষত্রং সোম‌ঃ " । [ ঐত‌. ২/৩৮ ।। কৌষিতকী‌. ৭/১০/৯/৫ ] " ক্ষত্রং‌ বৈ সোম‌ঃ " । এর অর্থ‌ ক্ষাত্র শক্তিকেও সোম‌ বলা হয় ।
" য়শো বৈ সোমঃ " । [ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৪/২/৪/৯ ] " য়শো বৈ সোমো‌ রাজা "
[ ঐতরেয়. ১/১৩ ] " সোমো‌ বৈ য়শঃ‌ " । 
 
[ তৈত্তিরীয়. ২/২/৮/৮ ] ইত্যাদি‌ বচন অনুসারে যশ‌ প্রাপ্ত করার জন্য সোম শব্দের প্রয়ো‌গ হয়েছে । " রেতঃ সোমঃ " । [ কৌষীতকী. ১৩/৭ ।। তৈত্তিরীয়. ২/৭/৪/১ ।। শতপথ. ৩/৩/২/১ ।। ৩/৩/৪/২৮ ] ইত্যাদি প্রমাণানুসারে সোম‌ শব্দের‌ অর্থ বীর্য-কে‌ও নির্দেশ করা হয়েছে এবং এজন্য বীর্যবান ব্রহ্মচারী বা স্নাতকদের জন্য বিশেষ রূপে আধিভৌতিক দৃষ্টি দ্বারা সোম শব্দের প্রয়োগ হয়ে থাকে । " প্রাণঃ সোমঃ " [ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৭/৩/১/২ ] " প্রাণো হি সোমঃ । [ তাণ্ডব্য‌. ৯/৯/১/৫ ] ইত্যাদি‌ বচন‌ অনুসারে প্রাণের জন‌্যও 
সোম শব্দের প্রয়োগ‌ বৈদিক শাস্ত্রে‌ রয়েছে ‌। " রসঃ সোমঃ " । [ শতপথ‌ ব্রাহ্মণ. ৭/৩/১,৩ ] তদ্ য়ৎ‌ তদমৃতং সোমঃ সঃ । ইত্যাদি বচন অনুসারে জ্ঞানময় ভক্তিরস‌ বা ভক্তি‌ অমৃতের‌ জন‌্য‌ও সোম শব্দের উল্লেখ বেদে করা রয়েছে । ঋগ্বেদ‌: ১/৮৪/৪ নং এবং সামবেদ ৯৪৯ নং মন্ত্রে‌ এই বিষয়ে অত্যন্ত স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে ——" ইমমিন্দ্র সুতং পিব‌ জ্যেষ্ঠমমত্যং মদম্ ।।
অর্থাৎ, হে ( ইন্দ্র ) জীবাত্মন্ ! তুমি ( ইমম্ ) এই ( সুতম্ ) অভ্যাস‌ বৈরাগ্যাদি দ্বারা উৎপাদিত ( জ্যেষ্ঠম্ ) সবচেয়ে বড় ( অমত্যে ) অমর‌, কখন‌ও নষ্ট হ‌য় না আধ্যাত্মিক ( মদম্ ) মস্ত‌কারী জ্ঞানময় ভক্তিরসকে ( পিব‌ ) পান করো । 
 
" সোমঃ পয়‌ঃ " । [ শতপথ‌ ব্রাহ্মণ. ১২/৭/৩/১৩ ] তথা‌ " আপঃ সোমঃ সুতঃ " । [ শতপথ ব্রাহ্মণ. ৭/১/১/২১ ] আদি অনুসারে সোম‌ শব্দ বেদে‌ দুগ্ধ অথবা জলের‌ জন্য‌ও প্রয়োগ হয়েছে । " সোমো‌ বৈ দধি‌ "
[ কৌষিতকী‌. ৮/৯ ] এখানে দধি অর্থে সোম শব্দের প্রয়োগ হয়েছে । " অন্নং সোমঃ " । [ কৌষিতকী. ৯/৬ ।। শতপথ ব্রাহ্মণ. ৩/৩/৪/২৮ ।। তাণ্ডব্য‌. ৬/৬/১ ] আদি বচন অনুসারে উত্তম অন্নের জন্য‌ও সোম শব্দের প্রয়োগ হয়েছে । তৈত্তরীয়. ১/৩/৩/২-এ সোমকে দেবগণের‌ পরম অন্ন বলা হয়েছে ।
[ এতদ্ বৈ দবানাং পরমমন্ত্রং য়ৎ সোমঃ ]
 
সোমকে‌ কৌষীতকী ১৩/৭ -এ " এতদ্ বৈ পরমমন্নাদ্যং য়ৎ‌ সামঃ " হিসেবে বর্ণিত হয়েছে । শতপথ ব্রাহ্মণ. ১১/৫/৬/৬-এ সাম মন্ত্রগুলোকে দেবগণের‌ সোমাহুতি বলা‌ হয়েছে ; [ সোমাহুতয়া হ বা এতা‌ দবানাং য়ৎ‌ সামানি‌ । ] " অথ‌ সোমায় বনস্পতয়ে " [ শতপথ. ৫/৩/৩/৪ ] " সাম‌ বোরুধাং পতে " । [ তৈত্তরীয় ৩/১১/৪/১ ] " ওষধা হি সামো‌ রাজা " [ ঐতরেয়‌. ৩/৪০ ] " সোম‌ ওষধীনাম্ অধিরাজঃ " । [ গোপথ. উ. ১/১৭ ] " সোমো বৈ‌ রাজাষধীনাম্ । [ কৌষিতকী‌ ৪/১২ ।। তৈত্তিরীয়. ৩/৭/১৭/১ ] ইত্যাদি‌ অনুসারে সোম‌ ঔষধীগণের অথবা বনস্পতিগণের রাজা । 
 
অনেক প্রকার রোগ নিবারণ এবং শক্তি‌ বৃদ্ধির জন্য এর সেবন‌ করা হয়ে থাকে ।
 
স্বাদুষ্কিলায়ং মধুমাঁ উতায়ং
তীব্রঃ কিলায়ং রসবাঁ উতায়ম্ ।
উতো ন্বস্য‌ পপিবাংসমিন্দ্রং
ন কশ্বন‌ সহত‌ আহবেষু ।।
-- ঋগ্বেদ: ৬/৪৭/১ ।। অথর্ববেদ: ১৮/১/৪৮
এই মন্ত্রে সোমলতা‌র রস‌কে বাসরূপে বর্ণনা করা হয়েছে — এই সোম রস‌ সুস্বাদু, মধুর‌, তীব্র এবং রসযুক্ত ‌। এটা পান করার ফলে ইন্দ্র-রাজা-সেনাপতি আদিকে যুদ্ধে কেউই পরাস্ত করতে পারবে না ।
এ ছাড়াও " সোমো‌ বৈ ব্রাহ্মণঃ " । [ তাণ্ডব্য‌. ২৩/১৬/৪ ] " সৌম্যো হি ব্রাহ্মণঃ " । [ তৈত্তি. ২/৭/৩/১ ] " পুমান্ বৈ সোমঃ " । [ তৈত্তি. ১/৩/৩/১ ] ইত্যাদি‌ অনুসারে প্রধানতয়া শান্ত স্বভাবী ব্রাহ্মণ এবং সামান্যতম কিছু স্থানে অন্য‌ পুরুষের জন্য‌ও সোম শব্দের প্রয়োগ বেদ-এ রয়েছে ।
 
সোমো বধুয়ুরভবদশ্বিনাস্ততামুভা বরা‌ ।
সূর্যা‌ং য়ৎ‌ পত্যে শংস‌ন্তীং মনসা সবিতাদদাৎ ।।
-- ঋগ্বেদ: ১০/৮৫/৯ ।।
ইত্যাদি মন্ত্রে সোম দ্বারা বীর্যবান পুরুষের‌ বর্ণনা করা হয়েছে ।
 
  • 🟦🟦 মহর্ষির দয়ানন্দ কৃত বেদ ভাষ্যে সোমের বিবিধ‌ প্রকার অর্থ 🟦🟦
 
মহর্ষি‌ দয়ানন্দ জী তাঁর বেদ ভাষ্যে বেদ এবং ব্রাহ্মণ শাস্ত্রাদি অনুসারে সোম এর বিবিধ প্রকার অর্থ করেছেন ; যা‌ স্পষ্ট নির্দেশ করে মহর্ষি দয়ানন্দ জী আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক‌ এবং আধিদৈবিক‌ দৃষ্টিতে সোম শব্দের অনেকার্থ‌ মেনেছেন ।
 
🔸🔸 আধ্যাত্মিক অর্থ 🔸🔸
১. পরমেশ্বরঃ - সকলজগতঃ প্রসবিতা -- যজু: ৭/২৫, সৃষ্টিক্রমেণ সর্বপদার্থাভিষবকর্তা শান্তঃ
-- ঋগ্বেদ: ১/৮৯/৩
সোমঃ = পরমেশ্বরঃ -- যজু: ৪/২০
২. বীরসাদিকঃ -- ঋগ্বেদ: ১/৪৭/৩
৩. যোগেশ্বর্যবৃন্দঃ -- যজু: ৭/৯
৪. শরীরাত্মবলম্‌ -- যজু: ৩৪/২১ 
 
🔸🔸 আধিভৌতিক অর্থ 🔸🔸
১. প্রেরকো বিদ্বান্ -- ঋগ্বেদ: ৬/৩৮/৪
ধর্মপ্রেরকঃ -- ঋগ্বেদ: ১/১১১/৯
২. মৃদুগুণবর্ধকঃ -- যজু: ৮/১
৩. ঐশ্বর্যমিচ্ছুঃ -- যজু: ৯/৩১
৪. শুভগুণপ্রসিদ্ধঃ -- যজু: ১০/১৮
ঐশ্বর্যবান, সত্যাচারে প্রেরকঃ
--যজু:৩৪/২১
৫. উত্তমরসসম্পাদকঃ, পদার্থবিদ্যাস্বীকারকঃ ঐশ্বর্যযুক্তং রাজ্যং বা -- যজু: ৪/২৪
৬. প্রসস্তগুণঃ শিষ্যঃ -- যজু: ৭/১৪
৭. সর্বসুখপ্রাপকঃ সভাধ্যক্ষঃ -
--ঋগ্বেদ:১/৩৪/৭
৮. সর্বসুহত্ সৌহার্দপ্রদো‌ বা
-- ঋগ্বেদ: ১/৯১/৮
সৌভ্যগুণসম্পন্নো রাজা -- যজু: ৭/২১
৯. ঐশ্বর্যগুণবিশিষ্টো গৃহাশ্রমঃ -- যজু:৮/৪৯
 
🔸🔸 আধিদৈবিক অর্থ 🔸🔸
১. সোমলতাদিসমুহরসঃ -- ঋগ্বেদ: ১/১৮/৪
সর্বরোগনাশকো বলপুষ্টিবুদ্ধিবর্ধক উত্তমোধ্যভিষবঃ --ঋগ্বেদ: ১/২৮/৯
২. ঐশ্বর্যপ্রদঃ পদার্থসমূহঃ
-- ঋগ্বেদ:১/৮০/২
৩. জলম্ -- ঋগ্বেদ: ৫/৩৪/৩
৪. অনেক প্রকার‌ সুখকে উৎপন্নকারী পবন
-- ঋগ্বেদ: -- ১/৯৪/৫
৫. মহৌষধিবিশিষ্টমন্নম্ -- ঋগ্বেদ: ৩/৪০/৫
৬. সূয়ন্তে যস্মিন্ স সংসারঃ
-- ঋগ্বেদ: ৩/৪৭/৩
৭. ওষধিজন্যো ঘৃতদুগ্ধাদিরসঃ
-- ঋগ্বেদ: ৩/৪৭/৪
৮. চন্দ্রঃ -- ঋগ্বেদ: ৩/৬১/২
 
নমস্কার